Breaking News

ধুলো জমা এই শহরে । পর্ব -০১



ভাই এখানে কি,এক রাতের জন্য মেয়ে পাওয়া যায়?
—হ্যা পাওয়া যায় তবে রেড বেশি?
—কত?
—৫ হাজার।
—শুনেছি আপনার নাকী একটা বোন আছে?
—হ্যা।(অবাক হয়ে)
—তবে আমার আপনার বোন কেই এক রাতের জন্য
চাই?রেড বাড়িয়ে দিবো।
—চুপ-চাপ এখান থেকে চলে যা?শুধু শুধু নিজের
সর্বনাশ ডেকে আনিস নাহ!(রেগে)
—সর্বনাশ তো আমার সেদিনি করেছিলেন যেদিন
আমার হবু স্ত্রী কে বিয়ের দিন এখানে তুলে এনে তার
সুন্দর পবিত্র জীবনটাকে অপবিত্র করে?
আমার এরুপ কথা শুনে লোকটি ভ্রু কুচকে বললেন,
—কে তুমি?
.
আমি মুচকি হেসে বললাম,
আমিই সেই ছেলে যাকে আজ আপনার বোন অন্ধের
মতো ভালোবেসে নিজের ইচ্ছেই সতিত্ব বিলিয়ে দিয়ে
৪ মাসের প্রেগনেন্ট হয়েছে।
—কুত্তার বাচ্চা তাহলে তুই সেই…. ?(কলার ধরে)
কিহ রাগ হচ্ছে?সেদিন আমারো আপনার উপর
প্রচুর রাগ হয়েছিলো।
—তুই আমার বোনের এত বড় সর্বনাশ কেনো করলি?
সেটা আপনি নিজেই খুব ভালো করে জানেন?কথাটা
বলেই আমি চুপ চাপ সেখান থেকে চলে আসলাম।
লোকটি এখনো আমার দিকে তাকিয়ে আছে।এখন
আর কিছু বলার সাহস পাচ্ছে না হয়তো।দেখে মনে
হচ্ছে লোকটি নিজের বোনের কষ্টে কষ্টিত।তারপরেও
নিজের করা অন্যায় গুলো থামাচ্ছেন না লোকটি।
ছয় বার শুনেছি সুইসাইড করতে গিয়ে ছিলো তার
বোন।আসল সত্যি কেউ না জানলেও ছয় বার
সুইসাইড কারার চেষ্টা করার বিষয়টা এ শহরের সবাই
জানে।শহরের সুনাম ধন্য লোক হয়েও রাতের আধাঁরে
অন্যায় কাজ করে বেড়ায় লোকটি।শহরের লোকজন
হয়তো দিনের আলোতে তার ভালো রুপটাই দেখেছে,
কিন্তু সবাই যদি রাতের আঁধারে লোকটির পশু রুপ
খানি দেখতো তাহলে হয়তো সবাই নিজারা নিজেকেই
ঘৃনায় ধিক্কার জানিয়ে বলতো,
.
এতো দিন তারা কাকে
সম্মান ও শ্রদ্ধা করেছিলো।ভালোবাসার মানুষটিকে
আপন করে না পাওয়ার যন্ত্রণাটা হয়তো আমার থেকে
আর কেউ বেশি উপলব্ধি করতে পারবে নাহ।আজো
তার সৃতি আমাকে ঘুমাতে দেয় না।চোখ বুজতে দেয়
না,চোখ বুজলেই সেই তার মায়াবী প্রতিচ্ছবি আমার
চোখের জলের,কারন হয়ে দাঁড়ায়।আমার হৃদয় কে
কম্পিত করে তুলে।এমনো রাত গেছে,যে রাতের
প্রতিটা প্রহর আমার নির্ঘুমে কেটেছে।৩ বছর রিলেশন
করার পর যখন আমাদের কারো পরিবার থেকেই
আমাদের ভালোবাসার সম্পর্কটা মেনে নিচ্ছিলো না।
যখন সব পথি আমাদের জন্য নিষিদ্ধ করা হয়ে ছিলো
তখন বাধ্য হয়ে আমরা একে অন্যের হাত ধরে পালিয়ে
আমার ভালোবাসার মানুষ শান্তার এক ধুর বান্ধুবীর
বাসায় আশ্রয় নিয়ে ছিলাম।
.
