হৃদয়ের দহন | পর্ব- ২২

ঘরোয়া খাবার খেয়ে ওর ডায়াবেটিস অনেক টা নিয়ন্ত্রণে চলে এসেছে।ইফতি সাহেব হাসতে হাসতে বলেন,
– সব আমার বউ মায়ের কামাল।ও অল্প ক’দিনেই আমাকে বাসার খাবার খাওয়ার অভ্যাস করেছে।আগে তো হোটেল থেকে আনিয়ে খেতাম তেল,ঝাল,মশলা বেশিবেশি থাকতো তাতে এখন ও আমার জন্যে নূন,ঝাল,মশলা কমকম দিয়ে রান্না করে বাড়িতে।মিম মৃদু হেসে বলে,
– আঙ্কেল কে নিয়ে খেতে এসো বাবা খাওয়ার সময় হয়েছে।জাবির সাহেব খেতে খেতে মিমের রান্নার অনেক প্রশংসা করেছে।রাতে মিম ইমানের ঘরে কফি নিয়ে গিয়ে কি ভেবে ওর গায়ে হাত দিয়ে দেখে,
ওর খুব জ্বর এসেছে।হঠাৎ ইমাম মিমের হাত ধরে বলে,
– একটু বসবে আমার কাছে?মিম মৃদু হেসে ওর কপালে চুমু খেয়ে বলে,
– আগে ঔষধ টা খেয়ে নাও।তারপরে ঠিক আছে?ইমান ওকে আচমকা জড়িয়ে ধরে বলে,
– খুব শীত করছে একটু ঘুমোবে আমার কাছে?মিম মৃদু হেসে বলে,
– কি খেয়ে গা গরম করেছ? বোকা পেয়েছ আমাকে? ধরা পরে যাওয়ার পরে ও ইমান ছাড়তে নারাজ ওকে।
পরে মিম বলে ওঠে,
– বাবা তুমি? ইমান হুট করে ছেড়ে দেয় ওকে।মিম ও পালিয়ে বাঁচে সেখান থেকে।
ইমান তখন আশেপাশে চোখ বুলিয়ে দেখে ইফতি সাহেবের টিকিটি ও নেই আশেপাশে বুঝতে বাকি নেই
মিম ওকে বোকা বানিয়ে গেছে।
বেচারা আপন মনে হাসাহাসি করছে দোলনায় বসে।
বুঝতে বাকি নেই তার মাহির সাহেব ঝামেলা করবেন বিয়েতে।
রাতে যা ভেবেছিল ঠিক তাই হয়েছে।
সকালে মিম কবুল বলার ঠিক আগ মুহূর্তে এসে একটা মেয়ের
সাথে ইমানের কিছু কুরুচিপূর্ণ ছবি দেখায় ওকে।
মিম মৃদু হেসে বলে,
– বাবা এডিট হয়নি ভালো ভাবে।তুমি কি কাজ টা ঠিক করলে আমার সাথে? মাহির সাহেব অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে মেয়ের দিকে।ইমান আসন ছেড়ে উঠে এসে বলে,
– বিয়ে টা শেষ হোক,তারপর না হয় বোঝাপড়া করবো আপনার সাথে।আপনি কি দেখতে পাচ্ছেন না বাবা?
আপনার মেয়ে আমার সাথে কত সুখে আছে? না আমাদের সুখ টা সহ্য হচ্ছে না আপনার কাছে।মিম ওর হাত ধরে তিন বার কবুল বলে ওকে।ইমান তো আগেই বলেছিল শুধু রেজিস্ট্রি পেপারে সাক্ষর করে দেয় সাথেসাথে।মাহির সাহেব যেতে যেতে মেয়ে কে বলেন,
– তুমি কখনো সুখী হবে না ওর সাথে।আমি তোমার ভালোর জন্যে এসব করেছি।
– কিছু করতে হবে না আপনাকে।
আপনি কখনো আমাকে ভালো বাসেননি তার প্রমাণ অনেক বার পেয়েছি  ছোটো বেলা থেকে।
না হলে কি পারতেন আপনার বড় মেয়ের জন্যে আমার জীবন টা নরক করে দিতে?
আসলে আপনার স্বার্থ টাই আসল আপনার কাছে।আমি তো গুটি মাএ আপনার পাশা খেলার।
আপনি এখন আসতে পারেন এখান থেকে কারন আমি আজ থেকে জানবো আমার কোনো বাবা নেই,
সে মরে গেছে অনেক আগে।ইফতি সাহেব উঠে এসে মিমের হাত ধরে বলে,
– শান্ত হও মা,রাগারাগি করলে তোমার শরীর খারাপ হয়ে যাবে।
– না বাবা অনেক হয়েছে।আমি আর সাহায্য করতে পারছিনা এই লোকটা কে।
তারপর সবার সাথে এটা-ওটা আলোচনা করতে করতে
মাহির সাহেবের কথা বেড়িয়ে যায় ওর মাথা থেকে।
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url