Breaking News

প্রবিত্র ভালোবাসা

খুব সাবধানে চোখের কোণা দিয়ে জারার দিকে তাকালাম আমি। সাবধানে তাকানোর কারণ এই মুহূর্তে পরিস্থিতি গরম। ডিরেক্ট চোখে চোখ রাখলে ভস্ম হয়ে যাবার সমূহ সম্ভাবনা আছে। শেষরক্ষা অবশ্য হলো না, চোখের

কোণা দিয়ে একটুখানি তাকিয়েই আমি দেখলাম সে সরাসরি আমার দিকে তাকিয়ে আছে। চোখে চোখ
পড়ামাত্র চিলের মতো গলায় বলে উঠলো, “শেষবারের মতো জিজ্ঞেস
করছি তিনদিনের মধ্যে বিয়ে করবি কি না?”
আমি খুব সাবধানে একটা ঢোঁক গিললাম। দারোগা মেয়ের চোখ এড়ানো গেলো না। সে সঙ্গে সঙ্গে ঝংকার দিয়ে বললো, “এখন তুমি ঢোঁক গিলবা, পিপাসায় তোমার গলা শুকায়ে আসবে, তোমার মাথা ঘুরাবে; পৃথিবীর যতো ঢং সব করবা এখন তুমিশালার শালা শুক্রবার তো আমার বিয়েটা ফাইনাল হয়েই যাবে, বিয়েতে গিয়ে আরাম করে বিরিয়ানি খাস তুই!”
ঘটনা হচ্ছে, আমার সত্যি সত্যিই পানির পিপাসা পেয়েছে। কিন্তু এখন পানি
খেতে গেলে এই মেয়ে সত্যি সত্যি আমাকে খুন করে ফেলবে। “এজিদের
বংশধর!”,বিড়বিড় করে কথাটা মুখ দিয়ে বের হতে না হতেই আবার ঝংকার, “যা বলবি স্পষ্ট করে বলবি। খবরদার বিড়বিড়
করবি না! খুন করে ফেলবো একদম!”
আমি লম্বা একটা শ্বাস নিলাম। তিনদিন কেন,তিনমাসের মধ্যেও আমার পক্ষে জারাকে বিয়ে করা সম্ভব না। পড়াশুনা শেষ করে মা বাবার বেকার
সন্তান হয়ে এখনো বাপের ঘাড়েই খাচ্ছি। কবে চাকরিবাকরি পাবো
কোন ঠিকঠিকানা নেই। বিয়ে করলে বউকে খাওয়াবো কী? জারার বাবার পছন্দ করা পাত্র আছে, তার সাথে এই শুক্রবার সম্ভবত কথা পাকাপাকি হয়ে যাবে। এইজন্য তার মাথা গরম,এমনিতে খুব ভাল মেয়ে। ভাল মেয়েরা ভাল
ছেলে ডিজার্ভ করে। আমার মতো চালচুলা ছাড়া ছেলের কাছে মেয়ে দেয়ার প্রশ্নই আসে না! জারা ভ্রূ কুঁচকে সোজা তাকিয়ে আছে। আমি বুঝতে পারছি মেয়েটা
কষ্ট পাচ্ছে। কষ্ট কি আমার কম হচ্ছে? চারবছরের প্রেম, এতো সহজে প্রেমিকার বিয়ে হয়ে যেতে
দেখবো? বিয়েতে একটা কমদামী শাড়ি উপহার নিয়ে যাবো, প্যাকেটে লেখা থাকবে, জারাকে বিবাহের অফুরান শুভেচ্ছায় – জয়’ , টেবিলের এককোণায় বসে
তিনপ্লেট কাচ্চি খাবো, দুইবার চেয়ে কাবাব নিবো, এরপরে বোরহানি খেয়ে বলবো, “আলহামদুলিল্লাহ! হে আল্লাহ, তুমি এদের সুখে রেখো!”? এতো সোজা ? ব্যাচমেটের সাথে প্রেম করার মজা হাড়ে হাড়ে টের
পাচ্ছি। আমার নাই দুইপয়সা রোজগার
আর তার বাবা উঠেপড়ে লেগেছে বিয়ের জন্য!
এইভাবে বসে থাকার কোন মানে হয় না। একটা কিছু বলতেই হবে। আমি পুরো
ব্যাপারটা গোড়া থেকে ভাবলাম। একদিকে রইলো আমার চারবছরের প্রেম,
আমার সবকিছু, আমার দুনিয়া; আরেকদিকে আমি বেকার ,বাবা কয়দিন পরে রিটায়ার করবে, ছোট
বোনটার জন্য বিয়ের সম্বন্ধ আসা শুরু হয়েছে, টানাটানির সংসার। বড় একটা শ্বাস নিয়ে বললাম, “নতুন করে কিছু
বলার নেই। তুমি সবটুকুই জানো। পায়ের নিচে শক্ত মাটি না থাকলে কীভাবে তোমাকে নিয়ে দাঁড়াবো
বাবার সামনে? “
জারা স্থির দৃষ্টিতে কিছুক্ষণ তাকিয়ে রইলো আমার দিকে। আশ্চর্যরকম ঠাণ্ডা
গলায় বললো, “এটা তোমার শেষ কথা?”
