Breaking News

কাছে থেকেও সে অচেনা । পর্ব- ৩৬

সময়ের কাজ সময়ে থাকতে করতে হয়।
একবার সময় চলে গেলে তা কারো জন্য ফিরে আসবে না।
সময় তার নিজস্ব গতিতে চলে।
মানুষের জীবনে এমন কিছু কিছু ভুল থাকে যা হয়তো শুধরানোর সময় বা সুযোগ মিলে না।
কখনো নিজের করা ছোট একটা ভুল হয়তো সম্পূর্ণ জীবনে মানেই বদলে দিতে পারে।
কিছু কিছু সময় তো দেখা যায় আপনজনদের করা এমন কিছু ভুল আছে যা মেনে নিতে কষ্ট হয়।
তাদের একটা ভুলের কারণে সবচেয়ে রাগী, বদমেজাজি লোকটাও কেমন নির্জীব হয়ে যায়।
যে মানুষটি এক সময় আপনজনদের ভালো দেখে খুশি হতো, তারা কষ্ট পেলে নিজেকে নিঃস্ব মনে হতো।
তারার একসময় আপনজনদের ভুলের চোরাবালিতে আটকে অনুভূতি শূন্য হয়ে পড়ে।
জীবনের হাঁসি, আনন্দ, অশ্রু এমনকি সবকিছু থেকে নিজেকে গুটিয়ে নেয়।
আশেপাশের সবকিছু থেকে নিজেকে সরিয়ে রাখে ।
এক সময় কথায় বলতে ভুলে যায় কেমন নীরবতা পালন করে।
.
একটা সময় ছোট ভুলও জীবনের খাতার হিসেব উল্টাপাল্টা করে দেওয়ার জন্য যথেষ্ট।
মেহেকের সিকান্দার মির্জাকে বিশ্বাস করা ছিল সে ধরনের বড় ভুল।
সিকান্দার মির্জার ও না না রাশেদ হাসানের সেদিন বলা কথাগুলো মেহেক ভুলতে পারছিলো না।
নিজের মা বাবার খুনিকে সামনে পেয়েও কিছু করতে না পারার কষ্ট যে ওকে কুঁড়ে কুঁড়ে খাচ্ছিল।
কিন্তু মেহেক আজ এতটাই অসহায় যে রাশেদ হাসানের কিছুই করতে পারবে না।
যে প্রিন্স ওকে ওকে রাশেদ হাসানের থেকে বাঁচতে চেয়েছে মেহেক তাকেই ভুল বুঝে গেছে এতদিন।
কতবার প্রিন্সকে অভিশাপ দিয়েছে ।
এটাও তো বলেছে , আজকে যেমন প্রিন্স মানুষের রক্ত ঝরাচ্ছে একদিন তার আপনজনদের রক্ত ঝরবে।
সেদিন মেহেক কতবড় ভুল করেছে তা এখন হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছে।
এখন নিজের প্রতি নিজের ঘৃণা হচ্ছে ‌।
বেঁচে থাকার ইচ্ছা হারিয়ে ফেলেছে।
রাশেদ হাসানের থেকে এতো বড় ধোঁকা পেয়ে কেমন অনুভূতি শূন্য হয়ে পড়েছে।
যে মেহেক এতদিন মুনকে নিয়ে চিন্তায় বিভোর ছিলো সে আজ তা থেকে মুক্ত।
সেদিন রাশেদ হাসানের কথাগুলো শুনার পর থেকেয় বোনকে নিয়ে চিন্তা নেয় ‌
মুনের জন্য আগের মতো উৎকণ্ঠায় দিন কাটছে না।
কারণ মুন সবচেয়ে নিরাপদ স্থানে রয়েছে তা
মেহেক এখন ঠিক বুঝতে পারছে ।
এতদিন মেহেকের মনে একটায় প্রশ্ন জেগেছে সে মরে গেলে ওর বোনটা একা এই নিষ্ঠুর পৃথিবীতে বাঁচতে পারবে তো?
নাকি কারো কালো থাবায় শেষ হয়ে যাবে।
কিন্তু নাহ্ এখন তা ভাবতে হচ্ছে না।
কারণ সে মরে গেলেও প্রিন্স মাহমুদ বেঁচে থাকতে মুনের কিছু হতে দিবে না।
তা মেহেক ভালো করে জানে।
এখন ওর মৃত্যু হলেও আফসোস থাকবে না।
কিন্তু এতো সহজে কি ওরা আমাকে মরতে দিবে?
