Breaking News

লেডি কুইন । পর্ব -১১

অরিন কুহুকে বললো
-আরোহী নিশ্চয় নদীর পাড়ে গেছে।
-তাই হবে। তবে ওর একা যাওয়াটা ঠিক হয়নি।
-চল আমরা যায়। দূরে দাঁড়িয়ে থাকবো না হয়।
-হ্যা রে।
কুহু অরিন লিমন লোকজন নিয়ে রওনা হলো।
মেহেরাব আরোহীকে ডাক্কা মেরে নিচে ফেলে দিলো। মেহেরাব ও কিছুটা ঝুকে পড়ছিলো বলেই গুলিটা মেহেরাবের জামার হাটার পাশ দিয়ে চলে গেলো। আরোহী নিচে ইটের সাথে মাথায় আঘাত খাওয়ার ফলে বেহুশ হয়ে যায়। মেহেরাব ঘামতে শুরু করে কি করবে এখন। (মেহেরাব কুহুর দিকে তাকাতেই ওপাশ থেকে একজন গুলি চালিয়ে দেয়। যার জন্য আরোহীকে ডাক্কা মেরে ফেলে দেয়।)
আরোহীর মাথা বেয়ে রক্ত বের হচ্ছে। মেহেরাব নিচে বসে আরোহীর মাথাটা নিজের কোলের উপর রেখে জামাটা ছিড়ে আরেহীর মাথায় বেধে দেয় রক্ত থামানোর জন্য। এর ভেতর ঘিরে ধরে ওদের। মেহেরাব বলে উঠলো
-কারা আপনারা এখানে কি চায়।
একজন বলে উঠলো
-তুই কে? তোর সাথে তো আমাদের শত্রুতা নেই। বাঁচতে চাইলে পালিয়ে যা মেয়েটাকে রেখে।
-মেয়েটা আপনাদের কি ক্ষতি করছে যার জন্য ওকে মারবেন। ওকে নিয়ে এক্ষুনি হাসপাতালে যেতে হবে।
মেহেরাব আরোহীকে কোলে তুলে নিয়ে দাঁড়ালো। একজন মেহেরাবের পেটের উপর পা দিয়ে লাঠি মারে। মেহেরাব পিছনে ছিটকে যায়। পিছন থেকে মেহেরাবের পিথে হকি স্টিক দিয়ে বারি মারে। মেহেরাব হাঁটু মুড়ে বসে পড়ে। আরোহী কোলের উপর ধরে রেখেছে।
একজন বলে উঠলো
-তোকে বলছি বাঁচতে চাইলে পালিয়ে যা। কিন্তু তুই ওকে নিয়ে যাবি আমাদের সামনে থেকে। তাই তোকে ও মরতে হবে।
-প্লিজ আপনারা মারবেন না। আমাদের যেতে দিন। আরোহী খুব ভালো একটা মেয়ে। ও তো কারো ক্ষতি করে না। আমাদের ছেড়ে দিন।
অন্যএকজন বললো
-তুই শালা কেন যে আসলি মরতে বুঝি না। তবে তোকে বাঁচিয়ে রাখলে আমাদের ও প্রবলেম হবে। তার আগে একটা কাজ করে নি।
-এই কি করছিস ওকে আগে ছুঁচ না। বস আগে ছুঁবে তারপর আমরা। দেখবো না কত ডেমাগ। আমাদের লোকজনকে মারা ওর এতবড় সাহস।
সবাই হো হো করে হেসে উঠলো । মেহেরাব অবাক হয়ে যায় কথা শুনে। একটা কালো রংয়ের গাড়ি এসে থামলো সবাই ফাকা হয়ে দাড়িয়ে পড়লো। গাড়ি থেকে কালো শুট পড়া চোখে কালো সানগ্লাস পড়া একটা লোক নামলো। মেহেরাব লোকটা দিকে চেয়ে আছে। লোকটা জিঙ্গেস করলো
-ছেলেটা কে?
