Breaking News

ভালোবাসি হয়নি বলা । পর্ব -০৩ এবং শেষ

আমি:অফিস রুম থেকে বেরিয়ে ক্লাস রুমে চলে এলাম তার
পর ব্যাগ কাঁধে নিয়ে হাঁটতে লাগলাম তখন রাফি বললো….
রাফি: কোথায় যাবি….?
আমি:মেসে চলে যাবো।
রাফি; বিকেলে মোড়ে আসবি তোর সাথে কথা আছে।
আমি: আচ্ছা, তারপর মেসে চলে এলাম এসে ব্যাগ
গোছিয়ে বাইরে এসে একটা অটো নিলাম।
দেড় ঘণ্টা পর বাসায় চলে এলাম। বাসায় আসতে দেখে মা আমার কাছে এসে বললো
মা:কিরে বাবা ব্যাগ হাতে যে?
আমি: ওখান থেকে চলে এলাম,
আমাদের এখানেই পড়বো আর আব্বার সাথে দোকানদারি কি করবো।
মা:কি হয়েছে বলবিতো?
আমি;কি আর হবে,যেটা ছোট থেকে আমার সাথে হয়ে আসছে।মা আমার দিকে কান্না ভেজা দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। আচ্ছা আমি ঘরে গেলাম।ঘরে এসে ব্যাগ রেখে রুমে শুয়ে পড়লাম।
হঠাৎ চোখের কোণ দিয়ে অশ্রু কনা বের হওয়ার জন্য প্রতিযোগিতা শুরু করলো।
মা আমার রুম এলো..তাই তাড়াতাড়ি চোখ মুছে নিলাম।
মা: সকালে খেয়েছিস?
.
আমি;হুমমম, আচ্ছা যাই কলেজ থেকে ঘুরে আসি। গিয়ে ভর্তি হয়ে আসি।
মা;আজ যাওয়ার দরকার নেই, আগামী কাল যাবি। এখন শুধু বিশ্রাম নে।
আমি: আচ্ছা ঠিক আছে?মা চলে গেলো,
আমি সিম টা খুলে অন্য সিম কার্ড লাগিয়ে নিলাম।
পরের দিন সকালে ঘুম থেকে উঠে ফ্রেশ হয়ে এসে খেতে বসলাম।
আব্বা:টাকা আছে না লাগবে।
আমি; দুই হাজার টাকা এখনো আছে।
আব্বা:এই নে এই টাকা গুলো রাখ।
আমি; আমার লাগবে না।
.
আব্বা: আরে রাখ, তোদের সময় থাকতে আমি আব্বার মানে
তোর দাদার কাছে চেয়েছি কিন্তু পাইনি কারণ তখন আমাদের আর্থিক অবস্থা ভালো ছিলো না।
আমার প্রয়োজন মতো তখন কিনে খেতে বা কিনতে পারি নি।
আমি চাই না আমার ছেলে আমার মতো থাকুক,
তার ইচ্ছা গুলো মনের ভিতর লুকিয়ে রাখুক।
আমি: আচ্ছা টাকা দাও, আব্বার আর মায়ের এমন ভালোবাসায়
সব কষ্ট ভুলে যাই তখন মনে হয় আমি পৃথিবীর সবচেয়ে সুখী মানুষ।
খাওয়া দাওয়া শেষ করে ঘরে এসে কলেজের জন্য বেরিয়ে
পড়লাম।কলেজ পাশেই তাই পাঁচ মিনিটে চলে এলাম,
প্রেন্সিপাল স্যারের রুমের সামনে এসে বললাম.
.. আসসালামুয়ালাইকুম স্যার আসতে পারি?
প্রেন্সিপাল?অয়ালাইকুম আসসালাম ইয়েস এসো?
