Breaking News

নেশাগ্রস্ত ভালোবাসা । পর্ব -০৫

আপনার কি আমার সবকিছু নিয়ে সমস্যা?”
সিগারেটের গন্ধে মিমের গা ঘোলাতে লাগলো,ও রেগে গিয়ে ইমান কে ধাক্কা মে’রে দূরে সরিয়ে দিয়ে বললো,
– “একদম আমার কাছে ঘেঁষার চেষ্টা করবেন না,যেচে পরে বিষ খাচ্ছেন সেটা কি আপনি বুঝতে পারছেন না?
কি বিশ্রী গন্ধ,গন্ধে আমার শরীর খারাপ হয়ে যাচ্ছে সেটা কি আপনার চোখে পরছে না?
ইউসা এসে মিম কে ছাঁদে অপজিটে নিয়ে গেলো,তারপর ওকে বুঝিয়ে বললো,
– “ভাইয়ের সাথে শুধুশুধু তর্কে যাস না,কিছু মানুষ সবটা বুঝেও না বোঝার ভান করে থাকে মিশি তুই কেন বুঝিস না।” মিম ইউসা কে চাপের কাপ দিয়ে বললো,
– “আসলেই আমার অপাত্রে জ্ঞান দান করা উচিত হয়নি আর করবো নাহ…!” আড়ালে দাঁড়িয়ে ইমান দু’জনেই কথোপকথন শুনে বললো,
– “এ বাড়িতে দেখছি সবার’ই শুধু আমাকে নিয়ে সমস্যা।” সকালে আশকারা ইমানের বাসায় এলো,রাতের গঠনা সব ইমানের মুখে শুনে বিরক্তি প্রকাশ করে বললো,
– “অসহ্যকর মেয়ে একটা…।।” মিম তখন সবার জন্য করে নাস্তা নিয়ে এলো,ইমান কে খাবার ট্রে দিয়ে বললো,
– “ধরুন আপনার খাবার টা…!” ইমা বেশ ভাব নিয়ে বললো,
– “ক্ষমা করুন আমি আসলে এসব রিচ ফুড,ড্রাই ফ্রুটস খাই না।” মিম মুচকি হেসে বললো,
– “দেখুন,
.
বাসায় তৈরি করা কোনো খাবার কিন্তু অস্বাস্থ্যকর হয় না।।” আশকারা মিম কে থামিয়ে দিয়ে বললো,
– “শুনুন,আপনি কিন্তু ডক্টর না আর তা ছাড়া আমার বয়ফ্রেন্ডের সারাদিন কি খাবে না খাবে সেটা নিশ্চয়ই আপনার দেখার বিষয় না।” মিম মুচকি হেসে বললো,
– “জ্বি ধন্যবাদ আশকারা…!
আমি আসলে ভুলে গিয়েছিলাম আমার সীমানা টা।।” তখন আশকারা হাসিমুখে নিজের পার্স থেকে এক প্যাকেট ট্রেজারার বের করে ইমানের হাতে দিয়ে বললো,
.
– “নাও বেবি তোমার প্রিয় সিগারেট,এটা ছাড়া তোমার আবার চলেই নাহ…!
জানো তুমি? আমার আত্মীয়স্বজন বন্ধুবান্ধবদের খুব গর্ব করে বলে বেড়াই
যে আমার বয়ফ্রেন্ড ট্রেজারার ছাড়া অন্য কোনো ব্রান্ডের সিগারেট ছুঁয়ে ও দেখে না।।
মিম অনেক কষ্টে নিজের হাসি সামলে রেখে মনেমনে বললো,
– “কি যুগ যে আসলো? মানুষ গর্ব করার জিনিস আর চোখে দেখে না।
আশকারা ইমান কে ঠেলতে ঠেলতে বললো,
– “ঘরে চলো বেবি প্লিজ এখানে বসে থাকতে ভালো লাগছে না।” ঘরে এসে ইমান আশকারা কে বললো,
– “ভাব দেখিয়ে সবার সামনে থেকে খাবার না খেয়ে চলে এলাম…!
এখন যে খুব খেতে ইচ্ছে করছে?” আশকারা হাসতে হাসতে বললো,
– “আরেহ,তাতে কি হয়েছে? তুমি’ই তো বলেছিলে কেউ দেরি করে খেলে তার খাবার ডাইনিং টেবিলের ওপরে ঢেকে রাখা থাকে।।” ইমান মাথা চুলকাতে চুলকাতে বললো,
– “ওহ…! বলেছিলাম বুঝি? তাহলে ঠিক আছে।।” প্রায় আধঘন্টা পর ইমান আশকারা নিচে চলে এলো,যমুনা গিয়ে কফি দিয়ে এলো ওদের দু’জন কে।।
কফি দেখে ইমান একটু রেগেই গেলো,যমুনা কে ডেকে বললো,
– “কফি দিতে কে বলেছে তোকে?” যমুনা ঝটপট গিয়ে কনফ্লেক্স বানিয়ে আনলো,ইমান ওকে ঝাড়ি মেরে বললো,
– “এই মেয়ে এখন কনফ্লেক্স কে খাবে?” রিজওয়ান সাহেব মুচকি হেসে ছেলেকে বললেন,
– “তুমি না কি রিচ ফুড,ড্রাই ফ্রুটস খাও না? তাই তোমার জন্য বানানো খাবার গুলো আমাদের সবার পেটে চলে গেছে।।” ইমান রেগে তৎক্ষনাৎ নিজের ঘরে চলে এলো,এসে দেখলো একটা প্লেটে কিছু খাবার ঢেকে রাখা আছে।
