Breaking News

দুষ্টু গার্লফ্রেন্ড । পর্ব - ৩৩



ঈশাঃ ভাইয়া তুই আমার ঘরে?
আহিরঃ গুড মর্নিং।
ঈশাঃ গুড মর্নিং। [ভয়ে-ভয়ে]
আহিরঃ ফ্রেস হয়ে এক্সাম দিতে যা।
ঈশাঃ হুমম।
আহির কিছু বললো না ঈশা’কে।সোজা চেয়ার থেকে উঠে চলে যেতে নিলে ঈশা বললো!
ঈশাঃ আহির ভাইয়া তুই সারারাত আমার রুমে বসেছিলি?
আহিরঃ হ্যাঁ।
ঈশাঃ কেনো?
আহিরঃ তোর মনে হচ্ছে না।একটু বেশি কথা বলছিস তুই আজ?
ঈশাঃ স্যরি।
.
আহির এখন খুব রেগে আছে।ঈশা’কে কিছু বলতে চেয়েও বললো না।
বকলে হয়তো ঈশার এক্সামের উপর প্রভাব পরবে।
এক্সাম খারাপ হয়ে যেতে পারে ঈশার।
তাই কিছু না বলে চলে গেলো আহির।নিজের জেদ দমিয়ে রেখে।
১ ঘন্টার মধ্যে ঈশা রেডি হয়ে বাসা থেকে বের হয়ে গেলো এক্সাম দিতে যাওয়ার জন্য।
ঈশা আজ ‘চা’ পর্যন্ত খেলো না।গতকাল রাতের কথা চিন্তা করে।
গতকাল রাতে কি হয়েছে ঈশার কিচ্ছু মনে পরছে না।
তার উপর সকালে আহির’কে দেখেই বোঝা যাচ্ছিলো রেগে আছে আহির।
কি হয়েছিলো? ঈশা কলেজে যেতে-যেতে এটাই ভাবছে।আহির ফ্রেস হয়ে রেডি হয়ে নিলো।
আহির আজ খুব রেগে আছে।আয়রার আজ রক্ষে নেই সেটাই আহির জানে।
তাতে আহির’কে জেলে ভরে দিক আর অফিস থেকে বের করে দিক।
আহিরও বাসা থেকে বের হয়ে গেলো।
ঈশা এক্সাম দিয়ে বের হলো দুপুর ১:০০ টায়।রাফিন আর ঈশা গল্প করতে-করতে কলেজের বাহিরে এলো।
রাফিন ফাজলামো করে ঈশার মাথায় টুকা দিলো।
ঈশা নিজের কাঁধ দিয়ে ধাক্কা দিলো রাফিন’কে।
কলেজ থেকে বের হতেই থমকে গেলো ঈশা।
আকাশ কলেজের বাহিরে দাঁড়িয়ে আছে।আকাশ সবকিছু’ই দেখতে
পেয়েছে রাফিন আর ঈশার কাহিনী গুলো।
আকাশ গাড়িতে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে।ঈশা দেখেও কিছু বললো না।
ঈশা পাশ কাটিয়ে চলে যেতে নিলে আকাশের কথায় থেমে গেলো।
আকাশঃ আই ওয়ান্ট টক টু ইউ ঈশা।
ঈশাঃ রাফিন তুমি যাও।আমি আজ একাই চলে যাবো।
রাফিনঃ‌ ফাইন।
.
রাফিন একবার ঈশা আর আকাশের দিকে তাকিয়ে চলে গেলো।আকাশ বললো!
আকাশঃ আমাকে ইগনোর করছো তুমি?
ঈশাঃ বারবার একই কথা বলে নিজের অপমান করান কেনো আপনি?
আমি কেনো আপনাকে অপমান করতে যাবো? কে হন আপনি আমার?
বয়ফ্রেন্ড,বেস্টফ্রেন্ড নাকি হাসবেন্ড? কিছু লাগেন আপনি আমার?
