গল্পঃ অত্যাচার । পর্ব-০৩
শান্তার মৃত শীতল লাশটি জড়িয়ে অনাবরত
চিৎকার দিয়ে কেঁদে কেঁদে ভাসিয়ে দিচ্ছে শাহরিয়ার।
হঠাৎ শাহরিয়ার বুঝতে পারে কেউ একজন তার
রুমের দিকে আসছে।আর সে যখন তার রুমে
আসে তাকে দেখে শাহরিয়ারের ভয়ে তার
শরীর সিউরে উঠে…………….
___ শাহরিয়ার সামনে তাকিয়ে দেখে তার বড়
ভাই হাতে একটা ধারালো অস্ত্র নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে।
অস্ত্রে বেশ খানিক রক্ত ও দেখতে পেলো সে?
___ শাহরিয়ারের বড় ভাই ধারালো অস্ত্রটা নিয়ে
হাসতে হাসতে শাহরিয়ারের কাছে এগোতে লাগলো।
শাহরিয়ারের ভয়ে তার কলিজা নিমিষেই শুকিয়ে
গেলো। ভয়ে বারবার কেপে উঠছে সে?
শান্তার মৃত লাশটি নিজের সাথে আকরে ধরে
কাঁদতে কাঁদতে বলল…..
.
শাহরিয়ারঃ শান্তা ও শান্তা উঠো না….তুমি না
উঠলে যে….. ভাইয়া আমাকে মারবে হ্যা খুব
মারবে শান্তা দেখো ভাইয়া আসছে আমাকে মারার
জন্য? বাঁচাও আমাকে,শান্তা গো…(চিৎকার দিয়ে)
___শাহরিয়ারের বড় ভাই শাহরিয়ারের কাছে
এসেই তাকে সজোরে একটা লাথি মারে…………
লাথি খেয়ে শাহরিয়ার শান্তার মৃত লাশটির থেকে
কিছুটা ধুরে সরে যায়। কিন্তু সে আবার শান্তার
মৃত দেহটিকে নিজের সাথে আকরে ধরে বলল….
শাহরিয়ারঃ বাঁচা ও আমাকে শান্তা? শান্তা শান্তা…..
____ শাহরিয়ারের এমন কান্ড দেখে পিছন থেকে
জোড়ে হাসকে হাসতে শাহরিয়ারের মেজো ভাই
ও দুই ভাবী শাহরিয়ারের সামনে আসলো?
বড় ভাবীঃ আহারে বেচারা এখন কতটা না অসহায়?
ছোট ভাবীঃ আর কেঁদো না দেবর সাহেব।
এখনি সব চোখের জল খরচ করে ফেললে হবে
নাকি? এখনো তো অনেক কিছুই বাকি?
শাহরিয়ারঃ তোমরা এতো নিষ্ঠুর কেনো? মানুষ
নাকি জানোয়ার তোমরা? আমার থেকে কেনো
আমার শান্তাকে কেরে নিলে?(কাঁদতে কাঁদতে)
বড় ভাইঃ শুন তোর ওই শান্তাকে আমি মেরেছি
বলতে গেলে আমরা সবাই মিলে মনের এক
অজানা অনন্দে হত্যা করেছি? তার কারন শান্তা
কে আমরা তোর সাথে বিয়ে দিয়েছি শুধু মাত্র এর
জন্য যে তোকে মিথ্যে ভালোবাসা দিয়ে সম্পত্তি
গুলো হাতিয়ে নিয়ে আমাদের হাতে এনে দিতে
পারে কিন্তু তা না করে শালীর শুধু দিন দিন তোর
প্রতি ভালোবাসা বাড়ছিলো? তোকে সত্যি সত্যি
নাকি ভালোবেসে ফেলেছে আর সে কখনো তোর
সাথে নাকি বেইমানি করতে পারবে না।তাই বলে
আমরা ওকে আবার জানে মারতে চাইছিলাম না?
কিন্তু বাধ্য হয়েই আমাদের ওকে হত্যা করতেই
হয়েছে? তার অন্যতম কারন শান্তা আমাদের
একটা গোপন কথা জেনে ফেলেছিলো আর সেই
সাথে আরো বিভিন্ন তথ্য পুলিশ কে দিতে চেয়েছিলো
এখন তুই বল কিভাবে ওকে যে আর বাঁচিয়ে রাখি?
.
