Breaking News

কাছে থেকেও সে অচেনা । পর্ব- ৩৭

বাচ্চাটা যে মেহেককে সাথে যেতে ডাকছে ,
আর ডাকবে না কেন !
ছোট্ট মানুষ মা’কে ছেড়ে থাকতে পারে নাকি?
তাদের সবকিছুতেই মা’কে লাগে।
পৃথিবীতে ভূমিষ্ঠ হওয়ার পর থেকে তাদের না বলা কথাগুলো তো একমাত্র মায়েরায় বুঝতে পারে।
আল্লাহ মায়েদের সে ক্ষমতা দিয়েছেন।
সুস্থ সবল ও শিশুদের তো মা’কে ছেড়ে থাকা দায় হয়ে যায়।
সেখানে মেহেকের বাচ্চাটা পরিপূর্ণ বয়স বা গ্রোথ কিছুই হয়নি।
তবুও সুন্দর করে মা ডাকছে।
মেহেকের বাচ্চাটা তাকে ডাকছে সঙ্গে যেতে কথাটা ভেবে মেহেক মুচকি হেসে চোখ বন্ধ করে নেয়।
ওর দু’চোখ জুড়ে প্রচন্ড ঘুম পাচ্ছে কিন্তু
ওকে যে সন্তানের সাথে যেতে হবে।
নাহলে এতটুকু বাচ্চা মায়ের জন্য কাঁদবে তো।
অভিমান ও করতে পারে।
সোনা একা একা ভয় করছে?
ভয় পাসনে আমি এখানে আছি তো!
মেহেক মনে হয় বন্দিজীবন থেকে মুক্তির স্বাদ পেতে যাচ্ছে।
তার সন্তান মা’কে মুক্ত‌ করে নিজের সাথে নিয়ে যেতে এসেছে।
হয়তো মায়ের কষ্ট দেখে বাচ্চাটা সহ্য করতে পারেনি।
কথাটা ভেবে মেহেক তার সন্তানের দিকে তাকিয়ে বলে,আসছি সোনা তোর সাথে আসছি বিরবির করে কথাগুলো বলে একবারে নিশ্চুপ হয়ে যায়।
ওদিকে সিকান্দার মির্জা ওরুফে রাশেদ হাসান আজকে মনের সুখে মদ গিলছে।
আজকে ওকে বাঁধা দেওয়ায় জন্য তার বস কোবরা সময় পাবে না।
একান্তে সময় কাটানোর জন্য মেয়ে মানুষের কাছে গেলে তার বস আশেপাশের সব কিছু ভুলে যায় তা রাশেদ হাসান ভালো করেয় জানেন।
সেখানে মেয়েটা যদি হয় তার জাত শত্রুর বৌ তাহলে তো কথায় নেয়।
ইস্ বসের জীবনটা পুরায় মাখনের মত।
টাকা ,মদ ও নিত্য নতুন মেয়ে মানুষ নিয়ে মোজে রয়েছে।
আমার এমন জীবন হলে টাকা থাকলে সুন্দরীদের ভালোবাসায় চারপাশ রঙিন হয়ে যেতো।
রাশেদ হাসান ভাবছে,আজকে মদ খেয়ে হওয়া যাবে না।
কতদিন হলো কোনো নারীর সান্নিধ্যে পাচ্ছে না।
আজ রাতে একটা নারী দেহের প্রয়োজন খুব অনুভব হচ্ছে।
কিন্তু বস নামক ভয়ংকর কোবরার ভয়ে এতক্ষন এটা মাথায় ছিল না তবে ব্যাপার না একটু মদ গিলে তারপর এখানে থেকে একটা ধরে নিয়ে মজ করা যাবে।
এই সব ক্লাবে তো এটা ডাল ভাতের মত।
রাশেদ হাসান যখন এসব ভাবছিল
সে সময়ে ২০ বা ২২ বছরের সুন্দরী একটা নারী এসে তার পাশে শরীর ঘেঁষে দাঁড়ায়।
মেয়েটার একটু ছোঁয়ায় যেনো তার শরীরে কারেন্টের শক খাচ্ছে।
রাশেদ হাসানের তো মেয়েটার রূপ আর ফিগার দেখে বাক বাকুম অবস্থা।
রাশেদ হাসান মনে মনে বলছেন,এতো জল না চায়তেই বৃষ্টির মতো অবস্থা হয়েছে
