Breaking News

তুই আমার অজানা অনুভূতি | পর্ব -০৪



তুহিন সোজা গিয়ে রুহিকে পরপর দুইটা থাপ্পড় দিয়ে দেয়। আর রাগী দৃষ্টি নিক্ষেপ করে রুহির উদ্দেশ্যে বলে,
__রুহি তোদের কতোবার বলেছি এভাবে মেয়েদের দিয়ে বাজে কাজ না করাতে । তাও তোরা আমার কথার অমান্য করে বারবার অন্য মেয়েদের দিয়ে আমাকে I Love you বলাস কেন?
ফোঁস করে একটা নিঃশ্বাস ফেলে তুহিন আবার বলা শুরু করে ,
__তোরা আগেও অনেক মেয়েকে দিয়ে আমাকে প্রপোজ করিয়েছিস আমি বারণ করা সত্ত্বেও থামিসনি। দেখ আজ শুধু মাত্র তোদের জন্য আমাকে একটা মেয়ের থাপ্পড় মারার সাহস করলো। তার উপর বাজে লোক বলে অপমান ও করলো তাও ভার্সিটির সবার সামনে ।
রুহি মাথা নিচু করে আছে জানে এখন যদি কিছু বলে আরো কয়েকটা থাপ্পড় তাকে খেতে হবে
তুহিন চেচিয়ে রুহিকে বললো,
__ এই মুহূর্তে ভার্সিটি থেকে বেরিয়ে যা তোকে যেন এক মাস ভার্সিটিতে না দেখি
রুহি মাথা উচু করে একবার ছায়ার দিকে অগ্নি দৃষ্টি দিয়ে মনেমনে বললো,
You have to pay for this chaya
রুহি আর কথা না বাড়িয়ে ওখান থেকে চলে যায়।
রুহি যাওয়ার পর ছায়া মনেমনে বলতে লাগলো,
__আল্লাহ গো রুহি আপুরে জল্লাদটা কিভাবে মারলো গো। আল্লাহ আমাকে এখন কি হবে? রাক্ষসটা মনে হয় আজ আমাকে আস্ত চিবিয়ে খাবে ।
ছায়ার এই মুহূর্তে মনে হচ্ছে ওর সামনে তুহিন নয় বরং আজরাইল দাঁড়ায় আছে। যে কোনো সময় ছায়ার ছোট্ট প্রাণটা উড়ে যাবে
ছায়া আর সাত পাঁচ না ভেবে বোরকা টা ধরে দিলো এক দৌড়। ছায়াকে আর পায় কে দৌড়াতে দৌড়াতে ছায়া বললো,
__ আল্লাহ জোর বাঁচান বেঁচে গেছি। যমের সামনে থেকে বেঁচে ফিরলাম ভাবা যায়। কিন্তু যাই হোক ছায়া তোর জবাব নেই তুই শাহরিয়ার শেখ তুহিন কে থাপ্পড় দিয়েছিস ।
এদিকে রাগে তুহিনের গা জ্বলে যাচ্ছে তার ইচ্ছে করছে সব শেষ করে দেই। তুহিন নিজের মাথায় হাত দিয়ে কপালে স্লাইড করতে করতে নিজেকে শান্ত করার চেষ্টা করে যাচ্ছে।
হঠাৎ তুহিনের ছায়ার কথা মনে পড়লো। তুহিন এদিক ওদিক তাকিয়ে ছায়াকে খুঁজতে লাগলো। কিন্তু ছায়াকে কোথাও পেল না। তুহিনের রাগ মাথায় চড়ে গেল। হঠাৎ তুহিন কিছু একটা ভেবে বাঁকা হাসি দিয়ে একজনকে ডেকে বললো,
__যে আমাকে ভার্সিটির সবার সামনে চড় মেরেছে তার সমস্ত ডিটেলস আমার চাই। তাও ঠিক কালকের মধ্যে।
এইসব বলে তুহিন লোকটিকে কিছু টাকা দিলো তারপর মনেমনে কিছু একটা ভেবে ওর ফ্রেন্ডসদের কাছে চলে গেলো।
এদিকে আমাদের দুষ্টু ছায়া দৌড়ে সোজা ক্লাসে গিয়ে বুকে হাত দিয়ে হাপাতে লাগলো ।
তুহা ছায়াকে এভাবে হাপাতে দেখে ওর কাছে গিয়ে বললো,
