Breaking News

শেষ বিকেলের রোদ । পর্ব -০১



“এতো ফুচকা তুই একা খাবি?”
“হুম”
“রাক্ষুসী একটা।”
আলিয়ারকে মুখ ভেংচিয়ে জিনাত ফুচকা খাওয়ায় মন দেয়। আলিয়ার ওর মুখোমুখি বসে হাই তুলছে। শুক্রবার হওয়ায় বিকেলে আলিয়ারের সাথে বাইরে ঘুরতে এসেছে জিনাত।
জিনাত হলো আলিয়ারের চাচাতো বোন। আলিয়ারের চেয়ে মাত্র ২ বছরের ছোট। জয়েন্ট ফ্যামিলির সন্তান হওয়ায় দুজনের সম্পর্কটা বেশ মিষ্টি। ফ্রেন্ডের মতোই থাকে ওরা, তাই ঝগড়াটাই করে বেশি। সকাল-বিকাল কথায় কথায় ঝগড়া না করলে পেটের খাবারই হজম হয় না ওদের। পড়াশুনার পাট গুটিয়ে আলিয়ার বাবার ব্যবসার হাল ধরেছে আর জিনাত এবারে অনার্স ফাইনাল ইয়ারে পড়ছে।
একের পর এক করে পুরো আট প্লেট ফুচকা খেয়ে ফেলছে জিনাত। আরেক প্লেট নেয়ার সময় আলিয়ার বাধা দিয়ে বলে,
.
“টাকা কে দিবে?”
“তুই।”
আলিয়ার ব্যঙ্গসুরে বলল,
“জি না, আপনি দিবেন।”
“পারবো না।”
“ঠিক আছে। খাওয়াচ্ছি তোকে এসব ছাইপাঁশ।”
আলিয়ার ফুচকাওয়ালাকে টাকা দিয়ে জিনাতকে ধরে নিয়ে বাইকে উঠায়। আলিয়ার বাইকে উঠে বাইক স্টার্ট দিলেই জিনাত চেঁচামেচি শুরু করে,
“আমি ফুচকা খাবো, আমি ফুচকা খাবো।”
“অনেক খেয়েছিস, আর না।”
একটা পার্কের সামনে এসে বাইক থামায় আলিয়ার। জিনাতকে বলে,
“চল”
“কোথায়?”
“নাচতে।”
জিনাত লাফিয়ে উঠে বলে,
“তুই নাচবি?”
“হ্যাত।”
.
ধমক দিয়ে আলিয়ার ভিতরে চলে যায়। জিনাত ঠোঁট উলটে ওর পিছুপিছু যেতে থাকে।
কালো টিশার্ট, তার উপরে কফি রঙের শার্ট, শার্টের বোতামগুলো খোলা, সাথে ব্লু জিন্স পড়া একটা ছেলে আলিয়ারের কাছে এসে বলে,
“Hi, Ali. What’s up?”
ছেলেটার সাথে কোলাকুলি করে আলিয়ার বলল,
“ভালো আছি। তোর কি খবর, মুগ্ধ?”
“আর খবর কি বলব? দেশে আসতে না আসতেই মায়ের চেঁচামেচি শুরু, বিয়ে বিয়ে আর বিয়ে।”
আলিয়ার জোরে হেসে দেয়। দুইবন্ধু মনের সুখে খোশগল্পে মেতেছে। জিনাত ছোটছোট চোখে ওদের দিকে তাকিয়ে আছে। আলিয়ারকে হাতের কাছে পেলে কাঁচা চিবিয়ে খাবে অবস্থা ওর।
মুগ্ধ হলো আলিয়ারের ছোটবেলার বন্ধু, একসাথে স্কুল ও কলেজে পড়েছে। তারপর মালয়েশিয়া চলে গিয়েছিল মুগ্ধ। বর্তমানে একটা প্রাইভেট কোম্পানিতে বেশ ভালো পোস্টে চাকুরীরত আছে মুগ্ধ। চাকরির কাজে বছরের অনেকটা সময়ই দেশের বাইরে কাটাতে হয় তার।
.