-হয়তো লাভার হবে।
-ওকে বাচিয়ে রেখেছিস কেন? এখনো।
-বস মেরে দিচ্ছি।
-ওয়েট কর। যখন লাভার তখন ওর সামনেই ওকে নষ্ট করবো৷ লেডি কুইন। যাকে দেখলে নাকি ভয় পায়। আমাকে এখনো ও চিনতে পারেনি। ওকে তো আমিই মারবো।
লোকটা আঙ্গুলের ইশারা করলো৷ দুজন যেয়ে মেহেরাবকে পিছন থেকে ধরলো। একজন সামনে থেকে এসে আরোহীকে ধরতে যাবে তখনি লোকটা মাটিতে লুটিয়ে পড়লো। সবাই হা হয়ে গেলো। মেহেরাবকে ধরা দুজন ও লুটিয়ে পড়লো। মেহেরাব হা হয়ে গেলো। সেকেন্ডের ভেতর বিশটা গাড়ি গোল হয়ে সবাইকে নিয়ে ঘুরতে লাগলো। সবাই চমকে উঠে। একে একে সবাই মাটিতে লুটিয়ে পড়লো। প্যান্ট শুট পড়া লোকটা দাড়িয়ে আছে সে গাড়ির ভেতরে ঢুকে পড়লো। গাড়ির কাচ ভেদ করে গুলি ঢুকে ড্রাইভারের কপালে এসে লাগলো। মেহেরাব আরোহী ধরে চোখে বন্ধ করে আছে ভয় তে।
গাড়িগুলো সব থেমে গেলো৷ উপর থেকে হেলিকপ্টার চারটা চলে গেলো। লাল রংয়ের গাড়ি থেকে সাদা শুর্ট পড়া একজন নামলো। মুখ হেলমেট দিয়ে ঢাকা। সবগুলো গাড়ি থেকে নেমে লোকটার পিছনে দাড়ালো । সবার মুখে মাক্স লাগানো। মেহেরাব চোখটা খুলে সামনের দিকে তাকালো। সাদা শুর্ট পড়া লোকটা বলে উঠলো
-আকমাল এত সহজ না মারা কুইনকে। শুধু কল্পনাই করা যায়, স্বপ্নই দেখা যায় কিন্তু বাস্তবে না। তোর পাপের বোঝা পূর্ণ হয়ে গেছে। শান্তিতে ছিলি থাকতি কেন মরার জন্য পাখনা গজালি।
আকমাল ভয়ে ভয়ে গাড়ির ভেতর থেকে থ ম খেয়ে
-ক ক ক কে তুই । আমাকে যেতে দে। নাই তোদের সবাইকে মরতে হবে।
-আমাকে কেউ চিনে না। শুধু চিনবে কুইনকে। সবাইকে মারার আগেই তুই মর।
আকমাল গাড়ি থেকে বের হয়ে সাদা শুর্ট পড়া লোকটার পায়ের কাছে পড়ে
-আমাকে মেরো না। আমার ভূল হয়ে গেছে। আমাকে যেতে দাও তোমরা।
আকমালের কথা শুনে সবাই হাহাহাহাহাহা করে হেসে উঠলো ।
কুহুরা সবাই নদীর পাড়ে এসে পৌছে যায়। গাড়ি লোকজন দেখে লিমন বলে উঠলো
-সবাইকে ব্যস্ত ফোন দে। আরোহীর বিপদ।
কুহু বলে উঠলো
-আমরা এ ক জনে যায় ঠিক হবে না। ফোন দে ব্যস্ত৷ সবাই একসাথে যাবো। লিমন কুহু অরিন ফোন বের করে সবাইকে ফোন করলো।
আকমালকে তুলে কপাল বরাবর গুলি করলো। আকমাল মাটিতে লুটিয়ে পড়লো। সাদা শুর্ট পড়া লোকটা মেহেরাবের দিকে এগোলো মেহেরাব বলে উঠলো
-প্লিজ আমাদের যেতে দিন। আরোহীকে হাসপাতালে নিবো।
-তুমি চিন্তা করো না ওকে নিয়ে আমরা যাবো।
-না আপনাদের কাউকে যেতে হবে না। আপনারা চলে যান।
আরোহীর ড্রাইভার গাড়ি নিয়ে চলে আসে। সাদা শুর্ট পড়া লোকটা
-যাও ওকে নিয়ে। ভয় নেই কেউ তোমাদের নখের আচড় দিতে পারবে না।
মেহেরাব আরোহীকে কোলে তুলে নিয়ে গাড়িতে বসলো। গাড়ি চলা শুরু করলো। আরোহীর গাড়ি দ্রুত গতিতে চলতে লাগলো। কুহুদের পাশ থেকে চলে গেলো দাড়ালো না। কুহুরা বাইক নিয়ে গাড়ির পিছু নিলো। নদীর পাড়ের গাড়িগুলো চলে গেলো এক এক টা এক এক দিকে। নদীর তীর ফাকা হয়ে গেলো। শুধু রক্ত মাটিতে লেগে আছে।