এই তো কিছুক্ষণ আগে একটা নারী দেহ হলেই চলবে ভাবছিল রাশেদ হাসান।
কিন্তু এতো সাক্ষাৎ রূপের রানী এসে তার দরজায় কড়া নাড়ছে।
আজকে কার মুখ দেখে যে এখানে এসেছিল তা জানতে পারলে ভালো হতো।
তাহলে রোজ রোজ সেই ব্যক্তির মুখ দেখে আসা যেত।
এদিকে মেয়েটার হাবভাব দেখে মনে হচ্ছে এর সাথে জোর জবরদস্তি করতে হবে না।
চাওয়ার আগেই সব পেয়ে যাবে।
রাশেদ হাসানের মনে হচ্ছে অনেক দিন পর আজকের রাতটা মন্দ কাটবে না।
কথাটা ভেবে তিনি মেয়েটার দিকে তাকিয়ে বলল, হ্যালো মিস ,
ইউ আর লুকিং সো হট।
তার কথা শুনে মেয়েটা মুচকি হেসে আবেদনময়ী কন্ঠে বলে,থ্যাংকস ফর কমপ্লিমেন্ট ,
সুইট বয়।
রাশেদ হাসান মেয়েটার দিকে তাকিয়ে মুচকি হেসে বলে,তাই বুঝি?
তা সুন্দরী তোমার নাম কী?
মেয়েটা রাশেদ হাসানের দিকে তাকিয়ে বলে,নাম দিয়ে কি করবে সোনা?
এর থেকে আমার রূপের সুধা লাগবে নাকি তাই বলো?
এখানে নাম জিজ্ঞেস করে সময় নষ্ট করে কে!
রাশেদ হাসান মেয়েটার দিকে তাকিয়ে বলল, এমন আগুন সুন্দরীর রূপের সুধা পেলে মন্দ হয় না।
তাছাড়া এমন রসগোল্লা চেকে দেখতে কে না চায়?
মেয়েটা রাশেদ হাসানের কথা শুনে বলে, রসগোল্লা না তিতা করল্লা সেই স্বাদ নিতে হলে তো আমার সাথে যেতে হবে সোনা,
যাবে নাকি ?
তাহলে এসো।
রাশেদ হাসান মেয়েটার কথা শুনে বলেন,যাবো না মানে?
চলো সুন্দরী।
রাশেদ হাসান মেয়েটার সাথে যেতে নিলে কোবরার লোক তাকে যেতে নিষেধ করে।
রাশেদ হাসান ওদের উপর ক্ষেপে বলে,শালা আমাকে বাঁধা দিলে আজকে তোদের খবর আছে?
এমনিতেই কিন্তু আমার মাথা গরম হয়ে আছে ।
ছেলেগুলো বললো,আপনাকে কারো সাথে কোথাও যেতে বস তো নিষেধ করেছেন।
কথাটা শুনে রাশেদ হাসান রেগে বলল,শালার ভাই একবারও ভাবছিস আমাদের বসের নিত্য নতুন মেয়ে লাগে ।
কয় আমাদের কথা তো সে একবারও ভাবে না।
আমরা কী পুরুষ না ?
সব গরম বুঝি তার একারেই আছে!
যে আমাদের বেলায় যতসব ফালতু নিয়ম বেঁধে দেয়।
রাশেদ হাসানের কথা শুনে লোকগুলো তবুও রাশেদ হাসানকে মেয়েটার সঙ্গে যেতে দিচ্ছিল না রাশেদ হাসান তখন ওদের কানে‌ ফিসফিসিয়ে বললো, আমাকে যেতে দে,এই শালীর স্বাদ আমি একা নিবো না, তোদের কেও স্বাদ নিতে দিবো।
রাশেদ হাসানের কথাগুলো বলতে দেরি ছেলেগুলো ফিঁচকে হেসে সরে যেতে দেরি হয়নি। তারাও তো অভুক্ত।
ওদিকে মেয়েটা কোমর দুলিয়ে দুলিয়ে সামনের দিকে হেঁটে যাচ্ছে রাশেদ হাসান সেদিকে তাকিয়ে জিভ দিয়ে ঠোঁট ভিজিয়ে নিচ্ছি।
মেয়েটার ক্লাবের শেষ মাথার দিকে যেতে দেখে রাশেদ হাসান বলে, সুন্দরী এদিকে কোথায় যাচ্ছ?