হয়তো ওরা আমাকে খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে রক্তাক্ত করবে তবুও একবারে শেষ করবে না।
ওদের আচরণ তো সেটাই প্রকাশ পাচ্ছে।
তবে রাশেদ হাসানের সেদিন কথা বলার পর থেকে ওর দিনগুলো কেমন ঘোরের মধ্যে কাটে।
ইদানিং কেমন অল্পতেই শরীরে ক্লান্তি লাগে।
কিছুক্ষণ বসে থাকলে
শরীর কেমন আসাড় হয়ে আসে।
মাথা ঝিমঝিম করে।
মেহেক ইদানিং একটা বিষয় খেয়াল করছে পেটের মধ্যে কিছু একটা গন্ডগোল হচ্ছে।
কখনো পেটের ডান পাশে একটু ফুলে উঠে আবার কখনো বাম পাশে।
সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে অনাহারে অর্ধাহারে থেকে শরীর শুকিয়ে গেছে কিন্তু পেট তো ঠিক আগের মতোই আছে।
তবে পেট বেচারা আগের মত আজকাল
ক্ষুধা সহ্য করতে পারে না।
কিন্তু এরা তো প্রতিদিন খাবার দেয় না ওকে।
একবেলা বা একদিন পরপর খাবার দেয়।
আর তখন মেহেক খাবার সামনে দেখলেই খেতে ঝাঁপিয়ে পড়ে।
সে সময়ে মনে হয় এক মুহুর্তের মধ্যে সব খেয়ে শেষ করে দিবে।
কিন্তু তা আর সম্ভব হয় না দেখা যায় অল্প একটু খেলেই পেট ভরে যায়।
বমি বমি ভাব হয়।
আরেকটা কথা ভেবে মেহেক যতটা না অবাক হচ্ছে তার থেকে বেশি চিন্তিত সে।
চিন্তা হওয়ার কথায় তো এবারেই ওর ফাষ্ট চার মাসের বেশি সময় ধরে পিরিয়ড হচ্ছে না।
ওর রেগুলার না হলেও আগে কখনো এমন হয়নি।
বেশি হলে আড়াই তিন মাসের মধ্যে হয়ে যেতো।
মেহেকের সন্দেহ হচ্ছে সে মা হবে না তো?
কারণ ওর মধ্যে তো মা হওয়ার লক্ষণ বেশি প্রকাশ পাচ্ছে।
মেহেক কয়েক মাস আগে ফেসবুকে একটা আর্টিকেল পড়েছিল গর্ভবতী হলে কি কি লক্ষণ দেখা দেয়।
ওর সাথে তা অনেকটায় মিলে যাচ্ছে।
তবে চিন্তা, অনিদ্রা রক্ত শূন্যতা কারণে ও এসব লক্ষণ হতে পারে।
ওর আসলে কোনটার জন্য এমন হচ্ছে তা বুঝতে পারছে না।
শরীরটাও কেমন নির্জীব হয়ে থাকে।
মেহেক ভাবছে আসলেই সে সত্যি সত্যিই মা হচ্ছে না তো?
রাশেদ হাসানের কথাগুলো শুনার পর থেকে মনের মধ্যে একটা প্রশ্ন উঁকি ঝুঁকি দিচ্ছে।
সে কি পারতো না প্রিন্সকে বাবা হওয়ার সুখ দিতে?
