Breaking News

দুষ্টু গার্লফ্রেন্ড । পর্ব - ৩২


আহির রুমে এসে দেখলো ঈশা নেই।সবাই খুব চিন্তায় পরে গেলো। 
আহির জানে ঈশা সেন্সে নেই।না জানি কোথায় চলে গেলো একা-একা এত রাতে। 
আহির তাই ভেবে টেনশন করছে।আহির সব জায়গা খুঁজে ফেলেছে।কোথাও নেই ঈশা।
ভিন্টুঃ কোথায় গেলো ঈশা?
আকাশঃ আমার খুব টেনশন হচ্ছে।
মোটুঃ সব জায়গায় খুঁজেছি।কোথাও নেই ঈশা।
আহিরঃ কোথায় যেতে পারে সেটাই ভাবছি।
বাম্বঃ তুই ঈশা’কে একা রুমে রেখে এসেছিস ঠিক আছে।
বাহির থেকে গেটে তালা লাগিয়ে দিতে পারলি না?

আকাশঃ আমি সত্যিই বুঝতে পারিনি।ঈশা এরকম কিছু করবে।
ভিন্টুঃ পুলিশ কে জানাবো?
আহিরঃ কি বললি তুই?
মোটুঃ না মানে ভাই! এত রাত হয়ে গিয়েছে।ঈশা মেয়ে মানুষ।বুঝতে পারছো তো?
আহিরঃ চলে যা আমার চোখের সামনে থেকে তোরা। [রেগে]
বাম্বঃ তোরা চুপ কর।ভালো করে খুঁজে দেখ! ঈশা আশেপাশেই কোথাও আছে।
আহিরঃ সব আমার দোষ।আমিই ঈশার খেয়াল রাখতে পারিনি।
আমার উচিৎ ছিলো ঈশার খেয়াল রাখা।রাত ২:৩০ বাজে।কোথাও খুঁজে পাচ্ছি না আমার বোন কে।
আহির,ভিন্টু,মোটু আর বাম্ব কাউকে কিছু না বলে!
বস্তির বড় মাঠ পেরিয়ে মেইন রোডের মাথায় এসে দাঁড়িয়েছে।
আহির মাথায় হাত দিয়ে একটি ইটের উপর বসে আছে।সবাই টেনশন করছে।
তখনি একটি গাড়ির হর্ণ শুনতে পেলো ওরা।টিংকু ভাই আহির’কে মাথায় হাত দিয়ে বসে থাকতে
দেখে গাড়ি ব্রেক করে হর্ণ বাজালো।
সবাই গাড়ির দিকে তাকালো।টিংকু ভাইয়ের পাশের সিটে ঈশা ঘুমাচ্ছে।
টিংকু ভাই গাড়ি থেকে নেমে আহিরের সামনে গিয়ে বললো!
টিংকু ভাইঃ ঈশা গাড়িতে আমার পাশের সিটে ঘুমাচ্ছে।
আহিরঃ কিহ্?

