সিনিয়র বউ | পর্ব -৭



আম্মুঃ তোর কি এমন দরকার যে এই সন্ধ্যাবেলায় বাহিরে যেতে হচ্ছে।। আর তানিয়া যে তোকে যেতে না করছে তাহলে তুই ওর কথা শুনছিস না কেন.?
তামিমঃ আমি উনার কথা শুনতে বাধ্য নই।।
আম্মুঃ বাধ্য না হলেও তোকে এখন থেকে তানিয়ার সব কথা শুনতে হবে কারণ আমার সব কাজ এখন তানিয়াই করবে।।

তামিমঃ তোমার সব কাজ উনি করবেন মানে.!
আম্মুঃ ও তুই বুঝবি না, সময় হলে ঠিকই বুঝবি এখন রুমের ভিতর বসে থাক কোথাও বের হবি না।।
তামিমঃ কিন্তু আম্মু আমার
আম্মুঃ তোকে আমি কি বলেছি শুনতে পাস নাই.? (রাগী চোখে তাকিয়ে)
তামিমঃ দুর আর কিছু না বলে রুমের ভিতরে এসে বিছানার উপর শুয়ে পরলাম।।
সন্ধ্যা ৭টা বাজে তখন তানিয়া এসে রুমে ঢুকলো হাতে একটা বই নিয়ে।।
আমি তখনও বিছানার উপরেই শুয়ে আছি।।
তানিয়াঃ এই উঠ আর এসে পড়তে বস।।
তামিমঃ কিহ.! পড়বো মানে.!
তানিয়াঃ পড়বে মানে পড়বে উঠ।।
তামিমঃ দুর যান তো অযথা ডিস্টার্ব করবেন না ভালো লাগছে না আমার।।
তানিয়াঃ এসব বললে হবে না উঠতে বলছি উঠ আর এসে পড়তে বস।।
তামিমঃ আপনি যাবেন এইখান থেকে.? (রাগী গলায়)
তানিয়াঃ বুঝেছি তুমি এইভাবে শুনবে না দাড়াও দেখাচ্ছি মজা বলেই রুম থেকে বেরিয়ে গেল।।
কিছুক্ষণ পর আবার তানিয়া রুমে আসলো সাথে আম্মুও আসলেন।।
আম্মুঃ তানিয়া তোকে কিছু বলেছে তুই শুনিস নি কেন.?
তামিমঃ উনার কথা আমি শুনতে পারবো না।। আর এখন কীসের পড়া উনি যে আমায় পড়তে বলছেন।।

আম্মুঃ এখন থেকে তানিয়া তোর ম্যাডাম তাই তোকে ওর সব কথা মেনে চলতে হবে।। ও তোকে যখনই পড়তে বলতে তুই তখনই পড়তে বসবি, এখন উঠ আর পড়তে বস।।
তামিমঃ কি বলছ আম্মু এইসব উনি আমার ম্যাডাম মানে.!
আম্মুঃ যা বলছি ঠিকই বলেছি এখন উঠ নাহলে কিন্তু আমি খুন্তিটা নিয়ে আসবো, তারপর তোর কি হাল করবো বুঝতেই পারছিস।।
তামিমঃ দুর ভাল্লাগেনা কিছু বলেই উঠে পরলাম।।
আম্মুঃ যা গিয়ে টেবিলে বস আর তানিয়া মামনি তুমি ওকে পড়াও আমি একটু আসছি (বলেই আম্মু রুম থেকে বেরিয়ে গেলেন)।।
তানিয়াঃ অজুর নিয়ত আর অজুর দোয়া এইসব পার.?
তামিমঃ নাহ

