গল্পঃ তোকে ভালোবাসতেই হবে | Writer:- Rabiul islam Rabi | অন্তিম পর্ব

জ্ঞান ফিরে দেখি আমি বিছানায় শুয়ে আছি। আর আমার পাশে পুজা।
- তুই কি পাগল হলি নাকি? এমন করছিস কেনো? ( পুজা)
- হ্যা পুজা আমি পাগল হইছি। ওই রবির জন্য। ও আমাকে এভাবে
ফেলে চলে গেলো। (আমি) - আচ্ছা তুই টেনশন করিস না তো।
একটা উপায় খুজে বের করতে হবে!
- পুজা আমি সত্ত্যি ওই লুচু টাকে ভালোবেসে ফেলেছি রে। ওরে  ছাড়া থাকতে পারব না!
- তুই ওর মাঝে এমন কি দেখলি যে  এমন পাগলামি করছিস?
- সেটা জানিনা কিন্তু আমার ওকেই চাই। আর কাউকে না।
- কিছু খেয়েছিস?
-... (মাথা টা নারিয়ে না সূচক উওর দিলাম) তারপর পুজা একটা প্লেটে কিছু খাবার
এনে আমার মুখের সামনে ধরল।
- নে হা কর আমি খাইয়ে দিচ্ছি?
- আমি খাবো না। খেতে ইচ্ছে করছে না।
- খাবি না মানে? পাগলামি করিস না মিম। তোর বিষয় টা আমি বুঝছতেছি
কিন্তু তোকে খাবার তো খেতেই হবে। আর তুই তো ওই ছেলেকে বাসা থেকে
তারানোর জন্য অনেক বকা বকি করেছিস আর ও জখন চলে গেলো এভাবে কান্না
করতেছিস কেনো। এই ১০-১২ দিনে  এমন ভালোবেসে ফেললি?
- আমি কি বলব কিচ্ছু বুঝতেছিনা। পুজা কে জরিয়ে ধরে বললাম...
পুজা আমি ওকে ছাড়া থাকতে পারব না। তুই প্লিজ কিছু একটা কর?
- আচ্ছা আগে খাবার টা খেয়ে নে আমি
ব্যাপার টা দেখছি।
তারপর আমি কিছুটা খেয়ে নিলাম।
রাত ২ টা বাজে কিন্তু আমার চোখে
ঘুম নেই।আর আমার পাশে পুজা আছে
- আচ্ছা মিম তুই ওই ছেলের কিছুটা হিস্ট্রি
বল তো? ( পুজা)
- ওর হিস্ট্রি শুনে কি করবি? (আমি)
- আরে বলনা । আমার এত্ত কিউট একটা বান্ধবী যার প্রেমে পরেছে তার
বিষয়ে একটু জানতে হবে না। আর আমার কিউটের ডিব্বাটার চোখের ঘুম ও হারাম করেছে ওই লুচু টা। - আচ্ছা শুন। ছেলেটা যথেস্ট লম্বা, ফর্সা, আর বলতে পারিস অনেক
গুলা কিউট! - কি বলিস অনেক গুলা কিউট ও
আবার হয় নাকি? - ধুর....। আর বলবই না! - আচ্ছা সরি সরি বল?
- ছেলেটার উপর যখন আমি রেগে  কথা বলি তখন ওর মুখটা লাল
টমেটোর মত লাগে। ওর মুখের দিকে তাকালে কেমন যেন একটা অদ্ভুত ভালোলাগা কাজ করে। আর..(পুরোটা
শেষ না করতেই)
- হইছে হইছে থাক আর লাগবে না বলা। বুঝছি তুই ওই লুচুর প্রেমে
হাবুডাবু খাইছিস।কিন্তু সেটা তুই ওরে বলিসনি কেনো?
- বলার সময়ই তো পাইলাম না! - আচ্ছা অনেক হলো এবার একটু ঘুমানোর চেস্টা কর?
