দুষ্টু গার্লফ্রেন্ড | পর্ব -১৯
আহির বসে কাজ করছিলো।তখন টিংকু ভাই ওর পাশেই ছিলো।আহির টিংকু ভাইকে দেখে বললো!
আহিরঃ মিস্টার.হাফ টিকিট!
টিংকু ভাইঃ তোমার কি শত্রুতা ভাই আমার সাথে বলো তো?
আহিরঃ আমি কখন শুত্রুতামি করলাম তোমার সাথে?
টিংকু ভাইঃ তাহলে আমার পিছে লেগে থাকো কেনো তুমি?
আহিরঃ হাফ টিকিট! তুমি সব বুঝলে হয়েই যেতো।
টিংকু ভাইঃ [দেখাচ্ছি মজা তোমাকে বাঁছা।অনেক থাপ্পড় মেরেছো আমাকে।এবার আমার খেলা দেখবে তুমি।]
আহিরঃ আবে ওয়ে হাফ টিকিট! কোথায় হারিয়ে গেছো?
টিংকু ভাইঃ কিছু না।
আহিরঃ এসেছো যখন এই ফাইল গুলো “রাক্ষসী ম্যাডাম” এর কেবিনে নিয়ে যাও।
টিংকু ভাইঃ আমি কি তোমার চাকর নাকি? [রেগে]
আহিরঃ আমি উঠবো হাফ টিকিট? [হাত মোচড়াতে-মোচড়াতে]
টিংকু ভাই তাকিয়ে দেখলো! আহির শার্টের হাতা ফোল্ড করছে।হাতের কব্জি মোচড়াচ্ছে।টিংকু ভাই নিজের গালে একহাত রেখে! আহিরের টেবিল থেকে ফাইল গুলো নিয়ে চলে গেলো আয়রার কেবিনে।আহির হেসে দিলো টিংকু ভাইকে ভয় পেতে দেখে।
.
টিংকু ভাইঃ আমাকে থাপ্পড় মারবি? দেখ আজ কি বাঁশ দেই তোকে আমি। [আহির’কে উদ্দেশ্য করে]
টিংকু ভাই প্রতিটা ফাইল থেকে ২-১ টা করে কাগজ সরিয়ে দিলো।তাও বেছে-বেছে ইম্পর্ট্যান্ট কাগজ গুলো সব।তারপর আয়রার কেবিন ঢুকে! আয়রার টেবিলে ফাইল গুলো রাখলো।আয়রা ফাইল দেখে বললো!
আয়রাঃ কিসের ফাইল এগুলো?
টিংকু ভাইঃ মিস্টার.আহিরের ফাইল।
আয়রাঃ [নিজে আসতে কষ্ট হয়? যখন প্রকৃতির সাথে গাড়িতে যায় তখন যেতে ইচ্ছে করে।আর আমার কেবিনে আসতে প্রবলেম তোমার?]
টিংকু ভাইঃ কি ভাবছো?
আয়রাঃ কিছু না।
আয়রা সবগুলো ফাইল দেখলো।কিন্তু ফাইলের একটা কাগজও মিলছে না।আহিরের দেওয়া একটা ফাইলও ফুল কমপ্লিট নয়।আয়রা কেবিনের বাহিরে গ্লাস দিয়ে তাকিয়ে দেখলো! আহির হেসে-হেসে কথা বলছে প্রকৃতির সাথে।আয়রা আরো রেগে গেলো আহিরের উপর।
টিংকু ভাইঃ আর তোমার শেষ রক্ষা হলো না শুকনো মরিচ।আহির বাবা! এবার বুঝবে আমাকে থাপ্পড় মারার ঝাল। [দুষ্টুমি হাসি দিয়ে]
আয়রাঃ টিংকু ভাই! [চিল্লিয়ে]
টিংকু ভাইঃ হ্যাঁ বলো?
.
আয়রাঃ এখনি বাহিরে খবর পাঠাও।মিস্টার.আহির’কে আমার কেবিনে ডেকে পাঠাও রাইট নাউ।
টিংকু ভাইঃ ঠিক আছে ওয়েট করো।
আয়রাঃ আই কান্ট ওয়েট! [কলম দিয়ে ফাইলের উপরে জোরে খোঁচা মেরে।]
টিংকু ভাই ফোন করলো বাহিরে।বাহিরের দাড়োয়ান এসে আহির’কে বললো আয়রা ম্যাডামের কেবিনে যেতে।আহির অপেক্ষা না করে আয়রার কেবিনের সামনে এসে বললো!
আহিরঃ আসবো ম্যাম!
আয়রাঃ ইয়েস কাম। [রাগ দমিয়ে]
আহিরঃ আমাকে ডেকেছেন?
আয়রাঃ এই ফাইল গুলো চেক করো।
আহিরের পাঠানো ফাইল গুলোই আহিরের দিকে হাল্কা ভাবে ছুঁড়ে মারলো।আহির ফাইল গুলো হাতে নিয়ে বললো!
আহিরঃ এনি প্রবলেম ম্যাম?
আয়রাঃ ফাইল গুলো চেক করো আগে।তাহলেই বুঝতে পারবে।
আহির আর কথা বড়ালো না।আগে সবগুলো ফাইল খুলে চেক করলো।হঠাৎ টিংকু ভাইয়ের দিকে চোখ গেলো আহিরের।দেখলো টিংকু ভাই দুষ্টুমি হাসি দিচ্ছে।আহিরের বুঝতে বাকি রইলো না! টিংকু ভাই প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য ইচ্ছে করে সবগুলো ফাইল থেকে ইম্পর্ট্যান্ট কাগজ সরিয়ে দিয়েছে।
আয়রাঃ মেয়েদের সাথে হেসে-হেসে কথা বলতে খুব ভালো লাগে? কাজে মনোযোগ দিতে ইচ্ছে করে না?