রুম তো পিছনে ফেলে এসেছি আর সামনে তো ভি আই পি দের রুম।
সেখানে তোমাকে আমাকে ঢুকতে দিবে না সোনা।
মেয়েটা রাশেদ হাসানের দিকে তাকিয়ে মুচকি হেসে বললো, তোমাকে ঢুকতে না দিলেও আমায় দিবে।
তাছাড়া ওখানে আমার জন্য সব সময় একটা রুম বুক করা থাকে।
তুমি ইচ্ছে হলে এসো নাহলে কেটে পড়োতো এতো প্যাঁচাল শুনার সময় নেয়।
রাশেদ হাসান মেয়েটার কথা শুনে মনে মনে বললো,শালীর কথায় তো মনে হয় নামীদামী শিল্পপতিদের সাথে উঠাবসা ‌।
বেশ তো আমার জন্য ভালোয় ।
মনের মধ্যে কেমন ফুর্তি লাগছে যেমন মনে হচ্ছে আজকে চাঁদ রাত ।
ওহ না না বিয়ে ছাড়া বাসর রাত।
কিন্তু রাশেদ হাসান তো জানে না ভিতরে ওর জন্য কি অপেক্ষা করছে।
চাঁদ রাত অমাবস্যায় পরিনতি হতে সময় লাগবে না।
মেয়েটা রাশেদ হাসানকে অন্ধকার একটা রুমে নিয়ে ধাক্কা দিয়ে খাটে ফেলে দেয়।
তারপর লাফ দিয়ে তার পেটের উপরে উঠে বসে দুই হাতের উপর হাত রেখে জরিয়ে ধরে।
রাশেদ হাসান তো মনে হচ্ছে পাগল হয়ে যাচ্ছে,
মেয়েটার এতটুকু ছোঁয়া পেয়ে সব এক্টিভ হয়ে যাচ্ছে।
রাশেদ হাসান আদুরে গলায় মেয়েটিকে বলল,বেবী অন্ধকারে কিছুই দেখতে পাচ্ছি না।
লাইটের আলোয় তোমার এই রূপ দেখতে চায়।
চাঁদনী রাতের সৌন্দর্য তোমার রূপে কেমন ফিকে হয়ে গেছে তা এই দুচোখ দিয়ে দেখতে চায়।
রাশেদ হাসান যখন কথাগুলো বলছিল তারমধ্যে রুমে অন্য একটা পুরুষ কন্ঠ ভেসে এলো।
ওয়েল ডান সোনালী।
আমি জানতাম কাজটি তুমি ঠিক মতো করতে পারবে।
এক মাস ধরে আমাদের অপেক্ষার আজ অবসান ঘটলো কি বলো?
মেয়েটা পুরুষ কন্ঠ শুনে রাশেদ হাসানের কাছে থেকে সরে এসে বললো।
জী,
মাই প্লেজার বস।
এদিকে অন্ধকার রুমে হঠাৎ করে পুরুষ কন্ঠ শুনে এবং মেয়েটাকে দূরে সরে যেতে দেখে রাশেদ হাসান ঘাবড়ে গেল।
আর কন্ঠটা হুবুহু প্রিন্সের মতো মনে হচ্ছে তার কাছে।
আচ্ছা মেয়েটার রূপ দেখে পা বাড়িয়ে ভুল করেনি তো?
কথাটা ভেবে রাশেদ হাসান তড়িগড়ি করে বিছানায় থেকে উঠতে গেলে ঠাস করে বিছানায় পড়ে গেল।
কারণ তার দুই হাতে সিকল দিয়ে আটকানো।
রাশেদ হাসান চিৎকার করে বলল,শালী তুই আমার সাথে দুই নাম্বারী করেছিস তো।
কি ভেবেছিস আমাকে আটকে রাখবি?