প্রিন্স বাচ্চাদের কতটা ভালোবাসে তা তো ওর মা হওয়ার মিথ্যা সংবাদ দিয়েই বুঝতে পেরেছে।
প্রিন্সেস বাচ্চা নিয়ে পাগলামি গুলো দেখেও কেন মায়া হয়নি।
যে মানুষটি ওকে সম্মানের জীবন দিয়েছে সে তাকেয় ধোঁকা দিয়েছে।
তাইতো নিজেও ধোঁকা খেয়েছে।
এখন নিজ কর্মের ফল ভোগ করছে।
কথাগুলো ভাবতে গিয়ে মাথাটা ঝিমঝিম করে উঠলো।
ইদানিং সব সময় কেমন ঘোরের মধ্যে কাটছে ।
মেহেকের মনে হচ্ছে রাশেদ হাসান ওর খাবার সাথে কোনো নেশা দ্রব্য মিশিয়ে দেয়।
সেজন্য ঘোরের মধ্যে কাটে।
তবে আজকে তেমন ঘোর লাগছে না কিন্তু শরীরের মধ্যে কেমন জ্বালা পোড়া করছে।
মাথাটা ঝিমঝিম করছে।
গলা শুকিয়ে আসছে সহ্য করতে ভীষণ কষ্ট হচ্ছে।
মনে হচ্ছে তার কোনো কিছুর জন্য নেশা হচ্ছে।
ইস্ কিছুক্ষণ পর পর মাথা ভিতরে মনে হচ্ছে কেউ কিছু দিয়ে খোঁচা দিচ্ছে ।
হঠাৎ হঠাৎ সে ব্যথা এতটাই তীব্র মনে হচ্ছে মাথাটা ফেটে যাবে।
মেহেক চোখ বুজে ঘুমানোর চেষ্টা করছে ।
তাহলে হয়তো একটু ভালো লাগতে পারে।
অনেকক্ষণ ধরে চেষ্টা করার পর চোখে মাত্র তন্দ্রা ভাব এসেছে এর মধ্যে মনে হচ্ছে ওর উপরে কেও একজন ঝাঁপিয়ে পড়েছে।
নিজের শরীরের উপর ভার কিছুর অস্তিত্ব টের পেয়ে ভাবছে আচ্ছা প্রিন্স আসেনি তো?
হয়তো আমাকে এখানে থেকে বাঁচাতে এসেছে।
ইস্ কতদিন পর তাকে দেখবো ভাবতেই মনটা ভালো হয়ে যায়।
প্রিন্সকে দেখার খুশিতে মূহুর্তের মধ্যেই মেহেকের তন্দ্রা কেটে গেল।
চোখ খুলে দেখে প্রিন্স না অন্য একটা লোক ওকে খাটের মধ্যে চেপে ধরেছে।
মেহেক ভয়ে জমে গেছে।
তবে নিজেকে বাঁচাতে হবে ভেবে ভয়কে দূরে সরিয়ে লোকটাকে নিজের উপরে থেকে সড়াতে ধস্তাধস্তি শুরু করে দিয়েছে।
কিন্তু শরীর দুর্বল থাকায় লোকটার শক্তির সঙ্গে পেরে উঠছে না।
তবে তাই বলে বেঁচে থাকতে নিজের শরীরে কলঙ্কের দাগ লাগতে দিবে না।
শেষ নিঃশ্বাস পর্যন্ত নিজেকে বাঁচাতে লড়াই করে যাবে।
কথাটা ভেবে মেহেক তার হাঁটু দিয়ে লোকটার মেইন পার্টে জোরে বারি দিল।
কিন্তু তাতেও লোকটার কিছু হলো না ।
লোকটা ওর দিকে তাকিয়ে বিচ্ছিরি ভাবে হাঁসি দিয়ে বললো, এতটুকুতে তো কোবরা কে গায়েল করতে পারবি না।
তোর থেকে তেজি মাগীরা আমার কাছে এলে বিড়াল হয়ে যায়।
তুইতো শালী তাদের তুলনায় পানি ভাত।
কোবরা যখন মেহেককে এসব কথা বলছিল।
মেহেক সে ফাঁকে শরীরের সব শক্তি লাগিয়ে কোবরা কে ধাক্কা দেয়।
কোবরা অন্যমনষ্ক থাকায় মেহেকের ধাক্কা খেয়ে ওর থেকে কিছুটা দূরে ছিঁটকে পড়ে।
সামান্য সু্যোগ পেয়ে মেহেক তাড়াহুড়ো করে খাটে থেকে নামতে যায় কোবরা ঝট করে মেহেকের এক হাত ধরে ফেলল।