হঠাৎ মুগ্ধের চোখ পড়ে জিনাতের দিকে। কয়েক সেকেন্ডের জন্য হয়তো ওর পৃথিবীটাই থমকে গেছে। সবুজ রঙের সুতির থ্রিপিজ, চুলগুলো বেনি করে সামনে এনে রেখেছে, এই সাধারণ সাজটাকেও অসাধারণ লাগছে ওর। ফর্সা মুখটা বিকেলের রোদে কিছুটা লাল বর্ণ ধারণ করেছে। চোখের পলক ফেলার ব্যাপারটাও নেশামিশ্রিত চোখে দেখছে মুগ্ধ।
আলিয়ার বিষয়টা লক্ষ্য করে বলল,
“মুগ্ধ।”
চমকে উঠে মুগ্ধ ওর দিকে তাকায়। জোরপূর্বক মুচকি হেসে জিনাতকে দেখিয়ে মুগ্ধ বলল,
“গার্লফ্রেন্ড?”
“কে? ও?”
বলেই হাসে আলিয়ার। স্বাভাবিক কন্ঠে বলে,
“না, কাজিন। আরে জিনাত, তুই চিনিস না ওকে?”
যদিও মুগ্ধ জিনাতকে চিনেছে, তবুও অবাক হয়ে জিনাতের আপাদমস্তক দেখে বলল,
“ওহ, জিনাত। যখন দেখেছিলাম তখন খুব ছোট ছিল। এখন দেখছি বেশ বড় হয়ে গেছে।”
জিনাতও তাকায় মুগ্ধের দিকে। মুগ্ধের দৃষ্টিটা ওর খুব একটা ঠিক লাগছে না। মুগ্ধ ওর সামনে গিয়ে হাত বাড়িয়ে বলল,
“Hi, I’m Mugdho.”
“Jinat.”
.
হাত মিলায় না জিনাত, মুড নিয়ে অন্যদিকে চলে যায়। বিষয়টাতে একটু রাগ হয় মুগ্ধের। কেন ওকে ইগনোর করবে? ও কি কম হ্যান্ডসাম? কত মেয়ে ওর জন্য জীবন দিতে প্রস্তুত।
আলিয়ারের সাথে পুরো বিকেল গল্প করে মুগ্ধ। জিনাত দূরে পার্কে বেড়াতে আসা বাচ্চাদের সাথে বাচ্চামোতে মেতেছিল। মুগ্ধ অবাক হচ্ছিল, এই বয়সে এসেও ওকে বাচ্চাদের সাথে বাচ্চাই লাগছিল। ওর মনে অন্যকিছু অনুভূত হয়। না, সেই অনুভূতিকে আর জাগানো যাবে না।
সন্ধ্যার দিকে বাসায় ফিরে আলিয়ার ও জিনাত। আলিয়ারের মা, মিসেস আছিয়া দরজা খুলেন। দুজনে বাসায় ঢুকলেই উনি বলা শুরু করেন,
“সারা সপ্তাহ কাজে ব্যস্ত আর শুক্রবারে টোটোকোম্পানি হয়ে যাও। একটা দিন বাসায় সময় দেয়া যায় না।”
মিসেস আছিয়ার কথায় ভ্রুক্ষেপ করেনা কেউই। এটা এ বাসার নিয়মিত ঘটনা হয়ে গেছে। এখন কিছু বললেই বলবে ছেলে বড় হলে বিয়ে করে বউ আনে, মেয়ে বড় হয়েছে অথচ বিয়ে করে না, আরো কত কথা শুরু হবে।
আলিয়ার নিজের রুমে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে মাগরিবের নামাজ পড়ে বারান্দায় বসে। উপন্যাসের একটা বই নিয়ে বসেছে সে। এই বইটা শেষ হলেই উঠবে সে।
জিনাতও নামাজ পড়ে নিয়েছে। ড্রেসিংটেবিলের সামনে দাঁড়িয়ে চুল আচড়ানোর সময় হঠাৎ মুগ্ধের দৃষ্টির কথা মনে হয়। কপাল কুঁচকে যায় জিনাতের। আলিয়ারের সামনে একটা ছেলে এভাবে ওর দিকে তাকালো আর আলিয়ার কিছুই বলল না। অবশ্য কেন বলবে? তার কাছে তো সব শুধুই আবেগ, নষ্ট আবেগ।
জিনাত একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে বারান্দায় গিয়ে দাঁড়ায়। হয়তো চুপ থাকাই বড় সমস্যাগুলোর সমাধান। এলোমেলো খোলা চুলগুলো বাতাসে উড়ছে। মায়ের ডাক শুনে কোনোমতে একটা হাত খোঁপা করেই বেরিয়ে যায় জিনাত।
অন্যদিকে,
.
