কালো বউ । পর্ব -১৬



জ্যাকিঃ Who is she,,,,?
রুপকঃ She is my new personal assistant,,, Mis Tasmiya Islam Tomosa,,,
জ্যাকিঃ Nice to met you mis Tomosa,,,,
তমসাঃ Nice to met you too,,,,,(উনারা মিটিং শুরু করলো,,, আমি চুপচাপ বুঝার চেষ্টা করছি,,, আর মাঝে মাঝে স্যারের ফাইল এগিয়ে দিচ্ছি,,, মিটিং শেষ করে সবাই চলে গেলো,,,,)
রুপকঃ Let’s go,,,,, এখানে আমাদের কাজ কমপ্লিট,,,,
তমসাঃ স্যার বিকেলে আরো একটা মিটিং আছে এই হোটেলেই,,,,
রুপকঃ ওকে,,, এখন চলুন,,,
তমসাঃ (আমার তো এখান থেকে যেতেই ইচ্ছে করছে না,,,)
রুপকঃ কী হলো,,,, দাঁড়িয়ে আছেন কেনো এখনো,,?
তমসাঃ আ,,আসছি স্যার,,,(স্যার অনেকটা এগিয়ে গেছে আমি দৌড়ে স্যারের সাথে যেতে লাগলাম)
★★★
সিনহাঃ কী রে বৃষ্টি,,, তোর গাড়ি আসেনি আজ,,,?
বৃষ্টিঃ না,,,, ভাইয়া কক্সবাজার চলে গেছে,,,, ভাইয়া আর আসবে না নিতে,,, আর আমি গাড়ি পাঠাতে মানা করে দিয়েছি,,, আজ রকির সাথে পার্কে যাবো ঘুরতে,,,(গেইট দিয়ে তানভীর স্যারকে বের হতে দেখে বললাম,,,,)
সিনহাঃ তোর কী মাথা খারাপ হয়ে গেছে বৃষ্টি,,,? তুই ঐ লুচ ক্যারেক্টারের সাথে পার্কে যাবি,,,? তুই জানিস না ও ভালো ছেলে নয়,,,
বৃষ্টিঃ দেখ সিনহা,,, ও এখন ভালো হয়ে গেছে,,, আর ও আমাকে ভালোবাসে,,,, আর আমি,,,,,
সিনহাঃ আর তুই কী বল বল,,,,?
তানভীরঃ (এসব শুনে রাগে মাথায় রক্ত উঠে গেছে,,, আমার ওপর বদলা নেওয়ার জন্য ঐ ফালতু ছেলের সাথে ঘুরাঘুরি করতে চাইছে,,, বুঝতে কেনো পারছে না ঐ ছেলে ওর ক্ষতি করতে দুমিনিট ভাববে না,,,,)
বৃষ্টিঃ কিছু না,,,,
তানভীরঃ সিনহা,,,,
সিনহাঃ হ্যাঁ ভাইয়া,,,,(হঠাৎ ভাইয়ার ডাক শুনে একটু চমকে উঠলাম,,,,, নিজেকে সামলে পেছনে তাকালাম,,,)
তানভীরঃ চল বাসায় যাবি,,,,,
সিনহাঃ আমি একা যেতে পারবো,,,,
তানভীরঃ আমার সাথে যেতে কী প্রবলেম,,,(রেগে ধমক দিয়ে,,,)নাকি তুইও কারো সাথে পার্কে যাবি,,,?(আড়চোখে বৃষ্টির দিকে তাকিয়ে)
সিনহাঃ ন,,,নাহ,,,, কী বলছো,,,?(ভয়ে ভয়ে)
রকিঃ হেই বৃষ্টি,,,, চলো,,,,
বৃষ্টিঃ (ভাইবোনের কথা শুনছিলাম দাঁড়িয়ে,,,, তখনই রকির কথা শুনে ওর দিকে তাকালাম,,,, বাইক নিয়ে সামনে দাঁড়িয়ে আছে,,, হায় খোদা এখন কী এই লুচুর ছেলের বাইকে উঠতে হবে নাকি,,,? গাড়ি হলে তাও ডিস্টেন্স থাকতো,,,,)
তানভীরঃ তুই কী এখানে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে শুটিং দেখছিস,,,? উঠে বসতে বলছি না,,,(সিনহাকে উদ্দেশ্য করে)
সিনহাঃ ব,,বসছি তো,,,(বাইকে উঠে বসতেই ভাইয়া স্টার্ট দিলো,,,,) আল্লাহ হাফেজ বৃষ্টি,,,,,
বৃষ্টিঃ আল্লাহ হাফেজ ,,,,,(স্যার চলে যেতেই হাফ ছেড়ে বাঁচলাম,,, উনাকে দেখানোর জন্য অন্তত এই লুচু বাইকে উঠতে হবে না,,,,, এসব ভাবতেই বাবার গাড়ি এসে সামনে থামলো,,,, আসলে আমি বলেছিলাম কার একটু পরে পাঠাতে,,,, আর এখন বাসায় না বাবার অফিসে যাবো,,,,)