সেদিনি রাতেই আমাদের
বিয়ে হওয়ার কথা ছিলো কিন্তু ভাগ্য সেদিন সহায়
হয়নি আমার।কিছু কেনা কাটা করার জন্য শান্তাকে
বাসায় রেখে বের হয়েছিলাম আমি।ভালোবাসার
মানুষটির জন্য সেদিন তার প্রিয় সব জিনিস পত্র
কিনে বাসায় ফির ছিলাম।কিন্তু বাসায় এসে জানতে
পারলাম।শান্তা আশ পাশটা ভালো করে দেখার জন্য
ছাদে গিয়ে ছিলো কিন্তু কিছুটা ধুরের ছাদ থেকে কিছু
ছেলে শান্তাকে ইশারায় বাজে বাজে ইঙ্গিত করাতে
শান্তা ছাদ থেকে রুমে এসে তার বান্ধবী রুহি কে এসব
বলছিলো আর সেই সময় কিছু লোক জোর পূর্বক
ভাবে বাসার ভেতরে প্রবেশ করে শান্তাকে উঠিয়ে
নিয়ে চলে যায়।রুহি ও তার বৃদ্ধ বাবা বাধা দিতে গিয়ে
ও ব্যার্থ হয় তারা।সেদিন শান্তাকে রাস্তার কুকুরের
মতো এদিক ওদিক খুঁজেও পেলাম না তার দেখা।
দুদিন পর শান্তা ফিরে এসেছিলো।তবে তার এরুপ
করুণ অবস্থা আমাকে প্রচুর কাঁদিয়েছে।সেদিন শান্তা
কে একটা জায়গায় নিয়ে গিয়ে দুদিন টর্চার,শারীরিক
মানসিক দুটোই করা হয়ে ছিলো শান্তার সাথে।অতএব
সেখান থেকে বহু কষ্টে শান্তা পালিয়ে আসতে সক্ষম
হয়।শান্তা ফিরে আসার পর থেকেই অনেক বার সুইসাইড
করার কথা ইচ্ছাকৃত বা অনিচ্ছাকৃত আমার
সামনে প্রকাশ করে।
.
শান্তা একবার মুখ দিয়ে যা বলে
তা অক্ষরে অক্ষরে করে থাকে।এই নিয়ে অনেক
সংশয়ের ভেতরে ছিলাম আমি।সেদিন শান্তাকে বুকে
জড়িয়ে অনেক বুঝিয়ে ছিলাম।কিন্তু নিয়তি হয়তো
এটাই চেয়ে ছিলো।যেই হাত দিয়ে যাকে সারা জীবন
আমার বুকে জড়িয়ে রাখার কথা ছিলো সেদিন বুক
শূন্য করে সেই হাত দিয়েই শান্তাকে দাফন দিতে হয়ে
ছিলো আমায়।সেদিন কার পর থেকে আমি রুহিদের
বাসা ত্যাগ করে সেই শহরেই থাকতে শুরু করি।এবং
রুহির সাহায্যে একটা মোটামুটি ভালো বেতনের
চাকরি পাই।অনেক দিন অতিবাহিত হওয়ার পরেও
শান্তার পরিবার বা আমার পরিবারের লোক জন
কেউ একবার ফোন করে খোঁজ খবর নেওয়ারও
প্রয়োজন বোধ করেনি।হয়তো তাদের কাছে আমরা
সেদিনি মৃত হিসেবে গন্য হয়ে ছিলাম যেদিন সবার
অমতে আমরা পালিয়ে এসে ছিলাম।এই মুহূর্তে নিজের
বাসার ছোট্ট একটা বেলকনিতে দাঁড়িয়ে আছি
হাল্কা হাল্কা বাতাস আমার শরীর কে দুলিয়ে তুলার
চেষ্টা করছে।হঠাৎ আমার ফোনটা বেজে উঠলো।
ফোন রিসিভ করতেই ওপাশ থেকে নুসরাত বলল,
—আমি চার মাসের প্রগনেন্ট শাহরিয়ার?