তাহলে ভুল আমার দলের ছেলেরা বাহিরে আছে কিছুক্ষণ পর তোকে আর তো বসকে কি অবস্থা করে দেখে নিস।
আর একবার আমি ছাড়া পায় তার পর দেখিস রাশেদ হাসান কি জিনিস।
আমি এবং আমার বস কোবরা তোদের এমন অবস্থা করবো যে নিজেকে নিজেই চিনতে পারবি না।
কথাটা বলা মাত্রই হঠাৎ করে রুমের লাইট জ্বলে ওঠে।
রাশেদ হাসান আশেপাশে তাকিয়ে ওর একটু সামনে প্রিন্সকে সোফায় পায়ের উপরে পা তুলে বসে থাকতে দেখে চমকে যায়!
প্রিন্স রাশেদ হাসানের দিকে তাকিয়ে বলল,ওর কি হবে তা তোর ভাবতে হবে না,
তুই আমার হাত থেকে বাঁচতে পারবি কিনা ?
তাই আগে ভাব ।
রাশেদ হাসান প্রিন্সের কথা শুনে হড়ভড় করে বললো,বাবা বিশ্বাস করো আমি তোমাকে ধোঁকা দিতে চায়নি।
ঐ মেহেক আমাকে বাধ্য করেছিল এমন করতে।
প্রিন্স রাশেদ হাসানের কথা শুনে বললো,কে কি করেছে তা পরে ভাববো , আগে বল আমার বৌকে কোথায় লুকিয়ে রেখেছিস কুত্তার বাচ্চা?
প্রিন্সের কথা শুনে রাশেদ হাসান বলে, আমি জানি না বাবা।
তোমার ওখানে থেকে আসার পর মেহেক আমাকে ধোঁকা দিয়ে কোবরার সাথে চলে গেছে।
আর জানো এই কোবরা কে?
এই কোবরা হচ্ছে তোমার চির শত্রু এবং মেহেকের এক সময়ের প্রেমিক।
সিকান্দার মির্জা তোকে খুন করে ফেলবো আমার বৌকে নিয়ে একটাও আজে বাজে কথা বললে।
সত্যি করে বল?
আমার বৌকে কোথায় আটকে রেখেছিস তোরা?
রাশেদ হাসান প্রিন্সের দিকে তাকিয়ে বললো, ছিঃ ছিঃ বাবা শ্বশুরকে কেও নাম ধরে ডাকে।
আর আমি তো বলছি আমি জানি না মেহেক কোথায় আছে!
ও যে ধরনের মেয়ে দেখো গিয়ে কোবরার সাথে কোথায় বসে ফূর্তি করছে কথাটা বলার পর মনে হলো, ইস্ আমি কি বলে ফেললাম মেহেক যে বন্দি আছে তা তো প্রিন্স জানেয়।
এদিকে প্রিন্স মাহমুদ রাশেদ হাসানের কথা শুনে সোনালীর দিকে তাকিয়ে বললো, সোনালী এই হারামজাদার মুখ খোলার ব্যাবস্থা করো।
আর সিকান্দার মির্জা ও না তুইতো রাশেদ হাসান।
সে যায় হোক তুই নিশ্চিত থাকতে পারিস এখানে তোকে কেও বাঁচাতে আসবে না।
কারণ এতক্ষণে আমার গার্ডরা তোর চেলাদের শেষ করে দিয়েছে।
আর সোনালী আমাদের হাতে সময় কম জলদি এর পেট থেকে কথা বের করতে হবে।
সোনালী প্রিন্সের হুকুম পেয়ে রাশেদ হাসানের মেইন পয়েন্টে সজোরে কয়েকটি লাথি মারে।
এতো বছরে প্রিন্স সোনালীকে সহজে পুরুষদের কাবু করার সব রকম শিক্ষা দিয়েছে।
এতদিন কাজে না লাগলেও আজকে তা কাজে লেগেছে।
এদিকে মেইন পয়েন্টে পর পর লাথি খেয়ে রাশেদ হাসান গগণবিদারী চিৎকার দেয়।
সোনালী সেদিকে ধ্যান না দিয়ে আবারো লাথি দিতে এগিয়ে গেলে, রাশেদ হাসান ভয় পেয়ে বলে, আমাকে মেরো না আমি বলছি,
সোনালী প্রিন্সের দিকে তাকিয়ে বলল,বস এটা কোনো কথা হলো,শালায় আগেই সব বলতে রাজি হয়ে গেছে।
আমি আরও ভাবলাম একটু ভালো করে খাতির যত্ন করবো তা আর হলো না।
সোনালীকে ইশারায় চুপ থাকতে বলে রাশেদ হাসানের কাছে এসে বললো,মেহেক কোথায় জলদি বল?
