Breaking News

গল্পঃ অত্যাচার । পর্ব-০৫


শাহরিয়ার কিছু বলতে যাবে তার আগেই সে
দেখতে পেলো একটা ছোট মেয়ে শান্তাকে আম্মু
বলে জড়িয়ে ধরলো।কিছু বুঝে ওঠার আগেই
হঠাৎ শাহরিয়ার কে পিছন থেকে কে যেনো
দৌড়ে এসে একটা লাথি মারে…………
যার কারনে শাহরিয়ার মাটিতে থুবরে পরে যায়।
পিছনে ফিরে তাকিয়ে দেখে আনুমানিক
২০-২১বছরের একটা ছেলে রাগি দৃষ্টিতে দাড়িয়ে
আছে?
ছেলেটিঃ তোর সাহস কি করে হলো আমার বোন কে
স্পর্শ করার? কে তুই?
___ শাহরিয়ার কোনো মতে নিজের পায়ে উঠে
দাড়িয়ে বলল……
শাহরিয়ারঃ আমি শাহরিয়ার সরকার? আর এই
সামনে দাড়িয়ে থাকা মেয়েটা অর্থাৎ শান্তা আমার
স্ত্রী?
___ শাহরিয়ার নামটা শুনে তারা দুজনেই চমকে
উঠে? এবং সঙ্গে সঙ্গে ছেলেটি শাহরিয়ারের হাত
খানি ধরে কান্না জড়িত কন্ঠে বলল……..
ছেলেটিঃ আমার বোন শান্তা কোথায় দুলাভাই??
শাহরিয়ারঃ তারমানে শান্তা তোমার বোন??
ছেলেটিঃ হ্যা শান্তা আপু আমার বোন?কিন্তু সে
কোথায়??
শাহরিয়ারঃ তুমি কি আমার সাথে মজা করছো?
শান্তা তো আমাদের সামনেই দাড়িয়ে আছে?
(চিৎকার দিয়ে)
ছেলেটিঃ ও শান্তা আপু না দুলাভাই???
শাহরিয়ারঃ What??
ছেলেটিঃ ও শান্তা আপুর যমজ বোন শান্তি আপু?
___ শাহরিয়ার কথাটা শুনে একদম চুপ হয়ে যায়?
শান্তা কে ফিরে পাওয়ার শেষ আসাটুকু ও সে
হারিয়ে ফেলে তারমানে সে শান্তা নয় তার যমজ
বোন শান্তি?…….
হঠাৎ ছেলেটি আবার বলে উঠলো……..
ছেলেটিঃ কি হলো বলুন আমার বড় বোন কোথায়?
___ কিন্তু শাহরিয়ার এখনো কিছু বলছে না।চুপ
করে দাড়িয়ে আছে মাথাটা ঠিক হাল্কা নিচু করে?
___ শাহরিয়ারের এমন চুপ করে থাকা দেখে এবার
শান্তি চোখের অশ্রু ফেলতে ফেলতে শাহরিয়ার কে
বলল……..
.
শান্তিঃ কি হলো আপনি কিছু বলছেন না কেনো?
আমার বোন কোথায়? জানেন সেই ছোট বেলায়
আমার বড় বোন আর ছোট ভাইটি হারিয়ে যায়।
ভাগ্যের জোড়ে হাসপাতালে আমার এই ভাইটিকে
পেয়ে গেলেও পাইনি আমার বোনের দেখা? বলুন
না কোথায় সে তাকে একবার জড়িয়ে ধরে
কাঁদতে চাই? আর যে কষ্ট সজ্য করতে পারছি না?
___ কিন্তু শাহরিয়ার এখনো কোনো কিছুই বলছে না
চুপটি মেরে দাড়িয়ে আছে?
ছেলেটিঃ জানেন ছোটবেলায় আমরা হারিয়ে
যাওয়ার পর থেকে
আমার বড় বোন শান্তাই খুব কষ্ট করে দু বেলা দু
মুঠো খাবার এনে দিতো।নিজে না খেয়ে থাকতো
কিন্তু আমাকে কোনো সময় না খেয়ে থাকতে দিতো
না।যখন আমার বড় ধরনের একটি রোগ ধরা পড়ে
তখন দিনে রাতে সবসময় কাঁদতো আপু। কারন
আমার অপারেশনের জন্য অনেক টাকার প্রয়োজন
কিন্তু এতো টাকা আপু কোথায় পাবে কি করে
জোগার করবে তাই ভেবে সবসময় অস্থির হয়ে
পড়তো?কিন্তু এক সময় একজন লোক এসে বলল
তার ছোট ভাইয়ের সাথে বিবাহে আবদ্ধ হয়ে তার
সব ধনসম্পত্তি গুলো হাতিয়ে নিয়ে তাদের হাতে
দিতে পারলে আমার অপারেশনের সমস্ত টাকা
নাকী সে দেবে।প্রথমে আপু রাজি না হলেও পরে
আমার কথা ভেবে রাজি হয়ে যায়? কিন্তু শান্তা
আপু যখন আপনার সাথে থাকতে শুরু করে তখন
সে বুঝতে পারে আপনার মতো ভালো মানুষ কে
ঠকানো তার ঠিক হবে না? জানেন আপু যখন