তানিয়াঃ তাহলে অজু কীভাবে করতে হয় আর নামায কীভাবে পড়তে হয় এইসবও জান না তাইনা.?
তামিমঃ আপনি না বললেন আমাকে পড়াবেন তাহলে এইসব জিজ্ঞেস করছেন কেন.?
তানিয়াঃ তোমাকে আজ এইসব ই পড়াবো তাই।।
তামিমঃ মানে.?
তানিয়াঃ এই নাও এইখানে অজুর নিয়ত আর অজুর দোয়া দেওয়া আছে আগে এইসব শিখ।।
তামিমঃ এইসব কেন.?
তানিয়াঃ এখন থেকে তোমায় প্রতিদিন নামায পড়তে হবে, নামায না পড়লে তোমার খাওয়া বন্ধ, বাহিরে যাওয়াও বন্ধ।। দেখ এবার এইসব শিখবা কি না।।
তামিমঃ এ কোন ঝামেলায় পরলাম রে ভাই (মনে মনে)।। আচ্ছা শিখতেছি।।
তারপর তানিয়া যেগুলো শিখতে বললো ওইসব পড়তে শুরু করলাম।।
কিছুক্ষণ পর আবার আম্মু এসে রুমে ঢুকলেন হাতে একটা ঝালি বেত নিয়ে।।
আম্মুঃ এই নাও মামনি এইটা তোমার কাছে রাখ।।
ও যদি তোমার কথা না শুনে তাহলে এইটা দিয়ে ওকে পিটিয়ে ঠিক করিও।।
তামিমঃ এটা আমার নিজের মা নাকি সৎ মা (মনে মনে)।।
তানিয়াঃ আচ্ছা আম্মু আর একটা কথা (ওইটা আম্মুর কানে কানে বলেছে আমি শুনতে পাইনি)।।
আম্মুঃ হুম ঠিক বলেছ, এই তোর মোবাইল আর মানিব্যাগ কোথায় ওগুলো দে।।
তামিমঃ কেন.?

আম্মুঃ দিতে বলছি দে কেন কেন করবি না বলে দিলাম নাহলে এইটা (ঝালি বেত) দিয়ে এখন তোকে পিটানি শুরু করবো বলে দিলাম (রাগী কন্ঠে)।।
তামিমঃ এই নাও (ভয়ে ভয়ে পকেট থেকে মোবাইল আর মানিব্যাগটা বের করে দিয়ে দিলাম)।।
আম্মুঃ এই নাও মামনি এগুলো রাখ তোমার কাছে।। আমি এখন যাই আর কোনো সমস্যা হলে আমায় ডাক দিও কিন্তু (বলেই আম্মু রুম থেকে চলে গেলেন)।।
তামিমঃ আপনি আম্মুর কানে কানে কি বলেছেন.? আর আমার মোবাইল আর মানিব্যাগ আপনি নিলেন কেন.?

তানিয়াঃ সময় হলেই বুঝবা এখন যা পড়তে বলেছি তা পড়।।
তামিমঃ না আগে বলেন।।
তানিয়াঃ কোনো কথা না বলে ঝালি বেতটা দিয়ে হাতে মেরে দিল।। পড়তে বলছি পড় নাহলে কিন্তু আরও মাইর পরবে।।
তামিমঃ এতো জোরে মারেন কেন.? এই না না আর মারবেন না পড়ছি (বাধ্য হয়ে আবার পড়তে শুরু করলাম)।।
প্রায় ১০ মিনিট পড়ার পর তানিয়া হুট করে আমার সামনে থেকে ওই বইটা নিয়ে নিল।।
তানিয়াঃ তো বল কি কি শিখলে।।
তামিমঃ যা পড়তে বলেছিলেন।।
তানিয়াঃ আচ্ছা প্রথমে অজুর নিয়তটা বল।।
তামিমঃ এটা তো শিখি নাই।।

তানিয়াঃ কিহহ তাহলে এতক্ষণ ধরে কি পড়লে.? (রাগী চোখে তাকিয়ে)
তামিমঃ আপনি তো শুধু পড়তে বলেছিলেন শিখতে কখন বললেন.?
তানিয়াঃ কিহ আমি শিখতে বলি নাই তাইনা.? আচ্ছা ঠিক আছে এবারের মতো মাফ করে দিলাম।। এই নাও এগুলো আবার পড় এখন কিন্তু এগুলো শিখে আমায় বলতে হবে।। যদি শিখতে না পার তাহলে কিন্তু শাস্তি আছে।।