রাশেদ হাসান প্রিন্সের কথা শুনে বলল,মেহেক কোবরার পুরানো আস্তানায় আছে।
প্রিন্স বললো, তুই মিথ্যা বলছিস ওখানে মেহেক নেয়।
আমি নিজে গিয়ে ওখানে খুঁজে এসেছি কয়েকবার।
রাশেদ হাসান প্রিন্সের দিকে তাকিয়ে বলল, আমি মিথ্যা বলছি না।
মেহেক ওখানেয় তবে মাটির নিচে একটা রুমে বন্দি আছে।
প্রিন্স সিকান্দার মির্জার কথা শুনে বলল, ওখানে যেতে পারবো কিভাবে ?
সেই রাস্তা বল।
রাশেদ হাসান প্রিন্সের দিকে তাকিয়ে বলল, পুরানো আস্তানার নিচ তলায় একবারে দক্ষিণ সাইডে একটা স্টোর রুম আছে।
রুমের মধ্যে সব নষ্ট জিনিস পত্র রাখা।
সেখানে একটি পুরানো বড়সড় আলমিরা রয়েছে।
ওটার পার্ট খুললেয় কিছু কাপড় রাখা তা সরিয়ে দিলে একটা লকার রয়েছে।
আমার পকেটে একটা চাবি আছে ওটা লকারে দিলেয় আলমিরার পিছনের পার্ট সরে যাবে।
ওখানে দিয়ে নিচে যাওয়ার রাস্তা ।
ওখানেয় কয়েকটি রুম আছে যার একটায় মেহেককে রাখা হয়েছে।
সিকান্দার মির্জার কথা শুনে প্রিন্স সোনালীর দিকে তাকিয়ে বললো, ওকে আমার গোপন আস্তানায় রেখে আসবে।
আমি না আসা পর্যন্ত
ভালো মতো ওর খাতির যত্ন করবে প্রিন্সের স্টাইলে কথাটা বলে প্রিন্স রনির সাথে ফোনে কথা বলতে বলতে বের হয়ে যায়।
চার ঘণ্টা পর
প্রিন্স কিছুক্ষণ আগে কোবরার পুরানো আস্তানায় পৌঁছেছে।
এখানে পৌঁছাতে কয়েক দফা বাঁধার মুখে পড়তে হয়েছে।
কোবরার লোকজন আস্তানার বাহিরে এবং জঙ্গলের মধ্যে লুকিয়ে ছিল।
ওদের দেখে গুলি ছুড়ে।
হঠাৎ হামলা হওয়ায় ওর দুজন গার্ড আহত হয়েছে।
এখনও বাহিরে গুলা গুলি হচ্ছে।
প্রিন্স এবং রনি কোবরার গার্ডদের ফাঁকি দিয়ে আস্তানার ভিতরে ঢুকে গেছে।
কোবরা লোকজনের জন্য ওর গার্ডরা যথেষ্ঠ তাই ওখানে সময় নষ্ট না করে মেহেকের কাছে যাওয়া জরুরী মনে করেছেন।
প্রিন্স এখন স্টোর রুমের খুব কাছে।
ওর বুকের মধ্যে দুরুদুরু করছে।
সন্ধ্যা থেকে শরীর খারাপ লাগছে মনে হচ্ছে ওর প্রিয় কিছু ওকে ছেড়ে চলে যাচ্ছে।
বুকের ভেতর অসহ্য কর এক যন্ত্রনা হচ্ছে ।
যা বলে বোঝাতে পারবে না কাওকে।
তার মনের মধ্যে একটা প্রশ্ন বারবার উঁকি দিচ্ছে মেহেক ঠিক আছে তো?
আমি আসতে দেরি করিনি তো?
আমাদের সন্তানটা পৃথিবীর আলো দেখতে পাবে তো?
