Breaking News

অবুঝ প্রেমের গল্প । পর্ব-০২

পরের দিন কলেজে যাবার পথে উৎস আমার সামনে এগিয়ে আসে,
আর আমি তাকে দেখে ফিরে যেতে থাকি।
আর তখনই ও আমাকে ডেকে বলে…
তুমি আমাকে এড়িয়ে চলো কেন বলোতো?
আমি তখন তাকে দেখে লজ্জা+ভয় পাচ্ছিলাম কিছুটা।
আর রাগও হচ্ছিলো।
-এড়িয়ে চলবোনাতো কি করবো?
-আমি তোমাকে কি বলেছিলাম মনে নেই?
-কবে আবার কি বললেন?
-আমি তোমাকে বছর কয়েক আগে বলিনি?তুমি পড়াশোনা করে বড় হও আমি তোমাকে বিয়ে করবো।
-আমার ওসব মনে নেই।
-তোমার বান্ধবী তোমাকে নাম্বার দিয়েছে?
-কিসের নাম্বার?
-আমি আমার ফোন নাম্বার দিয়েছি ওকে।
যাতে তোমাকে দেয়।
বা আমাকে সে ফোন দেয়,যাতে তোমার সাথে আমি যোগাযোগ করতে পারি।তোমার খবর জানতে পারি।
ওহ এত ক্ষণে বুঝেছি,মনা ভুল ভেবেছে।
উৎস তো ফোন নাম্বার দিয়েছে আমার জন্য।ওর জন্য না।
এ কথা ভাবতে ভাবতে আমি তাকে বললাম,কি দরকার আমার সাথে যোগাযোগ করার?
-দেখো কুহু,আমি এক কথার মানুষ।
তোমাকে আমার সেই ছোট্ট বেলায় ভালো লেগেছিলো,আর তাই আমি তখনই ডিসিশন নিয়েছিলাম,আমি তোমাকেই বিয়ে করবো।
বলতে পারো তখনই আমি তোমার প্রেমে পড়েছিলাম।তাইতো অন্য কারো দিকে তাকাইওনি এত বছর।
-না করেছিলো কে তাকাতে?
-তাকিয়েই বা কি লাভ বলো?ভাল যে আমি তোমাকেই বাসতাম।
-হয়েছে এবার সরুন সামনে থেকে।
-না আগে বলো,তোমার অভিমত কি।
-আমার কিছু বলার নাই,আমার পরিবার যা বলবে তাই হবে।
-তুমি কি আমাকে বিয়ে করতে চাওনা?
-আমার আব্বু আম্মু যার কাছে আমাকে বিয়ে দিবেন,আমি তাকেই বিয়ে করবো।
-তাহলে আমার এত দিনের ভালবাসা?অপেক্ষা?
-এসব আমি কি জানি,আমি কি বলেছিলাম অপেক্ষা করতে?
প্লিজ নিজের মত বাঁচুন।আমাকে যেতে দিন।
আর যদি এতই মন চায় আমাকে বিয়ে করতে,তাহলে আমার আব্বু দেশে আসলে প্রস্তাব দিয়েন।
তার আগে প্লিজ আমার সামনে আর আসিয়েন না।
আমাকে আর আমার আম্মুকে বিরক্তও করিয়েন না।
আসলে আম্মু যেভাবে ওর সম্পর্কে বলে সেদিন আমাকে ওর দিকে নজর দিতে নিষেধ করেছে।
এরপর আর ওর দিকে কোন ভাবেই তাকাইনি।যেখানে আম্মুর নিষেধ।সেখানে আমি পা বাড়ানোর কথা চিন্তাও করিনি।
আমার কথা শুনে উৎস শুধু বল্লো,ঠিক আছে।
তুমি না বলা পর্যন্ত আমি তোমার সামনে আসবোনা।
এ কথা বলে আমি চলে আসি।আর আমাদের দেখা বা কথা হয়না।
কেটে যায় অনেক গুলো দিন।
হঠাৎ আমার মোবাইলে একটা রং নাম্বার থেকে ফোন আসে।আমি রিসিভ করি,রিসিভ করার পর সে কি যেন একটা নাম তাকে চায়।
আমি রং নাম্বার বলে রেখে দেই।
সে আচ্ছা সরি বলে রেখে দেয়।
কিন্তু কিছু ক্ষণ পর আবার তার ফোন,
-আপনাকে না বললাম রং নাম্বার?
