Breaking News

নেশাগ্রস্ত ভালোবাসা । পর্ব -০৪

আমি ওনার সাথে এমন আচরণ কেন করছি? যেটা আমি নাহ…!
” ইমান কি ভেবে ঘর থেকে বেড়িয়ে এলো,মনেমনে ভাবলো,
– “একবার একটু দেখতে হচ্ছে…!
কি করছে মেয়ে টা?” ইমান এসে মিমের ঘরের দরজায় দাঁড়ালো,
কিছুক্ষণ ডাকাডাকি করে দরজা ঠেলে ভেতরে ঢুকে দেখতে পেলো বেঘোরে পরেপরে ঘুমচ্ছে মেয়ে টা।।
ও এগিয়ে এসে মিমের গায়ে কাঁথা জড়িয়ে দিলো,মিম ঘুমঘুম চোখে তাকিয়ে ইমান কে উদ্দেশ্য করে বললো,
– “বাজে লোক একটা…!” ইমান সাইডে পরে থাকা বালিশ টা তুলে মিমের মাথার নিচে দিয়ে দিলো,তারপর একটু ঝুঁকে মিমের কানে কানে বললো,
– “আপনি কি জানেন? আপনি এলিয়েন একটা?” মিম চুপ করে রইলো,বুঝতে পারলো,
– “কল্পনা নয়,সত্যি সত্যি তার পাশে’ই বসে আছে লোক টা।।”
হঠাৎ ইমা মিমের ঘরে এতো রাতে লাইট জ্বলতে দেখে দরজা ঠেলে ভেতরে ঢুকে ইমান কে দেখে কৌতুহল বশত জিজ্ঞেস করে,
– “তোর এতো রাতে ওর কাছে কি চাই ভাইয়া?” ইমান থতমত খেয়ে বললো,
– “আসলে আমি দেখতে এসেছিলাম কি করছে মেয়ে টা?” ইমা হাসতে হাসতে বললো,
– “ঠাকুর ঘরে কে রে? আমি তো কলা খাইনি? এরকম হয়ে গেলো না পুরো ব্যাপার টা?” ইমান ইমার মাথায় হাত রেখে বললো,
.
– “দেখ বোন তুই আমাকে প্লিজ ভুল বুঝিস না।” ইশি দু’জনের কথা শুনতে পেয়ে রুমের ভেতরে ঢুকে বললো,
– “আসলে ভাইয়া…! তুই যে কি চাস? তুই নিজেও জানিস না।।” ইমান দু’হাত ওপর তুলে বললো,
– “আমি চলে যাচ্ছি বোন,প্লিজ দয়া করে তোরা সিনক্রিয়েট করিসনা।।” ইমা ভ্রু কুঁচকে জিজ্ঞেস করলো,
– “ওয়েট ওয়েট…! তুই ওর ঘরে এতো রাতে কি করছিস? সেটা তো জানতে পারলাম না?” ইমান এতো প্রশ্নের হাত থেকে বাঁচতে বোনদের উত্তর দিলো,
– “ভুল করে ঢুকে পরেছি আর হবে না।” ইমান যেতেই মিম বিছানা ছেড়ে উঠে ইমা ইশি কে উদ্দেশ্য করে বললো,
– “পৃথিবীর অষ্টম আশ্চর্য লোক একটা।।” ওরা দু’জনেই মিমের কথায় সায় দিয়ে উচ্চ শব্দে হাসতে হাসতে বললো,
– “সে যা বলেছিস হা হা…।” ইমান নিজের ঘরে এসে বিছানায় ক্লান্ত শরীর টা এলিয়ে দিয়ে মুচকি হেসে বললো,
– “ওই দু’টো কি আমার মায়ের পেটের বোন? সন্দেহ হচ্ছে,ডিটেকটিভ দুই’টা…।।” সকালে ঘুম থেকে উঠে নিচে এসে ইমান মিম কে দেখতে না পেয়ে আনমনে বলে উঠলো,
– “শেষমেশ আমার আচরণে কষ্ট পেয়ে’ই কি বাড়ি ছাড়লো মেয়ে টা?” তখন রেনু হঠাৎ এসে ছেলে কে জিজ্ঞেস করলেন,
.
– “বাড়ি কেন ছাড়তে যাবে? আজ ওর ক্লাস আছে না?” রিজওয়ান সাহেব পেপার রেখে কফির মগে চুমুক দিয়ে বললেন,
– “ইউসা মিশি কে কলেজে ছাড়তে গেছে তোমাকে ওকে নিয়ে এতো ভাবতে হবে না।।” মিনিট দশেক বাদে আহির ইমান কে ফোন করে জিজ্ঞেস করলো,
– “স্যার…! আপনি কি আজ অফিসে আসবেন না?” ইমান বললো,
– “আসছি,তুমি রেডি করে রাখো আমাদের নতুন প্রজেক্টের ফাইল টা।।” আশকারা সাথে সাথে এসে ইমান কে জড়িয়ে ধরে বললো,