এসব প্রশ্নে মাথা জ্যাম হয়ে আছে।
স্টোর রুমের মধ্যে ঢুকে প্রিন্সের মনে হলো সেদিন এই রুমে সে এসেছিল।
তখন ওর বার বার মনে হচ্ছিল মেহেক এখানেয় কোথাও আশেপাশে আছে।
সেদিন যদি ঠিক মতো খুঁজতো তাহলে এতদিন মেয়েটাকে কষ্ট করতে হতো না।
কথাটা ভেবে আলমিরার পার্ট খুলে কাপড় সরিয়ে লকারে চাবি দিতেয় পিছনের অংশটা সরে যায়।
প্রিন্স নিচে যেতে নিলে রনিও সাথে যাচ্ছিল।
কিন্তু প্রিন্স ওকে এখানে থাকতে বলে।
ওর আসতে দেরি হলে না হয় রনি নিচে যাবে ।
আসলে প্রিন্স চাচ্ছে না রনিকে ভিতরে নিতে।
কারণ মেহেক কি অবস্থায় আছে তা তো প্রিন্স জানে না সেজন্য একা যাচ্ছে ভিতরে।
প্রিন্স নিচে যাওয়ার পর সামনে একটা দরজা দেখতে পায়।
দরজা ঠেলে ভিতরে গিয়ে আশেপাশে তাকিয়ে মেহেককে খুঁজতে থাকে।
মেহেককে দেখতে না পেয়ে ভাবল, সিকান্দার মির্জা কি আমাকে ভুল তথ্য দিয়েছে?
ওকে তো আজকে জন্মের মত শিক্ষা দিয়ে ছাড়বো কথাটা ভেবে ফ্লোরের দিকে তাকিয়ে চমকে উঠে!
খাটের নিচে দিয়ে রক্তের স্রোত এসে সারা ফ্লোর তলিয়ে যাচ্ছে।
এতো রক্ত দেখে প্রিন্সের ভয় করছে।
কার রক্ত এগুলো?
আর কোথায় থেকেয় এই রক্ত আসছে তা দেখতে সামনে এগিয়ে যায়।
খাটের অন্য পাশে এসে মেহেককে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে ওখানেয় বসে মেহেকের মাথা ফ্লোর থেকে উঠিয়ে নিজের বুকের মধ্যে জড়িয়ে ধরে পাগলের মতো কপালে গালে চুমু দিতে দিতে বলে,এই বৌ তোমার কি হয়েছে?
এতো রক্ত কেন?
কোথায় ব্যথা পেয়েছো বৌ ও বৌ ।
কয়েকবার ডেকে সারা না পেয়ে মেহেককে ঝাঁকি দিতে গিয়ে মেহেকের পাশে ফ্লোরে পড়ে থাকা রক্তাক্ত মানব ভ্রূণের দিকে চোখ যায়।
সাথে সাথে প্রিন্সের নিঃশ্বাস বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছে।
হঠাৎ করে মনে হচ্ছে শরীরে মধ্যে কোনো শক্তি পাচ্ছে না।
ওর যে হাত মেহেককে এতক্ষন ধরে ছিল তা আলগা হয়ে গেল।
প্রিন্সের হাত আলগা হওয়াতে মেহেক ফ্লোরে পড়ে গেল সেদিকে প্রিন্সের খেয়াল নেয়।
সে এক ধ্যানে সদ্য ঝরে যাওয়া রক্তাক্ত ভ্রূণের দিকে তাকিয়ে থমকে গেছে।
নোটঃ অনেকের কাছে মনে হতে পারে অযথায় গল্প বড় করছি আসলে তা নয় ।
অনেকে ভাবছেন প্রিন্স কেন এখনো মেহেকের কে খোঁজে পায়নি।
আসলে এই গল্পে আমি আপনাদের একটা ম্যাসেজ দেওয়ার চেষ্টা করেছি সেটা হলো, আপনি যতো বড় ক্ষমতাধর ব্যক্তি হোন না কেন।
বেলাশেষে
সময়ের কাছে আপনাকেও হার মানতে হবে।
সময় তার নিজস্ব গতিতে চলে।
আর এখনও প্রিন্সের বাবা ও মায়ের খুনি কে জানা যায়নি।
তাহলে গল্পের শেষ আশা করেন কিভাবে?
আরেকটা কথা এই গল্পটা কিন্তু মোটামুটি বড় সম্ভবত ৪৫+ পর্ব হবে।
আর লেখা বড় গল্প যারা পড়েছেন তারা অবশ্যই জানের ৩০-৩৫+ পর্বের মধ্যে গল্পের কাহিনী ঘুরে যায়।
আলাদা কিছু আনার চেষ্টা থাকে।
চলবে…

No comments

info.kroyhouse24@gmail.com