___ শাহরিয়ার দাঁতে খিটমিট করে বলল………
শাহরিয়ারঃ আমি তোদের কাউকে ছাড়বো না?
___ কথাটা বলার সাথে সাথে শাহরিয়ার তার
হাতের কাছে যা পায় তাই দিয়ে তার ভাইদের
দিকে এগিয়ে যায় কিন্তু তার ভাইরা এটা দেখে
হাসছে, যে ঠিকমতো ভয়ে কথাই বলতে পারে না?
সে আবার তাদের মারার জন্য তেরে আসছে
বড়ই হাস্যকর একটা ব্যাপার তাদের কাছে মনে
হচ্ছে। শাহরিয়ার যখন তার ভাইদের আঘাত
করতে যাবে ঠিক সেই সময় পুলিশ এসে শাহরিয়ার
কে ঝাপটি মেরে ধরে? তারপরেও শাহরিয়ার
ছুটার জন্য অস্থির হয়ে পড়ছে কিন্তু পারছে না সে?
____ শাহরিয়ারের মেজো ভাই চিৎকার করে
পুলিশ কে বলল…………
মেজো ভাইঃ অফিসার? আমার এই মানুষ রূপি
জানোয়ার ভাইটা তার নিজের স্ত্রী কে হত্যা করেছে?
আর এখন আমাদের ও হত্যা করারা জন্য এগিয়ে
আসতে ছিলো?
___ মেজো ভাইয়ের কথা শুনে শাহরিয়ার অভাক
না হয়ে পারলো না? থ মেরে শুধু চেয়ে আছে
তাদের প্রত্যেকের দিকে?অতএব শাহরিয়ার কে
পুলিশ থানায় নিয়ে যায়? অবশ্য শাহরিয়ার
কিছুতেই আসতে চেয়েছিলো না।কিন্তুু পুলিশ তো
পুলিশি হয়/তারা তাদের কাজ যথারিতি করতে
বাধ্য?কিছুদিন পর শাহরিয়ার কে কোর্টে তুলা
হলে সেখানে প্রমান হয় শাহরিয়ারের মেন্টালি
কোনো সমেস্যা আছে অর্থাৎ তার মাথায় কোনো
প্রবলেম আছে?আর এসব মানুষ কে আমরা
পাগলি বলে থাকি?অতএব কোর্টে পরিষ্কার ভাবে
প্রমান হয়ে যায় শাহরিয়ার মেন্টাল যার অর্থ বাংলা
ভাষায় পাগল? ফাসির রায় থেকে বেঁচে গেলেও
শাস্তির হাত থেকে রেহাই পাইনি সে? কমপক্ষে
দু বছরের কারাদন্ড দেয় শাহরিয়ার কে?এবং
তার দ্রুত চিকিৎসা করার রায় দিয়ে বিচার
শেষ করলেন বিচারপতি??
___ জেলে থাকা অবস্থায় ও শাহরিয়ার কে বিভিন্ন
ভাবে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছিলো কিন্তু তার মধ্যে
কিছু আসামী রা শাহরিয়ার কে বিরক্ত করা শুরু
করে দেয়।আর এক সময় না না ভাবে অত্যাচার
করতে থাকে শাহরিয়ার কে? পারায় পারায়
যেমন নেতাগিরি চলে ঠিক তেমনি জেলের
ভিতরেও নেতাগিরি চলে?
___ জেলের এক কোনায় বসে বসে শান্তা কে
বারবার মনে করছিলো শাহরিয়ার। শান্তাকে
খুব ভালোবাসে ফেলেছিলো শাহরিয়ার। শান্তাই
এক মাত্র মেয়ে যে কিনা শাহরিয়ারকে বুঝতো
ভালোবসতো।শান্তার সৃতি শাহরিয়ার কোনো
মতেই ভুলতে পারছে না।কিছু কিছু বিষয় বা
জিনিস আছে যেটা ভুলে যাওয়ার চেষ্টা করলে
আরো বেশি মনে পড়ে?শাহরিয়ার কখনো ভেবে
উঠতে পারে নি শেষ পর্যন্ত যাকে ভালোবেসে ছিলো
তার খুনের মিথ্যা অপবাদেই আজ জেল খাটতে
হচ্ছে তাকে?
___ হঠাৎ করেই কয়েক জন লোক এসে শাহরিয়ার
কে মারতে থাকে কিন্তু শাহরিয়ার এখনো কিছু
করতে পারছে না।ভয়ে বারবার তাদের পা জড়িয়ে
মিনতি করছে ছেড়ে দিতে?
