Breaking News

অন্যরকম তুই | পর্বঃ -১২

আজ অহনার মনটা খুব খারাপ। তাই অহনা কলেজ গেল না। অহনার মনটা ভীষণ অস্থির লাগছে।

অহনা রাতে ভালো করে ঘুমাতেও পারে নি।

তাই অহনা খুব সকালে উঠে রাস্তায় হাঁটাহাঁটি করতে বেরিয়ে পড়ে।

এত সকালে রাস্তায় কোনো লোকজন নেই। সবাই এখন ঘুমাতে ব্যস্ত।

অহনা আকাশের দিকে তাকাতেই দেখে আকাশটা মেঘাছন্ন।

মনে হয় কিছুক্ষণ পরেই বৃষ্টি নামবে। অহনা মনে মনে বলতে লাগল

–মনে তো হচ্ছে একটু পরেই বৃষ্টি নামবে। কিন্তুু আমি যে ছাতা আনালাম না!

বৃষ্টিতে ভিজলে তো আমার শরীরে জ্বর চলে আসবে! কিন্তুু তবুও বৃষ্টিতে ভিজলে মন্দ হয় না।

বৃষ্টিতে ভিজলে মনটা ভালোই লাগবে। একটু জ্বর হলে কিছুই হবে না।

অহনা রাস্তায় হাঁটতে হাঁটতে বাসা থেকে অনেকটা দূরত্বে চলে এসেছে।

ইতিমধ্যে আকাশ থেকে টুপটুপ করে পানির ফোঁটা পড়তে লাগল।

বৃষ্টি নেমে গেছে। অহনা বৃষ্টিতে ভিজেই রাস্তায় আনমনে হাঁটছে।

.

হাঁটতে হাঁটতে হঠাৎই অহনা তার হাতে কারও স্পর্শ অনুভব করল।

অহনা পেছনে তাকানোর আগেই অহনার হাতটা কেউ খুব জোরে টান দিল

যার ফলে অহনা সেই ব্যক্তির বুকের উপর হুমড়ি খেয়ে পড়ল।

হঠাৎই অহনার সাথে এমন হওয়ায় অহনা ভয় কেঁপে উঠল।

অহনা উপরে তাকিয়েই অনন্তকে দেখল। অনন্তকে দেখে অহনার

হৃদপিন্ডে ঢোল পেটানোর মতো ধুকপুকানি হতে থাকে।

অহনার শ্বাস প্রশ্বাস ঘন হতে থাকে। অহনা অনন্তের কাছ

থেকে নিজেকে ছাড়াতে গেলে অনন্ত শক্ত করে অহনাকে জড়িয়ে ধরল।

বৃষ্টিতে দুজনেই ভিজে একাকার। অহনা খুব রেগে অনন্তকে উদ্দেশ্য করে বলল

–আমাকে ছাড়ুন আপনি! অসভ্য ছেলে একটা! মেয়ে দেখলেই জড়িয়ে ধরতে মন চায়!

আপনি এখানে কি করে এলেন? তারমানে কি এতক্ষণ আপনি আমার পিছু নিচ্ছিলেন?

কিন্তুু আমি তো আজ কলেজ যাই নি! তাহলে আপনি কি করে জানলেন

আমি কলেজ না গিয়ে আজ রাস্তায় হাঁটাহাঁটি করব?

.

অনন্ত অহনাকে আরও শক্ত করে জড়িয়ে ধরে অহনার কানের কাছে ফিসফিস করে বলতে লাগল

–তুই যেখানেই যাস না কেন আমি সবসময় তোর পাশে সেখানেই থাকব অহনা।

তুই পৃথিবীর যে কোনো প্রান্তে থাকলেও আমি তোকে খুঁজে বের করতে পারব।

আমার ভালোবাসার অনুভূতি এতটাও ঠুনকো নয় অহনা যে আমি

তোর চলার গন্তব্য খুঁজে বের করতে পারব না। এটা আমার কাছে অত্যন্ত সহজতর একটা কাজ।

তোকে যে বড্ড ভালোবাসি অহনা। তোর প্রতিটা নিঃশ্বাস আমি অনুভব করতে পারি।

.