তারপর ঘুমানোর চেস্টা করলাম। কিন্তু ঘুম বাবাজির কোন নামই নাই।
শুধু ওই রবি লুচুটার কথা মনে হচ্ছে। শালা গেলি তো গেলি আমার
চোখের ঘুম ও কেড়ে নিয়ে গেলি  তারপরের দিন........ পুজা আমাকে বাসায় রেখে ও ওর
বাসায় চলে গেলো।আর বলে গেলো আমি আবার আসব।
আমি এখন ভাবছি আমাকে ওকে
খুজে বের করতেই হবে। আর সেটা যেমন করেই হোক। তাই আমি আমার বাসা থেকে বের হয়ে খুজতে বেরুলাম।
কিন্তু এই এত্তবড় শহরে আমি কোথায় খুজব ওকে।আর ওর সাথে কন্টাক্ট করার
মতো কোন রাস্তাই তো আমার নাই।  উফফফ আর নিতে পারছি না। এমন
টা হবে জানতাম না । শুধু একবার ওই হারামিটার দেখা পাই বুঝাবো
মজা কারে বলে। আমার মন নিয়ে খেলা তাই না। 
সন্ধা ৬ টা বাজে আজ সারাদিন  খুজলাম। পেলাম না। আর পাবই  বা কেমন করে এত্ত বড় শহরে খুজে পাওয়া কি সম্ভব। তারপর বাসায় চলে আসলাম আর এসে দেখি পুজা....
- আচ্ছা তুই কি করছিস একবার ভেবেছিস? (পুজা)
- কি? (আমি)
- আচ্ছা মানলাম ওই ছেলেকে ভালোবেসে ফেলেছিস তাই বলে এভাবে খুজতে
যেতে হবে । যদি কিছু হয়ে জায়? - আমার কিচ্ছু হবেনা রে।
- চুপ তুই। আমাকে শেখাবি না আমি সব বুঝি।
- কিন্তু আমি কি করব.... (পুরোটা শেষ না
করতেই)
- তোকে কিচ্ছু করতে লাগবে না। তুই এখন রেস্ট নিবি আমি অফিসে কথা
বলে তোর কিছুদিনের ছুটি নিয়েছি। সারাদিন অনেক খুজেছিস এখন একটু
বিশ্রাম কর!  - তারপর ফ্রেস হয়ে আমি আর আমার
বান্ধবী পুজা একসাথে বিছানায় একটু শুয়ে পরলাম। আর মনে মনে ভাবছি
আমাকে খুজে বের করতেই হবে।  শালা এখন নিজের কপালে নিজে
লাথি মারতে ইচ্ছে করছে কেনো যে তালা না দিয়ে গেলাম। 
তারপরের দিন আবার গেলাম খুজতে কিন্তু ওই ছেলের কোন খোজই নাই।
এভাবে টানা ৭-৮ দিন খুজলাম কিন্তু পেলাম না। খুজে না পেয়ে বাসায়
এসে অনেক কান্না করি। আর ঠিক ভাবে খাইনা।আমি একটা বাইরের ছেলেকে
এত্তটা ভালোবাসে ফেললাম।  - আমি এখন কি করব পুজা?   (আমি কেদে কেদে বললাম)
- উফফফফ কান্না টা থামা না প্লিজ মিম প্লিজ। তোর এই কান্না দেখলে
নিজেকেই কনট্রোল করতে পারব না বলে দিলাম। । এই সব ঠিক হয়ে জাবে
- কি করে ঠিক হবে কি করে বল? - এবার কিন্তু বেশি বেশি হয়ে জাচ্ছে মিম। আচ্ছা কাল কে আমরা
একসাথে খুজতে জাবো এবার একটু .....?
(তারপরের দিন.........)
আমি আর আমার বান্ধবী পুজা রবি কে খুজতে বেরোলাম।। অনেক খুজলাম পেলাম না। সকাল ১০ টা থেকে খুজছি। আর এখন বিকাল ৪ টা
বাজে। আমরা দুজনেই অনেক ক্লান্ত  হয়ে গেছি আর খুব ক্ষুদা ও পাইছে তাই একটা রেস্টুরেন্টে গেলাম খেতে।
আমি আর পুজা খাচ্ছি হঠাত লক্ষ্য
করলাম রবি রাস্তার ও পাড়ে দাড়িয়ে
আছে। আমি তো অনেক অনেক অনেক
খুশি হয়ে গেছি ওরে দেখে
- পু পু পুজা.....? (আমি)
- হুম কি হইছে বল?
