Breaking News

খালাতো বোন যখন পুলিশ অফিসার । পর্ব -০১

বাসর ঘরে আমি রুমে ঢুকতেই দেখি বউ আমার পুলিশের পোশাক পড়ে বসে আছে। আমাকে রুমে ঢুকতে দেখেই আমার কাছে এসে সালাম করলো। আমি কিছু বললাম নাহ
তুমি হয়তো আজকে আমার গায়ে পুলিশের পোশাক দেখে অবাক হয়েছো তাই না (শিফা)
আমি হ্যা সূচক মাথা নাড়লাম
আসলে আজকে আমার জরুরী থানায় যেতে হবে আমাদের এখানে একজন খুন হয়েছে আমাকে ঐ বিষয়ে তদন্ত করতে হবে (শিফা)
তুমিতো এখন ছুটিতে আছো (আমি)
.
ছুটিতে আছি তো কি হয়েছে আমাদের এখানে খুন হয়েছে আমার একটা দায়িত্ব আছে না (শিফা)
তোমাকে আমি এমনিতেই চাকরি করতে মানা করেছি তারপরও (আমি)
আরে এখন এতো কথা বলার সময় নেই আমার।
আমার কাছে আমার দায়িত্ব সবার উপরে বলেই চলে গেলো (শিফা)
আমি ধপ করে বিছানায় বসে পড়লাম। ওর কাছে আমার উপরেও ওর ডিউটি।
এটাই কি ওর ভালোবাসা। মেয়েদের মন তো বলা যায় না। ওকে চাকরি করতে মানা করেছিলাম।
ও বলেছে বিয়ের পর ছেড়ে দিবে। কিন্তু এখন সে বাসর রাতেও তার ডিউটির জন্য বের হয়েছে।
যাই হোক আগে পরিচয়টা দিয়ে নেই আমি অভ্র আহমেদ লিমন। বাবা মায়ের ৩য় সন্তান বড় ২ টা ভাই আছে। ২ জনই বিবাহিত। বড় ভাইয়ের একটা ছেলেও আছে নাম মাহফি ৪ বছর বয়স।
আমি পড়াশোনা শেষ করেছি। বাবা বিজনেসম্যান।
আর শিফা সম্পর্কে আমার খালাতো বোন আমার থেকে ১ বছরের বড়।
তার অনেক ইচ্ছে সে পুলিশে চাকরি করার। তো সব ঠিকঠাক ভাবে পুলিশে জয়েন করেছে।
সে বাবা মায়ের একমাত্র সন্তান। তার বাবাও বিজনেসম্যান।
এবার গল্পে আসা যাক…..
আমি বাসর ঘরে বসে আগের দিনগুলো ভাবতে লাগলাম।
ফ্লাসব্যাক…….
সবে মাত্র ভার্সিটিতে উঠলাম। তখন একদিন বাসায় বসে বাবা মা ও
খালা-খালু বসে আড্ডা দিচ্ছিলো। আমি রুমে ছিলাম।
বাবা বলেছিলো আরেকটু বড় হলেই শিফা আর লিমনের বিয়েটা সেরে ফেলতে।
এই কথা বলার মাঝেই শিফা সেখানে চলে গেলো আর সব শুনে ফেললো।
আরে শিফা চলে এসেছিস আয় আমার পাশে বস (মা)
খালামনি তোমাদের মাঝে কি কথা হয়েছিলো (শিফা)
কেনো কিছু শুনে ফেলেছিস নাকি (মা)
শিফা কিছু বললো নাহ
বুঝে গেছি আমরা তোর বলতে হবে আর (খালামনি)
মা তুমিও না (শিফা)
আচ্ছা মা তোর কোনো সমস্যা আছে নাকি এই বিষয়ে (মা)
শিফা কিছু না বলে দৌড়ে সেখান থেকে চলে গেলো।
এদিকে
.
