Breaking News

তুই আমার অজানা অনুভূতি | পর্ব -০৯



ছায়া তুহিনকে জব্দ করতে পেরে খুবই মজা পেলো।
ছায়ার এই মুহূর্তে ইচ্ছে করছে ছেলেদের মতো লুঙ্গি ডান্স করতে কিন্তু উপায় নাই ।
ছায়া তুহিনের কাঁদামাক্ত অবস্থা বার বার মনে করছিলো আর হাসছিলো।
ছায়া হাসতে হাসতে তার ক্লাসে চলে গেলো।
ওইদিক তুহিন রেগে আগুন হয়ে আছে বেচারা ছায়াকে সরি বলতে এসেছিলো।
কিন্তু ছায়া তার সাথে যা করলো তারপর সরি তো দূরের কথা ছায়ার নাম ও শুনতে চাইনা তুহিন।
তুহিন নিজের রাগ সংবরণ করে লেকের পানি থেকে উঠে ভার্সিটির বয়েস ওয়াশরুমে
চলে গেলো আর যাওয়ার আগে বন্ধুদের বলে গেলো ওর জন্য জামাকাপড় নিয়ে আসতে।
বন্ধুরা গিয়ে তুহিনের জন্য কিছু জামাকাপড় নিয়ে এলো আর তুহিনকে সেগুলো দিলো।
তুহিন নিজের জামাকাপড় চেঞ্জ করে ভার্সিটিতে ছায়াকে খুঁজতে লাগলো। আর মনেমনে বললো,
___সকালের জন্য ভেবেছিলাম তোমাকে সরি বলবো কিন্তু না তুমি যা করলে
তারপর সরি তো দূরের কথা তোমাকে পেলেই সোজা লেকের জলে
ডুবিয়ে মারবো বেয়াদপ মেয়ে একটা। আজ শুধুমাত্র তোমার জন্য
সবার সামনে আমাকে অপমানিত হতে হলো। এমনিতে বলতে গেলে
লেকের ওখানে তেমন কেউই ছিল না।
তবুও আমি তোমাকে তোমার কাজের উপযুক্ত শাস্তি দিয়েই ছাড়বো। ( তুহিন )
.
তুহিন নিজে নিজে এইসব বলে বেড়াচ্ছিলো হঠাৎ ই সেইদিনের সেই লোকটা এলো যাকে তুহিন ছায়ার খোঁজ খবর নিতে বলেছিলো। সে এসে ছায়ার সমস্ত ডিটেলস তুহিনকে দিলো। তুহিনতো শুনে জাস্ট হতবাক হয়ে গেলো। মুহূর্তেই তার খুব রাগও হলো। সে বিড়বিড় করে বললো,
.
___তাহলে এতদিন আমাকে বোকা বানানো হচ্ছিলো মিস সাহারা ইবনান ছায়া। আপনার এই ভুলের শাস্তি আপনি নিশ্চয়ই পাবেন। তবে যায় বলুন আমি ভেবেছিলাম দুনিয়াতে সাহারার পরে আপনি একটা বড় পাগল। কিন্তু আমি ভুল ছিলাম সাহারা ইবনান ছায়ার চেয়ে বড় পাগল দ্বিতীয় কেউ হতেই পারেনা। তবে তার পাগলামিতে আমাকে সামিল করা তার একদম ঠিক হয়নি এবার সে শাহরিয়ার শেখ তুহিনের ইনোসেন্ট রাগ দেখবে । ( তুহিন )
তুহিন কথাগুলো বলে বাঁকা হেসে লোকটাকে আরো কিছু টাকা আর সাথে শুকরিয়া জানিয়ে ভার্সিটিতে ছায়াকে খুঁজতে লাগলো। কিন্ত কোথাও ছায়াকে পেলো না। শেষে ছায়ার ক্লাসমেট থেকে জানতে পারে ছায়া বাড়িতে চলে গেছে।
তুহিন একটু বিরক্তি ফিল করলো কিন্ত পরে ভাবলো আরো অনেক সুযোগ আছে তখন ছায়াকে দেখে নিবে। তারপর তুহিনও তার বাকি ক্লাস করে বাড়িতে চলে গেল।
.
অন্যদিকে ছায়া পুরো রাস্তা তুহিনকে কিভাবে জব্দ করলো ওটা ভেবে হাসতে হাসতে শেষ।
[মাইয়াডার মনে হয় মাথাটা পুরোই খারাপ হয়ে গেলো গো কেউ ওকে মেন্টাল হাসপাতালে দিয়ে আসো গো]
যেই গাড়িতে ছায়া উঠেছিল ওনি ছায়ার এমন হাসি দেখে কোতূহল সইতে না পেরে ছায়াকে জিজ্ঞাসা করলো,
___আপা আপনে এভাবে হাসেন কিল্লাইগা আপনার কি মাথা টাথা খারাপ হইলনি? ( ড্রাইভার )
ছায়া তো ড্রাইভারের কথা শুনে অবাক চোখে তার দিকে তাকিয়ে আছে। আর মনেমনে বলছে ,
___আচ্ছা আমি কি এতক্ষন হাসছিলাম । ইসস আঙ্কেলটা কি ভাবলো। থাক যাই ভাবার ভাবুক উনিতো ঠিকই বলেছেন আমি তোহ একটা পাগলই। না না উনি ঠিক বলেননি আমি তোহ পাগল নই আমিতো পাগলী। (ছায়া )
এই বলে ছায়া আবার হাসতে লাগলো। ড্রাইভার আঙ্কেল মনেমনে বললেন,
___মাইয়াডা মনে হয় সত্যি সত্যি পাগল হয়ে গেছে। যাগ্গে যাই হোক তাতে আমার কি আমি আমার ভাড়াটা পেলেই খুশি। (ড্রাইভার )
.