রকিঃ কী ভাবছো বৃষ্টি,,,,? চলো লেট হচ্ছে তো,,,
বৃষ্টিঃ সরি রকি,,, আজ না অন্য একদিন যাবো,,, আজ বাবার কাছে যেতে হবে একটু,,,, ঐ দেখো গাড়ি পাঠিয়ে দিয়েছে বাবা,,, (রকির উত্তরের অপেক্ষা না করে গাড়িতে উঠে বসলাম,,,,)
রকিঃ কিন্তু বৃষ্টি,,,,,,
বৃষ্টিঃ বায়,,,,,(মুচকি হেঁসে,,,)
রকিঃ বায়,,,(মুখটা পেঁচার মতো করে,,, ধূর এটা কী হলো,,, কই ভাবলাম পটে গেছে,,, আর কী হলো,,, ধূর আজ কপলাটাই খারাপ,,,, এর জন্য আমি এনাকে রেখে আসলাম,,,, ওর কাছেই যাই আবার,,,,)
বৃষ্টিঃ ধন্যবাদ আঙ্কেল,,,, একদম ঠিক সময়ে এসেছো,,,
ড্রাইভারঃ কেনো মামুনি,,, ছেলেটা কী তোমাকে বিরক্ত করে,,,? তাহলে বলো শায়েস্তা করার ব্যবস্থা করছি এখনই,,,
বৃষ্টিঃ আরে না না,,, ও তো আমার ফ্রেন্ড,,,, এর সাথে বাইকে যেতে বলছিলো,,, আমার যাওয়ার ইচ্ছে ছিলো না,,, তুমি ঠিক সময়ে না আসলে বাধ্য হয়ে ওর বাইকে যেতে হতো,,,, তোমাকে আজ এর জন্য সারপ্রাইজ দেবো,,,,
ড্রাইভারঃ কী সারপ্রাইজ,,,,? (অবাক হয়ে,,,)
বৃষ্টিঃ বলে দিতে সারপ্রাইজ থাকবে না,,,, তবে রাতে বাসায় যাওয়ার আগেই পেয়ে যাবে,,,
ড্রাইভারঃ আচ্ছা,,,,,(মুচকি হেঁসে,,, এতো বড়লোক বাবার মেয়ে হয়েও একটু অহংকার নেই,,,, যেমন বাবা মা তেমন ছেলে মেয়ে দুটোও হয়েছে,,,, একদম মাটির মানুষ,,,, শুধু রাগ আর জেদটা একটু বেশি,,,, নিজে নিজে হেঁসে উঠলাম কথাগুলো ভেবে,,,)
বৃষ্টিঃ(চকলেট খাচ্ছিলাম,,, আয়নায় ড্রাইভার আঙ্কেলকে হাঁসতে দেখে জিজ্ঞেস করলাম) আঙ্কেল হাঁসছো কেনো,,,?
ড্রাইভারঃ মুখ মাখিয়ে ফেলেছো চকলেট দিয়ে,,, অফিসে গেলে তো সবাই হাঁসবে,,,, ভার্সিটিতে পড়ালেখা করো তবু একটু বড় হলে না এখনো,,,
বৃষ্টিঃ বড় হলে এতো আদর করবে না কী সবাই,,,, হিহিহি,,,
ড্রাইভারঃ পাগলি মেয়ে,,, চলে এসেছি নামো,,,, তুমি স্যারের কেবিনে যাও আমি তোমাদের লান্স নিয়ে আসি বাসা থেকে,,,
বৃষ্টিঃ ওকে,,,,,,(গাড়ি থেকে নেমে ভেতরে চলে গেলাম,,, সবাই দেখে গুড আফটারনুন জানাচ্ছে,,,, আবার কেউ কেউ হাঁসছে মুখে চকলেট লেগে আছে দেখে,,, গাল ফুলিয়ে বাবার কেবিনে ঢুকলাম নক না করে,,,, বাবা একটা ফাইল দেখছে,,, আমি সোজা সোফায় গিয়ে বসে পড়লাম)
আকাশঃ গুড আফটারনুন মা,,,,
বৃষ্টিঃ,,,,,,,,,,,,
আকাশঃ (উত্তর না দেওয়ায় ফাইল সরিয়ে বৃষ্টির দিকে তাকালাম,,,, মুখটা মেঘে ঢাকা চাঁদের মতো লাগছে,,,, ফাইল টেবিলে রেখে পাশে গিয়ে বসলাম,,) কী হয়েছে আমার মামুনির,,,,?
বৃষ্টিঃ আমাকে দেখে হাঁসলো কেনো,,,(গাল ফুলিয়ে,,,)
আকাশঃ কে হেসেছে তোমাকে দেখে,,, কার এতোবড় সাহস,,,, আকাশ চৌধুরীর মামুনিকে দেখে হাঁসে,,,, নাম বলো শুধু,,,,
বৃষ্টিঃ সবাই হেসেছে অফিসে ঢুকার সময়,,,,
আকাশঃ সবাই হেসেছে,,,, এতো বড় সাহস,,, আচ্ছা সবাইকে শাস্তি দিবো,,, কিন্তু হাঁসলো কেনো,,,? তুমি কী করেছো,,,?