নিশ্চয়ই না! তাহলে কেনো আপনাকে ইগনোর করবো আমি?
আগে আপনাদের বাসায় কাজ করেছি আমি ২৩ দিন।
কিন্তু এখন আপনাদের বাসায় কাজ করি না আমি।কাজ যেহেতু করি না!
সেহেতু আপনাকে চেনার কোনো প্রয়োজন নেই আমার।তাই আমি…!
ঈশা নিজের মতো অপমান করছে আকাশ’কে।
আকাশ ঈশার এক হাতের বাহু টেনে ধরে! ঠাসসসসস্ করে ঈশার গালে একটি থাপ্পড় মেরে দিলো।
ঈশা নিজের গালে হাত রেখে আকাশের দিকে আগুন্তক দৃষ্টি নিক্ষেপ করলো।
ভাগ্যিস কলেজ ফাঁকা ছিলো।
তেমন কেউ ছিলো না আশেপাশে।
থাকলেও কেউ এদিকে তাকিয়ে অতটা খেয়াল করে’নি।আকাশ বললো!
.
আকাশঃ গতকাল রাতে তুমি আমার বাসায় গিয়ে কি-কি করেছো? কিছু মনে পরছে না তোমার?
ঈশাঃ তুমি আমার উপর হাত তুললে? থাপ্পড় মারলে আমাকে তুমি? [রেগে]
আকাশঃ থাপ্পড় মারার মতো কাজ করলে কি করবো? আমার কথা না শুনে পকপক করছো কেনো তুমি?
ঈশাঃ আমার সাথে আর কখনো কথা বলার চেষ্টা করবে না তুমি বায়।
ঈশা চোখের পানি মুছে চলে যেতে নিলে! আকাশ একহাত চেঁপে ধরলো ঈশার।ঈশা রেগে আকাশের দিকে তাকালো।
ঈশাঃ ছাড়ো আমার হাত আকাশ।
আকাশঃ আমার কথা এখনো শেষ হয়’নি।আমার কথা না শুনে কোথাও যেতে পারবে না তুমি।
ঈশাঃ আমি তোমার কোনো কথা শুনবো না।
আকাশঃ আমাকে গতকাল তুমি প্রপোজ করেছো।এটা জানা শর্তেও যে! আমি সুমু’কে ভালোবাসি।
আকাশের কথা শুনে ঈশা থেমে গিয়ে আকাশের দিকে তাকালো।আকাশ এবার ছেড়ে দিলো ঈশার হাত।ঈশা ভালো করে সবটা মনে করার চেষ্টা করলো।হ্যাঁ আকাশের এই কথাটা শুনে ঈশার সবকিছু মনে পড়ছে একটু-একটু করে।ঈশা ভুলে ড্রিংক খেয়ে ফেলে।তারপর আকাশের বাড়ি গিয়ে যা-যা করেছে।সবকিছু মনে পরে গেলো ঈশার।অবশেষে ঈশার এটাও মনে পরলো।শেষে আসার সময় ঈশা আকাশ’কে জরিয়ে ধরে আই লাভ ইউ বলেছে।
আকাশঃ এখন যাও।কথা বন্ধ হয়ে গেলো কেনো তোমার?
.
ঈশা বড় এক নিঃশ্বাস নিলো।আকাশের দিকে ফিরে তাকিয়ে! নিজের চোখ জোড়া বন্ধ করে এক নিঃশ্বাসে বললো!
ঈশাঃ লিসেন আকাশ! প্রথম যেদিন তোমার সাথে আমার দেখা হয়েছিলো।সেদিন থেকেই তোমাকে আমি ভালোবাসি।কিন্তু তোমাকে আমি কখনো বলিনি।ভেবেছিলাম বলে দিব তোমাকে।কিন্তু জানতে পারলাম সুমু তোমার গার্লফ্রেন্ড।ইনফ্যাক্ট তোমার আর সুমুর খুব গভীর ভালোবাসার সম্পর্ক।তাই সেদিন থেকে আমি ডিসাইড করেছি।আমি তোমার আর সুমুর মাঝে কখনোই ঢুকবো না।সেজন্য আমি নিজে থেকেই তোমার লাইফ থেকে সরে গিয়েছিলাম।
আকাশঃ দ্যাট মিন’স! তুমি ইচ্ছে করে আমাকে ইগনোর করেছিলে?