আমি বললাম, “আমার সত্যি কিছু করার নাই। আমাকে মাফ করো।“ বলতে গিয়ে দমবন্ধ হয়ে আসছিলো আমার। জারা ঠাস করে আমার গালে একটা চড় বসিয়ে দিলো। ভাল করেছে চড় মেরেছে। ও আমাকে খুন করে ফেললেও ওর কোন অপরাধ হতো না। আমি শুধু বললাম, “জারা শোনো……”
“খবরদার,আর একটা কথাও শুনতে চাই না
আমি!”
আমি দেখলাম, মেয়েটার মুখ লাল হয়ে গেছে। প্রাণপণে কান্না চাপছে সে। দারোগা মেয়েটাকে এইভাবে একটুও মানায় না একটুও না! কিন্তু আজকে সত্যিই আমার কিছু করার
নেই। দুইদিন পার হয়ে গেছে। জারাকে ফোনকরার সাহসটুকুও হয়নি আমার। কী বলবো ফোনে? কালকে সম্ভবত বিয়ের তারিখ
ফাইনাল হয়ে যাবে। জারা আমাকে বলেছিল এর আগে ওকে বিয়ে করে
নিয়ে আসতে। ওর বাসা থেকে আমাকে মেনে নেবে না। মেয়েটা আমার জন্য ঘর ছাড়তে চেয়েছিল।
আমার চোখ জ্বালা করছে। ড্রয়িংরুম থেকে বাবার গলা ভেসে আসছে।
নাস্তার তাড়া দিচ্ছেন খেয়ে
অফিসে বের হবেন। পাশ করার পর থেকে আমি পারত পক্ষে বাবার
সামনে পড়ি না আজকে কী মনে করে গেলাম।
“বাবা!”
বাবা আমাকে দেখে খুব অবাক হলেন। পেপারটা নামিয়ে রেখে বললেন,
“কী ব্যাপার? কিছু লাগবে নাকি?”
“না,এমনিই।“
“চাকরির জন্য চেষ্টা কিছু করছো নাকি গায়ে বাতাস লাগিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছো?”
“চেষ্টা করছি বাবা।“
“চেষ্টা তো বছরখানেক ধরেই করছো! কোন ফল তো দেখতে পাচ্ছি না!”
আমি বলার মতো কিছু খুঁজে না পেয়ে মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে রইলাম। এই
মুহূর্তে জারা সংক্রান্ত কোন কথা বলার প্রশ্নই আসে না।
বাবার অফিসের সময় হয়ে গেছে। আমাকে পাশ কাটিয়ে বের হয়ে
গেলেন। আমি রুমে ফিরে গিয়ে দরজা বন্ধ করে
কিছুক্ষণ শুয়ে রইলাম। আকাশ পাতাল ভাবছি, কোথাও কোন কুলকিনারা
নেই। মোবাইলটা নিয়ে জারাকে ডায়াল করলাম। গত দুইদিন আমার
দারোগা প্রেমিকার কথা শোনা হয়নি; ভেতরটা শুকিয়ে আছে আমার। ওর
বিয়ে হয়ে গেলে থাকবো কেমন করে? ওর বর নিশ্চয়ই নিয়ম করে আমার সাথে ওকে কথা বলতে দেবে না! গুণে গুণে ছেচল্লিশবার ফোন দিলাম।
সে ফোন ধরলো না। আমার আবার দমবন্ধ হয়ে আসছে। এই মেয়েকে ছেড়ে আমি থাকতে পারবো না। হিয়াকে ডেকে বললাম এককাপ চা দিতে।সে আমার চেহারা দেখে
বললো, ”ভাইয়া,তোমার কি কিছু হয়েছে?”
আমি কষ্ট করে হেসে বললাম ”কিছু হয় নাই রে।একটু টেনশনে আছি। যা চা
নিয়ে আয়।“
চা খেতে খেতে মাথা ঠাণ্ডা করে সবকিছু ভাবলাম। কয়েকজন বন্ধুবান্ধবকে
ফোন দিয়ে রেডি থাকতে বললাম। এক বড়ভাই কিছু টাকা ধার দেবেন বলেছেন। বাসা থেকে বের হয়ে
টাকাগুলি নিয়েই সোজা জারার বাসার নিচে। মেসেজ পাঠালাম
“তোমার বাসার নিচে দাঁড়িয়ে আছি। বের হও। শাড়ি পরে বের হবা।“
দুই মিনিটের মধ্যে বারান্দায় উঁকি দিলো জারার হতভম্ব মুখ। রাত এগারোটায় বাসার কলিংবেল
বাজানোর আগে আরেকবার দোয়া ইউনূস পড়ে নিলাম। জারা আমাকে ধমক দিয়ে বললো, “বাসায় আমাকে নেয়ার ইচ্ছা আছে না নাই?”