আমি: স্যার আমি আপনার কলেজে ভর্তি হতে চাই,
এই নিন আমার সব পেপার।প্রেন্সিপাল স্যার আমার পেপার গুলো নিলো তারপর দেখতে লাগলো…
প্রেন্সিপাল: রেজাল্ট তো অনেক ভালো,এতো দেরি করে ভর্তি হওয়ার কারণ কি?
আমি: অন্য একটা কলেজে ছিলাম, ওখান থেকে এখানে চলে এলাম।
প্রেন্সিপাল: ওহ্, আচ্ছা তুমি চাইলে আজ থেকেই ক্লাস করতে পারো।
আমি: ধন্যবাদ স্যার,আর আমার ক্লাসের সবার সাথে পরিচয় করিয়ে দিলে ভালো হতো?
প্রেন্সিপাল:ওকে আমার সাথে চলো।
আমি: স্যারের পিছন পিছন হাঁটতে লাগলাম।
তারপর স্যার একটা ক্লাস রুমে ঢুকালো।
প্রেন্সিপাল স্যারকে দেখে সবাই সালাম দিলো, স্যার ও সালামের উত্তর দিয়ে বললো…
প্রেন্সিপাল:অয়ালাইকুম আসসালাম,
এর নাম আকাশ তোমাদের নতুন বন্ধু, অনেক মেধাবী ছাত্র।
অন্য কলেজ থেকে ট্রান্সফার নিয়ে আমাদের কলেজে এসেছে। যাও গিয়ে বেঞ্চে বসে পড়…
আমি:জী স্যার,প্রেন্সিপাল স্যার চলে গেলো।
আমি শেষ দিকে এসে বসে পড়লাম.. এমন ভাবে দেখতে দেখতে পাঁচ দিন হয়ে গেলো..
.
লিমা:তোর কি হয়েছে বল তো,দিন দিন তুই যেনো কেমন হয়ে যাচ্ছিস?
ইরা;আমি মনে হয় আকাশ কে ভালোবেসে ফেলেছি,সব সময় ওকে নিয়ে ভাবি।রাতে ভালো ভাবে ঘুমো হয় না।আর এই কয়েক দিন আকাশ কে দেখতে পাইনি ওর সাথে কথা হয়নি তাই বুকের ভেতর টা কেমন জেনো করছে।
লিমা: তুই না বলিস ওকে তোর ভালো লাগেনা।
ইরা: আমি তো জানি ওকে আমার ভালো লাগে না কিন্তু মন তো অন্য কিছু বলছে।এই রাফি শুনো?
রিতা:ওই মেয়েটা তোমাকে ডাকছে কেনো?
রাফি; কিভাবে বলবো,ইরা আপু কেনো ডাকছে তো। আচ্ছা দাঁড়াও শুনে আসি।
রিতা:না যেতে হবে না।
রাফি:আজব তো, আচ্ছা দাঁড়াও শুনে আসি।
রিতা:বলছি না যেতে হবে না।(রেগে)
ঠাসসসসসস ঠাসসসসস
রাফি;চাই না তোর মতো মেয়ের ভালোবাসা, তোর দেওয়া শর্ত আকাশ কে বলতে হাসি মুখে আমার সাথে ফ্রেন্ডশিপ শেষ করে দিয়েছে।তোর জন্য আমার ভায়ের মতো বন্ধুকে তের জন্য হারিয়েছি।যা তোর সাথে ব্রেকআপ।
লিমা:রাফি কি হয়েছে?
রাফি: কিছু না, আচ্ছা বলেন কী হয়েছে। আমাকে কেনো ডাকছিলেন?
ইরা: আকাশ কোথায়, কয়েক দিন ধরে কলেজ আসছে না কেনো?
রাফি:আমি জানি না, কেনো আসছে না।ওর ফোন বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে।
ইরা: ওহ্, তুমি তো ওর বন্ধু তোমাকে কিছুই বলে নি।
রাফি:না আপু, সেদিন প্রেন্সিপাল স্যার কেনো জানি ডেকেছিলো তারপর প্রেন্সিপাল স্যারের কাছে থেকে এসে ক্লাস রুমে এসে কাঁধে ব্যাগে নিয়ে বেরিয়ে গেলো আমি জিজ্ঞেস করেছিলাম কিন্তু কিছু বলো নি।
ইরা: ওহ্,লিমা আই তো।
.
