Breaking News

পিচ্চি মেয়ের প্রেম | শেষ পর্ব | লেখাঃ- শাকিল

কিছু দূর যাওয়ার পর আমি যা দেখলাম তা দেখার মতো অবস্থায় আমি ছিলাম না।কিছুদুর যাওয়ার পর দেখি জান্নাত একটা ছেলের হাতে হাত  রেখে হেটে যাচ্ছে।এমন অবস্থা দেখে আমার সব স্বপ্ন ভেঙে চুরমার হয়ে গেল।মনে হচ্ছে যেন আমার পায়ের তলা থেকে মাটি সরে যাচ্ছে।আমি  সেখান থেকে মাথা নিচু করে চলে যাচ্ছি।এমন সময় মেয়েটা পিছন থেকে আমাকে ডাক দিল।আমি নিজেকে সামলে নিয়ে দাড়িয়ে পড়লাম।
.
— ওই শোন।(জান্নাত)
.
— হু।
.
— কোথায় গিয়েছিলে?
.
— কোচিংয়ে!
.
— এইটা কে জানো?
.
— তোমার বয়ফেন্ড বুঝি।
.
— আরে না এইটা আমার মামাতো ভাই কালকে আমাদের বাসায় এসেছে।তাই আজ একটু চারপাশটা ঘুরে দেখাইতেছি।
.
— ও তাই বলো।
.
— হু।
.
— হ্যালো ব্রো…আমি সাব্বির।(ছেলে)
.
— হ্যালো…আমি শাকিল।
.
— আচ্ছা এখন আমি আসি তাহলে।
.
— ওকে।
.
আমি সেখান থেকে চলে আসলাম।না এইটা আমি কি করছিলাম।একটা মিথ্যা অপবাদের জন্য মেয়েটাকে ভুল বুঝতে যাচ্ছিলাম।না আমি কাজটা একদমই ঠিক করছিলাম না।যাই হোক আমি সেখান থেকে বাসায় চলে আসলাম।বাসায় এসে শুয়ে শুয়ে টিভি দেখতে দেখতে ঘুমিয়ে পড়লাম। সন্ধায় ঘুম থেকে উঠে ফ্রেস হয়ে রাতের কোচিংয়ে চলে গেলাম।কোচিং শেষে বাসায় ফেলার জন্য রওনা হলাম।এমন সময় একটি মেয়ে কন্ঠে পিছনে ফিরে তাকালাম। তাকিয়ে দেখি জান্নাত দাড়িয়ে আছে।
.
— এই যে শুনছো?(জান্নাত)
.
— কি কিছু বলবে?(আমি)
.
— হু।
.
— কি বলবে বলো?
.
— তোমার ফোন নাম্বার টা দাও।
.
— কেন তুমি আমার নাম্বার
দিয়ে কি করবে?
.
— ফোন নাম্বার দিয়ে মানুষ কি করে?
তোমার সাথে কথা বলবো।
.
— কিন্তুু!
.
— কোন কিন্তুু নয়। দাও বলছি!
.
— আচ্ছা নাও….০১৭২৪-000000
.
— ধন্যবাদ।
.
— হু।
.
তারপর আমি সেখান থেকে বাসায় চলে আসলাম।বাসায় এসে ফ্রেস হয়ে রাতের খাবারটা খেয়ে নিয়ে রুমে গিয়ে শুয়ে পড়লাম।শুয়ে শুয়ে ভাবলাম একটু ফ্রেসবুক log in করি।ফেসবুকে ডুকতেই মনটা খারাপ হয়ে গেল।
কারণ পিচ্চি মেয়ের প্রেমে গল্পটার ৩য় পর্বটি কালকে পোষ্ট করেছিলাম।
কিন্তুু সবাই গল্পটি পড়েও তেমন বেশী লাইক কমেন্ট করেনি তাই।যাই হোক আমি শুয়ে শুয়ে সকলের মেসেজ এবং আমার পোষ্টে করা কমেন্টগুলো  রিপ্লে দিতাছি।এমন সময় আমার ফোনটা বেজে উঠলো।স্কিনে সুন্দর করে একটি অচেনা নাম্বার ভেসে উঠলো।আমি ফোনটা রিসিভ করলাম।
ফোনটা রিসিভ করতেই ওপাস থেকে একটা মেয়ে কন্ঠ ভেসে আসলো
.
— আসসালামু ওলাইকুম।(মেয়ে)
.
— ওলাইকুম আসসালাম।
কে বলছেন?
.
— বলুন তো আমি কে?
.
— আপনি পরিচয় দিবেন নাকি ফোনটা কেটে দেব?
.
— এই না….আমি জান্নাত।
.
— ও তুমি?
.
— হু।কি করছো এখন!
.
— শুয়ে শুয়ে তোমার কথায় ভাবছিলাম।
.
— তাই বুঝি।
.
— হু। তুমি কি করো?
.
— আমিও শুয়ে আছি।
.
এরকম আরো অনেক কথা হলো আমাদের মাঝে।তারপর থেকে আমি প্রতিদিন রাতে জান্নাতের সাথে ফোনে কথা বলতাম।একটি রাতও  জান্নাতের সাথে কথা না বলে থাকতে পারতাম না।জান্নাতের সাথে কথা বলতে বলতে কখন যে ওর প্রতি আমার ভাল লাগা থেকে ভালবাসা কাজ করতে শুরু করেছে বুঝতেই পারিনি।বেশ কয়েকদিন পর > প্রতিদিনের মতো আজও গার্লস স্কুলের সামনে দিয়ে কোচিং থেকে বাসায় ফিরতেছি।প্রতিদিন এখান দিয়ে যাওয়ার সময় জান্নাত গার্লস স্কুলের উপর তালায় দাড়িয়ে  থাকে।জান্নাত আমার দিকে আর আমি জান্নাতের দিকে তাকিয়ে থাকতে থাকতে চলে যায়।কিন্তুু আজ আর জান্নাতকে দেখলাম না।আমি গালর্স স্কুলের উপর তালার দিকে তাকিয়ে থাকতে থাকতে হেটে যাছি আর এইসব কথা ভাবছি হঠাৎ করেই একটি খাম্বার সাথে ধাক্কা খেলাম।আমি চিৎকার দিয়ে বললাম: ওই কোন হালারে রাস্তার ভিতর খাম্বা পুতে রাখছে।কিন্তুু একি এইটা তো কোন খাম্বা না এইটা তো দেখি জান্নাত তাই তো বলি খাম্বা এতো নরম মনে হলো কেন?