আহির মাথা তুলে টিংকু ভাইয়ের দিকে তাকালো।ভিন্টু,মোটু আর বাম্ব দৌড়ে গাড়ির সামনে গিয়ে দেখলো!
ড্রাইভিং সিটের পাশের সিটে ঈশা ঘুমিয়ে আছে।
ভিন্টুঃ আহির! সত্যিই ঈশা গাড়িতে ঘুমাচ্ছে।
ভিন্টুর কথা শুনে আহির দৌড়ে গাড়ির কাছে এসে দেখলো!
ঈশা সিটে গাঁ এলিয়ে দিয়ে ঘুমাচ্ছে।আহিরের যেনো জান ফিরে এলো ঈশা’কে পেয়ে।
আহির দৌড়ে গিয়ে টিংকু ভাই কে জড়িয়ে ধরলো।
আহিরঃ টিংকু ভাই তুমি জানো না।তুমি আমার কত বড় উপকার করেছো।
আমার জান ফিরিয়ে দিয়েছো তুমি।তোমাকে ধন্যবাদ দিলেও কম হয়ে যাবে।
তাই তোমাকে ধন্যবাদ জানিয়ে ছোটো করবো না। [কেঁদে-কেঁদে]
টিংকু ভাই এই প্রথম এত ইমশোনাল হতে দেখলো আহির’কে।তাও নিজের বোনের জন্য।
এটাই হয়তো ভাই-বোনের সম্পর্ক।টিংকু ভাই নিজের থেকে আহির’কে ছাড়িয়ে বললো!
টিংকু ভাইঃ ঈশা’কে নিয়ে যাও বাসায়।
আহিরঃ হ্যাঁ থ্যাংক ইউ।
.
আহির খুশি হয়ে গাড়ির দিকে যেতে গিয়েও ফিরে এলো টিংকু ভাইয়ের কাছে।টিংকু
ভাইয়ের দিকে জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে তাকালো আহির।টিংকু ভাই মনে-মনে যা ভয় পাচ্ছিলো।তাই হবে না-তো?
আহিরঃ ঈশা’কে তুমি কোথায় পেলে? আর ঈশা তো তোমাকে চিনে না।
তোমার ব্যাপারে জানেও না।তোমার কাছে কেনো যাবে ঈশা? তুমিও তো জানো না!
কে আমার বোন ‘বা’ ঈশা আমার বোন।তাহলে তুমি ঈশা’কে এখানে কেনো নিয়ে এলে?
তুমি আমার বোনের নাম মানে ঈশার নাম জানলে কিভাবে?
টিংকু ভাই যা ভেবেছিলো তাই হলো।এখন কি জবাব দিবে টিংকু ভাই?
তাছাড়া আহির খুব চালাক।আহিরের কাছে মিথ্যে বললে ধরা পরে যাবে টিংকু ভাই।
তাই টিংকু ভাই সব সত্যি কথা বলে দিলো আহির’কে।
আয়রার ভাই আকাশের সাথে প্রথম ঈশার রাস্তায় দেখা হয়।

ঈশা আকাশের ব্যাগ থেকে বিশ হাজার টাকা নিয়ে নেয়।তারপর আহির’কে যখন আকাশ অপমান করে গেলো বস্তিতে।তার পরের দিন ঈশা যায় আকাশ’দের বাড়িতে।

আকাশ বলে তিনশো ফিট বস্তি ওরা নিয়ে নিবে।তখন ঈশা বলে কি করলে জমি ছাড়বে আকাশ।তখন আকাশ শর্ত রাখে।১ মাস আকাশ’দের বাসায় কাজ করতে হবে ঈশা’কে সার্ভেন্ট হয়ে।তাহলেই আকাশ এই তিনশো ফিট বস্তি ছেড়ে দিবে।

তাই ঈশা এতদিন আকাশ’দের বাড়িতে কাজ করেছে।টিংকু ভাই আরো বললো! আকাশ আর সুমুর জন্য পার্টি রেখেছিলো ঈশা।কিন্তু সুমু পার্টিতে এসে ঈশা’কে খুব অপমান করে।আকাশের সাথে রিলেশন ব্রেকাপ করে চলে যায়।

কারন সুমু মনে করে! আকাশ আর সুমুর সম্পর্ক নষ্টের কারন ঈশা।গতকাল আকাশও বলে দেয়! ঈশা যেনো আর আকাশ’দের বাড়ি না যায়।