এই বলে ড্রাইভার বার বার ছায়াকে আড় চোখে ছায়ার হাসি দেখতে লাগলো শেষ পর্যন্ত ছায়া তার গন্তব্যে পৌঁছে গেলো। মানে তার বাড়িতে চলে এলো। তারপর তার ফ্লেটে ঢুকতে যাবে ঠিক সেই সময় এলো আরেক আপদ। যাকে দেখে ছায়ার হাসি বিরক্তিতে বদলে গেলো ।
আপদটা আর কেউ নয় তাঁদের বাড়িওয়ালার ছেলে রায়ান। যাকে ছায়া মনেমনে আপদ বলেই ডাকে কারণ সে ছায়াকে অযথা বিরক্ত করে আর বকবক করে মাথা খাই।
আপদটা ছায়াকে দেখে হাসলো আর ছায়াকে জিজ্ঞাসা করলো,
__ছায়ামনি কেমন আছো? (রায়ান)
ছায়া খুবই বিরক্ত হলো তার এই উৎভট ডাক শুনে। তাও না পারতে মুখে একচিলতে জোর করা হাসি ফুটিয়ে তুলে তাকে বললো,
.
___আসসালামু আলাইকুম ভাইয়া। জ্বী আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি। ( ছায়া)
রায়ান মুখটা একটু কালো করে বললো,
__ছায়ামনি প্লিজ ডোন্ট কল মি ভাইয়া। (রায়ান )
রায়ানের কথা শুনে ছায়ার প্রচুর রাগ হচ্ছে আর সে মনেমনে রায়ানকে হাজারটা গালি দিতে দিতে মনেমনে বললো,
___বেটা আপদ মনে রঙ লাগছে তোর। বেটা আহাম্মক তোরে আমি যদি এখন পচা ডোবায় চুবাতে পারতাম তাহলে আমার শান্তি হতো। বেটা আপদ তোরে ভাই ডাকবো না তোহ কি আব্বু ডাকবো। ইচ্ছে করতেছে লাথি মেরে তোরে এই আট তলা থেকে নিচে ফেলে দেই। (ছায়া )
ছায়া মনেমনে কথাগুলো বলে একটা জোরপূর্বক মিষ্টি হেসে রায়ানকে বললো,
__ভাইয়া না ডাকলে কি ডাকবো রায়ান কাকু নাকি রায়ান দাদু নাকি রায়ান ফুফা। বলুন কি ডাকবো? (ছায়া )
ছায়ার এমন কথা শুনে রায়ান বেকুব বনে গেলো। কিছুক্ষন চুপ থেকে রায়ান ছায়াকে বললো,
___ছায়া তুমি না খুব বেশি মজা করো।(রায়ান )
রায়ানের কথার প্রতিউত্তরে ছায়া বললো,
___আমিতো এবারে মজা করলাম না। (ছায়া )
.
রায়ান কথা বাড়ালো না কাজ আছে বলে চলে গেলো। ছায়া যেন হাফ ছেড়ে বাঁচলো। তারপর নিজের ফ্লেটে ঢুকে রায়ানের গুষ্টি উদ্ধার করতে লাগলো,
___বেটা রায়ান কাকু বেটা আপদ আহাম্মক আমাকে লাইন মারা না তোর লাইন মারার স্বাদ আমি না ভাগিয়েছি তো আমার নামও ছায়া না। তোর জন্য আজ আমার সব মজা মাটি হয়ে গেলো এখান থেকে যাবার আগে তোকে এমন শায়েস্তা করবো। যে, জীবনেও মেয়েদের লাইন মারা তো দূর তাদের দিকে তাকাবিও না বেটা লুইচ্চা ফাজিল পোলা। ( ছায়া )
এইসব বলতে বলতে ছায়া ওয়াশরুমে চলে গেলো সাওয়ার নিতে। আজ বড্ড ধকল গেলো তার উপরে কোমরেও ব্যাথা পেলো সাওয়ারটা তার এখন খুব দরকার।
ছায়া সাওয়ার নিয়ে তার প্রিয় জায়গা মানে বেলকানিতে চলে গেলো। সাওয়ার নিয়ে ছায়ার মনটা ফুরফুরে হয়ে গেলো। আর ছায়া যখনি খুশি থাকে তার মন তখন গান গান করে মানে তার গান গায়তে ইচ্ছে করে। ছায়া মন খুলে গাইতে লাগলো,
____জানিস আমি ইচ্ছে করে খুব রাগ দেখায়…..
____তুই মানিয়ে নিবি বলে……….
____জানিস আমি অকারণে খুব কষ্ট পায়…….
____তুই কাছে টেনে নিবি বলে………..
____জানিস এই মনটা আর আমার নেই………
_____শুধু তোর কথা বলে………
____কোনো অচেনা পথের অচেনা কেউ……..
_____তোর সাথে গেছে চলে………
____ক্ষনিকের আলাপে মন ভরে না………
____তোর দিকে তাকালে চোখ সরে না……
____একি মায়া জালে বেঁধে দিলিরে বল……
____তোকে ছাড়া কি আছে আমার…..
_______তুই সঙ্গে সঙ্গে চল…….
______আর হাতে রাখ হাত……..
____প্লিজ প্লিজ সামলে নিস…..
_____তুই আজ আমায় প্লিজ সামলে নিস…….
____প্লিজ প্লিজ সামলে নিস…..
_____তুই আজ আমায় প্লিজ সামলে নিস…….
চলবে….

No comments

info.kroyhouse24@gmail.com