Breaking News

সতীনের সংসার | ৪র্থ - পর্ব



রাতের খাবার খেয়ে অধরা ঘরে এসে দরজা বন্ধ করে দিলো। কোনোভাবেই তার মাথা থেকে যাচ্ছে না যে তাকে কেন এই চাকরিটা দেওয়া হলো। এমন সময় দরজায় ঠক ঠক আওয়াজ।
“কে?”
“আমি জেরিন। তুই কি ঘুমাই গেছিস?”
অধরা দরজাটা খুলে বলল, “না। আয় ভিতরে আয়।”
জেরিন ভেতরে এসে বলল, “তুই তো কাল অফিসে যাবি। বিজি হয়ে যাবি অনেক। তাই ভাবলাম আজ তোর সাথে বসে একটু গল্প করে নেয়। তুই কি এখন বিজি নাকি?”
“কই না তো। আয় গল্প করি।”
দুজনে খাটে বসে গেল।
.
“তো বল, অফিস টা কেমন?”
“অনেক সুন্দর।”
“তোর পছন্দ হয়েছে তো?”
“হ্যাঁ রে। আমার অনেক পছন্দ হয়েছে।”
“আর উনি কেমন?”
“মানে? উনি কে?”
” তোর বস আবার কে…”
“ওহহ”
“কেমন দেখতে রে? নিশ্চয় অনেক হ্যান্ডসাম, তাই না?”
“না।”
“না মানে?”
“জানি না সে কেমন দেখতে। তাকে মনে হয় আমি এখনও দেখিনি।”
“দেখিস নি মানে কি? যার অফিসে আজ গেলি, যার পিএ এখন তুই, তাকেই এখনো দেখিস নি?”
“না দেখিনি। তিনি যে তখন অফিসে ছিলেন তা তো কেউ বলিনি। আচ্ছা বাদ দে, কাল তো যাচ্ছিই অফিসে, একেবারেই দেখে নেব।”
.
“হুম, সেটাই ভাল। জানিস, আমি শুনেছি আফনান আরজেদ নাকি অনেক হ্যান্ডসাম দেখতে। দেশ বিদেশের অনেক মেয়েই নাকি তার জন্য পাগল।”
“তাই নাকি? ভালো।…… তা কে সে?”
অধরার কথা শুনে জেরিন অবাক হয়ে গেল।
” কার কথা বলছিস?”
“কেন? আফনান আরজেদ। কে এই আফনান আরজেদ? কোনো নিউ হিরো নাকি?”
জেরিন কিছুক্ষণ থেমে বলল, ” হুম হিরোই তো। তোর হিরো। তোর জীবনের হিরো।”
“কি যা তা বলছিস? পাগল হয়ে গেলি নাকি?”
“তুই পাগল। নিজের বসের নামও জানিস না?”
“ওনার নাম আফনান আরজেদ?”
“জি। আচ্ছা বল, অফিসের সবাইকে কেমন দেখলি?”
“সবাইকে তো দেখিনি। ৩/৪ জন কে দেখেছি। তাদেরকে তো আমার কাছে ভালোই লেগেছে। বাকিদের কথা বলতে পারব না।”
.
“হুম বুঝলাম। আচ্ছা শোন, এখন তুই আমার সমস্যা টা একটু বোঝ।”
অধরা একটু ঘাবড়ে গিয়ে বলল, “সমস্যা? কেন? কি হইছে তোর?”
” আসলে কি বল তো, তুই তো অনেক দিন একা আছিস। তাই আই নিড সামওয়ান।”
“দাড়াঁ দাঁড়া, বুঝলাম না। আমি অনেক দিন ধরে একা আছি তাই তোর এখন কাউকে খুব দরকার। এই কথার মানে কি?”
.
“বলছি বলছি। দেখ, তুই ২২ বছর ধরে একা আছিস। আমার মনে হয়, এবার তোর হিরোকে তোর জীবনে আসা উচিত। এবার তোর বিয়ে করে নেওয়াই ভাল। আর তুই বিয়ে করে নিলে আমিও একটা দুলাভাই পেয়ে যাব। আমার না আর একা একা সময় কাটে না রে। একটা দুলাভাই পেলে অনেক ফাজলামি করতে পারব। তাই বলছি, বিয়েটা এবার করেই নে।”
.
“বিয়ে? বিয়ে মাই ফুট! শোন, আমার এখন কাউকে দরকার না। তোর সময় কাটছে না তো তুই বিয়ে কর। আমাকে কেন ফাসাচ্ছিস? আমি কোনো বিয়ে টিয়ে করব না।”