আহিরঃ ভদ্র ভাবে কথা বলুন ম্যাম।
.
আয়রাঃ আমার মনে হচ্ছে না! আমি খারাপ কিছু বলেছি আপনাকে
আহিরঃ আমি সবগুলো ফাইল খুব ভালোভাবে কমপ্লিট করে! চেক করেই পাঠিয়েছি আপনার কাছে।
আয়রা এবার রেগে গিয়ে নিজের চেয়ার থেকে উঠে দাঁড়িয়ে! টেবিলের দু পাশে জোরে বারি দিলো।নিজের দু হাত দিয়ে।টিংকু ভাই নিজেও ভয় পেয়ে গেলো আয়রার রাগ দেখে।আহির নিজের চোখ জোড়া বন্ধ করে ফেললো! নিজের রাগ কন্ট্রোল করার জন্য।
আয়রাঃ আই ডোন্ট ওয়ান্ট এনি এ্যাক্সপ্লিনেইশন।
আহিরঃ স্যরি ম্যাম! [খুব রেগে]
আয়রাঃ আজ সারারাত আপনি অফিসে বসে এই সবগুলো ফাইল ঠিক করবেন।এবং সাথে আরো নতুন ৩টা ফাইল কমপ্লিট করতে হবে।আর এটাই হবে আপনার শাস্তি।
আহিরঃ হুয়াট? আর ইউ আউট অফ ইয়্যর মাইন্ড? [বিরক্ত হয়ে]
আয়রাঃ ডোন্ট ফরগেট আ’ম ইয়্যর বস।সো ডু হুয়াট আই সে এ্যান্ড নাউ লিভ ফ্রম হেয়ার।
আহির আর একটা কথাও বললো না।রেগে আয়রার কেবিন থেকে বের হয়ে গেলো ফাইল গুলো নিয়ে।টিংকু ভাই খুশিতে ব্রেক ডান্স দিচ্ছে।আহির শুধু সুযোগ খুঁজছে।টিংকু ভাইয়ের গাল বান্দরের মতো লাল করার জন্য।আহিরের একদম সহ্য হয় না আয়রা’কে।
.
“রাতে”
টিংকু ভাই আর আয়রা আজ এখনো বাসায় আসে’নি।আকাশের সব ফ্রেন্ডস’রা সবাই চলে গেছে।সুমুও বাসায় চলে গেছে।এখন শুধু আকাশ আর ঈশা বাসায় রয়েছে।
আকাশ ভালো করেই খেয়াল করেছে।আকাশ কোনো অপমান জনক কথা বললে ঈশা তার পাল্টা জবাব দেয় আকাশ’কে।আকাশের সাথে পারলে ঝগড়া শুরু করে দেয়।কিন্তু আজ সকাল থেকে! সকাল থেকে বললে ভুল হবে সকালে বাসায় আসার পর থেকে আকাশ কম অপমান করে’নি সবার সাথে মিলে ঈশা’কে।কিন্তু ঈশা আজ পাল্টা একটা জবাবও দেয়’নি।শুধু আকাশ না! কাউকেই ঈশা মুখের উপর জবাব দেয়’নি।সবাই অপমান করেছে আর ঈশা সহ্য করে শুনেছে সবার অপমান।
সবাই চলে গেছে বিকেলে।বিকেল থেকেও ঈশা আকাশের সাথে কোনো কথায় ঝগড়া করে’নি।এক কথায় ঈশা আজ আসার পর থেকে আকাশের সাথে কোনো কথাই বলে’নি।শুধু ইগনোর করেছে আকাশ’কে প্রতিবার।রাত হয়েছে ঈশা সোফায় বসে আছে।আকাশ উপর থেকে সিঁড়ি বেয়ে নিচে নামতে-নামতে বললো!
আকাশঃ বাসায় যাওয়ার ইচ্ছে নেই নাকি? এত বড় বাড়ি থেকে যাওয়ার ইচ্ছে নেই?
ঈশাঃ নিশ্চুপ…!
.
আকাশঃ আজ সূর্য কোন দিক থেকে উঠেছে? তুমি চুপ করে সবার অপমান সহ্য করছো?
ঈশাঃ নিশ্চুপ…!
আকাশ এবার সোফায় বসে নিজের ফোন বের করে দেখলো রাত ৯:০০ টা বাজে।আকাশ নিজের ফোনে কিছু দেখতে-দেখতে বললো!
আকাশঃ আজ এতগুলো মানুষ তোমায় এত কথা শোনালো।কোথায় ছিলো তোমার সো কল্ড ভাষণ?
ঈশাঃ নিশ্চুপ…!
আকাশঃ আমি যখন একটু কঁটু কথা বলি ‘বা’ একটু অপমান জনক ভাবে যদি কিছু বলে ফেলি! বাব্বাহ্ আমার আর রক্ষে নেই।আমাকে কথা শোনাতে,আমার সাথে ঝগড়া করতে কিছু বাকি রাখো না।তাহলে আজ যখন সবাই মিলে তোমাকে এত্ত অপমান করলো! তখন মুখে বরফ ঢুকিয়ে বসে ছিলে?
ঈশাঃ নিশ্চুপ…!
আকাশঃ আজব মেয়ে তো তুমি।আমি বকবক করছি।আর তুমি চুপ করে শুনছো? বোবা হয়ে গেছো?
আকাশ এবার রেগে ফোন রেখে সোফা থেকে উঠে! ঈশার সামনে গিয়ে দাঁড়ালো।ঈশা মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে আছে এখনো।
.
চলবে…..
No comments
info.kroyhouse24@gmail.com