– “বেবি তুমি আমাকে আজ ফ্যান্টাসি কিংডমে নিয়ে যাবে না?” ইমান মুচকি হেসে বললো,
– “আজ ব্যস্ত আছি,আজ হবে না।।” বিকেলে মিম বাসায় ফেরার পথে দেখলো রাস্তার ধারে দাঁড়িয়ে ইচ্ছে মতো সিগারেট খাচ্ছে ছেলে টা…।” মিম মনেমনে বললো,
– “থাক, নির্লজ্জ লোক টা কে আর কোনো কথা শোনাবো নাহ…!” রিকশা ওয়ালা ছেলেটা হঠাৎ রিকশা থামিয়ে মিম কে বললো,
.
– “আপা রিকশা ভেতরে যাবে না।।” মিম রিকশা থেকে নেমে ভাড়া মিটিয়ে বললো,
– “দুঃখিত ভাইয়া…! রাস্তায় যে কাজ চলছে সেটা আমার মনে ছিলো না।।” মিম কে একা একা হেঁটে আসতে দেখে ইমানের বন্ধু সৌরভ ওকে খোঁচা মে’রে বললো,
– “দেখ ভাই এবার হবে মজা…!” ইমন হাসতে হাসতে বললো,
– “হুমম,মিম কুকুর দেখে ভয় পাবে আর এই সুযোগে হিরো হবে আমাদের ছেলেটা (ইমান)।” ইমান মিম কে দেখে এগিয়ে এলো কিন্তু কোনো লাভ হলো নাহ…! মিম সোজা কুকুর গুলোর মধ্য থেকে হেঁটে চলে এলো,ইমান তা দেখে একটু বিস্মিত হয়ে বন্ধুদের কে জিজ্ঞেস করলো,
– “এটা কি মেয়ে? না কি কোনো এলিয়েন? কেউ আমাকে বোঝা?
মেয়েলি কোনো ভাব নেই আমি নিশ্চিত তেলাপোকা ও ভয় পায় না।” পেছন থেকে প্রান্ত এসে বললো,
– “চালিয়ে যা ব্রো হার মানলে তো হবে না।” ইমান হাতের সিগারেট টা ফেলে দিয়ে বললো,
– “এমন ভাবে বলছিস যেন মেয়েটি আমার প্রেমিকা?” ইউসা এসে মিমের হাত থেকে শপিং শপিং ব্যাগ গুলো নিয়ে বললো,
.
– “আমাকে বলতে পারতি গিয়ে নিয়ে আসতাম,কোনো সমস্যা হতো না।” মিম মৃদু হেসে বললো,
– “আরে হয়েছে,আমাকে এতো তেল মারতে হবে না।” ইমান ইমানের কাছে জিজ্ঞেস করলো,
– “ওদের দু’জনের মধ্যে শুধু বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক তাই না?” ইমান নতুন আরেক টি সিগারেট টানতে টানতে বললো,
– “জানি নাহ…!” রাত তখন দশ টা ইউসা মিম কে এসে বললো,
– “আমাকে একটু তোর ওই স্পেশাল আদা চা টা করেদে না।” মিম নিজের জরুরী সব কাগজপত্র গোছাতে গোছাতে বললো,
– “আচ্ছা…! তুই ছাঁদে যা..!” মিম ছাঁদে চা বানিয়ে নিয়ে আসার পর সিগারেটের তীব্র গন্ধে গুলিয়ে উঠলো ওর শরীর টা…।
.
তবুও ইউসা কে খুঁজতে খুঁজতে মিম ছাঁদ বাগানে এসে শুনতে পেলো ইমান কাওকে খুব গর্ব করে বলছে,
– “ইউ নো হয়াট…! আমি আবার ট্রেজারার ছাড়া অন্য কোনো সিগারেট খেতে পারি না,তোরা খাও গোপাল বিড়ি আর আমার ট্রেজারার ছাড়া চলেই না এক প্যাকেটে দশ টা থাকে যার দাম প্রায় সাড়ে চার হাজার টাকা অর্থাৎএর একটি সিগারেটের দাম সাড়ে চারশো টাকা।
এটি ইংল্যান্ডের একটি জনপ্রিয় ব্রান্ড,এই ব্রান্ড টি ইংল্যান্ড ছাড়া কোথাও পাওয়া যায় নাহ…!” মিম ইমানের কথা শুনে মুখ ফসকে বলে ফেললো,
– “ছিঃ…! খবিশ কোথাকার যেন একটা।।” ইমান এগিয়ে এসে মিমের মুখের ওপরে ধোঁয়া ছেড়ে দিয়ে জিজ্ঞেস করলো,
– “আপনার কি আমার সবকিছু নিয়ে সমস্যা?”
.
চলবে…

No comments

info.kroyhouse24@gmail.com