স্বপ্নের ক্রাশ । সত্য ঘটনা অবলম্বনে । পর্ব -২০

অরনিঃ জি আসলে…… এক মিনিট আগে তোমার সাথে হিসাব করে নিই ( অর্ণবের দিকে তাকিয়ে) 

অর্ণবঃ (ভয়ে ভয়ে)
আ…আমি আব….আবার ক..কি করলাম?

অরনিঃ কি করলা মানে? তুমি আমাকে বলনি কেন আহান ভাইয়ার গফ আছে?? 

আহানঃ 

অর্ণবঃ কিহহহ!!!
( আহানের দিকে তাকিয়ে) আহান তোর গফ আছে??? 




আহানঃ
মানে? কিসের গফ? কোথাকার গফ? আমি চিরকুমার

অরনিঃ দেখুন আমাকে মিথ্যা বলবেন না। আমার বোন আপনাকে প্রথমত ইগনোর করেছে আপনার গার্লফ্রেন্ডের কারনে।
আহানঃ মানে!!! আচ্ছা তুমি কি নিহার কথা বলছো?
অরনিঃ বাহহ নিজেই তো স্বীকার করলেন
আহানঃ এক মিনিট আমি কিছু স্বীকার করিনি। আর নিহা আমার গার্লফ্রেন্ড না। আমি তো প্রথম প্রথম আরোহিকে জেলাস করতে মিথ্যে বলেছিলাম। নিহার সাথে আমার কস্মিন কালেও রিলেশন ছিলো না। আমি নিহাকে বলেই অভিনয় করেছিলাম। তুমি ওকে আস্ক করতে পারো
অরনিঃ হোয়াট!!! ওয়েট ওয়েট ওয়েট… নিহাকে আস্ক করবো মানে? পরশুদিন নিহা আরোহিকে ম্যাসেজ করেছিলো যে, আরোহি আপনাদের মাঝে থেকে চলে এসেছে তাই নাকি আপনি নিহার কাছে ফিরে গেছেন, এছাড়াও অনেক সময় নাকি আরোহিকে ওয়ার্ন করেছে আপনার থেকে দূরে থাকতে
আহানঃ হোয়াট ননসেন্স!! নিহা 



অরনিঃ আই থিংক আই গাট ইট,, তার মানে নিহা আপুকে আপনার থেকে আলাদা করার জন্য মিথ্যা বলেছে,, ডাইনি একটা
[ এই মহিলাকে তো কুচি কুচি করে কেটে ভর্তা বানানো উচিত
]


আহানঃ মানে?
অরনিঃ মানে আমার বোন সত্যিই আপনাকে অনেক ভালোবাসে। আমি জানি আমার বোন আপনার কাছে অনেক বড় দোষী কিন্তু সে আসল দোষী না। সে বাধ্য হয়েছে।
আহানঃ
মানে?

অরনিঃ তাহলে শুনুন,, ( অনুষ্ঠানে ঘটে যাওয়া সব কিছু বললাম)
আহানঃ 

হোয়াট! আর আরোহি আমাকে কিছুই বলেনি??



অরনিঃ আপনাকে বলার আগেই ওকে হুমকি দেওয়া হয়েছিলো
আহানঃ কিসের হুমকি?
অরনিঃ ( আহানকে আপুর ফোনে আসা ম্যাসেজ গুলো দেখালাম, কালকে আপুর ফোন থেকে স্ক্রিন শট করে পার করে নিয়েছিলাম সাথে নিহার ম্যাসেজটাও)
আহানঃ আরে এই ট্রাকটা তো ওখানে এমনিতেই ছিলো, ওর ভেতরে কোনো ড্রাইভারও ছিলো না, আর নিহাকে তো আমি 





অরনিঃ কিহহহহ?? তার মানে!! 