.
ঈশাঃ হ্যাঁ ভেবেছিলাম আর মাত্র ১০ দিন আছে ১ মাস পূর্ণ হতে।
দেখতে-দেখতে ১০ দিন চলে যাবে।তাই তোমার সাথে আমি কথা বলা বন্ধ করে দিয়েছিলাম।
তোমাকে ইগনোর করেছি প্রতি’নিয়ত।তার পরিবর্তে তুমি আমাকে শুধু অপমান করেছো।
যাই হোক এসব কথা এখন বাদ দেওয়াই বেটার।
আমি কখনোই তোমার কাছে প্রকাশ করতে চাই’নি যে! আমি তোমাকে ভালোবাসি।
বাট গতকাল নেশার ঘোরে তোমাকে আই লাভ ইউ বলে ফেলেছি।
ইনফ্যাক্ট তোমাদের বাসায় গিয়ে হয়তো অনেক তামাশা করে ফেলেছি।
আ’ম এক্সট্রিমলি স্যরি ফর এভরিথিং।
আকাশঃ তোমার ইগনোর এর রিজন তাহলে লাভ-ফ্যাক্ট ছিলো?
ঈশাঃ দেখো আকাশ! তোমার আর আমার স্ট্যাটাস কখনো মিলবে না।
তোমার জগৎ আলাদা।আর আমার জগৎ আলাদা।তাই…!
আকাশঃ আমি তোমাকে কখনো ওই রকম চোখে দেখিনি।
কারন আই হেইট ইউ।
তাছাড়া তোমার মতো মেয়েকে আমার লাইফ পার্টনার হিসেবে আমি কখনোই ভাবতে পারি না।
সো, আশা করবো আজকেই আমাদের শেষ দেখা এখানে।
পরবর্তি তে আর কখনো আমাদের দেখা না হলেই খুশি হবো।
ঈশাঃ সেম টু ইউ।গুড বায়।আল্লাহ্ হাফেজ।
.
ঈশা চলে গেলো সেখান থেকে।আকাশ গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে গেলো ঈশার কলেজ থেকে।
আকাশ ঠিক মতো গাড়ি ড্রাইভ করতে পারছে না।
বারবার গতকাল রাতে ঈশার ওকে জড়িয়ে ধরা।
আকাশ’কে জড়িয়ে ধরে আই লাভ ইউ বলা।আকাশের চোখে ভাসছে সবকিছু।
আবার আজ ঈশা যা-যা বললো!
সবকিছু আকাশের কানে বাজছে।
সামনা-সামনি ঈশা আকাশ’কে বললো “হ্যাঁ আমি তোমাকে ভালোবাসি”।
আকাশের কানে শুধু এসব কথা বাজছে।চোখে গতকাল রাতে ঈশার কাহিনী ভাসছে।
আকাশ আনমনে গাড়ি ড্রাইভ করছে।
ঈশা কোনো অটো নিলো না।কলেজ থেকে হেঁটে-হেঁটে বাসায় যাচ্ছে।
ঈশার খুব কান্না পাচ্ছে।ঈশা’কে থাপ্পড় মারলো আকাশ? তাও পাবলিক প্লেসে?
ঈশার খুব অভিমান হয়েছে আকাশের উপর। ঈশা কাঁদতে-কাঁদতে আকাশের উপর অভিমান করে বাসায় গেলো।
ঈশার কিচ্ছু ভালো লাগছে না আজ।
.
চলবে…..

No comments

info.kroyhouse24@gmail.com