.
— ওই তুমি কি বললা?(জান্নাত)
.
— কই কিছু না তো!
.
— এখন কই যাও?
.
— কই আবার কোচিং থেকে বাসায় ফিরতেছি।
.
— চলো আজকে আমরা মুভি দেখতে যাবো।
.
— তুমি যাও আমি যাবো না।
.
— চলো না প্লিজ…প্লিজ..প্লিজ
.
— আচ্ছা চলো।
.
আমি আবার মেয়ে মানুষের কোন অনুরোধ ফেলতে পারি না।তাই আর জান্নাতকে না বলতে পারলাম না।তাছাড়া ওর সাথে মুভি দেখতে আমার ভালই লাগবে।যতই হোক ভালবাসার মানুষ বলে কথা।দুজনে হাটতে  হাটতে মেইন রাস্তায় চলে আসলাম।মেইন রাস্তা থেকে একটা সিএনজি নিয়ে সিরাজগঞ্জ শহরে চলে গেলাম।সেখান থেকে একটা রিক্সা নিয়ে মোসুমি সিনেমা হলে আসলাম।হলে এসে টিকিট কেটে দুজনে ভিতরে ঢুকলাম।টানা ২ ঘন্টা ৩০ মিনিট একটা মুভি দেখার পর দুজন হল থেকে বেরিয়ে আসলাম।হল থেকে বেড়িয়ে একটা রিক্সা নিয়ে পার্কে চলে গেলাম।পার্কে গিয়ে একটা বিলের ধারে দুজন বসলাম।আকাশটা সম্পর্ণ  নীল হয়ে আছে দক্ষিণ থেকে ঠান্ডা হাওয়া আসছে।সব মিলিয়ে অনেক ভাল লাগছিল জায়গাটা।আমি ভাবলাম এই সময়ে আমি আমার মনের না বলা কথাগুলো জান্নাতকে বলে দেব।যেমন ভাবা তেমন কাজ।আমি জান্নাতকে বললাম:
.
— জান্নাত তোমাকে একটা কথা
বলার ছিল।(আমি)
.
— কি কথা বলো?(জান্নাত)
.
— জান্নাত আমি…
.
— হু।
.
— আমি তোমাকে…
.
— তোমাকে কি?
.
— আমি তোমাকে ভালবাসি।I love u Jannat..
I reyaly love u….
.
হঠাৎ করেই মাথার পিছনে ভারি কোন কিছুর আঘাত অনুভব করলাম।
মাথায় হাত দিয়ে পিছনে তাকিয়ে দেখি সাকিব এবং তার লোকজন দাড়িয়ে আছে।
.
— কিরে বলেছিলাম না।তোকে আমি পড়ে দেখে নেবো।এবার দেখ কেমন
লাগে।
.
কথাটা বলেই সাকিব দ্বিতীয়বার আমার মাথায় আঘাত করলো।আমার দু চোখ ঝাপসা হয়ে আসলো।কিছু সময়ের জন্য সমস্থ পার্ক নিসতদ্ধ  হয়ে গেল।আমি অঙ্গান হয়ে মাটিতে পড়ে গেলাম।তার পর আমার আর কিছুই মনে নেই।
.
চোখ খুলতেই দেখি আমি হাসপাতালের ব্রেডে শুয়ে আছি।মাথায় হাত দিয়ে দেখলাম আমার মাথায় ব্যান্ডেস করা।আমার আব্বুু আম্মু বাহিরে  বসে আছে।আমার ডান পাশে তাকিয়ে দেখি জান্নাত আমার ব্রেডের পাশে
বসে আছে আর নিরবে দু চোখের অশ্রু ফেলছে।আমি ব্রেড থেকে উঠে  বসে আমার হাত দিয়ে জান্নাতের দুচোখের অশ্রু মুছে দিয়ে বলাম:
.
— ওই পাগলি আমার কিছুই হয়নি।
তুমি কাঁদছো কেন?(আমি)
.
— তোমাকে যে আমি অনেক ভালবাসি।
আজ যদি তোমার কিছু হয়ে যেতো
তবে আমি কি নিয়ে বাঁচতাম।(জান্নাত)
.
— মানে তুমিও আমাকে ভালবাসো।
.
— হু।সেই প্রথম দিন থেকেই আমি তোমাকে ভালবেসে আসছি।কিন্তুু কখনো বলার
সাহস হয়নি।আমাকে ছেড়ে কখনো চলে যাবে না তো।
.
— না রে পাগলি। আমি তোমার আছি
তোমারই থাকবো।
.
কথাটা বলার সাথে সাথে জান্নাত আমাকে জরিয়ে ধরে আরো জোরে
কাদতে শুরু করলো। আমিও জান্নাতকে শক্ত করে আমার বুকে জরিয়ে নিলাম।

 

                                                                                       <><> সমাপ্ত<><>

No comments

info.kroyhouse24@gmail.com