আহানঃ তার মানে হলো তোমার বোন আসলেই একটা বোকা। ওকে বোকা বানিয়েছে, এই মেয়েকে তো তুলে আছাড় মারা উচিত 

অরনিঃ আসলেই বোকা। নয়তো রেডিওতে কল দিয়েও কেটে দিতো?? 
( একটা দীর্ঘ শ্বাস ছাড়লাম)


আহান ও অর্ণবঃ মানে? বুঝলাম না 

অরনিঃ ওহ বলা হয়নি,, আসলে লাস্ট ইয়ার আমি আর আপু আপনাদের প্রোগ্রাম শুনছিলাম, তখনি আহান ভাইয়ার গান শুনে আপু ফিদা হয়ে যায়, তারপর ধীরে ধীরে ওর আপনার প্রতি ভালোবাসা বাড়তে থাকে, ও প্রায়ই আপনার জন্য কাদত, তাই একদিন আমি জোর করে রেডিওতে কল দিয়ে ওকে কথা বলতে বাধ্য করি, আরে আপনাদের মনে নেই? আমি কল দিয়ে বলেছিলাম আমার বোন আপনার সাথে কথা বলতে চায়। তখন ও হাতে ফোন নিয়েও লজ্জায় কথা বলতে পারেনি, কলটাই কেটে দিয়েছিলো। পরে আমি তো আপনাদের ম্যাসেজও দিয়েছিলাম
(এতোক্ষন আহান আর অর্ণব হা হয়ে অরনির কথা শুনছিলো 


হা করে শোনার যে কারন আছে বন্ধুরা। )




অরনিঃ ( ওদের সামনে তুড়ি বাজিয়ে) কি হলো আপনাদের? এমন হা করে আছেন কেন? মশা ঢুকবে তো
আহান আর অর্ণব তো যেন খুশিতে আত্ত হারা
অর্ণবঃ দোস্ত যাকে খুজেছিলি সে তো সামনেই ছিলো রে
আহানঃ হ্যা 





অরনিঃ মানে?
অর্ণবঃ মানে হলো, সেদিনের পর থেকে আহান কেন যেন তোমার বোনকে খুজতো, আসলে কেউ কখনো আহানের কাছে কল দিয়ে এভাবে কেটে দেয়নি তো। আহান কোনোভাবেই তোমাদের খুজে পায়নি। তোমাদের নাম্বারটাও অফ ছিলো
অরনিঃ হ্যা ঐ মানে আমাদের মারামারিতে সিমটা শহীদ হয়েছিলো 

আহান ও অর্ণব একসাথেঃ মারামারিতে সিম শহীদ!!!
অরনিঃ হ্যা,, আরও অনেক কিছুই শহীদ হয়। বাদ দিন,, আসল কথা হলো এখন তো সব প্রব্লেম সলভ হলো তাই না,, আর এই যে আহান ভাইয়া এবার আবার জেলাস করতে যাইয়েন না, তাহলে কিন্তু এবার সব শেষ হয়ে যাবে, অন্যভাবে নিজের করে নিন আমার বোনটাকে। আর এই ভিলেনগুলার ব্যাবস্থা করতে হবে তো, একেকটা তো দেখি কুমিরের হাড্ডি, এগুলাকে তো উল্টো লটকিয়ে কাতুকুতু দেওয়া উচিত, ভর্তা করে চিড়িয়াখানায় রেখে আশা উচিত, বানরের সাথে বিয়ে দিয়ে দেওয়া উচিত, বানরের লেজ, মুরগির পা, গরিলার গার্লফ্রেন্ড 

অর্ণবঃ ( এগুলা আবার কেমন গালি
)

আহানঃ ( লাস্ট গালিটা কাকে দিলো
)

আহানঃ হুম একদম, তা শালী জি আপনি আমাকে হেল্প করবেন তো?
অরনিঃ অবশ্যই,, জাস্ট আমাদের লাইনটাও একটু ঠিক করে দিয়েন 



আহানঃ ডোন্ট ওয়ারি শালী জি,, এবার তো আমি নিউ চাল চালবো [ ( মনে মনে) আরোহি এইবার তুমি যদি এমন ছাগলের মতো কাজ আবার করেছো তোমাকে তো তুলে তুলে আছাড় মারবো 
]