লিমা: কোথায় যাবি?
ইরা:প্রেন্সিপাল স্যারের কাছে যাবো।
আমি:ইরা আপু প্রেন্সিপাল স্যারের রুমে গেলো,রিতা এখনো দাঁড়িয়ে আছে তাই রাফি রেগে বললো..
রাফি:কি হলো এখনো দাঁড়িয়ে আছো কেনো?(রেগে)
রিতা:সরি?(কাঁদো কাঁদো গলায়)
রাফি: আমাকে না বলে আকাশ কে বলবা।
রিতা: আচ্ছা,(কাঁদো কাঁদো গলায়)
ইরা: আকাশ কোথায় গেছে বলতে পারবেন?
প্রেন্সিপাল:কোন আকাশ?
ইরা: অনার্স প্রথম বর্ষের ছাত্র,কালো করে?
প্রেন্সিপাল:ও এখান থেকে চলে গেছে, কোথায় গেছে বলতে পারবো না।
ইরা:কথায় গেছে বলতে পারবেনা?
প্রেন্সিপাল:ওর সাথে কেউ মিশে না কথা বলে না।তাই এখানে থেকে চলে গেছে।
ইরা; ওহ্,
আমি:এক বছর পর…লেখা পড়াও চলছে আর আমি একটা শো রুমের ওনার।আর মা তো বিয়ে দেওয়ার জন্য উঠে পড়ে লেগেছে।
মা; বিকেলে মেয়ে দেখতে যেতে হবে কিন্তু?
আমি: আমার কাজ আছে যেতে পারবো না। তোমরা গিয়ে দেখে এসো।
আব্বা; তুই না গেলে কি করে হয়?
.
আমি:তোমরা দেখে এসো, তারপর আমি দেখতে যাবো।আর তোমাদের পছন্দ হলেই আমারো পছন্দ হবে। তোমরা তো আর আমার জন্য খারাপ মেয়ে দেখবে না তাই না।
আব্বা: আচ্ছা,আজ আমরা দেখতে যাচ্ছি। এরপর কিন্তু তোকেই যেতেই হবে?
আমি: আচ্ছা পরে দেখবো,আগে তোমরা দেখে আসো?কলেজ চলে এলাম, এসে ক্লাস করতে লাগলাম।কলেজ থেকে যেয়ে গোসল করে নামাজ পড়ে এসে খেতে বসলাম তখন মা বললো…
মা:মেয়ে আমাদের অনেক পছন্দ হয়েছে? এখন তুই দেখলেই হবে?
আমি; মেয়েটা দেখতে কালো তো।
মা: সাদা হলে সমস্যা কোথায়?
আমি: অনেক সমস্যা,কালো হলে বলো না হলে রিজেক্ট করে দাও।
মা: কালোই।
আমি: তোমার উপর বিশ্বাস করলাম। তাহলে আমি আর দেখছি না, তুমি হ্যাঁ বলে দাও।
মা: আচ্ছা।
আমি: খাওয়া দাওয়া শেষ করে ঘরে এসে ঘুমিয়ে পড়লাম। রাতে……
মা: শুক্রবার বিয়ে।
আমি:এতো তাড়াতাড়ি।(অবাক হয়ে)
মা: শুভ কাজে দেরি করতে নেই। প্রস্তুতি নে।
আমি: আমি মাথা নেড়ে চলে এলাম,মা তো নয় যেন 7g স্পিড ইন্টারনেট। হ্যাঁ বলতে দেরি তাড়াতাড়ি বিয়ে ঠিক করতে দেরি নেই। হঠাৎ ফোন টা বেজে উঠলো.. ফোনের দিকে তাকিয়ে দেখি আননোন নাম্বার।এটা আবার কে উপর ওয়ালা জানেন। ফোন রিসিভ করতেই ওপাশ থেকে সালাম এলো?