থাক তাহলে আর শিফার কোনো সমস্যা নেই (খালু)
হুম লিমনের পড়ালেখা শেষ হলেই শুভ কাজটা সেরে ফেলবো (বাবা)
হ্যা তাই করবো (খালু)
অন্যদিকে আমি রুমে ঘুমাচ্ছিলাম। আজ ক্লাস নেই তাই।
কিন্তু দরজা ধাক্কানোর শব্দে ঘুম ভাঙলো। আমি উঠে গিয়ে
দরজা খুললাম। তাকিয়ে দেখি শিফা দাড়িয়ে আছে
আরে আপু তুমি এখানে (আমি)
[আমার বড় ছিলো বলে আপু ডাকতাম]
কেনো আসতে পারিনা নাকি (শিফা)
না তা না আসলে ঘুমাচ্ছিলাম তো তুমি ঘুম ভেঙ্গে দিলে (আমি)
১১ টা বেজে গেছে তুই এখনও ঘুমাচ্ছিস সত্যি করে বলতো রাতে
কোন মেয়ের সাথে টাংকি মেরেছিস (শিফা)
আরে আপু কি এসব আবোল তাবোল বলছো আমি আবার কোন
মেয়ের সাথে টাংকি মারবো (আমি)
সত্যি মারিস নি তো তাহলে ভালো। আচ্ছা শোন বিকালে রেডি
থাকিস তোকে নিয়ে একটু শপিংয়ে যাবো (শিফা)
এ্যা না আপু পারবো না আমার বিকালে কাজ আছে (আমি)
[ আসলে আমি আপুর সাথে একবার শপিংয়ে গিয়েছিলাম। আমার
অবস্থা খারাপ হয়ে গিয়েছিলো। আল্লাহ ১৫ টা দোকান থেকে ১ টা থ্রি পিস কিনেছিলো]
তোর আবার কি কাজ খালি আড্ডা দেওয়া। আজকে আড্ডা দিতে হবে
নাহ মনে থাকে যেন বিকালে আমার সাথে যেতে হবে বলেই রুম থেকে চলে গেলো (শিফা)
আমি বসে বসে রুমে ভাবতে লাগলাম তুমি আমাকে বাসায় পেলে
তো তুমি শপিংয়ে যাওয়ার আগেই আমি বের হয়ে যাবো।
যাই হোক ফ্রেশ হয়ে নিয়ে নামলাম। আমি খালামনিকে দেখেই তার পাশে গিয়ে বসলাম
কিরে কিছু বলবি (খালামনি)
.
হুম বলবো তো (আমি)
তাহলে বল (খালামনি)
এটা সিক্রেট কানে কানে বলতে হবে (আমি)
এবার বল কানটা আমার কাছে এনে (খালামনি)
খালামনি আমরা বন্ধুরা ৭ দিনের জন্য কক্সবাজার ট্যুরে যাবো প্লিজ পারমিশন এনে দাও (আমি)
তোর এতোদূর যেতে হবে না বাবা যদি কোনো বিপদ হয় (খালামনি)
খালামনি প্লিজ ৭ দিন মাত্র এরপর তো চলেই আসবো (আমি)
না না বাবা হবে নাহ আমি পারবোনা পারমিশন এনে দিতে (খালামনি)
তুমি পারমিশন এনে দিবে কিনা বলো (আমি)
নাহ নাহ আমি পারবোনা (খালামনি)
আচ্ছা ঠিকাছে লাগবেনা মন খারাপ করে রুমে গেলাম (আমি)
অনেক ইচ্ছে ছিলো ভার্সিটিতে উঠে একটা ট্যুরে যাবো আমরা ফ্রেন্ডরা মিলে।
কিন্তু তা আর হলো নাহ
। অন্যদিকে খালামনি আমার মন খারাপ করে উঠে আসতে দেখে খুব কষ্ট পেলো।
কারণ খালামনি আমাকে খুব ভালোবাসে
আচ্ছা আপু লিমন একটু ৭ দিনের জন্য ঘুরতে যাবে ওকে মানা
করবি নাহ (খালামনি মাকে উদ্দেশ্য করে)
কেনো ৭ দিন কোথায় ঘুরতে যাবে ও (মা)
যাবে একটু কক্সবাজার ওর ওখানে যাওয়ার অনেক শখ (খালামনি)
কিহ নাহ নাহ ওতোদূর যেতে দেওয়া যাবে নাহ (বাবা)
আরে ভাইয়া ছেলেটা ঘুরতে যাবে যাক না কখনো তো আর যায়নি। এবার ইচ্ছে হয়েছে হয়তো (খালু)
তোরা ওকে সাপোর্ট করছিস (বাবা)
.