অরনিঃ আচ্ছা তাহলে আজ আমি আসি, লেট হয়ে যাবে নয়তো
অর্ণবঃ চলো আমি তোমাকে পৌঁছে দিয়ে আসি
আহানঃ ওকে বাট শোনো আরোহিকে এখনই কিছু বলো না,,
অরনিঃ ওকে আমি এমনিতেও কিছু বলবো না। আমাকে কি না ছোট বলে
সব ঠিক করে নিই তারপর দেখাবো মজা

অর্ণবঃ ( হাসতে হাসতে) 
তুমি তো ছোটই,, পিচ্চি একটা, আর মাথায় খালি দুষ্টু বুদ্ধি আর তোমার স্পেশাল গালি 



অরনিঃ তবে রে…. ( বলে আমি অর্ণবকে ধরতে দৌড় দিলাম আর অর্ণব আমাকে দেখিয়ে দেখিয়ে দৌড়াচ্ছে)
আহানঃ ( চিল্লিয়ে) বাই,, [ ( মনে মনে) খুব শিগগিরই দিনটা আসবে যেদিন আমি আর তুমি এভাবে মজা করবো] ( বলেই আহানও চলে এলো)
এদিকে,
অরনিঃ অর্ণব দাড়াও, আমি তো তোমাকে ধরেই ছাড়বো
অর্ণবঃ এতো কষ্ট করতে হবে না, আমিই ধরা দিচ্ছি ( বলেই ওর কাছে গিয়ে ওর হাত ধরে নিলাম)
অরনিঃ আরে কি করছো কি? সবাই আছে, ছাড়ো
অর্ণবঃ ( ওকে ধরে একটা বড় গাছের কাছে নিয়ে গেলাম) এইরূপ এতো দিন কোথায় ছিলো? আজ তো তোমার নতুন রূপ দেখলাম
অরনিঃ কেন? এই রূপটা ভালো লাগেনি বুঝি?
অর্ণবঃ ( ওর কানের কাছে মুখ নিয়ে গিয়ে) তোমার সব রূপই আমার পছন্দ।
অরনিঃ ( আমি একেবারে কেপে উঠেছি
) এ…একটু স..স..সরবেন.

অর্ণবঃ কেন? ( বলে ওর কাছে যেতে নিলেই)
অরনিঃ ( ওর দিকে করুন চোখে তাকিয়ে) আমি একটা ছোট বাচ্চা 

অর্ণবঃ 


( এবার একটু সরে গিয়ে) তুমি আসলেই একটা পিচ্চি, ভিতু পিচ্চি।




অরনিঃ ( মুখ ফুলিয়ে, ঠোঁট উল্টিয়ে ) আপনি আসলেই একটা পঁচা 

অর্ণবঃ তাই?তাহলে তুমিও পঁচা। এটা কি হলো?? আমাকে ডেকে আমাকে বকা দিয়ে বসিয়ে রাখলে শুধু,, আমি এতো কষ্ট করে আসলাম, আর আমি কি কিছুই পাবো না? ( বলেই ওর অনেক কাছে চলে এসে ওর দুই পাশে হাত দিয়ে গাছের সাথে আটকে ধরলাম)
অরনিঃ পাবে তো
অর্ণবঃ
কি?

অরনিঃ চিমটি ( বলেই ওর হাতে একটা চিমটি দিলাম)
অর্ণবঃ আহহ
অরনিঃ 

( আমি হাসতে হাসতে শেষ) এটুকুতেই শেষ?



অর্ণবঃ দেখাচ্ছি তোমাকে দাড়াও (এবার অর্ণব অরনিকে ধরতে অরনির পেছনে দৌড়াচ্ছে)
[ওরা আজ দৌড়াতেই থাক,, আমরা কাল আসি,, দেখি কাল কি হয়,, সবাই ভালো থাকবেন
]

.
to be continued….
No comments