আবার ফোন দিয়েছেন যে?
-আপনার ভয়েজ টা খুব সুন্দর।এটা বলতে ২য় বার ফোন দিলাম।
-ওহ আচ্ছা।তো রখন আমি কি করতে পারি?
-না মানে একটু কথা বলা যাবে?
-না যাবেনা।
-রং নাম্বারে আমার না বন্ধুত্ব/প্রেম করার খুব সখ।রং নাম্বার ছবির মত।
একটু বন্ধু হবার সুযোগ দিবেন?আর যদি বন্ধুত্ব থেকে প্রেম হয়ে যায়,তাহলেতো আর কথাই নেই।
এই দিকে এই ছেলে আমাকে দিন রাত ফোন করে।
একদিন রিসিভ করে বললাম,কি চান আপনি?
-আমি আপনার বন্ধু হতে চাই।
-আমি অচেনা কারো সাথে বন্ধুত্ব করিনা।
-আগে তাহলে চেনা হই,
নাম কি আপনার?
-আপনাকে কেন বলবো?
দেখুন সামনে আমার পরীক্ষা।আপনি এই ভাবে বিরক্ত করলে কিন্তু আমার এক্সাম খারাপ হবে।
-ওহ আগে বলবেতো।ঠিক আছে।
আমি নিয়ম করে তোমাকে তিন বেলা ফক্ন দিবো।
সকালে দুপুরে আর রাতে।
মন দিয়ে পড়বে কেমন?
-আচ্ছা ঠিক আছে পড়বো।
তবে প্লিজ ফোন টা দিয়েন না।
কিন্তু ছেলেটা আমাকে ঠিকই তিন বেলা ফোন দিতো।
আর বলতো,এখন পড়তে বসো।
ঠিক মত পড়বে।
ব্যাস শেষ!
মাঝে মাঝে আমার পড়ায় কোন সমস্যা হলে তাকে জিজ্ঞেস করতাম।
সেও আমাকে বলে বুঝিয়ে সলভ করে দিতো।
একটা সময় ভাবলাম,থাক!বেচারাতো শুধু মাত্র বন্ধুই হতে চায়।
হই না হয় বন্ধু।
ক্ষতি কি।
ছেলেও চেনেনা আমাকে,আমিও চিনিনা।
সমস্যা কি।আর ছেলেটা ভালোই।কোন সমস্যা হবারও কথা না।
দেখতে দেখতে আমার জন্মদিন চলে আসলো।
আমি তাকে বললাম,জানো কাল আমার জন্মদিন।
ও আমাকে বল্লো,তাহলে চলো কাল আমরা দেখা করি।
আমিও বান্ধবীদের সাথে বুদ্ধি করে হ্যাঁ বলে দিলাম।
এর মাঝে একজন তো বলেই দিলো,তোর বন্ধু হ্যান্ডসাম হলে আমি কিন্তু তার গলায় ঝুলে পড়বো।
আমি বললাম হুম পড়িস পড়িস।
বান্ধবীরা সকালে আমার বার্থডে সেলিব্রেট করলো।
দুপুরের দিকে আমাদের খাওয়াদাওয়া প্রোগ্রাম শেষ।
হঠাৎ আমার মোবাইলে কল আসে।
আমি বান্ধবীদের বলি,
ওই ওই হৃদের কল।ও বোধয় এসেছে।
ওপাশ থেকে হৃদের কন্ঠে,
আমি এসেছি।
তুমি কই?
-আপনি কই?
আমি তো মার্কেটের ভেতরেই।
-ভাবছি তোমার সামনে আসবো কিনা,
-আসবো কিনা মানে?
-আমি দেখতে যে বাজে।
আমাকে দেখে না আবার বন্ধুত্বই নষ্ট করে দাও।
-এই যে শুনুন,আপনি আমার বন্ধু,বয় ফ্রেন্ড না,তাই সুন্দর অসুন্দর কোন ম্যাটার না।
আপনি আসুন।
-তাহলে কথা দাও,আমাকে দেখার পর বন্ধুত্ব নষ্ট করবেনা।
-আরে বাবা কথা দিলাম কথা দিলাম করবোনা নষ্ট বন্ধুত্ব।
-তাহলে তাকাও পেছনে আমি তোমার পেছনেই আসছি।
যেই না আমি পেছনে তাকিয়েছি,
চোখ যেন আমার চড়কগাছ।
আর মনে মনে ভাবছি,
এ আমি কার সাথে কথা বলতেছি এত দিন!
চলবে…

No comments

info.kroyhouse24@gmail.com