Breaking News

সতীনের সংসার | ২য়- পর্ব



চোখে লোনা পানি নিয়ে আফনানের বুকের উপরে নিজের মাথাটা রাখলো অধরা। তারপর চোখ বুজে হারিয়ে গেল ওর অতীত জীবনের ঘটনায়। ভাবতে থাকল কিভাবে ওর পরিচয় হয় আফনানের সাথে। ভাবতে থাকল কেন আজ আফনানের এই দশা।
.
[চলুন পাঠকগণ, আমরাও দেখে আসি কি হয়েছিল তাদের জীবনে]
.
★FLASHBACK ★
সবুজ ঘাসে ঘেরা বাগানটির সামনেই সদর দরজা। আর দরজায় দাঁড়িয়ে আছে পূর্ণিমা আপু।
“বেস্ট অফ লাক অধরা। ভালোভাবে যেও।”
পূর্ণিমার পাশে দাঁড়ানো আলো আপু বলল, “রাস্তাঘাট দেখে শুনে যাবে আর ভালোভাবে ইন্টারভিউটা দেবে। ওকে?”
“ওকে আপু। তোমরা সবাই দোয়া করো।”
রাজিয়া বেগমের কাছে এসে অধরা বলল, “আসি মামনি। দোয়া করো।”
“আসো মা, ভালোভাবে ইন্টারভিউ টা দিও।”
সবাইকে সালাম দিয়ে অধরা ইন্টারভিউ দেওয়ার জন্য বেরিয়ে গেলো।
.
২৫ মিনিট পরে…….
অধরা দাঁড়িয়ে আছে একটা আটতলা ভবনের সামনে। এ আর গ্রুপ এন্ড ইন্ডাস্ট্রির অফিস এটি। এখানে অধরা এসেছে চাকরি খুঁজতে। আজ ওর ইন্টারভিউ। অফিসের প্রথম সিঁড়িতে পা দেওয়ার আগে ও মনে মনে আল্লাহ কে ডেকে নিলো। তারপর অফিসের মধ্যে গেলো। অফিসের ১ম তলাতেই ইন্টারভিউয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে। অফিসে ঢুকেই অধরা দেখল সারা অফিস লোকজনে ভর্তি।