“ভাবী, ভাইয়া তোমরা কোথায়? আব্বু-আম্মু নাস্তা রেডি। তাড়াতাড়ি আসো সবাই।”
“পুরো বাড়ি মাথায় তুলে ফেলছে। আসছি রে মা।”
সিঁড়ি দিয়ে নামতে নামতে কথাটা বলল মি. মহসিন।
মিসেস. তওবা এসে ডাইনিংটেবিলে বসতে বসতে বলল,
“তোমার মেয়ে বলে কথা। আস্কারা দিতে দিতে মাথায় তুলে ফেলেছে।”
“একটামাত্র মেয়ে আমার।”
বলেই মেয়ের কপালে চুমো এঁকে দিলো মহসিন।
মহসিন ও তওবার আদরের মেয়ে ও তাজিমের আদরের একমাত্র ছোটবোন তুবা। সবেমাত্র অনার্স সেকেন্ড ইয়ারে উঠেছে। যেমন চটপটে, তেমনি একরোখা। নিজের ইচ্ছাকে অনেক বেশি গুরত্ব দেয় সে। সবসময় নিজে যেটা সঠিক মনে করে সেটাই করবে। অন্যরা কে কি বলবে তাতে ওর কিছুই যায় আসে না।
তুবার ভাবি অনু আসলে তুবা ওর কানের কাছে গিয়ে বলে,
“প্রেম শেষ?”
অনু কিছুটা লজ্জা পেয়ে গেল। একমাস হলো তাজিম ও অনুর বিয়ে হয়েছে। তাজিম একটা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজার। যদিও বিয়েটা পরিবারের পছন্দে হয়েছে বলে সবাই জানে, কিন্তু ওদের প্রেম প্রায় ৬ বছরের।
তাজিম এসে তুবার মাথায় একটা গাট্টা মেরে বলে,
“আবার শুরু?”
“সরি।”
.
বলেই মুচকি হাসে।
পরিবারের সবাই মিলে হইহই করে নাস্তা করে। দুষ্টুমি, সারা সপ্তাহের জমানো গল্প আর তুবার চঞ্চলতা সময়টাকে অন্যরকম করে তুলছে। বিষয়টা নতুন কিছুই নয়, প্রতি শুক্রবার ওদের পরিবারে এই দৃশ্যটা দেখা যায়। মহসিন ও তওবা নিজেদের খুব সুখি মনে করে এ দৃশ্যটা দেখে।
রাতে,
নিজের রুমে শুয়ে আছে মুগ্ধ। ঘুম আসছে না, শুধুই এপিঠওপিঠ করছে সে। চিন্তায় জিনাতের চেহারা, ওর মুড, ওর সেই চোখের পলক। ছোটবেলায় ওকে আদর করে ‘পিচ্চি’ বলে ডাকতো মুগ্ধ। কিন্তু সেই পিচ্চি বড় হয়ে যে ওর রাতের ঘুম এক পলকে কেড়ে নিবে তা কে জানতো?
কলেজে পড়ুয়া মুগ্ধ একবার আলিয়ারের বাসায় গিয়েছিল। তখনই প্রথমবার জিনাতকে দেখেছিল সে। তখন হয়তো জিনাত নাইন বা টেনে পড়ে। বয়সের হিসাবটা বড় মনে হলেও সে আসলে মানসিকভাবে এতোটা বড় ছিল না।
ব্যাপারটা মুগ্ধ বুঝতে পারে যখন সে ও আলিয়ার বাইরে যাচ্ছিল তখন জিনাত বায়না ধরে সেও যাবে। সে কি কান্না! বাইরে নিয়ে গেলে তার ললিপপ খাওয়ার বায়নাও পূরণ করে দিতে হয়। ভালো লাগাটা তখন থেকেই শুরু। হয়তো আজ সেটার নাম পালটে গেছে।
.
