Breaking News

অভিমানি । রবি আল ইসলাম

পার্কের ভিতরে মেঘাকে অন্য ছেলের হাত ধরে বসে থাকতে দেখে নিজের অজান্তেই চোখ থেকে পানি গড়িয়ে পরলো। লাস্ট কিছুদিন ধরেই মেঘা আমাকে ইগনোর করতেছে কিন্তু এখন বুঝলাম ওর ইগনোরের কারন। হয়তো ও রিলেশনে গেছে তাই আমাকে ইগনোর করছে।
মেঘা ছেলেটার হাত ধরে হেসে হেসে কথা বলছে হঠাৎ আমার দিকে চোখ পড়তেই চুপ হয়ে গেলো।
মেঘা আমাকে কিছু বলতে যাবে তার আগেই আমি বললাম, সরি আপনাদের বিরক্ত করার জন্য
চোখের পানি মুছে সেখান থেকে চলে আসলাম। রাস্তা দিয়ে একা একা হাঁটতেছি আর পুরোনো কথা মনে হতে লাগলো। যখন ওর কেও ছিলো না তখন আমি ওর সাথে ছিলাম।
বেস্টফ্রেন্ড ছিলাম আমরা কিন্তু আমি ওকে বেস্টফ্রেন্ডের চাইতেও বেশি কিছু ভাবতাম।
আমি মনে করেছিলাম ও আমাকে ভালোবাসে কিন্তু আজ বুঝলাম ও অন্য কাউকে ভালোবাসে
কলেজ ক্যাম্পাসে একা একা বসে আছি কিছুখন পর বন্ধুরা আসলো।
যেই আমি সবসময় ফাইজলামিতে ব্যাস্ত থাকি সেই আমিই আজকে চুপচাপ বসে আছি। আমাকে এভাবে চুপচাপ বসে থাকতে দেখে বন্ধুরা বললো,
রিদয়ঃ কলেজের সবথেকে বেশি ফাইজলামি করা ছেলেটা আজকে চুপচাপ কেনো?
কি হয়েছে রে তোর?
রবিঃ কিছু হয়নি। এমনি ভালো লাগছে না। তোদের কি খবর সেটা বল?
রিদয়ঃ আমাদের খবর তো ভালোই কিন্তু তোর আজকে কি হয়েছে বলতো অন্যদিন হলে তো এতখনে তোর ফাইজলামিতে আমাদের অবস্থা খারাপ হয়ে যেতো। আর রাতে তুই আমাদের আড্ডায় আসলি না কেনো?
— কিছুই হয়নি আমার। সবদিন কি একি রকমভাবে থাকা যায় নাকি। আর আমি রাতে অনলাইনে ছিলাম না
রাসেলঃ আজ পর্যন্ত তো তোকে এভাবে চুপচাপ বসে থাকতে দেখলাম না তাই হঠাৎ তোকে এভাবে মন খারাপ করে বসে থাকতে দেখে আমাদের কাররই ভালো লাগছে না। কারন তোকে ফাইজলামিতেই ভালো লাগে। আর কি এমন হয়েছিলো যে অনলাইনে আসা যায়না?
সাকিবঃ সবাই আড্ডায় ছিলাম শুধু তুই ছাড়া।
তোর মোবাইলে কল দিলাম তাও বন্ধ জানিস কত মিস করেছি তোকে
হঠাৎ মেঘা চলে এসেছে।
মেঘার আসার পর ওরা বললো, এতখন আমরা সবাই জিগ্গেস করে যাচ্ছি কিন্তু তুই কোনো কথা বললি না।
কিন্তু এখন তো মেঘা চলে এসেছে দেখবো কি করে না বলে থাকিস
মেঘা এসে বললো, কি হয়েছে তোর? কল দিচ্ছি ধরছিস না কেনো?
রবিঃ আমার আবার কি হবে? কিছুই হয়নি মোবাইল সাইলেন্ট ছিলো তাই দেখিনি।
তা কেমন আছিস? মনে তো হচ্ছে অনেক ভালোই আছিস
— এরকমভাবে বলছিস কেনো?
তোর হলোটা কি বলতো গতকাল পার্কে ওইভাবে রিয়্যাক্ট করলি তোকে এতো ডাকলাম কিন্তু কে শুনে কার কথা হাঁটতে যে ছিলি একবারও তো পিছনে ফিরে তাকালি না। এতোবার যে ডাকলাম কিন্তু তুই শুনলিই না
— তোদের বিরক্ত করতে চাইনি আর আমি থাকলে তোদের সমস্যা হতো তাই চলে এসেছি।
তুই ডাকছিলি আমি শুনতে পাইনি তা কেনো ডেকেছিলি? তোর বয়ফ্রেন্ডের সাথে পরিচয় করিয়ে দিতে?
মেঘাঃ কি সব বলছিস উল্টা- পাল্টা? ও আমার বয়ফ্রেন্ড হবে কেনো।
ও তো আমার কাজিন ছিলো আমাদের বাসায় বেরাতে এসেছে আর ওর গার্লফ্রেন্ড ও আছে।
