গল্পঃ হুজুর স্বামি । লেখক- উদাসি মন

হুজুর ছেলেটার বিয়ের বয়স হল এবং বিয়ে করলেন এক মেয়েকে।
বাসর রাতে ঘরে প্রবেশ করেই স্ত্রীকে সালাম দিলেন।
কথা হচ্ছে তাদের মধ্যে। স্বামী বলতেছেন, দেখ সোনা এখন থেকে তুমি আমার আর আমি তোমার। এভাবে অনেক্ষণ কথা বলার পর।
এবার স্বামী বলতেছেন। আমার কিছু আদেশ তোমার মেনে চলতে হবেঃ-
স্ত্রীঃ-হ্যা বলুন মেনে চলবো।
🌹স্বামীর আদেশ
১→যখন আযান শুনতে পাবে সাথে সাথে নামায আদায় করে নিবে।
২→রাতে তাহাজ্জুদ শেষে কোরআন পড়বে।
৩→তোমাকে যাতে পরপুরুষ না দেখতে পারে।
৪→পায়ের নোখ থেকে হাতের নোখ পর্যন্ত সম্পূর্ণ পর্দা করবে।
৫→পর্দাবিহীন কোথাও যেতে পারবে না।
৬→রংঢং করে এবং অশ্লীল পোষাক পরিধান করতে পারবে না।
৭→আমার অনুমতি ছাড়া কিছুই করতে পারবে না।
আরো অনেক কিছুই বললেন
এভাবে স্ত্রী ঠিক ৬-মাস চলতে থাকে। আর নিজেকে বড়ই অসুখি/অস্বাধীন মনে করতে থাকে।
পাশের বাড়ির এক ভাবি এসে কথা বলতে থাকে। কিরে......এতদিন ধরে তোদের বিবাহ হল, কিন্তু তুকে আজও দেখিনি।
স্ত্রী স্বামীর আদেশ নামা বললেন। পাশের মহিলা বলতে থাকে। এ কেমন কথা...
দেখ তো চেয়ে, আমরা স্বাধীন হয়ে চলছি, নিজের ইচ্ছায় পোষাক পড়ছি। নিজের ইচ্ছায় হাটে বাজারে যাচ্ছি, যেদিক মন চায় সেদিকেই যাচ্ছি, যেটা মনচায় সেটাই করছি।
🎄ব্যাস.................🎄
কুপরামর্শে পা দিলেন।
এবার স্বামী প্রত্যেক দিনের ন্যায়, তাহাজ্জুদের সময়
মাথায় হাত বুলিয়ে বললেন উঠু।
স্ত্রী এবার রেগে গিয়ে বললেন, একদিনও তোমার জন্য ঘুমাতে পারি না, আর কত কিছুই বলে ফেললেন।
স্বামী মনে কিছুই নেননি, কারণ মানুষের মন সবসময় এক থাকে না তাই।
তো সকাল হতেই জগরা শুরু,, তোমার সাথে বিবাহ হয়ে আমার জীবনটাই শেষ। জেল খানার মত লাগছে ইত্যাদি।
স্বামী বারে বার বলছেন, আমার দোষটা কোথায়? কি আমার অপরাধ?
স্ত্রীর একটাই সূর তার সংসার করবে না।
বিচ্ছিন্ন হয়ে গেল তাদের বন্ধন। মেয়ের অন্য জায়গায় বিবাহ হয়ে যায় এবং ছেলেও অন্য একটি মেয়েকে বিয়ে করে জীবন সঙ্গিনী করে নেয়।
ঠিক দু"বছর পর।
সেই হুজুরের সাথে পর্দা করা একটি মেয়ে, হাতে পায়ে মোজা পরা, হুজুরের হাত ধরে হাঁসা হাঁসি করছেন আর সাথে ফুটফুটে একটি ছেলে,,
দৃশ্যটা যেন এক জান্নাতি পরিবারের মত।
এই দৃশ্যটা দেখছেন হুজুরের আগের স্ত্রী।
যখন কলসে করে নদী থেকে পানি নিয়ে পথ দিয়ে
যাচ্ছিলেন,,
আর হাউ মাউ করে কাঁদতে লাগলেন, আজকে এই স্থানে আমার থাকার কথা ছিল।
আর আফসোস করছেন। আমার আগের স্বামী সকাল বেলা আমাকে জাগিয়ে তুলতেন নামায পড়ার জন্য, কোরআন পড়ার জন্য।
হাটে বাজারে যেতে দিতেন না, ঘরে বসে কোরআন পড়ার জন্য বলতেন।
মাথার চুল ঠেকে রাখতে বলতেন, পর্দা করে চলতে বলতেন। আমার সেবা করতেন হুজুর স্বামীটা।
আর বর্তমান স্বামী আমাকে সকাল বেলা ঘুম থেকে উঠিয়ে ক্ষেতে পাঠান কাজ করার জন্য।
বাজারে পাঠান সদায় কিনার জন্য। এখন চলতেছি অর্ধলঙ্গ হয়ে।
সারা দিন কাজ করতে করতে খাওয়া- দাওয়ারই সময় নেই।
কি করলাম হুজুর স্বামীটা কে হারিয়ে।
হায় আফসোস
হায় আফসোস
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url