তামিমঃ কি শাস্তি.?
তানিয়াঃ এখন বলবো না, শিখতে না পারলে তখন শাস্তি দিব।। নাও শুরু কর।।
তামিমঃ কিছু না বলে আবার ওগুলো পড়তে লাগলাম শিখার নিয়তে।। কিন্তু মাথায় এইসব কিছুতেই ঢুকছে না, কীভাবে শিখবো.?
প্রায় ১০ মিনিট পর তানিয়া আবার আমার সামনে থেকে বইটা নিয়ে নিল আর বললো…
তানিয়াঃ হুম এবার নিয়ত টা বল।।
তামিমঃ অজুর নিয়ত, এম আসলে ঠিক মনে পরছে না।।
তানিয়াঃ কিহ মনে পড়ছে না.! চেয়ার থেকে উঠ।।
তামিমঃ কেন.?

তানিয়াঃ এই সবসময় শুধু কেন কেন কর কেন হে.? এরপর থেকে যদি আর কখনো আমার কথার পালটা প্রশ্ন কর তাহলে কিন্তু খারাপ হবে বলে দিলাম।।
তামিমঃ সরি (বলেই উঠে দাড়ালাম)।।
তানিয়াঃ এখন কানে ধরে ১০ বার ওঠবস কর।।
তামিমঃ কিহহ অসম্ভব আমি এটা পারবো না, কি পেয়েছেন কি আ
তানিয়াঃ আচ্ছা ২০ বার কর, নাহলে এই ঝালি বেতের বারি খেতে হবে ২০ বার।।
তামিমঃ এই আপনি আমার সাথে এমন করছেন কেন.? আমি না আপনার স্বা
তানিয়াঃ এটা অন্য সময় কিন্তু পড়াশোনার সময় তুমি আমার ছাত্র আর আমি তোমার ম্যাডাম।। সো এখন আমি যা যা বলবো তোমায় তাই করতে হবে নাহলে তোমার মোবাইল আর মানিব্যাগটা তো আছেই।।

তামিমঃ আমি এতোবার পারবো না সত্যি আমার কোমড় ব্যাথা করছে।।
তানিয়াঃ আচ্ছা তাহলে ৩০ বার কর।।
তামিমঃ এই আপনি ২০ থেকে ৩০ এ নিলেন কেন.?
তানিয়াঃ আচ্ছা তাহলে ৪০ বার।।
তামিমঃ এই আর বাড়াবেন না প্লিজ আমি করছি তো।।
তানিয়াঃ তাহলে শুরু কর।।
তামিমঃ আর কোনো উপায় না পেয়ে কান ধরে ওঠবস শুরু করলাম (সবাই কিছুক্ষণের জন্য চোখটা বন্ধ করে রাখেন, আমি বললে আবার খুলিয়েন একটা সারপ্রাইজ আছে)।।
১০ বার ওঠবস করার পর তানিয়া আমায় থামতে বলে আবার চেয়ারে এসে বসতে বললো।। বুঝেছি আমার প্রতি আমার সিনিয়র বউয়ের একটু মায়া হয়েছে।।
তানিয়াঃ আমি কিন্তু আগেও অনেক ছাত্র পড়িয়েছি আর ছাত্ররা পড়া না পারলে তাদের মুরগিও বানিয়েছি, সো এবার যেগুলো পড়তে দিয়েছি সেগুলো যেন শিখা হয়, পড় এবার।।
তামিমঃ এ কেমন মেয়েরে ভাই নিজের স্বামীকে মুরগি বানানোর ভয় দেখাচ্ছে (মনে মনে)।। নাহ এবার একটু মন দিয়ে শিখার চেষ্টা করি নাহলে পরেরবার আমার কপালে নিশ্চিত অনেক বড় শাস্তি আছে।।
তারপর আবার ১০ মিনিট মন দিয়ে পড়লাম আর অজুর নিয়ত আর অজুর দোয়া পুরোপুরি ভাবে শিখে ফেললাম।। এবার তানিয়ার কাছে পড়া দেওয়ার পালা।।
তানিয়াঃ কি শিখা হয়েছে.?