ইরা; আসসালামুয়ালাইকুম?
আমি:ওয়ালাইকুম আসসালাম, কন্ঠ টা কেমন চেনা চেনা লাগছে?জী কে বলছেন?
ইরা; আপনার হবু বউ?
আমি: ওহ্,
ইরা:হুমমমম, কেমন আছেন?
আমি; আলহামদুলিল্লাহ ভালো, আপনি?
ইরা;একটা বছর একটুও ভালো ছিলাম না, এখন ভালো আছি?
আমি:জী ঠিক বুঝলাম না?
ইরা; কিছু না, খাওয়া দাওয়া হয়েছে?
.
আমি;হুমম, আপনার?
ইরা: হুম, আপনি কি লজ্জা পাচ্ছেন?
আমি:জী একটু একটু।
ইরা: আমি মেয়ে আমার লজ্জা করছে না,আর আপনি ছেলে হয়ে বলছেন আপনার লজ্জা করছে। আপনি কেমন পুরুষ বলেন তো?
আমি:আমি কি বলবো কিছুই বুঝতে পারছি না,এর জবাব তো আমার কাছে অনেক আছে, কিন্তু কিছু বলবো না। আচ্ছা বাই? মেয়েটার প্রতি উত্তর শোনার আগেই ফোন কেটে দিলাম। আবার ফোন বেজে উঠলো, ফোন রিসিভ করে বললাম..জী বলেন?
ইরা:সরি, ওভাবে বলা ঠিক হয়নি?
আমি:আর কিছু বলবেন?
ইরা: রাগ করলেন?
আমি:না, ঘুম আসছে।
ইরা: ওহ্, আচ্ছা আল্লাহ হাফেজ।
আমি: ফোন কেটে,ফোর চার্জে লাগিয়ে ঘুমিয়ে পড়লাম।পরের দিন সকালে.…
মা: আজ বিয়ের বাজার করতে যা।
আমি:বিয়ের আরো দুদিন আছে।
মা; যেমন বাপ তেমন ছেলে হয়েছে।তো কি হয়েছে?সব কিছু আগে থেকেই করে রাখা ভালো।
আব্বা;আমি আবার কী করলাম?
মা: তুমি কিছু করোনি তুমি তো দুধে ধোয়া তুলসী পাতা। আজকের ভিতরে যেনো সব বাজার করা কম্পিলিট হয়ে যায়।
আমি: আচ্ছা ঠিক আছে। তারপর খাওয়া দাওয়া শেষ করে ঘরে এসে বাজার যাবার জন্য রেড়ি হয়ে নিলাম। তারপর আমি আর আব্বা বাজারে চলে এলাম।রাতে আবার ফোন বেজে উঠলো……ফোনের দিকে তাকিয়ে দেখি গতকালের ওই মেয়েটা মানে আমার হবু বউ। ব্যাস্ত তাই রিসিভ করলাম না। কয়েক বার এমন ভাবে কেটে গেলে।এক প্রকার বিরক্ত হয়ে ফোন রিসিভ করে বললাম।জী বলেন?
ইরা: ব্যাস্ত নাকি?