- ওই দেখ রবি রাস্তার ও পাড়ে দারিয়ে আছে! ( একটু হাপিয়ে বললাম)
- ওই ছেলেটা!
- হুম ওইটাই।
- ওয়াও কি হ্যান্ডসাম মাইরি..
- তুই থাক আমি গেলাম।
তারপর এক ওখানে থেকে জোরে দৌড়
দিলাম।
- মিম আস্তে যা আস্তে রাস্তায় অনেক
গাড়ি আছে ( পিছন থেকে পুজা বলল)
-...... (আমি কথা না বলে জাচ্ছি)
- মিমউউউউউউউউউউউউউ, গাড়ী
পেছনে সরে যা ( পুজা ইয়া জোরে চিতকার করে বলল)
- আর আমি পিছনে ফিরে দেখলাম
একটা গাড়ি আমার দিকে আসছে আমি
সরে যাওয়ার আগে গাড়ীটা আমাকে
ধাক্কা মারল।
পুজা আমার নাম ধরে একটা অনেক
জোরে চিতকার করে উঠল। আর তারপর
আমার কিচ্ছু মনে নাই। আমি জ্ঞান হারিয়ে ফেলেছি।
.
অবশেষে আমার জ্ঞান ফিরল। আমি
চোখ খুলে তাকিয়ে দেখি আমার বেডের
পাশে পুজা আর রবি বসে আছে।
রবির মুখের দিকে একটিবার তাকালাম। আর ওর মুখের দিকে তাকিয়ে
বলার ভাষা হারিয়ে ফেলেছি।
আমি সিওর ও সারারাত কেঁদেছে। আর
কেদে কেদে চোখ মুখ লাল করে ফেলেছে
- তোকে বলছিলাম না আস্তে যা ? কোন
কথাই তো শুনিস না! (পুজা)
- চিন্তার কোন কারন নেই। সব ঠিক
হয়ে জাবে। এখন একটু রেস্ট এর দরকার! (ড. বলল)
- আমি রবির দিকে একবার
তাকালাম দেখছি চোখ থেকে জল ঝরছে।
- তুই এক্সিডেন্ট করার পর অনেক।
রক্ত ঝরছে শরীর থেকে। আর রবি ওর
নিজের রক্ত দিয়ে তোকে বাঁচিয়েছে। (পুজা)
- আমি কি বলব কিছু খুজে পাচ্ছি না। রবি আমার হাত টা ধরে বলছে....
- জানো মিম আমার মা বাবা মারা
গেছে অনেক আগে। আর আমিও একাই
থাকি। সেদিন আমার প্রচন্ড মাথা ব্যাথা আর জ্বর আসছিলো। তাই আমাকে
এই অবস্থা দেখে অফিস থেকে কিছুদিনের ছুটি দেয়। তারপর বাসায় আসার সময়
বাসে যা ঘটেছে তা তো জানই। আর
প্রথম জখন তোমার হাতের রান্না খাই
সেই রান্না একদম আমার মায়ের মত।
আজ অনেক দিন থেকে মায়ের হাতের
রান্না খাইনা। তাই আমি তোমার বাসায়
তোমার রান্না করা খাবার খাওয়ার
জন্যই ইচ্ছে করে আমি থেকে জাই।
আর একটু একটু করে আমি তোমার
প্রেমে পরে যাই। আমি সেদিন ছাদে
সবথেকে সুন্দর ফুলটা ছিড়েছিলাম
কেনো জানো। তার কারন হচ্ছে ঐটা দিয়ে
তোমায় আমি আমার ভালোবাসার
কথাটা বলতে চেয়েছিলাম।আর
তুমি এমন ভাবে বলেছো। তাই আর
বলিনি। ( কেদে কেদে আমার হাত ধরে কথা গুলো বলল)
- তাহলে কেন চলে এসেছিলে আমাকে
ছেড়ে?