তোকে ওর সাথে পরিচয় করিয়ে দিতাম কিন্তু তার আগেই তুই চলে আসলি।
এতখন মন খারাপ করে ছিলাম কিন্তু এটা শুনার পর মন একদম ভালো হয়ে গেছে। মেঘাকে বললাম,
— ধুরো আগে বলবি না। তাইলে কে চলে আসতো। তোদের সাথে থাকতাম ট্রিট নিতাম।
আচ্ছা লাস্ট ২/৩ ধরে তোকে রাতে কল দিলে কেঁটে দিস কেনো?
— আর বলিস না বাসায় রিলেটিভরা আসছে তাই মোবাইল কাজিনদের কাছে থাকে। অনেক গুলা পিচ্চি আছে আমার মোবাইল সারাদিন ওদের কাছেই থাকি। আর আমি যতখন বাসায় থাকি সবার সাথে আড্ডা দেই। অনেকদিন পর সব কাজিনরা একসাথে হলাম তাই একটু ওদের সাথে সময় কাঁটাই
রবিঃ আগে বলবি না। আচ্ছা এখন এসব বাদ দে চল আজকে সবাইকে ট্রিট দিবো আমি
— আচ্ছা তোরা একটু ওয়েট কর আমরা আসতেছি একটু। ম্যামআমাদের দেখা করতে বলেছে তার সাথে জরুরি কথা আছে নাকি
— আমাদের তো কিছু বললো না
— আরে শুধু আমাদের মেয়েদের বলেছে সব ইয়ার থেকেই শুধু মেয়েদের তার সাথে দেখা করতে বলেছে। হয়তো গুরুত্বপূর্ণ কিছু আছে তা না হলে এভাবে বলতো না
— আচ্ছা তাহলে যা তাড়াতাড়ি দেখ ম্যাম কি বলে
এতোখন রবির মন অনেক খারাপ ছিলো কিন্তু মেঘার কথা শুনে মনটা ভালো হয়ে গেলো। রবি মেঘাকে অনেক ভালোবাসে কিন্তু ভয়ে বলতে পারছে না যদি মেঘা রাজি না হয় আর বন্ধুত্ব নষ্ট করে দেয় এই ভয়ে রবি ওর ভালোবাসার কথা মেঘাকে বলছে না। রবির ভয় হচ্ছে যদি মেঘা ওকে না ভালোবাসে তাই রবি চাচ্ছে মেঘা ওকে আগে ভালোবাসার কথা বলুক কিন্তু রবি জানে না তা কখনও সম্ভব হবে কিনা
মেঘা চলে যাওয়ার পর রবির বন্ধুরা ওর দিকে অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে। রবি ওদেরকে এভাবে তাকিয়ে থাকতে দেখে বললো, তোদের আবার কি হলো? আমাকে কি এই প্রথম দেখছিস যে এভাবে তাকিয়ে আছিস
রিদয়ঃ বুঝার চেষ্টা করতেছি এটা কি সত্তিই তুই নাকি অন্য কেও। এতখন কিরকম ছিলি আর এখন কিরকম। ভাবছি তোর সাথে কি জিন- টিন আছে নাকি
— ধুরো কিসব উল্টা- পাল্টা বলছিস কিছুই বুঝতেছি না
রাসেলঃ এতখন তো মন খারাপ করে বসে ছিলি আমরা যখন জিগ্গেস করলাম তখন তো কত কিছু বললি আমাদের যে, সবদিন কি সবার মন একিরকম থাকে। কিন্তু যখন মেঘা এসে বললো, ওইটা ওর কাজিন আর ওর গার্লফ্রেন্ড ও আছে ওমনি সাথে সাথে মন ভালো হয়ে গেলো। আবার ট্রিট ও দিতে চাইলি
সাকিবঃ মামা কাহিনী কি বলো তো। মেঘা প্রেম করলে তোমার সমস্যা কি? আজ বা কাল তো মেঘা কারও সাথে প্রেম করবে, বিয়ে হবে
— ও শুধু আমাকে ভালোবাসবে আর বিয়েও আমাকেই করবে আর কাউকে না কারন আমি ওকে অনেক ভালোবাসি তাই ওকে অন্য কারও সাথে দেখতে পারবো না
রিদয়ঃ এইতো সত্তিটা বেরিয়ে আসলো এতদিন যখন আমার বলেছি তখন তো অস্বীকার করলি কিন্তু এখন আমাদের ধারনাই ঠিক হলো
রাসেলঃ ভালোবাসলে মেঘাকে বলছিস না কেনো? এভাবে লুকিয়ে রাখার মানেটা কি?
হঠাৎ মেঘা চলে আসলো। আমি কিছুটা ভয় পেয়ে গেলাম মেঘা সবটা শুনে ফেললো না তো?
চলবে—

No comments

info.kroyhouse24@gmail.com