ও ঢাকনি টা সরিয়ে চিকেন পাকোড়া,আলুর চপ,পেঁয়াজু আর বেগুনি দেখে হুমড়ি খেয়ে পরলো,ওর খাওয়া শেষ হতে না হতেই মিম এসে জিজ্ঞেস করলো,
.
– “আপনি আবার রিচ ফুড খাওয়া শুরু করলেন কবে থেকে?” ইমান থতমত খেয়ে বললো,
– “মাঝেমধ্যে ডায়েট চেইঞ্জ করা উচিত মিসস জঞ্জাল,তাহলে শরীর ভালো থাকে।।” মিম মুচকি হেসে বললো,
– “আপনি করুণ চেইঞ্জ…! আর খেতে হবে না প্লেট টা দিন এদিকে।।” ইমান হঠাৎ বললো,
– “ওই যে বাবা…!” মিম চমকে পেছনে ফিরে তাকালো,মুহূর্তে সামনে তাকিয়ে দেখলো ইমান প্লেট সহ হাওয়া হয়ে গেছে।।” ও মুচকি হেসে বললো,
– “আজব লোক…!” ইমান পর্দায় আড়ালে দাঁড়িয়ে বেগুনি খেতে খেতে ফিসফিস করে বললো,
– “আজব তো বটে…!”
বিকেলে মিম একটা জরুরী কাজের জন্য রেডি হয়ে নিচে এলো ইমান বখাটেদের মতো শিশ বাজাতে শুরু করলো ওকে দেখে,
তা দেখে মজা নিতে শুরু করলো আশকারা,মিম হঠাৎ এগিয়ে এসে ইমান কে জিজ্ঞেস করলো,
– “আপনার কি আমার ওপরে কোনো ফিলিং’স আছে?” ইমান থেমে গিয়ে ভ্রু কুঁচকে তাকিয়ে রইলো,মিম মৃদু হেসে বললো,
.
– “এভাবে শিশ বাজাবেন না প্লিজ…! দেখতে খারাপ লাগে।” মিম যেতেই আশকারা ইমানের ওপরে চড়াও হলো,রীতিমতো বড়সড় একটা ঝগড়া বেঁধে গেলো দু’জনের মাঝে।
তাতে অবশ্য ইমানের সম্পূর্ণ রাগ টা গিয়ে মিমের ওপরে পরলো,দাঁতে দাঁত চেপে বললো,
– “মিসস জঞ্জাল…! আমি ভালো করে দেখে নেবো আপনাকে৷।”
রাতে মিম কাজ টা সেরে বাসায় ফিরলো,তখন প্রায় আটটা বাজে।
ও ফ্রেশ হতে বাথরুমে ঢুকলো,শাওয়ার টা নিয়ে হঠাৎ ভেন্টিলেটরের দিকে নজর যেতেই দেখলো দু’টো চোখ স্থীর হয়ে ওর দিকে তাকিয়ে আছে…!
.
ও হঠাৎ ভয় পেয়ে চিৎকার করে জ্ঞান হারালো,সবাই সাথে সাথে ছুটে এলো ওর কাছে,ইমা বাথরুমে ঢুকে কোনো মতে মিমের জ্ঞান ফেরালো।
মিম ভয়ে আড়ষ্ট হয়ে বললো,
– “কেউ একজন ছিল আমার বাথরুমের ভেন্টিলেটরের কাছে,আমি তার দু’টো চোখ দেখেছি কিন্তু চিনতে পারিনি ওই মানুষ টা কে…।” রিজওয়ান সাহেব প্রচণ্ড রেগে গেলেন,ছেলেদের ঘরে ডেকে পাঠালেন সাথে সাথে।।
নিজের কাঠিন্য বজায় রেখে সোজাসুজি ছেলেদের কাছে জিজ্ঞেস করলেন,
– “তোমাদের মধ্যে কে এই কাজ টা করেছে মামণির সাথে?” ইউভান বললো,
– “বাবা আমি আর ইউসা তো নিচেই ছিলাম তোমাদের সাথে কিন্তু ইমান…!” ইমান চোটে গিয়ে বললো,
– “কি ইমান? ভাইয়া,তুই বলতে চাইছিস যে আমি ছিলাম ভেন্টিলেটরের কাছে?” তখন আশকারা এসে রিজওয়ান সাহেব কে বললো,
.
– “আঙ্কেল আমাকে ভুল বুঝবেন না প্লিজ,তবে আমি আর আপনার ছেলে দু’জনেই কোয়ালিটি টাইম স্পেন্ড করছিলাম ছাঁদে।” রিজওয়ান সাহেবের এখানে উপস্থিত কারো কথা বিশ্বাস যোগ্য মনে হলো না,তার বারবার মনে হচ্ছে কেউ একজন মিথ্যে বলেছে ওনার কাছে।
ইমান রিজওয়ান সাহেবের ঘর থেকে বেড়িয়ে এসে আশকারা কে জিজ্ঞেস করলো,
– “তুমি মিথ্যে বললে কেন বাবার কাছে?” আশকারা ইমানের হাত জড়িয়ে ধরে বললো,
– “মিথ্যে কই বললাম? পুরুষ মানুষের ও একটু-আধটু ছুঁকছুঁকানি স্বভাব থাকে,দেখেছ ভালো কথা আবার শুয়ে পরতে যেও না ওই মেয়ের সাথে।।”
.
চলবে…

No comments

info.kroyhouse24@gmail.com