আমি:জী, শো রুমের আয় বায়ের হিসেবে দেখছি।
ইরা: আচ্ছা তাহলে কাজ করেন। আল্লাহ হাফেজ।
আমি: ফোন কেটে দিলাম, তারপর আমি আমার কাজ করতে লাগলাম।পরের দিন… সকাল থেকে আত্তীয় সজন আশা শুরু হলো।রাতে চাচাতো ভাই বোন, খালাতো ভাই বোন, মামাতো ভাই বোন দের সাথে গল্প করছি, গল্প করতে করতে অনেক রাত হয় গেলো।তাই আড্ডা খানা থেকে উঠে ঘরে এসে ঘুমিয়ে গেলাম।পরের দিন সবার চেঁচামেচিতে ঘুম ভাঙল। তিন ঘণ্টা পর… গাড়িতে বসে আছি।এক ঘন্টা পর কনের বাড়িতে চলে এলাম। আমি মনে হয় এই প্রথম বর যে কিনা তার বউ এর নাম জানে না।দেখতে দেখতে বিয়েটাও হয়ে গেলো। মেয়েটা কেমন এখনো দেখিনি। মেয়েটা যখন আমার পাশে বসলো..আমি তখন অনেক টাই অবাক হলো।মা আমাকে এমনভাবে মিথ্যা বললো…মা তো বলেছিলো মেয়েটা কালো কিন্তু মেয়ের হাত দেখে মনে হচ্ছে অনেক সাদা আর মেয়েটা অনেক সুন্দরীও হবে।মা তুমি আমার সাথে এটা ঠিক করো নি। বাড়িতে চলে এলাম,বাড়ি এসে পোশাক চেন্জ করে মায়ের কাছে এলাম।মা তুমি আমার সাথে এটা ঠিক করো নি?আমি তোমাকে বিশ্বাস করলাম আর তুমি আমার সাথে এমন করলে?
মা; কেনো কি হয়েছে?(হেসে)
.
আমি: একদম হাসবা না, মেয়ে তো অনেক সুন্দরী।
মা;তো কি হয়েছে?তোর জন্য আরেকটি চমক আছে।
আমি: তুমি কিন্তু আমার সাথে এটা ঠিক করো নি। মায়ের রুম থেকে রেগে ছাদে চলে এলাম।রাতে বাসর ঘরে গেলাম, বুকের ভেতর কেমন ধুকধুক করছে। মনের ভিতর কেমন অস্থিরতা কাজ করছে?আমি বিছানার কাছে যেতেই মেয়েটা বিছানা থেকে নেমে এসে সালাম করতে গেলো। সালামো করলো তারপর সালাম করে বিছানায় গিয়ে বসলো।কি বলে কথা শুরু করবো কিছুই বুঝতে পারছি না।নিরাবোতা ভেঙে মেয়েটা বললো…
ইরা; এমন ভাবে চুপ করে দাঁড়িয়ে থাকবেন?
আমি: কন্ঠ টা অনেক পরিচিত পরিচিত মনে হচ্ছে,মনে হচ্ছে এই কন্ঠ টা এর আগে অনেক শুনেছি কিন্তু কে এটা বুঝতে পারছি না।আমি বিছানায় বসলাম তখন মেয়েটা তার ঘোমটা সরালো, মেয়েটার মুখ দেখে বিছানা থেকে উঠে পড়লাম….
ইরা;কি হলো উঠে পড়লা যে?
আমি;আ,আ,আ,আপনি, আপনি এখানে কিভাবে?
ইরা: কিভাবে এলাম তুমি সেটা ভালো করেই জানো?
আমি: আমাকে বিয়ে করতে রাজি হওয়ার কারণ?
ইরা:কারণ তোমাকে ভালোবাসি?
আমি:জী ঠিক বুঝলাম না? আমাকে ভালোবাসেন মানে?
ইরা; হুমমম ভালোবাসি,সেই এক বছর আগে থেকেই। তোমার সাথে মিশতে মিশতে কখন ভালো লেগে যায় আমি নিজেও বুঝতে পারিনি।আর সেই ভালো লাগা থেকেই ভালোবাসা? তখন ভালবাসা হয়নি বলা, এখন বলছি আমি তোমাকে ভালবাসি।
আমি: আমি চুপ করে আছি,আর ইরার দিকে তাকিয়ে আছি?
ইরা:কি হলো? এমন ভাবে চুপ করে আমার দিকে তাকিয়ে আছো কেনো?