গাড়িটা এসে হাসপাতালের সামনে এসে থামলো। মেহেরাব আরোহীকে নিয়ে ভেতরে চলে গেলো। বেডে শুয়ে দিয়ে
-যত তাড়াতাড়ি পারেন কিছু একটা করুন৷
-ভয়ের কিছু নেই দেখছি আমরা।
আরোহীকে নিয়ে চলে গেলো। মেহেরাব হাসপাতালের চেয়ারে বসে আছে। কুহু লিমন অরিন ভেতরে চলে এসে মেহেরাবের সামনে দাঁড়িয়ে
-আরোহী কোথায়। কি হয়েছে ওর।
-ভেতরে নিয়ে গেছে।
কুহু মেহেরাবের কলার ধরে দাড় করিয়ে রাগি গলায়
-ওর যদি কিছু হয় তাহলে তোকে ছাড়বো না।
অরিন মেহেরাবের গালে চড় বসিয়ে দিয়ে
-সুযোগ বুঝে ক্ষতি করলি কেন ? ও তোকে খোঁজার জন্য কি না করছে।
লিমন বলে উঠলো
-নাওয়া নেই খাওয়া নেই চোখে ঘুম নেই তোকে সব জায়গায় খুজে বেরিয়েছে।
কুহু লিমনকে থামিয়ে দিয়ে
-আর তুই ওর ক্ষতি করলি। তোকে দেখে নিবো।
কুহু লিমন অরিন ভেতরে ঢুকে গেলো। মেহেরাব সেখান থেকে আসলো আর ভাবছে আরোহী আমাকে এত বা খুঁজলো কেন? কোনো রহস্য আছে নাকি। আমাকে বা খুজবে কেন? হঠাৎ করে ওর বদলে যাওয়ার কারণ কি? তবে কি? নাহ আমি কি ভাবছি এসব।
নেহার মা নেহাকে ডাক দিলো। নেহা মায়ের রুমে গেলো। মা বললো
-কোন খোঁজ পেলি।
-হ্যা মাম্মি। আজ ভার্সিটিতে আসছিলো।
-তা বাসায় নিয়ে আসলি না কেন?
-কাল নিয়ে আসবো৷
-মনে করে নিয়ে আসিছ।
-ঠিক আছে।
নেহা নিজের রুমে চলে আসলো।”
আরোহীর ঙ্গান ফিরলো। চোখ খুলে পাশে দেখলো লিমন, অরিন কুহু বসে আছে। কুহু বলে উঠলো
-কি হয়েছিলো বল তো।
-মেহেরাব আমাকে ডাক্কা মেরে ফেলে দেয় তারপর আমার আর কোনো কিছু মনে নেই। নিজেকে এখানে আবিষ্কার করলাম।
লিমন বলে উঠলো
-ওর একদিন কি আমার একদিন। ওকে যে কি করবো।
আরোহী লিমনকে থামিয়ে দিয়ে
-তোরা ওকে কিছু বলিস না। ওর সাথে আমি কথা বলে নিবো।
কুহু উঠে দাঁড়িয়ে রাগে
-এটা হয় না আরোহী। ও তোর ক্ষতি করতে চেয়েছে।
-হয়তো ওর প্রতিশোধ নিছে।
-তুই যতই না বলিস আমরা ওকে ছাড়বো না।
-তোরা আমার কথা শুনবি না। আমাকে তোরা কিভাবে পেলি কে আনলো আমাকে?
-কে আবার যে ডাক্কা মারছে সে।
-মেহেরাব।
-হ্যা।
-ওকে। ওকে আমি দেখে নিবো৷ ওর গায়ে যেনো নখের আঁচড় না পড়ে।
এদিকে কুহু যাদের ফোন দিয়ে ডাকছে সবাই এসে নদীর হাজির হয়েছে। এখানে এসে শুধু রক্ত ছাড়া কিছুই দেখতে পাচ্ছে না। লিমন ওদের সবাইকে এখানে আসতে বলছে। সবাইকে ধরার জন্য কারা ছিলো। এসে ফাকা দেখলো।
কুহু লিমন অরিহ বেড থেকে বের হলো। অরিন বললো
-আরোহী কি পাগল হয়ে গেছে।
-আমি না বুঝতে পারছি না। ও কেন ওর সাপোর্ট নিচ্ছে।
-আমার মাথায় না কিছুই আসছে না৷ ওকে কেউ মারলো ও তাকে ছেড়ে দিলো।
ডাক্তার বেডে ঢুকে আরোহীকে বললো
-কেমন লাগছে এখন?
-জ্বি ভালো। আমি যেতে পারবো কখন।
-এখনি। মাথায় আঘাত লেগে বেহুশ হয়ে গেছিলেন। একটু রেস্ট নিয়ে বাসায় চলে যেয়েন।
পরেরদিন মেহেরাব ভার্সিটির গেইট দিয়ে ঢুকবে তখন আরোহী মেহেরাবের কলার ধরে

No comments

info.kroyhouse24@gmail.com