__ কিরে কি হয়েছে তোর এভাবে হাপাচ্ছিস কেন? ?
ছায়া ব্যাগ থেকে বোতল নিয়ে একটু পানি খেয়ে তারপর বললো,
__আর বলিস না রে সাক্ষাৎ আজরাইলের কবলে পড়েছিলাম আজ
তুহা কিছুই বুঝলো না তাই সে জিজ্ঞাসা দৃষ্টি দিয়ে ছায়ার দিকে কিছুক্ষন তাকিয়ে তারপর বললো,
__কি সব উল্টা পাল্টা বলছিস বলতো ?
ছায়া এবার তুহাকে নিয়ে একটা জায়গায় বসে ভার্সিটিতে আসার পর থেকে কি কি হলো সব খুলে বললো
তুহা সব শুনে থ মেরে বসে আছে। ছায়া তুহাকে একটু ধাক্কা দিয়ে বললো,
__ কি রে কই হারায় গেলি?
তুহা ছায়ার ধাক্কায় বাস্তবে ফিরে এলো আর উত্তেজিত হয়ে ছায়াকে বললো,
__ ওরে আমার পাগল বেস্টি রে তুই কি করেছিস তুই নিজেও জানিস না। আল্লাহ জানে সামনে তোর কি হবে । তুই দুইজন ডেঞ্জারেস মানুষকে খেপাইছিস ওরা যে তোর জিনা মুশকিল করে দিবে ।
ছায়া ভয়ে ভয়ে বললো,
__দূর বজ্জাত মাইয়া কোথায় আমাকে সাহস দিবে তা না করে মাইয়া আমাকে আরো ভয় লাগিয়ে দিচ্ছে।
তুহা ছায়ার কথার প্রতিউত্তরে বললো,
__আরেহ বউ আমার থুক্কু বইন আমার আমি তোরে ভয় লাগাচ্ছি না সতর্ক বাণী দিতাছি।
ছায়া এবার বিরক্তি নিয়ে বললো,
__আমি এখন বাড়ি গেলাম এখানে থাকলে তুই আমার মাথাটা চিবিয়ে খাবি।
তুহা বললো,
__আরেহ আমার কথাটা তো শুন তোরে একটা উপদেশ দেবার ছিল….. যা চলে গেল
ছায়া তুহার কথায় বিরক্ত হয়ে হনহন করে ভার্সিটি থেকে বেরিয়ে গেল।
অন্যদিকে তুহিন ছায়াকে পুরো ভার্সিটি হন্য হয়ে খুঁজতে লাগলো। আর মনেমনে বলতে লাগলো,
__একবার পায় তোমাকে তারপর বুঝিয়ে দেবো শাহরিয়ার শেখ তুহিন কে থাপ্পড় মারার কি পরিনাম হতে পারে।
এদিকে ছায়াসোজা বাসায় এসে ব্যাগ রেখে বোরকা খুলে খাটে ধপাস করে শুয়ে পড়লো। আর বিড়বিড় করে বলতে লাগলো,
__আজকে কার মুখ দেখে উঠেছিলাম আল্লাহ জানে পুরো দিনটা খারাপ গেল। আচ্ছা সকালে তোহ নিজের মুখই প্রথমে দেখেছিলাম। উফফ আর পারিনা কোন দুঃখে যে নিজের মুখটা দেখতে গেলাম। দূর আর দেখবোই না।
ছায়া এভাবে কিছুক্ষন বিড়বিড় করে ওয়াশরুমে চলে গেল সাওয়ার নিতে।পাক্কা এক ঘন্টা সাওয়ার নিয়ে ছায়া বের হলো। সাওয়ার নেবার ফলে মনটা ফুরফুরে হয়ে গেছে তার।
ছায়া আবার তার প্ৰিয় জায়গা মানে বেলকানিতে গিয়ে দোলনায় বসে পড়লো। আর সারাদিন যা ঘটনা ঘটলো তা নিয়ে ভেবে কখনো ভয়ে সিউরে উঠছে আবার কখনো কখনো মুচকি মুচকি হাসছে ।
দুপুরের নামাজ পড়ে খাওয়া দাওয়ার পর ছায়া বিছানায় গা এলিয়ে দিয়ে ফোনটা হাতে নিয়ে ভাবলো তুহিনকে একটু জ্বালানু যাক। তাই ছায়া তুহিনকে মেসেজ দিলো …..
.
চলবে…

No comments

info.kroyhouse24@gmail.com