তামিমঃ হুম
তানিয়াঃ আচ্ছা তো অজুর নিয়ত বল আগে (বইটা নিজের কাছে নিয়ে)।।
তামিমঃ অজুর নিয়ত বললাম।।
তানিয়াঃ অজুর দোয়া বল এবার।।
তামিমঃ অজুর দোয়া বললাম।।
তানিয়াঃ কিছুক্ষণ আমার দিকে রাগী চোখে তাকিয়ে বসা থেকে উঠে আমার কাছে আসতে লাগলো।। আমিও ভয় পেয়ে চোখ বন্ধ করে ফেললাম।। কিন্তু তানিয়া আমায় অবাক করে দিয়ে আমার গালে একটা কিস করে বললো, এইতো শিখে ফেলেছ, চল এবার তোমাকে অজু করার পদ্ধতি শিখিয়ে দেই।।
তারপর তানিয়া আমায় অজু করার পদ্ধতি শিখাল, আমিও মোটামুটি অজু করার পদ্ধতিটা বুঝে নিলাম।। কেন জানি মনের মধ্যে খুব ভালো লাগা কাজ করছিল অজু করার পদ্ধতি শিখার সময়, বাট কারণটা বলতে পারবো না।। ওইদিনের মতো তানিয়া আমায় ছুটি দিয়ে দিল।।
রাতেরবেলা খাওয়ার সময় হলে আম্মু এসে আমাদের খাওয়ার জন্য ডেকে গেলেন।। দুজনে নিচে গিয়ে খাবার খেয়ে আবার উপরে চলে এলাম।। তানিয়া আসেনি আমি একা এসেছি।। কিছুক্ষণ পর তানিয়াও রুমে আসলো।।

তামিমঃ এই আমার মোবাইলটা দেন তো।।
তানিয়াঃ মোবাইল দেওয়া যাবে না এখন তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে পর সকালে আবার তাড়াতাড়ি উঠতে হবে।।
তামিমঃ সকালে তাড়াতাড়ি উঠতে হবে মানে.!
তানিয়াঃ কিছু না ঘুমাও এখন আর কোনো কথা বলবা না বলে দিলাম।।
তারপর তানিয়া একটা বালিশ নিয়ে সোফায় গিয়ে ঘুমিয়ে পরলো।।
বুঝলাম না আজ নিজ থেকে তানিয়া সোফায় গেল কেন।।
যাহ মোবাইলও দিল না এখন আমি কি করবো।।
মোবাইল নাই তাহলে আর জেগে কি করবো আমিও ঘুমিয়ে পরি।।
তারপর কম্বলটা গায়ে জড়িয়ে আমিও ঘুমিয়ে পরলাম।।
সকালবেলা…

ঘুমিয়ে আছি এমন সময় মনে হলো কেউ একজন আমার মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছে।।
আহ্ একদম নরম তুলতুলে হাত তার।।
হঠাৎ অনুভব করলাম আমার মুখের মধ্যে কারও গরম নিশ্বাস পরছে।।
তারপর হঠাৎ আমার ঠোঁটের সাথে একটা মিষ্টি জাতীয় নরম জিনিস লেগে যায়।।
আমি আর শ্বাস নিতে না পেরে চোখটা খুলে সামনে তাকিয়ে দেখি একটা পরীর মতো মেয়ে আমার ঠোঁটের সাথে তার ঠোঁট জোড়া এক করে রেখেছে।।

চলবে...
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url