হাসপাতালে আমার সাথে দেখা করতে আসতো
তখন সবসময় শুধু আপনার কথাই আমাকে
বলতো আর কাঁদতো।
.
কিন্তু এক সময় আমি আপুর হাত দুটো ধরে বলেছিলাম
বিশ্বাস ভাঙ্গাটা সবচেয়ে বড় অপরাধ। আর সেই
অপরাধের টাকায় আমার চিকিৎসা করাতে চাইনা।
শুধু আমার দিন ফুরানোর আগে একবার আমার
সাথে দেখা করে যেও শেষবারের মতো?
সেদিন আপু কিছুই বলছিলো না।কি ভাবে কি
করবে সেটাই ভেবে যাচ্ছিলো প্রতিনিয়ত?
কিন্তু যেদিন আমার অবস্থা খুব খারাপ ছিলো
সেদিন দীড় প্রতিক্ষায় অপেক্ষা করছিলাম আপুর
জন্য।কিন্তু সেদিন আর আপু আসে নি?যন্ত্রনায়
আমি বারবার আপুকে ডাকছিলাম কিন্তু আসে নি
আমার সোনার টুকরো বড় বোনটি?
যন্ত্রনায় যখন হাসপাতালের বেডে বারবার চিৎকার
করে উঠছিলাম।তখন বুঝতে পারলাম যে আমার
সামনে কেউ দাড়িয়ে আছে আর আমার গলার
লকেট টা খুব মনোযোগ সহ কারে দেখছে।
আমি সামনে তাকিয়ে দেখি শান্তা আপু কিন্তু
আসলে সে শান্তা আপু ছিলো না।সে ছিলো শান্তি
আপু।শান্তা আপু ভেবে যখন তাকে কিছু বলতে
যাবো তার আগেই সে চিৎকার করে কোথায় যেনো
চলে গেলো এবং কিছুক্ষন পর দেখলাম তার সাথে
একজন বৃদ্ধ লোক ও একজন বৃদ্ধা মহিলা আসলো
আর তারাও আমার দিকে কিছুক্ষন তাকিয়ে তারপর
হাউমাউ করে কান্না করতে থাকে আর তারাই
ছিলো আমার মা-বাবা।তারপর তারা ডাক্তারের
কাছ থেকে জানতে পারলো আমার রোগের কথা।
এবং তারা আর দেড়ি করলো না দ্রুত আমার
চিকিৎশার ব্যাবস্থা করে ফেলে।এবং আমি সম্পুর্ন
সুস্থ হলে হাসপাতাল থেকে আমাকে এক বিশাল
বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়।আর সেটাই ছিলো
আমাদের বাড়ি।তারপর একসময় শান্তা আপুর কথা
জিজ্ঞেস করলে আমি সেদিন কিছুই বলতে পারিনি।
নিরবে শুধু চোখের জল ফেলেছি সেদিন…….
প্লিজ বলুন আমার বোন কোথায়? কি ভাবে আছে?
কেমন আছে? কি অবস্থা তে আছে?দয়া করে বলুন?
আপনার দুটো পায়ে পড়ি বলুন আমার বোন
কোথায়?
.
____ কান্নায় চোখের জল ফেলতে ফেলতে
কথাগুলো বলল ছেলেটি।কিন্তু শাহরিয়ার এবার
আর চুপ করে থাকতে পারেনি।কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে
বলল……..
শাহরিয়ারঃ তোমার বোন আর এ পৃথিবীতে নেই।
চলে গেছে বহু ধুরে? এতোটা ধুরে চলে গেছে যে
চাইলেও তাকে আর কোনো দিন ফিরিয়ে আনা
যাবেনা?
শান্তিঃ কি কি বলছেন এগুলো?এ এই শান্ত ওনি
কি বলছেন(কান্না ভেজা কন্ঠে)
শাহরিয়ারঃ যা বলছি তাই সত্যি? (কাঁদতে কাঁদতে)
শান্তঃ বলেন আপনি মিথ্যে বলছেন? শান্তা আপুর
কিছুই হয়নি বলুন আপনার বলা কথা গুলো সব
মিথ্যে?
শাহরিয়ারঃ শান্তা আর বেঁচে নেই?? আজ থেকে
দু বছর আগে পৃথিবীর মোহ ত্যাগ করেছে সে।মরে
গেছে শান্তা(চোখের জল কোনোমতে আটকিয়ে)
___ কথাটা শুনেই শান্ত শাহরিয়ারের কলার চেপে
ধরে উচ্চসরে বলল…….
শান্তঃ না না না আমার আপু মরতে পারে না?
কিছুতেই না? ত তুই তুই….নিশ্চয়ই তুই আমার
আপুকে খুন করেছিস কুত্তার বাচ্চা?? আমি তোকে
ছাড়বো না?
___ কথাটা বলার সাথে সাথে শান্ত একটা বড়
পাথর উঠিয়ে শাহরিয়ারের মাথায় আঘাত………?
.
চলবে…

No comments

info.kroyhouse24@gmail.com