জারাকে বাসায় নেয়ার ইচ্ছা আমার পুরোপুরি আছে,খালি সাহসটা নেই।
সেই কথা এই মুহূর্তে তাকে বোঝানো যাবে না। আমি ফিসফিস করে তাকে
বললাম, “এখনি বেল বাজাবো। বাবা যদি আমাকে মার্ডার করে ফেলে
তাহলে তুমি সারাজীবন বিধবা হয়ে থেকো না কিন্তু! তোমার বাবার পছন্দ
করা ছেলেকে বিয়ে করে
ফেলো,কেমন?” জারা আরেকবার তার অগ্নিদৃষ্টি দিয়ে আমাকে ভষ্ম করে
ফেলার চেষ্টা করলো,আমি পাত্তা দিলাম না। বেকার ছেলে বিয়ে করে গভীর রাতে বউ নিয়ে বাসায় উঠেছে, এই অপরাধে বাবা একটু পর আমাকে
কোরবানীও করে দিতে পারেন। সমুদ্রে শয়ন যার,শিশিরে কী ভয় তার?
সাধারণত আমাদের বাসার দরজা খোলার কাজটা করে মা অথবা হিয়া। রাত বেশি হবার কারণেই সম্ভবত দরজা খুলে দিলেন বাবা এবং বলা বাহুল্য, দরজা খুলে তিনি হতভম্ব
হয়ে তাকিয়ে রইলেন আমাদের দিকে। কিছু একটা সমস্যা হয়েছে আন্দাজ করে কিছুক্ষণের মধ্যে মা আর হিয়াও চলে
এলো। মা অত্যন্ত অবাক এবং ভীত দৃষ্টিতে একবার আমার আর জারার দিকে, আরেকবার বাবার দিকে
তাকাচ্ছেন। হিয়ার চেহারা দেখে বুঝতে পারছি সে ভেতরে ভেতরে অত্যন্ত আনন্দিত কিন্তু এখন পরিস্থিতি বেগতিক বলে খুব কষ্ট করে তা চেপে
আছে। জারা আমার ঠিক পাশে দাঁড়িয়ে আছে বলে আমি তার মুখ দেখতে পাচ্ছি না। আর আমার মনে
হচ্ছে আমার বুকের ভেতর একশ একজন কামার হাতুড়ি পেটাচ্ছে। হঠাৎ করে
খুব অলুক্ষুনে একটা কথা মাথায় আসলো; দুম করে বাবা একটা হার্ট এটাক করে ফেলবে না তো?
এইভাবে ঠিক কতোক্ষণ কেটেছে আমি জানি না। হঠাৎ করেই জারা এগিয়ে
গিয়ে বাবার পা ছুঁয়ে বাবাকে সালাম করে ফেললো। বাবা কোন কথা না বলে তার মাথায় হাত
রাখলেন। মাকে সালাম করার পর মা আস্তে করে বললেন, “সারাজীবন সুখে
থেকো মা।“জারা মাথা নিচু করে বললো, “বাবা,মা, আমি জানি কাজটা আমাদের করা উচিত হয়নি। কিন্তু আপনারা বিশ্বাস করেন, আর একদিন দেরি করলেই আমার বাবা আমাকে
আরেক জায়গায় বিয়ে দিয়ে দিতো। আর জয়ের সত্যি কোন দোষ নেই।
সে যা করেছে,আমার জন্যই করেছে। আমরা একজন আরেকজনকে গত চারবছর ধরে ভালবাসি। আমার পক্ষে সত্যি সম্ভব ছিল না আরেকজনের সাথে সংসার করা।“
বাবা চুপ করে জারার দিকে তাকিয়ে আছেন। আমি ভয়ে মাথা তুলছি না।
জারা আবার বলা শুরু করেছে, “বাবা, আমি তো আপনার আরেকটা মেয়ে।
সন্তান ভুল করতে পারে, আপনি বাবা হয়ে আমাদেরকে ক্ষমা না করলে আমরা কোথায় যাবো? বিশ্বাস করেন
বাবা, জয় শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত
ভেবেছে কীভাবে আপনাকে ফেস করবে। আমাকেও সে ফিরিয়ে দিয়েছিল।শেষপর্যন্ত সে নিজেও
থাকতে পারে নাই। আপনি কী আমাদের দুজনকে এবারের মতো মাফ
করে দেবেন? “
জারা কাঁদছে। এই মেয়েকে কান্নায় মানায় না,এখন তাকে কান্নাও মানিয়ে গেছে। কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে
থাকার এক পর্যায়ে দেখতে পেলাম, বাবা জারা কে জড়িয়ে ধরেছেন,তার
চোখের পানি মুছে দিচ্ছেন এবং ধরা গলায় বলছেন, “আরে! এই মেয়ে কেন
কাঁদে?“
মায়ের দিকে তাকিয়ে বাবা
বললেন,”আমার গাধা পুত্র এমন লক্ষি মেয়ে কোথায় খুঁজে পেলো? তাকে জিজ্ঞেস করো?”
