জুনিয়র হাজবেন্ড । পর্ব - ০৫
ঘটনাটা,,, সৌরভ আর আতিয়ার চোখে ও পড়েছে,,,,
সৌরভ তাড়াতাড়ি এসে,,, কেয়ার হাতটা রাহাদের থেকে ছাড়িয়ে নেয়,,,,,,
সৌরভ: তুমি এখানে কেন আসছো,,,,,
কেয়া কিছু বলতেছে না,,,, চুপ করে দাঁড়িয়ে আছে,,,, ভয় পেয়ে গেছে ও,,,,,
আতিয়া: তুই কখন আসলি এখানে,,,,,
সৌরভ: যাই হোক,,, সরি,,,, কিছু মনে করো না,,,,,,
(কেয়াকে কথাগুলো বললো সৌরভ)
কেয়া: হুম,,,,,
সৌরভ: কালকে অফিসে এসো,,,, কথা আছে,,,,,
কথাটা বলে,,, সৌরভ রাহাত কে ধরে গাড়ীতে বসালো,,,,
সৌরভ: সরি আতিয়া,,,,, আজকের দিনে ও তোমার সাথে থাকতে পারলাম না,,,,,
প্লিজ কিছু মনে করো না,,,, দেখলেই তো কি হয়ে গেল,,,,
আতিয়া: হুম,,, তুমি যাও,,, কী মনে করবো,,, সবিই তো দেখলাম,,,,,,
সৌরভ: থ্যাংকস,,,, ভালভাবে যেও,,,,
আর বাড়িতে গিয়ে ফোন দিও,,,(আতিয়ার গালে হাত দিয়ে বললো)
আতিয়া: হুম তুমিও সাবধানে যেও,,,,,,
সৌরভ নিজে ড্রাইভিং করে রাহাতের বাড়িতে চলে আসলো,,,,
রাত ও বারোটা বেজে গেছে,,,, চারিদিকে অন্ধকার,,,, থমথমে পরিবেশ,,,,
কিন্তু রাহাদের বাড়িতে এখনো আলো জ্বলছে,,,, শুধু আজকে না,,,
প্রত্যেকদিনই জলে,,,, প্রতিদিনই রাহাত এভাবে আসে,,, মাতাল অবস্থায়,,,,
আর ওর মা তার জন্যই অপেক্ষা করে আলো জ্বেলে,,,,
তবে আজকে একটু বেশি দেরি হয়ে গেছে,,,,,
.
বাইরে গাড়ির শব্দে,,,,, রাহাদের মা দরজা খুলে দেয়,,,,,
সৌরভ রাহাত কে ধরে,,,,,ওর বিছানায় গিয়ে শুইয়ে দিয়ে নিচে আসে,,,,,
সৌরভ: আন্টি আমি যাই,,, সকালে রাহাত কে তাড়াতাড়ি অফিসে যেতে বলেন,,, মিটিং আছে একটা,,,,,
রাহাদের মা: এখানেই থাকো সৌরভ,,,, এত রাতে বাড়িতে গিয়ে কি করবে,,,,
সৌরভ: না আন্টি,,, মা মনে হয় জেগেই আছে,,, এমনিতে দেরি হয়ে গেছে আজকে,,,,
রাহাদের মা: হুম,,,যাও তাহলে,,,
সৌরভ: ওকে বাই আন্টি,,,,
সৌরভ চলে যেতে লাগে,,,, হঠাৎ পেছন থেকে রাহাদের মা ডাক দেয়,,,,
রাহাদের মা: সৌরভ একটু শোনো,,,,,
রাহাদের মার কথা শুনে,,, সৌরভ দাঁড়িয়ে পড়ে,,,,
সৌরভ: কী আন্টি,,, কিছু বলবেন,,,,,,
রাহাতের মা কিছুক্ষণ চুপ থাকার পর,,,,,,
রাহাদের মা: নাহ কিছু না যাও,,,, কাল একবার এসো,,,,,
সৌরভ বাড়িতে চলে যায়,,,,,, রাহাতের মা গিয়ে শুয়ে পর,,,,
ছেলের এমন অবস্থা দেখে,,,কোন মা ভালো থাকতে পারে,,
.