“এই অনুভূতির নাম কি? প্রেম নাকি ভালোবাসা?”
মুগ্ধ নিজেই নিজেকে প্রশ্ন করে। কিন্তু উত্তর পায় না। কি করে পাবে? সে নিজেই তো দোটানায় আছে।
মুগ্ধ চোখ বন্ধ করে। ভয় হচ্ছে যদি আবার শুনতে হয়,
“সরি ভাইয়া। আমি অন্যকারোর অপেক্ষায় আছি।”
মুগ্ধের হৃদয়ের গভীর থেকে দীর্ঘশ্বাস বেরিয়ে আসে। আদৌ কি এমন অনুভূতিকে পাত্তা দিবে সে নাকি ভুলে যাবে সবটা? #শেষ_বিকেলের_রোদ এর মতো অনুভূতিগুলোও কি ফুরিয়ে যাবে তাড়াতাড়ি?
মুগ্ধ ফ্যানের দিকে তাকিয়ে আছে। নিজে নিজেই বলছে,
“কথা তোমার সাথে বলতেই হবে, জিনাত। নিরবতা যে আর সহ্য হচ্ছে না, দহন হচ্ছে খুব।”
পরেরদিন,
আলিয়ার অফিস যাওয়ার জন্য তৈরি হচ্ছে। কালো শার্ট, ব্লু জিন্স, হাতে ব্যান্ডেড ঘড়ি পড়ে আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে চুল ঠিক করছে সে। জিনাত দরজায় নক করলে আলিয়ার বলল,
“বলো।”
“খাবার রেডি।”
“আসছি।”
রেডি হয়ে ডাইনিং-এ যায় আলিয়ার। সবাই এখনো আসেনি, আলিয়ার টেবিলে বসে খাবারের অপেক্ষায় আছে। জিনাত খাবার পরিবেশন করছে। আছিয়া, আলিয়ারের বাবা ইব্রাহীম, চাচা অর্থাৎ জিনাতের বাবা আহমেদ, জিনাতের মা সুলতানা ডাইনিং-এ আসেন।
জিনাতের ছোট বোন জেরিন মাথায় বেনি করতে করতে আসে। গলায় একটা ক্রসবেল্ট ঝুলছে। এসেই জিনাতকে বলে,
.
“আপু ক্রসবেল্টা লাগিয়ে দে তো।”
জিনাত ক্রসবেল্ট লাগিয়ে দিয়ে বলে,
“তাড়াতাড়ি খেয়ে নে না হলে আজকেও লেট হবে।”
জেরিন চেয়ারে না বসে টেবিলের কোণায় বসেই কোনোমতে খেতে থাকে। আলিয়ার ওর দিকে তাকিয়ে বলে,
“বসে খা।”
“সময় নেই।”
জেরিন খাওয়ায় মন দেয়। সুলতানা ওকে টেনে নিজের পাশে বসিয়ে খাইয়ে দিতে থাকে। জিনাত ঠোঁট উলটে বলে,
“বয়স বাড়ে নাকি কমে?”
জেরিন এবারে ইন্টার ফার্স্ট ইয়ারে উঠেছে। সবার কথায় বাচ্চা থেকে বড় হতে শুরু করেছে, কিন্তু বাচ্চামো ছাড়েনি।
জিনাত খেতে বসে। এমনসময় আলিয়ারের ফোনে মুগ্ধের কল। আলিয়ার ফোন হাতে নিয়ে মুগ্ধের নাম্বার দেখে রিসিভ করে বলল,
“কিরে, এখন হঠাৎ?”
মুগ্ধ কি বলবে বুঝতে না পেরে বলে,
“না, মানে ওই..”
আলিয়ার রুটি চিবুতে চিবুতে বলল,
“যা বলবি সরাসরি বল।”
“আই লাভ ইউ।”
.
