Breaking News

জন্মগত অধিকার

জন্মটা ছিল ভীষম কষ্টের;চোখের ভাঁজে,হাতের নখেএনিমিক সাইন নিয়ে ব্যাথার যন্ত্রণায়ঘুম থেকে জেগে উঠি ঠিক তার দশমাস দশদিন পর!প্রচন্ড ঝড়ে সে রাতে ভেংগে পড়েছিল মস্ত আকাশ, বিধাতার দামী এই পৃথিবীতেছিল না কোথাও মাথা ঠেকার আশ্রয় ;জন্মতে বোধহয় আমার অধিকার ছিলনা?তাই সেচ্ছায় মৃত্যুই হবে আমার”জন্মগত অধিকার”।

ইমার্জেন্সির ফ্লোরে প্রচন্ড প্রসব বেদনায়পুরো হাসপাতাল জুড়ে প্রতিদ্ধনি হয়েছিল মায়ের মুখের চাপা কষ্ট! তারপর ছেঁড়া শাড়ীর আঁচল মুখে গুজেদিয়ে নিঃশব্দে মেকি হাঁসির আড়ালে কেঁদেছিলেন হাউমাউ করে,মাইরি কেউ শুনেনি অনেকগুলি কোষ ঝিল্লী পেরিয়ে নাড়ীছেড়া নবজাতকের কান্না! ইমার্জেন্সির করিডোরে টিকেট কাউন্টারের দরজার নিচ দিয়ে প্রবাহমানতাজা রক্তের গোলা বয়েছিল ;পুরো শহর জুড়ে যেন বাধ ভেংগে যায়! ব্যাথার শহরে ক্রন্দনরত হতবিহ্বল মা’য়ের চোখে আনন্দ অশ্রুকণায় যেন প্লাবিত হয়েছিল ইটের নগরী।

অতঃপর প্লাসেন্টা হতে বেরিয়ে এসেএকফোঁটাও কাঁদিনি আমি!বোবাকান্নার শব্দেরা লুকিয়েছিল লেবার রুমের শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত চার দেয়ালের ঠিক ঈশান কোণে;চোখ খুলেই অনেকটা নিজেকেভিন্ন গ্রহের প্রাণী মনে হলো!তারপর নিশ্বাসে নিয়ে বিষাক্ত কালো ধোঁয়া বেঁচে থাকার অযোগ্য এই ধরিত্রীর বুকে প্রচন্ড শ্বাসকষ্ট হচ্ছিল, ভেবেছিলাম তার চাইতে বরং’এমিনোটিক ফ্লুইড’এ ভালোবেসে ৷

স্নিগ্ধতায় বড্ড আগলে রেখেছিলেন জন্মদাত্রী!প্রচন্ড ক্ষুধা অনুভব করছিলাম যখন-মা কোলে নিয়ে স্তনের বোটা মুখে পুরে দিয়ে খুব আদরে ছোট্ট কাঁথামুড়ি দিয়ে গুজে কোলে নিয়ে তুলে শালদুধ পান করালেন! তারপর..চোখের পাপড়ি ফেলতে না ফেলতে কোথায় যেন হারিয়ে গেলো -শৈশবের ডাংগুলি,কুথকুথ কিংবা কাদায় মাখামাখি?

মায়ের সাথে এখন আর মেলাতে গেলে বায়না ধরিনা অটা কিনবো সেটা কিনবো! মেলার মাঠে মায়ের আঁচল টেনে একটা প্লাস্টিকের গাড়ি কিনে দেবার বায়নাগুলোও যেন আর বেঁচে নেই; বেঁচে আছে এক আকাশ উপেক্ষা আরশ্মশানালয়ে পড়ে আছে ভাংগা হাঁড়িটা

! আমার জন্মতে বোধহয় ছিলোনা আমার কোনো অধিকার?অবশেষে একরাশ অবজ্ঞা;কাউকে ভালোবেসে তাকে কাছে না- পাবার তীব্র ক্রন্দনে শহরের রাজপথ মুখরিত হয়ে উঠে স্লোগানে!ইটের নগরীতে চিৎকার করে বলে উঠি আমি…”সেচ্ছায় মৃত্যুই আমার জন্মগত অধিকার”।।||

No comments

info.kroyhouse24@gmail.com