মেহেক কোবরার কাছে থেকে ছাড়া পেতে কোবরার সাথে ধস্তাধস্তির করার এক পর্যায়ে মেহেক কোবরার চোখ মুখে খামচে নক বসিয়ে দিয়েছে।
এবং যে হাত দিয়ে ওকে ধরেছে তাকে কামড়ে দাঁত বসিয়ে দেয়।
কিন্তু কোবরা তো এতো সহজে মেহেককে ছাড়বে না।
আজকে যে করেয় হোক সে মেহেককে ভোগ করবেই দরকার হলে রক্তের বন্যা বয়ে যাক তবুও সে থামবে না।
কারণ প্রিন্সকে গুরিয়ে দিতে হলে তার বৌকে বিবস্ত্র করতে হবে।
কথাটা ভেবে কোবরা একটা সয়তানী হাসি দেয়।
ওর মুখের হাসি দেখে মেহেকর মনে আতংকের সৃষ্টি হচ্ছে।
কিছুক্ষণ পর
পায়ের নিচে দিয়ে রক্তের ফোয়ারা ছুটে যাচ্ছে,
পেটের ভিতরে ও কোমরের নিচে থেকে ব্যথায় কেমন ছটফট করছে , মেহেক চিৎকার করার শক্তি টুকুন পাচ্ছে না।
এমন ব্যথা আগে কখনো অনুভব হয়নি।
মনে হচ্ছে ও মারা যাচ্ছে।
এইতো কিছুক্ষণ পুর্বে সবকিছু তো ঠিক ছিল।
কিন্তু কোবরার কাছে থেকে মেহেক নিজেকে বাঁচতে ধস্তাধস্তি করেও যখন নিজেকে বাঁচাতে পারছিলো না।
তখন মেহেক নিজের ইজ্জত বাঁচাতে কোবরার হাতে দাঁত বসিয়ে মাংস তুলে নেয়।
কোবরা ব্যথা পেয়ে রেগে মেহেককে জোরে ধাক্কা দিয়ে নিচে ফেলে দেয়।
মেহেক ধাক্কা সামলাতে না পেরে ধাঁপাষ করে ওপর হয়ে ফ্লোরে পরে যায়।
সে নিচে পরেই মা বলে একটা চিৎকার দেয় তা দেখে কোবরা উচ্চস্বরে হাসতে থাকে।
তার চিৎকার হয়তো এই পাষন্ড এর কানে পৌঁছাতে পারেনি।
এদিকে মেহেক নিচে পরার পর থেকেই ব্যথায় ছটফট করছে।
ওর ছটফটানি দেখে ও চিৎকার শুনে কোবরা হেসে হেসে বলেন, আরও জোরে চিৎকার কর।
যেনো তোর ছটফটানি প্রিন্সের কানে পৌঁছায়।
তোর কষ্ট অনুভব করতে পারে।
কোবরা কথা বলতে বলতে মেহেকের কাছে গিয়ে ওকে টেনে দাঁডা করিয়ে ওয়ালে চেপে ধরে ।
কোবরা মেহেকের কাছাকাছিতে যাবার আগে পায়ের তলায় ভেজা অনুভূতি হওয়াতে নিচে তাকিয়ে চমকে উঠে।
এই শালীর তো পা বেয়ে রক্তের ফোয়ারা ছুটছে।
ধ্যাত এটা কিছু হলো।
ভাবলাম আজকে সারারাত শালীকে নিয়ে কাটাবো, আমাকে কামড় দেওয়ার মজা হারে হারে বুঝাব।
ওর শরীরের এক ইঞ্চিও অক্ষত রাখবো না।
কিন্তু এই শালী আমার আসায় পানি ঢেলে দিয়েছে।
এখন তো রাতটায় বরবাদ মনে হচ্ছে।
ছিঃ ছিঃ কি অবস্থা।
শালীকে দেখে আমার খায়েস মিটানোর রুচিই চলে গেছে।
এই মাগীর জন্য আমার রাতটায় শেষ হয়ে গেছে । তারপর কোবরা জোরে জোরে বললেন,
আজকে তোকে ছেড়ে দিচ্ছি তবে এতে খুশি হয়ে লাভ হবে না।
এরপর যে দিন আসবো আজকে আমাকে খালি মুখে ফেরানোর এবং কামড় দেওয়ার শাস্তি সেদিন হারে হারে ভোগ করবি।
আমি দেখবো তুই কত কামড় খেতে পারিস।
আমার মাংস তুলে নেওয়ার মজা কতটা ভয়ংকর তার বুঝতে পারবি হিসহিসিয়ে কথাটা বলে কোবরা রুমে থেকে চলে যায়।