বলেই মুগ্ধ ফোন রাখে। অবাক হয়ে খাওয়া বন্ধ করে ফোনের স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে আছে আলিয়ার। এরকম অদ্ভুত আচরণ করার ছেলে মুগ্ধ নয়, কি হলো হঠাৎ? আবার কল দিলে ফোন বন্ধ দেখায়। আলিয়ার ফোন রেখে খাওয়ায় মনোযোগ দেয়।
নাস্তা শেষে আলিয়ার বাইক নিয়ে বেরিয়ে যায়। জিনাতের খুব ইচ্ছে করছিল বলতে ওকে ভার্সিটি পর্যন্ত ছেড়ে দিতে। কিন্তু ইচ্ছাটা নিজের ভিতরে কবর দিয়ে গাড়িতে করে চলে যায় সে। জেরিনকে কলেজে নামিয়ে দিয়ে ভার্সিটিতে যাবে জিনাত।
বিকেলবেলা,
বৃষ্টি হচ্ছে। আকাশটা কালো হয়ে গেছে মেঘেদের ভীরে, গুড়ুমগুড়ুম ডাকে আলোকিত হয়ে উঠছে কিছুক্ষণ পর পর সাথে ঝুম বৃষ্টি। নিজের কেবিনে বসে বাইরের আকাশটা দেখছে আলিয়ার। বৃষ্টি বরাবরই পছন্দ ওর। নীল আকাশের কালো মেঘেদের খেলা ওর কাছে লুকোচুরির মতো লাগে। হয়তো সূর্যটা সকলের সাথে লুকোচুরি করতেই ডেকে আনে মেঘেদের।
.
হঠাৎ রাস্তার দিকে চোখ যায় আলিয়ারের। একটা মেয়ে বৃষ্টিতে ভিজছে। ঘন চোখের পাপড়ি, চুলগুলো ভিজে গায়ের কালো জামাটার সাথে লেপ্টে আছে, গায়ের রং টা অন্যদের মতো ফর্সা নয় শ্যামলা, ঠোঁটদুটো হালকা গোলাপী যদিও তা ন্যাচারাল নয়, লিপস্টিক। প্রায় সাজ ছাড়া এই চেহারাটাই অসম্ভব আকর্ষণীয় লাগছে আলিয়ারের। না, আকর্ষনীয় নয় ঘোর লাগছে। তাকিয়ে থাকা যাবে না। আলিয়ার চোখ বন্ধ করে ফেলে। কিছুক্ষণ পর চোখ খুলে, মেয়েটার বাচ্চামোগুলো দেখে মনের অজান্তেই হাসে আলিয়ার।
হ্যাঁ, এই মেয়েটিই তুবা। অফিসের সামনে এসেছিল ওর ভাইয়ের সাথে দেখা করতে, বৃষ্টি পেয়ে সে সুযোগটা আর মিস করলো না। রীতিমতো কাঁদা ছুড়াছুড়ি করছে সে।
আলিয়ার কেবিন থেকে বেরিয়ে নিচে যায়। অফিসের সামনে গিয়ে তুবার দেখা আর পায় না আলিয়ার। কালো গাড়িটা খুব জোরে ওর সামনে দিয়ে চলে যায়। রাস্তার পাশের পানি এসে আলিয়ারকে পুরো ভিজিয়ে দেয়।
গাড়ির জানলা দিয়ে মাথা বের করে তুবা হেসে বলল,
“গোসল করো নিও ফরমাল ম্যান? যাও, যাও গোসল করো।”
আলিয়ার হয়তো ঘোরে পড়ে গেছে। কন্ঠটা ওকে অন্য দুনিয়ায় ঘুরিয়ে এনেছে, গাড়িটা নিজের গতিতে চলে যায়। অন্য কেউ এমন কাজ করার সাহস ওর সাথে পায় না। এমন করলেও ওর রাগের হাত থেকে নিস্তার পাবে না। কিন্তু আজ, কোনো রাগ দেখালো না, মেজাজ খারাপ করলো না। বরং মুচকি হাসছে।
মাথানিচু করে একটা নিশ্বাস ফেলে বলল,
“কে তুমি অপরিচিতা?”
চলবে…

No comments

info.kroyhouse24@gmail.com