আমি: আমি মুখের ভাষা হারিয়ে ফেলেছি,কি বলবো কিছুই বুঝে উঠতে পারছি না।
ইরা: তাড়াতাড়ি প্রপোজ করো?
আমি;কি দিয়ে প্রপোজ করবো? এখানে তো কোন ফুল নেই।
ইরা: এমনিতেই প্রপোজ করো,কে বলেছে ফুল দিয়েই প্রপোজ করতে হবে?
আমি: I love you Era.
.
ইরা: I love you too.
আমি:ইরা আমাকে জড়িয়ে ধরলো, ইরার এমন ভাবে জড়িয়ে ধরাতে পুরো শরীর কেঁপে উঠলো।
ইরা:কি হলো, শক্ত করে জড়িয়ে ধরো।
আমি:ধরছি,ছাড়ো তারপর ধরছি।ইরা ছেড়ে দিলো। আমি আলমারির কাছে গেলাম তখন ইরা বললো…
ইরা: ওখানে কি করতে গেলা?
আমি:বলছি,আমি আলমারির ড্রয়ার থেকে টাকা বের করলাম তারপর ইরার কাছে গিয়ে বললাম,এই নেন আপনার দেন মোহর?ইরা টাকা গুলো নিয়ে নিলো তারপর আমার হাত ধরে আমার হাতে ধরিয়ে বললো….
ইরা; আমার দেন মোহরের টাকা আমি আমার স্বামীকে দিয়ে দিলাম।
আমি: এই বলে ইরা আবার আমাকে জরিয়ে ধরলো।বুঝলাম না ব্যাপারটা কি? কিভাবে কি হলো আমি তো কিছুই বুঝতে পারছিনা.
ইরা; আমি বলছি সোনো তাহলে
তারপর ইরা বলতে শুরু করলো,,,, দুই সপ্তাহ আগের কথা,,,দুই সপ্তাহ আগে আব্বু বললো,,,,
আংকেল:এই ছবি গুলো দেখতো মা পছন্দ হয় কিনা?
ইরা: আমি এতো তাড়াতাড়ি বিয়ে করবো না বাবা?
আংকেল: কেনো?
.
ইরা: এমনিতেই?
আংকেল;কেউ কি আছে?থাকলে বল ওর পরিবারের সাথে না হয় কথা বলবো?
ইরা: আমি চুপ করে থাকলাম, ইচ্ছে করছিলো তোমার কথা বলতে। কিন্তু তোমার তো কোন খোঁজ খবরই নেই।তাই না বলতে হলো?না আব্বু তেমন কেউ নেই?
আংকেল: তাহলে এই ছবি গুলো দেখ,দেখে বল,যাকে তোর পছন্দ হবে তার সাথেই কথা বলবো।
ইরা; চেহারা দেখে কি চেনা যায়, যে সে কেমন?
আংকেল;আরে মা তুই আগে পছন্দ তো কর, তারপর তুই না হয় কথা বলবি ওকে
ইরা: আচ্ছা ঠিক আছে। আব্বু আমাকে পিক গুলো দিয়ে চলে গেলো।শালা আমাকে ভালোবাসা শিখিয়ে কোথায় যে হওয়া হয়ে গেলো। ওকে পেলে না আচ্ছা মতো পিটাবো। কেনো ভালোবাসা শিখিয়ে চলে গেলো।শালা হারামী, কুত্তা, বিলাই,বান্দর,হুনুমান।
আমি:এই তুমি এমন করে গালি দিচ্ছিলা আমায়?
ইরা:না আসলে, কষ্ট আর রাগে গালাগাল দিচ্ছিলাম।
আমি: বুঝলাম,তারপর বলো?
ইরা: তারপর আর কি পিক গুলো দেখলাম,তার মধ্যে তুমিও ছিলা তাই তোমাকে সিলেক্ট করলাম। যখন বাসায় তোমার কথা বলি তখন বাসার সবার কেমন অবস্থা হয়েছিলো জানো?