এদিকে মেহেকের দাঁড়িয়ে থাকতে কষ্ট হচ্ছে, ইস্ ব্যথায় মনে হচ্ছে মরেই যাবে।
নড়াচড়া করার শক্তিও হারিয়ে ফেলেছে।
এখনেই পরে যাবে এমন মনে হচ্ছে।
এর মধ্যে মনে হচ্ছে পেটের ভিতরে থেকে কিছু ছিঁড়ে বের হয়ে যাচ্ছে।
আশেপাশের সবকিছু ধ্বংস করে দিচ্ছে এমন অনুভব হচ্ছে।
হঠাৎ করে মনে হলো প্লাজু’ ফাঁক দিয়ে পা গলিয়ে দলা পাকিয়ে কিছু নিচে পড়ছে।
মেহেক অনেক কষ্ট করে নিচের দিকে তাকিয়ে থমকে যায়।
ওর পায়ের কাছে একটা রক্তাক্ত ছোট মানব ভ্রূণ।
এই দৃশ্য দেখে মেহেক দাঁড়ানো থেকে ঠাস করে ফ্লোরে পড়ে যায়।
মাথাটা ভ্রূণের পাশে পড়াতে চোখ ওখানে আটকে থাকে।
কিছুক্ষণ আগেও ব্যথায় ছটফট করছিল।
কিন্তু এখন ওর শরীরের ব্যথা হচ্ছে কিনা বলতে পারবে না।
বুকের মধ্যে কিছু একটা চাপ দিয়ে কেমন দলা পাকিয়ে আছে।
মনে হচ্ছে নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে আসছে।
মেহেকের চোখের সামনে পালিয়ে আসার আগে প্রিন্সের সে হাস্য উজ্জ্বল মুখটা ভেসে আসছে।
বাবা হবে শুনে লোকটা পাগলের মত করছিল।
কি রেখে কি করবে ভেবে পাচ্ছিল না।
তার খুশির সীমা ছিল না।
কিন্তু এখন কী হবে?
মেহেক তো ভেবেছিল সে প্রিন্সকে বাবা হবার মিথ্যা সংবাদ দিয়েছে।
কিন্তু তা যে চরম সত্য সেই তো জানতো না।
এতদিন তো সেই মিথ্যার মধ্যে ছিল তার জলযান্তো প্রমাণ চোখের সামনে তার নারী ছেড়া বাচ্চা বা মাংসপিন্ডো।
মা হয়ে সে তার বাচ্চাটাকে সে খুন করে ফেললো।
প্রিন্সকে দেওয়া তার অভিশাপ এভাবে ফলে যাবে তা তো ভাবেনি।
মেহেকের চিৎকার করে কাঁদতে ইচ্ছে করছে কিন্তু গলা দিয়ে শব্দ বের হচ্ছে।
সে একজন মা হয়েও তার সন্তানকে মারতে পেটে বন্ধুক ধরেছিল।
প্রিন্স সেদিন তাকে কতো অনুরোধ করছে কিন্তু সে তা শুনেনি বরং বাচ্চাটাকে নিয়ে কত আজে বাজে খারাপ কথা বলেছে।
তাইতো ওর বাচ্চাটা অভিমান করে ওর থেকে দূরে চলে গেল।
সে এমনেই মা যে সন্তানের অস্তিত্বের কথা বুঝতেই পারিনি।
সে তো মা নামের কলঙ্ক।
তার মরে যাওয়া উচিত।
আচ্ছা প্রিন্স যখন জানবে আমাদের বাচ্চাটা আর নেয়।
তখন তার কি অবস্থা হবে?
মা বাবাকে হারানোর ব্যথা সন্তানকে পেয়ে ভুলতে চেয়েছিল কিন্তু আমার জন্য তা হয়নি।
সন্তানকে হারানোর ব্যথা লোকটা সহ্য করতে পারবে তো?
মেহেকের চোখের সামনে ভেসে আসছে প্রিন্সের সাথে কাটানো মূহুর্তগুলো।
এদিকে ফ্লোরে রক্তে মাখামাখি হয়ে যাচ্ছে।
মেহেকের চোখে ঘুম নেমে এসেছে।
তাকিয়ে থাকতে পারছে না।
চোখের সামনে অন্ধকার এসে ভিড় করছে।
আহা বাচ্চাটা তাকে ডাকছে সাথে যেতে মেহেক মুচকি হেসে চোখ বন্ধ করে নেয়।
চলবে…

No comments

info.kroyhouse24@gmail.com