আরে ভাইয়া ও ভালো একটা ছেলে। আর ভালো ছেলেদের পক্ষে সবাই থাকে (খালামনি)
নাহ খালু ওকে কোথাও যেতে দিবেন নাহ ও গেলে ওর সাথে আমিও যাবো (শিফা)
আরে ওরা বন্ধুরা মিলে যাবে তুই সেখানে যাবি কি করে (খালামনি)
মা তাহলে ওর যেতে হবে না (শিফা)
আরে মা এবার ও ঘুরে আসুক বন্ধুদের সাথে এরপর কোনো একসময় তুমি আর ও একসাথে যাবে (বাবা)
শিফা আবার আব্বুর কথা ফেলতে পারে না
আচ্ছা মন খারাপ করে (শিফা)
মন খারাপ করিস নাহ মা সামনে একসাথে আমরা একটা ট্যুর করবো (বাবা)
আচ্ছা খালু আমি একটু লিমনের রুম থেকে আসতেছি (শিফা)
আচ্ছা যাও মা (বাবা)
শিফা উঠে আমার রুমে আসলো এসে দেখে আমি মন খারাপ করে বসে আছি।
তুই কক্সবাজার কেন যাবি (শিফা)
এইতো আমরা বন্ধুরা মিলে ঘুরতে যাবো কিন্তু বাসা থেকে মনে হয় যেতে দিবে না (আমি)
আরে মন খারাপ কেন করিস তোকে তো যেতে দিবে মা পারমিশন এনে দিয়েছে (শিফা)
কিহহ সত্যিইই বলেই লাফিয়ে উঠলাম (আমি)
এতো লাফানোর কিছু নেই আগে যে শর্ত দিবো তা মানতে হবে (শিফা)
তোমার আবার কিসের শর্ত (আমি)
অনেক শর্ত আছে সব শুনলে যেতে পারবি নাহলে তোকে যেভাবেই হোক আটকে দিবো (শিফা)
আচ্ছা বলো কি শর্ত (আমি)
.
১মে তোর ফেইসবুক আইডির নাম্বার পাসোয়ার্ড দে (শিফা)
কিহ আমার ফেইসবুক আইডি দিয়ে তুমি কি করবে (আমি)
তোর সবকিছুই আমার তাড়াতাড়ি দে তুই রাগি চোখে (শিফা)
না দিবো নাহ (আমি)
কি বললি তুই বলেই আমার কলার ধরলো (শিফা)
আমার ভয়ে অবস্থা শেষ ওর রাগ দেখে
আচ্ছা নাও আমার ফেইসবুকে তেমন কিছু নেই (আমি)
তারপর আমার ফেইসবুক আইডি দিয়ে দিলাম।
হুম গুড বয় আর তোর বইয়ে আমার ফেইসবুক নাম্বার পাসোয়ার্ড দেওয়া আছে (শিফা)
আমার লাগবে না আমি তোমার আইডি দিয়ে কি করবো (আমি)
আচ্ছা শোনো ওখানে গিয়ে কোনো মেয়ের দিকে তাকাবি না আর যাবি কোন সময় (শিফা)
কালকে বিকালে যাবো (আমি)
হুম ওখান থেকে আয় আমি তারপর তোকে দেখবো আর বিকালের কথা মনে থাকে যেন (শিফা)
বলেই চলে গেলো। আমিও রুম থেকে বের হলাম। দেখি খালামনি এখনও সোফায় বসে আছে সাথে মা। বাবা আর খালু মনে বের হয়েছে। আমি সোফায় গিয়ে খালামনির কোলে মাথা দিয়ে সোফায় শুয়ে পড়লাম।
থাংকু খালামনি (আমি)
পাগল ছেলে জানিস নাহ তোর মন খারাপ আমার ভালো লাগে নাহ (খালামনি)
এই জন্যই তোমাকে এতো ভালোবাসি (আমি)
হুম জানিতো (খালামনি)
.
হুম এই জন্যই বলে তখন খালামনির সাথে এতো কানে কানে কি বলিস (মা)
তোমাকে বললে তো তুমি কোনো ব্যবস্থাই করতে নাহ (আমি)
হুম আমি তো তোকে যেতেই দিতাম না শুধু তোর মন খারাপ হবে বলে কিছু বলিনি (মা)
ঐ লিমন আমাকে রান্না করতে হবে তুই একটু বাবুকে রাখ আমি গিয়ে তোর মেঝ ভাবিকে সাহায্য করি বড় (ভাবি)
আচ্ছা দিন (আমি)
তারপর উঠে মাহফিকে কোলে নিলাম ওর বয়স তখন মাত্র ৮ মাস৷ বাবুটাকে আমার খুবই ভালো লাগে এখনই আমার কোলে বসে শুধু হাসে। ওর হাসিটা আমার খুবই ভালো লাগে।
বিকেলবেলা……
আমি চুপিচুপি আপু দেখার আগেই বন্ধুদের ফোন নিয়ে আড্ডা খানায় চলে গেলাম। সেখানে মনের আনন্দে আড্ডা দিচ্ছিলাম। সবাই একটা করে সিগারেট ধরিয়ে টানতে লাগলাম মনের আনন্দে। কিন্তু হঠাৎ দেখি সবাই একসাথে সিগেরেট অর্ধেকও শেষ না হওয়ার আগেই ফেলে দিলো।
একি তোরা সিগারেট ফেলে দিলি কেনো (আমি)
তখনই কেউ আমার পিছনে হাত দিলো।
আমি তার দিকে ফিরলাম সাথে সাথেই ঠাসসস করে একটা পরলো।
তারপর…
চলবে…

No comments

info.kroyhouse24@gmail.com