অনন্তের এমন মায়া জরানো কন্ঠ অহনাকে খুব মাতাল করে দেয়।

কিন্তুু অহনা নিজের মনকে সামলে নিয়ে নিজেকে অনন্তের কাছ থেকে

ছাড়ানোর চেস্টা করতে করতে অনন্তকে উদ্দেশ্য করে বলল

–আপনার মনগড়া কথা আপনি অন্য কাউকে শুনাবেন কিন্তুু আমাকে এসব শুনাবেন না।

আমি আপনার এসব মনগড়া কথা কোনোদিনও বিশ্বাস করব না।

অনন্ত মুচকি হেসে অহনাকে বলল

–যখন আমি আর থাকব না তখন তুই বিশ্বাস করবি আমি তোকে কতটা ভালোবাসতাম।

কিন্তুু সেদিন আমি আর থাকব না অহনা।

অনন্তের কথায় অহনার মনটা কেঁপে উঠল।

অহনার চোখ দিয়ে মনের অজান্তেই জল গড়িয়ে পড়ল। অহনার ভীষণ রাগ হলো।

অহনা রেগে গিয়ে অনন্তের বুকের বাম পাশে খুব জোরে কামড়ে দিয়ে

অনন্তকে ধাক্কা দিয়ে নিজেকে ছাড়িয়ে নিল। ধাক্কা

খেয়ে অনন্ত কিছুটা পিছিয়ে গেলেও অনন্ত মুচকি হেসে দিল।

.

অহনা বুঝতে পারল না অনন্ত কেন হাসল ! অহনা মনে মনে বলতে লাগল

–স্যার এভাবে হাসলেন কেন! আমি স্যারকে কামড় দিলাম কোথায় উনি রেগে যাবেন তা না উল্টো হাসছেন!

অনন্ত মুচকি হেসে অহনাকে বলল
–এভাবে আমাকে কামড়ে দিয়ে কি তুই আমাকে তোর প্রতি আরো দূর্বল করে দিতে

চাইছিস অহনা? আমাকে কি তুই তোর মারাত্মক অনুভূতিতে মেরে ফেলতে চাইছিস?

তোর কামড়টা জ্বালা করলেও এই কামড়ের অনুভূতিটা খুবই মিস্টি রে অহনা।

আমি এমনিতেও তোর প্রতি পাগল আবার তোর এই কামড়ে আমার মনটাকে

তোর প্রতি আরও মাতাল করে দিচ্ছে অহনা। তুই যেমন আমার কাছে অন্যরকম

ঠিক তেমন তোর এই কামড়ের অনুভূতিটাও আমার কাছে অন্যরকম।

অনন্তের কথায় অহনা বেশ লজ্জা পেল। অহনা অনন্তের দিকে তাকিয়ে দেখল

অনন্তের শার্টের তিনটা বোতাম খোলা এবং অনন্তের বুকের বামপাশটাও ভীষণ

লাল হয়ে আছে। বুকে কামড়ের দাগটাও স্পষ্ট বুঝা যাচ্ছে।

অনন্তকে বৃষ্টিতে ভেজা অবস্থায় অপরূপ লাগছে। যেকোনো মেয়েই অনন্তকে

এ অবস্থায় দেখে প্রেমে পড়ে যাবে৷
অহনা নিজেকে সামলে নিয়ে অন্যদিকে মুখ ঘুরিয়ে নিয়ে চোখ বন্ধ

করে নিল। অহনা মনে মনে বলতে লাগল

–ছিহ্ ছিহ্ ছিহ্ আমি স্যারকে এভাবে কামড়ে দিলাম! আবার স্যারের দিকে

এমন হাবলার মতো তাকিয়ে ছিলাম! স্যার কি ভাববে! স্যার তো মনে করবে

আমি মেয়ে হয়ে উনার দিকে কুনজরে তাকিয়ে ছিলাম।

ভাবলেই ব্যাপরটা কত হাস্যকর লাগছে।

.
–কি হলো অহনা তোর মুখটা এমন লাল হয়ে আছে কেন? দেখে তো মনে হচ্ছে লজ্জা

পেয়েছিস। কিন্তুু তোর লজ্জার কারণ তো আমি খুঁজে পাচ্ছি না৷ আজ

হোক বা কাল তুই তো আমার বউ হবি তাহলে এত লজ্জা পাওয়ার কি আছে?

তখন তো শুধু বুকে না পারলে আমার সব জায়গাতেই কামড়ে দিস আমি তোকে কিছু বলব না।

অনন্তের এমন কথা শুনে অহনা অনন্তের দিকে বড়বড় চোখ করে তাকাল৷ অহনা মনে মনে বলল

–এতো দেখছি পাক্কা লুচু! ব্যবহারের কি বাহার!

#চলবে.

No comments

info.kroyhouse24@gmail.com