আমি;না বললে কিভাবে জানবো?
.
ইরা:ইয়া বড় বড় চোখ করে তাকিয়ে ছিলো, এমন ভাবে হা করে আমার দিকে তাকিয়ে ছিলো?
আমি:ইরা হা করলো তাই আমি ওর ঠোঁটের সাথে আমার ঠোঁট মিলিয়ে দিলাম। তারপর কিছুক্ষণ পড় ছেড়ে দিলাম।ইরা এখনো হা করে চোখ বড়বড় করে তাকিয়ে আছে?এই যে মিস…..…!
ইরা; তেমন কিছুই না,
আমি:আমাকে মারতে ইচ্ছা করছিলো তাই না?
ইরা:না আসলে,এখন ইচ্ছে করছে?(মুচকি হেসে)
আমি:তাই, আচ্ছা মারো ,লাঠি আনা লাগবে নাকি?
ইরা:না থাক?
আমি: আমার কিন্তু অনেক ইচ্ছে করছে?
ইরা;কি?
আমি: তোমাকে কাতুকুতু দিতে।(হেসে)
ইরা:এই একদম না, আমার কিন্তু অনেক কাতু কুতু আছে বলে দিলাম
আমি:তাই নাকি, একবার চেক করে দেখি। কেমন কাতু কুতু আছে?
ইরা:এই মোটেও না।
আমি:যেই ভাবা সেই কাজ, শুরু করলাম।ইরা হাসতে শুরু করলো।(আমি বাসর রাতে আমার বউ কে এমন ভাবেই কাতু কুতু দিবো হা হা হা)ইরা আমাকে ছেড়ে বিছানার দিকে দৌড় দিলো। সুন্দরী পালিয়ে যাবে কোথায়?
ইরা:এটা কিন্তু ঠিক হচ্ছে না? সুযোগ কিন্তু আমারো আসবে?
.
আমি:ওকে আমাকে কাতু কুতু দাও আমার কাতু কুতু নেই। আচ্ছা আর কাতু কুতু দিব না,শাড়ি চেন্জ করে ওযু করে এসো।
ইরা:হুমম,
আমি:ইরা ওযু করে এলো, তারপর আমি ওযু করে এলাম। তারপর দুজন একসাথে নফল নামাজ পড়ে আমাদের ভবিষ্যৎ জীবনের জন্য দোয়া করলাম।চলো এখন ঘুমিয়ে পড়ি? আমার কথা শুনে ইরা আমার দিকে ভুরু কুঁচকে তাকালো?কি হলো এমন দেখছো কেনো?
ইরা; কিছু না,
আমি: তাহলে চলো ঘুমিয়ে পড়ি, অনেক রাত হয়েছে আর অনেক ঘুমও পাচ্ছে।
ইরা: হুমমম,
আমি:আমি শুয়ে পড়লাম,ইরাও আমার পাশে এসে শুয়ে পড়লো তারপর আমার বুকে মাথা রাখলো। আমি মিটিমিটি করে হাসছি,কি হলো ঘুম আসছে না?
ইরা: না, ইচ্ছে করছে…
আমি:কি ইচ্ছে করছে ওটা পেটের ভিতরে না রেখে বলে ফেলো।
ইরা; কিছুই না।
আমি: তাহলে বিড়াল টা মেরেই নি, তুমি কি বলো?
ইরা: এখানে বিড়াল পেলে কোথায়?
আমি:আমি দেখাচ্ছি কোথায় পেলাম, সম্মানিত পাঠক পাঠিকাগন এখন ভাগেন। এখন তো খেলা হবে,এই না না একবারে চলে যায়েন না, আপনাদের রিকোয়েস্ট দিয়ে রেখেছি ওটা এ্যাক্সেপ্ট করেন। ধন্যবাদ…
<>সমাপ্ত<>

No comments

info.kroyhouse24@gmail.com