“বাব বা!!! এত লোক? কত লোক এসেছে এখানে ইন্টারভিউ দিতে! কিন্তু টিকবে তো মাত্র ২০ জন। আর এই ২০ জনের মধ্যে কি আমি টিকতে পারব? ইশশশ…. ভুল হয়ে গেছে একটা। কোম্পানির এমডির পিএর পদে জব করতে পারলে ভাল সেলারি পাওয়া যাবে। সেটা ভেবেই এই পোস্টের জন্য এপ্লাই করেছি। এই পোস্টের জন্য তো মাত্র এক জনকেই নিবে। আমি কি হতে পারব সেই একজন?”
একটি চেয়ারে বসে বসে অধরা এই কথাগুলো ভাবছিল। তারপর হঠাৎ করে ওর ডাক পরে গেল। অধরা তড়িঘড়ি নিজেকে একটু গুছিয়ে নিয়ে ইন্টারভিউয়ের রুমে গেল। রুমের দরজাটা খোলার পর…
“মে আই কাম ইন স্যার?”
.
রুমটিতে ২টি লোক ছিল। ১ম জন একটি বড় চেয়ারে বসা আর ২য় জন বসেছেন তার পাশের একটি ছোট চেয়ারে।
২য় লোকটি বলল, ” আরে… আসুন।”
“আসসালামু আলাইকুম স্যার।”
“ওয়ালাইকুম আসসালাম। প্লিজ টেক ইউর সিট।”
“থ্যাঙ্ক ইউ স্যার।”
২য় লোকটি অধরাকে নানা প্রশ্ন করতে থাকে আর অধরাও উত্তর দিতে থাকে।
একটা সময় পরে অধরা মনে মনে ভাবলো, “ব্যাপার টা ঠিক বুঝলাম না। এই লোকটা আমাকে এত প্রশ্ন করছে কিন্তু ঐ লোকটা তো আমাকে কিছু জিজ্ঞাসাই করছে না। তাকাচ্ছেও না আমার দিকে। যখন দুজনই আমাকে পছন্দ করবে তখনই তো আমি চাকরিটা পাবো। বোঝা হয়ে গেছে এই চাকরিটা আর আমার কপালে জুটবে না।”
কথাগুলো ভাবতেই অধরার মনটা একটু খারাপ হয়ে গেল।
“মিস অধরা? কি হলো? আর ইউ অলরাইট?”
“জি স্যার। আইম ফাইন। সরি”
এবার ১ম লোকটি বলল, “আপনাদের সরি-থ্যাঙ্ক ইউ বলা যদি শেষ হয়ে থাকে তো কাজের কথায় আসা যাক?”
২য় লোকটি বলল, “অবশ্যই স্যার।”
১ম লোকটি অধরাকে বলল, “আমি আপনাকে কিছু জিজ্ঞাসা করতে চাই। ক্যান আই?
“সিউর স্যার।”
.
“মিস অধরা, আপনি এই জব টা কেন করতে চান?”
“স্যার আমি নিজের পায়ে দাঁড়াতে চাই। নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে চাই। আর এই জব টা আমাকে সেই সুযোগ টা করে দেবে বলে আমি আশা করছি।”
“মিস অধরা, মানুষকে জীবনে এত আশা করতে হয় না। এনিওয়ে, তা আপনি কোম্পানির এই পোস্টটার জন্যই কেন এপ্লাই করেছেন? আরও তো অনেক পোস্ট আছে এখানে। সেগুলোর জন্যও তো করতে পারতেন। কোনো স্পেশাল রিজন আছে কি এর পেছনে?”
“নো স্যার।”
[ মিথ্যা কথা। সত্যি টা আপনারা জানেন ]
“ওকে। আপনি কি এই পোস্টের সব কন্ডিশনগুলো মেনে নিবেন?”
কন্ডিশনের কথা শুনে অধরা একটু ঘাবড়ে গেল।
“কন্ডিশন? সরি স্যার.. কিন্তু কিসের কন্ডিশন? আমাকে তো কোনো কন্ডিশনের কথা বলা হয়নি।”
“কারোর পারসোনাল এসিস্টেন্ট হতে গেলে তাকে কিছু শর্ত মানতে হয়। আপনি কি সে টা জানেন না?”
“না স্যার।”
.
২য় লোকটি বলল, ” আসলে স্যার ওনার কোনো দোষ নেই। আমরাই এডভার্টিসমেন্টে কোনো শর্ত উল্লেখ করিনি।”
“তো এখন করছি। মিস অধরা, আপনাকে এখানে কাজ করতে হলে তিনটা শর্ত মেনে চলতে হবে। শর্ত নং ১… আপনার বস আপনাকে যত কাজই দিক না কেন আপনাকে তা করতে হবে উইথ ডিউ রেসপেক্ট। আপনি কি সেটা করতে পারবেন?”
“জি স্যার। ইনশাআল্লাহ পারব।”
.
” শর্ত নং ২, আপনাকে যেকোনো সময় যেকোনো জায়গায় এই কোম্পানিটাকে রিপ্রেজেন্ট করতে হতে পারে। আই মিন, ক্রিয়েটিভ লেকচার দিতে হতে পারে। আপনি কি সেটা পারবেন?”
“আই উইল ট্রাই মাই লেভেল বেস্ট স্যার।”
.
“শর্ত নং ৩….. এতক্ষণ পর্যন্ত যত গুলো মেয়ে এই পোস্টের জন্য ইন্টারভিউ দিতে এসেছে তারা কেউই এই শর্তটা মানে নি। তাই তারা এই কাজ টি পাইনি। এবার দেখি, আপনি সেটা মানতে পারেন কি না।”
১ম লোকটার কথা শুনে অধরা একটু ভয় পেয়ে গেল।
“কি শর্ত স্যার?”

চলবে…

No comments

info.kroyhouse24@gmail.com