বৃষ্টিঃ এটার জন্য,,,, (হাতের চকলেট দেখিয়ে)
আকাশঃ(এখন খেয়াল করে দেখলাম,,,, মুখে নাকে,, চকলেট লেগে আছে,,, মনে হচ্ছে ভার্সিটি পরোয়া মেয়ে নয়,,, নার্সারিতে পরে,,, এবার সবার হাসার কারণ বুঝতে পারলাম,,, এখন তো আমার নিজেরই হাসি পাচ্ছে,,,, মাঝে মাঝে মনে হয় মেয়েটা বড় হয়নি,,, এই তো আমার সেই ছোট্ট পুতুল,,,, একটা টিস্যু দিয়ে মুখ মুছে দিলাম,,,,) ঠিক আছে,,, সবাইকে অনেক বকে দিবো,,, এখন বলো আজ হঠাৎ অফিসে আসতে চাইলে কেনো,,,?
বৃষ্টিঃ তোমার সাথে লান্স করতে ইচ্ছে করছিলো তাই,,,,
আকাশঃ আমাকে বললে তো আমি বাসায় চলে যেতাম,,,, এখন তোমার আবার মার একা একা খেতে হবে,,
বৃষ্টিঃ তাহলে মাকেও এখানে চলে আসতে বলো,,,
আকাশঃ দিন দিন বাচ্চা হয়ে যাচ্ছে আমার মা টা,,,(কপালে চুমু দিয়ে,,,) একটা অফিস মা,,, এখন বলো কী জন্য এসেছো,,,?
বৃষ্টিঃ একটা কথা বলতে,,,,?(মাথা নিচু করে)
আকাশঃ সেটা তো বাসায় গিয়েও শুনতে পারতাম,,,।
বৃষ্টিঃ নাহ,,, আমার এখনই বলার ছিলো,,,
আকাশঃ আচ্ছা বলো,,,,
★★★
তমসাঃ (স্যার ড্রাইভ করছে আর আমি পাশে বসে আছি,,, তবে এখন আর তখনকার মতো জোরে চালাচ্ছেন না,,, স্বাভাবিক ভাবেই চালাচ্ছেন,,,,)
ক্রিংক্রিংক্রিং
রুপকঃ (হঠাৎ ফোন বেজে উঠলে ব্লুটুথ কানে দিলাম,,, বাসার নাম্বার দেখে মুখে সামান্য বিরক্তি ভর করলো,, তবু রিসিভ করলাম,,,) হ্যালো,,,,
মেইন গার্ডঃ স্যার আমি জমির বলছি,,,,
রুপকঃ হ্যাঁ বলো,,,,,
জমিরঃ স্যার,,,, হঠাৎ করেই রবিন স্যার অনেক অসুস্থ হয়ে পরেছেন,,,,
রুপকঃ অসুস্থ হয়ে গেছে ডক্টর ডাকো,,, আমি কী ডক্টর নাকি,,,,?(বিরক্তি নিয়ে)
জমিরঃ স্যার ডক্টর এসেছিলো,,, তিনি বললেন ইমিডিয়েট হসপিটালে এডমিট করতে,,,, আমরা উনাকে হসপিটালে নিয়ে এসেছি,,,,
রুপকঃ(হসপিটালের কথা শুনেই বুকের ভিতর মোচড় দিয়ে উঠলো,,, হঠাৎ করেই গাড়ি ব্রেক করলাম,,,, বাবা মাঝে মাঝে মিথ্যা অসুস্থতার কথা বলে বাসায় ডেকে নেয় একসাথে খাবার জন্য,,, এবারও এমনই মনে করেছিলাম তাই বিরক্ত হয়েছিলাম,,, কিন্তু এখন হসপিটালের কথা শুনে কেমন ভয় করতে শুরু করলো,,, হারানোর ভয়,,)
তমসাঃ কী হলো স্যার,,,,?(প্রশ্নবোধক দৃষ্টিতে তাকিয়ে)
রুপকঃ (ভাবলেশহীন চোখে তমসার দিকে তাকালাম)
জমিরঃ স্যার,,,, ডক্টর বলছে অবস্থা বেশি ভালো নয়,,, আপনি তাড়াতাড়ি *** হসপিটালে আসুন প্লিজ,,,,
রুপকঃ আ,,,আমি এখনই আসছি,,,,,(তাড়াতাড়ি হসপিটালের দিকে যেতে লাগলাম)
তমসাঃ কী হয়েছে স্যার,,,? এদিকে কোথায় যাচ্ছেন,,,?
রুপকঃ হসপিটালে,,,,,,
তমসাঃ হসপিটালে কেনো,,,,,?
রুপকঃ বাবা হসপিটালে ভর্তি,,,,,,(দ্রুত হসপিটালে পৌঁছালাম,,,, আজ কেনো যেনো ভেতরটা হাহাকার করছে,,,, ভয়ে করছে,,, প্রচন্ড ভয়,,, রিসিপশন থেকে বাবার কেবিনের নাম্বার জেনে সেদিকে আগাতে লাগলাম,,,, যত আগাচ্ছি ভয় তত বাড়ছে,,,)
চলবে…
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url