টিংকু ভাইঃ আর আজ ঈশা ড্রিংক করে আকাশের রুমে গিয়েছে।ব্যালকনি দিয়ে ঢুকেছে রুমে।তাই আমি ঈশা’কে পৌঁছে দিতে এলাম।
.
আহিরের মনে পরলো ঈশা বলেছিলো।”ভাইয়া আজ একটি ছেলের কাছ থেকে বিশ হাজার টাকা নিয়েছি”।আহিরের আবার মনে পরলো ঈশা বলেছিলো।আহির ভাইয়া জানো? আজ ওই আকাশ নামের ছেলেটি আমাকে গুন্ডাদের হাত থেকে বাঁচিয়েছে।আহিরের আবার মনে পরলো।আহির ঈশা’কে যখন বলেছিলো আকাশ বস্তিতে এসে ঝামেলা করেছে।তখন ঈশা বলেছিলো ছাড়বে না আকাশ আর আয়রা’কে ও।আহিরের আবার মনে পরলো।ঈশা প্রতিদিন যখন রাত করে বাড়ি ফেরে তখন আহির জিজ্ঞেস করলে বলতো যে! ফ্রেন্ডের বাসায় পড়া কমপ্লিট করতে-করতে রাত হয়ে গিয়েছে।আহিরের মাথায় সবকিছু ঘুরপাক খাচ্ছে।

ভিন্টুঃ দোস্ত ঈশা আমাদের সবকিছু বলেছিলো।কিন্তু আমাদের ওয়াদা করিয়েছিলো।আমরা যেনো তোকে কিছু না বলি।

আহিরঃ এত বড় একটা কাহিনী।এতকিছু হয়ে গিয়েছে।আর তোরা কেউ কিচ্ছু জানানোর প্রয়োজন মনে করিস’নি আমাকে?

টিংকু ভাইঃ আহির…!
আহিরঃ ব্যাস! আমি আর কিচ্ছু শুনতে চাই না।আমার বোন আর ওই বাড়িতে কাজ করতে যাবে না।আমার বোন রানীর মতো থাকার জন্য জন্ম হয়েছে।কারো বাড়িতে সার্ভেন্ট হয়ে কাজ করার জন্য নয়।সেটা আপনাদের ম্যাডাম আয়রা’কে জানিয়ে দিবেন।আর হ্যাঁ! আকাশ যদি সেকেন্ড টাইম কখনো আমার সামনে পরে।তাহলে সেদিন হবে আকাশের জীবনের শেষ দিন।জানিয়ে দিবেন আকাশ’কে।
টিংকু ভাইঃ আহির আমার কথা শোনো…!
.
আহিরঃ যা শোনার শুনে নিয়েছি।যা বোঝার বুঝে গিয়েছি।আপনি এখন আসতে পারেন।
আহির গাড়ির সিট বেল্ট খুলে ঈশা’কে কোলে তুলে নিলো।ঈশা গভীর ঘুমে মগ্ন।আহির চলে গেলো বাসার দিকে।পিছে ওর বন্ধুরাও গেলো।টিংকু ভাই গাড়িতে উঠে গাড়ি স্টার্ট দিলো।
.
টিংকু ভাইঃ আহির খুব রেগে আছে।না জানি কি করবে আহির!
আকাশ আর আয়রা’কে পেলে।কি হবে এখন।
রাতে ঈশা’কে বিছানায় শুইয়ে দিয়ে!
একটি চেয়ার নিয়ে সারারাত ঈশার বিছানার পাশে আহির বসে ছিলো।
কঁপালে হাত রেখে শুধু সবকিছু ভেবেছে।সকাল হয়ে গেলো।
ঈশার ঘুম ভেঙে গেলো।ঈশা উঠে মাথার দু পাশে চেঁপে ধরলো।
মাথাটা কেমন ভারি-ভারি লাগছে ঈশার।মনে হচ্ছে মাথায় কেউ হাতুড়ি দিয়ে বারি দিয়েছে।
ঈশা নিজের ডান পাশে তাকাতেই দেখলো!

আহির চেয়ারে হেলান‌ দিয়ে ঈশার দিকে তাকিয়ে আছে।
সারারাত না ঘুমানোর কারনে আহিরের চোখ দুটো লাল টুকটুকে হয়ে আছে।
রাগে আহিরের পুরো ফর্সা মুখ লাল টুকটুকে হয়ে রয়েছে।
ঈশা আহিরের চোখ দেখেই বুঝে ফেললো।আহির রেগে বোম হয়ে আছে।
ঈশা ভয়ে শুকনো ঢোক গিললো আহিরের দিকে তাকিয়ে।
.
চলবে…

No comments

info.kroyhouse24@gmail.com