.
হঠাৎ তাদের মধ্যে একজন লোক বলে উঠলো
লোকটিঃ আব্বে পাগলা শালা তুই নাকি তোর
স্ত্রী কেই হত্যা করেছিস।তা তোর স্ত্রী কে না হত্যা
করে আমাদের দিয়ে দিলেও পারতি আমরা ও
একটু টেষ্ট করে দেখতাম তোর স্ত্রীর স্বাদ কেমন
ছিল?
___ লোকটির কথা শুনে শাহরিয়ার তার মাথাটা
নিচু করে ফেলল? এবং চোখ দুটি বন্ধ করে ভাবতে
থাকে……..যদি সে আজ ও কিছু না করতে পারে
তাহলে আর কোনো দিনও পারবে না।তারপর
হঠাৎ করেই শাহরিয়ার তার মাথা উচু করে
চোখ মেলে তাকিয়ে মুচকি একটা হাসি দিলো?
শাহরিয়ারের মুচকি হাসি দেখে লোকগুলো কিছু
বলার আগেই শাহরিয়ার তিন চারটাকে মেরে
সাথে সাথে সুইয়ে দেয়? আর যে লোকটি বাজে
কথা বলেছিলো তার গলা টিপে ধরে শাহরিয়ার
বলল………..
শাহরিয়ারঃ কুত্তার বাচ্চা এখন বল? এখন বল?
বলছ না কেনো?(চিৎকার দিয়ে)
___ শাহরিয়ারের চিৎকারে যেনো পুরো জেলখানাটা
কেঁপে উঠছে বারবার।চারদিক থেকে পুলিশ
ছুটে এসে ছাড়ানোর চেষ্টা করছে কিন্তু পারছে না।
অবশেষে অনেক কষ্টের পর ছাড়াতে সফল হয়
পুলিশ। শাহরিয়ারের অবস্থা সু্বিধার মনে
হচ্ছিলো না বলে? তাকে চিকিৎসার জন্য দ্রুত
পাঠানো হলো?
___ দু বছর পর জেল থেকে বের হলো শাহরিয়ার
চোখ মেলে তাকিয়ে দেখলো বাহিরের জগতটাকে?
এখন সে সম্পূর্ন সুস্থ। কিন্তু তার মনে এখনো
রয়েছে অনেক বেদনা?যে বেদনা ভুলা বড় কঠিন তার কাছে?
.
___ রাত প্রায় ১১.৪৫ শাহরিয়ারের বড় ভাই এখনো
ঘুমাইনি অথচ তার স্ত্রী সেই কবেই ঘুমিয়ে পড়ছে?
শাহরিয়ারের বড় ভাই আজ অনেক খুশি তার কারন
বুহু দিন আগে না না রকমের কায়দা করে
শাহরিয়ারের কাছ থেকে সব সম্পত্তি লিখে নিয়েছে?
আর আজ সকালে দু বছর পর যখন শাহরিয়ার
জেল থেকে বের হবে ওমনি তার লোকজন
শাহরিয়ার কে জানে মেরে ফেলবে?
বড় ভাইঃ এতক্ষুনে মনে হয় শাহরিয়ার মরে কাঠ
হয়ে গেছে? আহ ভাবলেই খুশিতে মনটা লাফিয়ে
উঠছে? এখন শুধু ভাবছি কাল সকালে ওর লাশ
দেখে কিভাবে কান্নার অভিনয় করবো? আর
এমনিতেই তো আমি অভিনয়টা খুব ভালো যানি?
___ হঠাৎ শাহরিয়ারের বড় ভাই বুঝতে পারলো
কেউ তার সমনে দাড়িয়ে নরম কন্ঠে বলছে……..
ভাইয়া…ভাইয়া….ভাইয়া…ভাইয়া….
শাহরিয়ারের ভাই ভয়ে যখন বাতি ওন করে…
তখন যাকে দেখে তাতে সঙ্গে সঙ্গে চমকে যায় সে
বড় ভাইঃ শা শাহরিয়ার তুই…….
শাহরিয়ারঃ হ্যা ভাইয়া আমি এসেছি সঙ্গে এই যে
দেখো রক্ত মাখা ছুড়িটা ও নিয়ে এসেছি তোমার
জন্য উপহার সরূপ……………..
.
চলবে…
No comments
info.kroyhouse24@gmail.com