- আমার অফিসের ছুটি শেষ হয়ে গিয়েছিলো!
জানো আমি যে কয়দিন তোমায় ছাড়া
ছিলাম, তখন সেই সময় গুলো কিভাবে।পার করেছি তা শুধু আমিই জানি।
- আমি আর কিছু না বলে। রবি কে
জরিয়ে ধরে কান্না শুরু করে দিলাম।
- এই কি করছো কি? কান্না টা থামাও
তুমি অসুস্ত?
- তুমি কেনো কান্না করছো হুহহহ।
আই লাভ ইউ (বাচ্চাদের মত কেদে কেদে বললাম)
- হুম। এবার আমাকে ছেড়ে দিয়ে
রেস্ট নাও ডাক্তার কি বলল শুনোনি?
- ওইই কুত্তা হুম মানে কি হা হুম মানে
কি? লাভ ইউ টু বলবি নাকি..... (রেগে বললাম)
- লাভ ইউ লাভ ইউ লাভ ইউ টু!
এবার কান্না বন্ধ কর?
- এত্ত লাভ ইউ দিতে বলেছি তোমায়?
ভালো করে বলো?
- i love you too মিম!
- ইংলিশ বুঝি না বাংলায় বলো?
- আমি তোমাকে ভালোবাসি!
- টু টা কে বলবে শুনি হা।
- টু...!
- এবার হিন্দিতে বল আমাকে ভালোবাসো?
- মে তুমসে......(জানিনা তো কিভাবে বলল)
- জানোনা মানে। হিন্দি ছবিতে দেখোনাই
কিভাবে বলে সেভাবে বলো?
- আরে না পারলে কেমনে বলব!
- তাহলে আরবিতে বলো ভালোবাসি?
- ........???(রবি)
এভাবে বলছি দেখে রবি আমাকে
ছেড়ে দিলো আর আমি ধপাস করে
ওর বুক থেকে বেড এ পরে গেলাম। আর
সেটা দেখে আমার বান্ধবী পুজা হেসে
হেসে পাগলী হয়ে জাবে মনে হচ্ছে।
- ওই আমাকে তোর বুক থেকে সরালি ক্যান? (আমি একটু রেগে বললাম)
- আমার এই বুকে অন্য একজন
কে রাখব তাইব...।(রবি)
- কি বললি তুইইইইইই?
- মিম আস্তে কথা বল তুই অসুস্ত? (পুজা)
- আরে রাখ তোর অসুস্ত। শালা শুনলি না
কি বলল এই লুচু টা?
- হুম ঠিকই বলেছে। বাংলা, ইংরেজি,
, আরবি, হিন্দি সব ভাষায় লাভ ইউ বলতে হবে। (পুজা)
- হ্যা বলতে হবে?
- ওই তুমি পুরোপুরি সুস্থ না। এমন
করছ কেনো হুহহহ? (রবি)
- এই তোমরা হাসপাতালে কি শুরু
করলা! (ডাক্তার)
- ওই ডাক্তার তুই চুপ থাক। (আমি
ডাক্তার কে ধমক দিয়ে বললাম)
ডাক্তার আমার কথা শুনে হা করে
আছে । আর মনে মনে ভাবছে এ মেয়ে
না কি রে বাবা। হাসপাতালে এখন ও
অসুস্থ আর কি শুরু করেছে।
- এই লুচু তুই এখন আমাকে আবার
বুকে জরিয়ে ধরবি? (অনেক রেগে বললাম)
- আচ্ছা আগে সুস্থ হও। সব সময়
বুকে জরিয়ে রাখব!!
- সুস্থ হই মানে। তুমি জরিয়ে ধরলে
সুস্থ হবো! NoW sTaRt......
তারপর আমাকে ও জরিয়ে ধরল.
Awesome feelings কাজ করছে ........
এই ভাই ও বোনেরা আপনারা
অনেক দেখেছেন এখন চোখ টা বন্ধ
করুন একটু আদর করি হুহহহহহ।
.
, >> সমাপ্ত <<
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url