“করবি না? করবিনা তো?”
” না। কোনো দিন করব না।”
“ঠিক আছে। মাথায় রাখিস কথাটা। এখন তো বুঝলি না যে কি বললি কিন্তু যেদিন তোর জীবনে তোর হিরো চলে আসবে, সেদিন তুই বিয়ের জন্য ছটফট করবি। কিন্তু আমি তোর বিয়ে কোনোভাবেই হতে দেব না। দেখে নিস…”
“দেখা দেখির কিছু নেই বুঝলি? কারন আমার জীবনে কখনো কোনো হিরো আসবে না। আর তুই এখন যা তো। কাল আমাকে অনেক সকালে উঠতে হবে। আমি এখন ঘুমাব যা।”
খাট থেকে নেমে..
“এখন তোর ঘুম ছাড়াও আরও কত কি পাবে! আচ্ছা যা, ঘুম পড়। গুডনাইট।”
“গুডনাইট।”
.
জেরিন নিজের রুমে চলে গেলে অধরা রুমের দরজা বন্ধ করে দেয়। আর রাত না জেগে ও ঘুমিয়ে পড়ে।
সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠে অফিসের জন্য রেডি হল। বেরনোর আগে সবার কাছ থেকে দোয়া চাইল।
অধরা অফিসে ঠিক সময়েই পৌঁছে যায়। গেইট দিয়ে ভেতরে ঢুকতে যাবে এমন সময় একটা লোকের সাথে ধাক্কা খেল।
.
লোকটাকে না দেখেই অধরা বলল, “সরি সরি। আমি আপনাকে দেখতে পাইনি। সরি। (হঠাৎ সে লোকটা দেখল।) আপনি?”
লোকটা ছিল আগের দিনের সেই প্রথম লোক।
“হুম।”
“আইম সরি স্যার। প্লিজ কিছু মনে করবেন না। আমি সত্যিই আপনাকে দেখতে পাইনি।”
“ইট’স ওকে । আপনাকে এত ব্যস্ত হতে হবে না। চলুন।”
“কোথায়?”
“আজ আপনার অফিসের প্রথম দিন। আপনি কোথায় বসে কাজ করবেন, সেটা তো আর আপনি জানেন না। তাই আপনার জায়গাটা দেখিয়ে দেই। চলুন।”
“কিন্তু স্যার। আপনি তো কোথাও যাচ্ছিলেন বলে মনে হয়। আপনি যান, আমি নিজেই খুজে নেব।”
“আপনি কি সবসময় এত কথা বলেন?”
.
“কি?”
“না কিছু না। বলছিলাম যে, আপনি এত বেশি কথা বলেন কেন? যা বলছি তাই করতে কি আপনার খুব সমস্যা?”
“সরি স্যার। চলুন।”
ঐ লোকটি অধরাকে সাথে নিয়ে একটি রুমে আসে। লোকটি পকেট থেকে একটি চাবি বের করে রুমের দরজাটা খুলে দেয়। ভেতরে ঢুকে ১ম লোক টা বলল, ” ভেতরে আসুন।”
অধরা ভেতরে গেলে লোকটি ঐ চাবি টা অধরার হাতে দিয়ে দেয়।
“চাবি টা আজ থেকে আপনার কাছেই রাখবেন। আর আজ থেকে এটাই আপনার কেবিন। আর ঐ সামনের রুম টা,,,,,,”
.
অধরা লোকটাকে তার কথা শেষ করতে না দিয়েই বলল, ” সামনের রুমটা আমার বসের। তাই তো? সেটা আমি বুঝতে পেরেছি। আচ্ছা, স্যার কখন আসবেন?”
অধরার প্রশ্নটা শুনে ১ম লোকটা বেশ অবাক হয়ে ওর দিকে তাকালো।
” স্যার? মানে?”
“হ্যাঁ স্যার! এমডি স্যার.. আমার বস। উনি কখন আসবেন?”
“আসবেন আসবেন। একটু পরেই চলে আসবেন। এখন আমি আসি।”
লোকটি চলে গেলে অধরা ওর কেবিন টা ভাল করে দেখতে থাকে। এমন সময় ওর ফোন টা বেজে উঠে….


চলবে…

No comments

info.kroyhouse24@gmail.com