তো আমি কি করবো?
.
—আমার পেটে তোমার সন্তান।কেনো তুমি আমাকে
বিয়ে করার প্রতিস্রুতি রাখছো না?আমার সাথে এখন
কেনোই বা এমন করছো।তোমার ভালোবাসায় অন্ধ
হয়ে তোমার কাছে নিজের সতিত্ব পর্যন্ত বিলিয়ে
দিয়েছি।প্লিজ আমার সাথে এমন করো না।আমাকে
এভাবে সবার সামনে কলঙ্কিত করো না।দোহাই লাগে
আমাকে তুমি হয় বিয়ে করো না হয় গলা টিপে মেরে
ফেলো?তোমার এরুপ অবহেলা সত্যিই আমি আর সয্য
করতে পারছি নাহ।
.
ফোনটা রাখো এখন আমার কথা বলার মুড নেই
—প্লিজ আমার সাথে তুমি এমন করিয়ো নাহ?
অতঃপর ফোন কেটে দিলাম।কথা বলার কোনো মন
মানসিকতা বা ইচ্ছেই আমার নেই।বেলকনি থেকে
রুমে এসে সুয়ে পড়লাম।কাল সকাল সকাল আবার
অফিসে যেতে হবে।পরের দিন সকাল সকাল ঘুম
থেকে উঠে ফ্রেস হয়ে অফিসে চলে আসলাম কিন্তু
অফিস থেকে আমাকে ধুর ধুর করে তাড়িয়ে দেওয়া
হলো জানি না কেনো এমনটা করলো তারা।অফিস
থেকে বাহিরে এসে দেখলাম নুসরাতের ভাই অর্থাৎ
সেই মানুষ রুপি জানোয়ার টা কে দেখতে পেলাম।যে
রাতের আধাঁরে বিভিন্ন অপকান্ডের চক্র কন্ট্রোল
করে।তাকে দেখেও না দেখার অভিনয় করে আমি
সেখান থেকে রুহিদের বাসায় চলে আসলাম দেখি
এই বিষয়ে রুহি আমাকে কোনো সাহায্য বলতে
কিছু করতে পারে কি না?অতঃপর রুহিদের বাসায়
এসে আমি আরো এক বিরাট শকড খেলাম।রুহি ও
তার বৃদ্ধ বাবার লাশ পড়ে আছে ফ্লোরে।রক্তে ফ্লোরটা
মাখা মাখি।হঠাৎ পিছন থেকে কয়েক জন পুলিশ
এসে আমাকে খুনি হিসেবে আক্ষাহিত করে গ্রেফতার
করে থানায় নিয়ে এসে উদুম যন্ত্রণা দায়ক অত্যাচার
করে আমার উপর।তবুও তাতে কোনো ভ্রুক্ষেপ নেই
আমার।কারন আমি জানি এটা নুসরাতের ভাইয়ের
কাজ।তবে তিনি আমার বেশি ক্ষতি বলতে কিছুই
করতে পারবে না কারন তার সবচেয়ে বড় দর্বলতা
তার একমাত্র বোন।এবং তার একমাত্র বোন নুসরাত
এর সবচেয়ে বড় দুর্বলতা হচ্ছি আমি।অতএব নুসরাত
এসেছে সঙ্গে তার ভাই ও।নুসরাতের ভাই আমাকে
বার বার বলছেন,যদি বাচঁতে চাস তাহলে আমার
বোন কে বিয়ে কর আর নাহলে ফাঁসির দড়িতে জুলান্ত
অবস্থায় নিজেকে নিজেই দেখার জন্য প্রস্তুত হ।
.
চলবে…

No comments

info.kroyhouse24@gmail.com