মধুর মিলন । পর্ব -০১

আগামীকাল আমার বিয়ে আর কিছুসময় পর আমার গায়ে হলুদ।
আমি বাড়ির পাশে পুকুরপাড়ে বসে আছি আর আমার চোখ দিয়ে পানি পরছে।
চোখে আমার কিসের এতো পানি বুঝতে পারতেছি না।
এমন কিছু হবে তার ধারনা আমার আগেই ছিল।
তাহলে কেন চোখ দিয়ে এতো পানি পরতেছে?
নিজের হবু বরের হাতে থাপ্পড় খাবার কষ্টে নাকি অন্য কিছুর জন্য?
জানি না, বুঝি আর বুঝতে ও চাইতেছি না।
৫/৬ বছর আগে আমি এমন দিনের স্বপ্ন দেখতাম।
আমি শুভ্র ভাইয়ার বউ হব!
.
যদি ও আমার বয়স তখন ১২/১৩ হবে।
এই বয়সে কেউ এমন কিছু ভাবে কি না তা আমি জানি না কিন্তু আমি ভাবতাম।
আমি আর শুভ্র ভাইয়া প্রায় ১০/১১ বছরের ছোট বড়।
হুম আমার হবু বরের নাম শুভ্র!
সে আমার বড় চাচার একমাত্র ছেলে!
ছোট থেকে আমি ভাইয়াকে অনেক পছন্দ করতাম!
আরর ভাইয়া ও আমাকে অনেক ভালোবাসতো।
আদর করে ভাইয়া আমাকে পুচকি ডাকত!
ভাইয়া সাথে আমাকে সব কাজ করতে হবে ভাইয়ার হাতে খেতে হবে।
যখন আমার ১১ বছর ভাইয়া তখন পড়া লেখার জন্য ঢাকায় চলে আসে ভাইয়া আসার সময় আমার সে কি কান্না।
ভাইয়া ঢাকায় আসার পর কিছু দিন পর পর গ্রামে যেত। ভাইয়া বাড়িতে আসলে
সবার আগে আমি ছুটে যেতাম ভাইয়াকে জড়িয়ে ধরে কান্না করতাম। ভাইয়া আমার জন্য
সব সময় খেলনা, চকলেট, চুড়ি নিয়ে যেত! সবাই আমার পাগলামি দেখে বলতো শুভ্র সাথে নীলাকে বিয়ে দিতে হবে!
সে কথা শুনে লজ্জায় লাল হয়ে যেতাম।
আর মনে মনে বলতাম আমি তো এইটাই চাই!
প্রতি শবেবরাতে নামাজ পড়ে ভাইয়াকে চাইতাম আমার জামাই হিসেবে।
ভাইয়া বাড়িতে আসলে আমি আপু আর ভাইয়া সারা দিন ঘুরে বেড়াতাম।
তখন আমার ১২/১৩ বছর অনেকটা আমার বাচ্চা সুলভ ব্যবহার কমতে শুরু করলো।
তখন ভাইয়াকে দেখলে আগের মতো জড়িয়ে ধরতাম না।
কেমন জানি লজ্জা পেতাম!
একদিন ভাইয়া বাড়িতে আসলে ভাইয়া তেঁতুল গাছ থেকে ছিঁড়ে আমাকে বললেন পুচকি যা তো লবণ নিয়ে আয় তেঁতুল খাব!
.
আমি লবণ নিয়ে যেয়ে দেখি আপু শুভ্র ভাইয়াকে জড়িয়ে ধরে আছে কিছুটা অবাক হয়ে সে খান থেকে দৌড়ে চলে আসলাম আমার চলে আসাটা ভাইয়া দেখলে আপু ও আমার পিছে চলে আসে।
আমার তখন যে বয়স তখন আমার কোন কিছু বুঝার কথা না তাও আমি কেন যেন কষ্ট পেলাম।
আপু এসে আমাকে বুজাইতে লাগলো ওরা ২ জন ২ জনকে অনেক ভালোবাসে আমি যদি এই কথা কাউকে বলে দেই তাহলে ভাইয়াকে আর বাড়িতে আসতে দিবে না আর সবাই ওদের অনেক বকাঝকা করবে।
আপু আমাকে দিয়ে প্রমিস করালো যাতে আমি এই কথা কাউকে না বলি!
আমি আপু আর ভাইয়াকে পৃথিবীতে সব থেকে বেশি ভালোবাসি তাই সে দিন থেকে আমি ওদের পিয়ন হয়ে গেলাম।
ভাইয়া আসলে আমি ওদের সব সময় পাহারা দিতাম।
.
ওদের সাথে সব সময় থাকতাম যাতে কেউ ওদের সন্দেহ না করে!
ওদের ভালোবাসা ভালোই চলছিল!
যদি ও আমার কষ্ট হতো আমি কাউকে বুঝতে দিতাম না।
লুকায় লুকায় অনেক কান্না করতাম।
আস্তে আস্তে আমি অনেকটা বড় হয়ে গেলাম এখন আর ভাইয়া আপুকে এক সাথে দেখলে কান্না বা কষ্ট লাগে না।
তবে কিছুটা খারাপ লাগে।
এই ভাবে ৫/৬ বছর কেটে গেল ভাইয়া এখন ছোট চাকরী করে!
আপুর ও অনার্স ২য় বর্ষে পরতেছে!
এর মধ্যে বাবা হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পরলেন আর বাবার অসুস্থতা আমাদের সবার জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দিলেন!!!!
বি:দ্র: আপুরা জীবনে এই প্রথম গল্প লিখলাম।
বাংলায় টাইপ করতে ভালো পারি না তাই বানানে অনেক ভুল সবাই ক্ষমা করবেন!
আর আপনাদের ভালো লাগলে বলবেন তাহলে বাকিটা লিখবো!?
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url