মা এতোক্ষণে সাহস ফিরে
পেয়েছেন। তিনি হিয়াকে বললেন,
“ভেতরে আয়। বউ বরণের আয়োজন করতে হবে।ছেলের মাথায় এখনো বুদ্ধি হলো না। কোনোকিছু রেডি করা নাই কিছু না,এইভাবে মানুষ বিয়ে করে? এতো
রাতে কীভাবে কী করি?” চোখেমুখে উপচে পড়া খুশি নিয়ে হিয়া তার ভাইয়া ভাবীকে দেখছে,এই মুহূর্তে
তার ভেতরে যাবার ইচ্ছা আছে বলে মনে হচ্ছে না।
বাবা জারাকে রেখে আমার দিকে এগিয়ে এলেন। গম্ভীর স্বরে বললেন, “বিয়ে করে নতুন বউ নিয়ে উঠেছো।
আদব লেহাজ তো কিছু শেখো নাই! মেয়েটা কী সুন্দর পায়ে হাত দিয়ে
সালাম করলো, আর তুমি ভূতের মতো কোণায় দাঁড়িয়ে আছো! গাধা!”
নতুন বউয়ের সামনে এইভাবে বকা খেতে আমার একটুও খারাপ লাগছে
না। আমি মাথা চুলকে বাবাকে সালাম করার জন্য নিচু হতেই বাবা আমাকে বুকে জড়িয়ে ধরলেন। আমার চোখে পানি চলে আসলো। কতোদিন
পর এতো নির্ভাবনায় বাবাকে জড়িয়ে ধরেছি!
বাবা ফিসফিস করে আমাকে বললেন, “ভেবো না তোমার বউকে আমি
আজীবন বসায়ে বসায়ে খাওয়াবো। দুই চারদিন ঘোরাঘুরি করো,এরপর দয়া করে উঠেপড়ে লাগো চাকরির জন্য।“ আমি
চোখভর্তি পানি নিয়ে সুবোধ ছেলের মতো মাথা নাড়লাম। নতুন বউকে ডালভাত আমার মা
খাওয়াবেন না তাই তিনি হইচই করে রান্নাবান্নার আয়োজন করছেন,একটু
পরপর রান্নাঘর থেকে শব্দ আসছে, “এটা নাই! ওইটা কোথায় গেলো?” সেইসব
জিনিস আনার জন্য পাশের ফ্ল্যাটে যেতে হচ্ছে।সেই বাসার মানুষজন ঘুম
ভেঙে আমাদের বাসায় চলে এসেছে । হিয়া তার সব বন্ধুবান্ধবকে ঘুম থেকে উঠিয়ে তার নতুন ভাবীর গল্প বলে ফেলেছে। পাশের ফ্ল্যাটের রাজীবের একটা ক্যামেরা আছে, সে সেই ক্যামেরা নিয়ে এসে ক্লিক
ক্লিক করে ছবি তুলছে। বাবা একটু পরপর ডাকদিচ্ছেন ”কই,হলো? মেয়েটার ক্ষুধা লেগেছে তো,নাকি?” জারা লজ্জা লজ্জা মুখে বাবাকে বলছে,
“বাবা,আপনি একটু রেস্ট নেন,আমার একদম ক্ষুধা লাগে নাই।“ এই মেয়েটাকে লজ্জাও এতো সুন্দরভাবে
মানিয়ে যায়! হঠাৎ করেই আমার মনে হলো,পুরোটা
সময় ধরে আমি অসম্ভব সুন্দর একটা স্বপ্ন দেখছি। নিজেকে নিজে চিমটি
কাটলে পুরো ব্যাপারটা পরিষ্কার হয়ে যেতো, চিমটি কাটতে ইচ্ছা হচ্ছে না।এই মুহূর্তে পাশে বসে থাকা
জারা কে দেখতে বড় বেশি ভাল লাগছে। আজকে তাকে আড়চোখে দেখতে হচ্ছে না। আমি জানি আজকে তার দিকে আমি ভ্যাবলার মতো যতোক্ষণ খুশি তাকিয়ে থাকতে
পারি। আজকে আমার দারোগা বউ আমাকে বকবে না।

No comments

info.kroyhouse24@gmail.com