সকালে এলার্মের শব্দে রাহাদের ঘুম ভেঙ্গে যায়,,,,,,
ফ্রেশ হয়ে ব্রেকফাস্ট করে অফিসের দিকে রওনা দেয়,,,,,
দিনে রাহাদ একরকম,,,, রাতে একরকম,,,,
দুটোর মধ্যে অনেক পার্থক্য,,,,,,
কিছুক্ষণের মধ্যেই অফিসে পৌঁছে যায়,,,,,,,,
রুমে যাওয়ার সময়,,,, ওয়েটিং রুমে,,, কেয়াকে দেখে একটু অবাক ই হয়ে যায়,,,,,
তবে কিছু বলে না,,,,, কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে,,, নিজের রুমে চলে গেল,,,,,,,
রুমে গিয়েই সৌরভ কে ডেকে পাঠায় ,,,,,,
রাহাত: ওই মেয়ে এখানে কেন,,,,,,
সৌরভ: আমি আসতে বলছি,,,,তাই,,,,,
রাহাত: ওকে কেন আসতে বলছিস,,,,,,
আমি তো বলেই দিছি ওকে চাকরি দেবো না,,,,,
সৌরভ: কেন দিবি না,,,, ওর মধ্যে কি কম আছে,,,,
রাহাত: কম কিছু নাই,,,, আরো বেশি আছে,,, সব সময় ঝগড়া করে,,,,
সৌরভ: আর করবে না জগড়া,,,, চাকরিটা দিয়ে দে,,,,
মেয়েটার অনেক কষ্ট,,,,, বাবা অসুস্থ তো,,,,(মিথ্যা বললো,,, যাতে চাকরি টা দেয়)
রাহাত: তুই কিভাবে জানলি ওর অনেক কষ্ট,,,, আর ওর বাবা অসুস্থ,,,,
সৌরভ: কালকে রাতে বলছে,,,, চাকরিটা নাকি ওর খুব দরকার,,,, দিলে খুব উপকার হতো,,,,,
রাহাত: ওহহহ,,,,, সবই বুঝলাম,,,, যদি দুঃখ থাকতো,,,,,
তাহলে শুধু সেদিন আমার থেকে ওভাবে 5000 টাকা নিলো কেন,,,,,
সৌরভ: ওইটা ওষুধ কেনার জন্য নিছে,,,,,,
ওর কাছে তো কোন টাকা ছিল না,,,, তাই এরকম করছে বাধ্য হয়ে,,,,,
ও বলছে,,,, চাকরির প্রথম মাসেই ওই টাকা কেটে রাখতে,,,,
রাহাত: আচ্ছা আমার রুমে পাঠিয়ে দে,,,, কথা বলবো আমি,,,,,
সৌরভ: হুম,,,,,,
.
সৌরভ কেয়ার কাছে যায়,,,,,,,
সৌরভকে দেখে কেয়া দাঁড়িয়ে পড়ে,,,,,
সৌরভ: চলো,,,, রাহাত তোমাকে ডাকতেছে,,,,,
কেয়া: কিসের জন্য,,,, আবার অপমান করবে না তো,,,
সৌরভ: আরে নাহ,,,, আমি যেসব বলছি,,,, তুমি শুধু তাল মিলিয়ে যাবে,,,, তোমার চাকরি ফাইনাল,,,,
কেয়া: কি বলছেন,,,,,,
সৌরভ কেয়াকে সবকিছু খুলে বললো,,,,, কিছুক্ষণ আগে রাহাতকে যা যা বলেছে,,,,,
কেয়া:কিইইই,,,,
আপনি আমার বাবাকে অসুস্থ বানিয়ে দিছেন,,,, আপনার তো সাহস কম না,,,,
সৌরভ: রেগো না প্লিজ,,,,, একটু মিথ্যা বলছি,,,, যাতে তোমার চাকরি টা হয়,,,,,
কেয়া: এটা একটু মিথ্যা,,,,, অনেক বড় মিথ্যা কথা বলছেন আপনে,,,,, আমি চাকরি করবো না,,,,,
সৌরভ: একটু বোঝার চেষ্টা করো,,,,
তুমি কিন্তু বলছিলে,,,, তাই তোমার জন্য সুপারিশ করছি,,,,,
কারো ভালোর জন্য মিথ্যা বললে,,,, পাপ হয়না,,,,,
কেয়া: আচ্ছা,,,,, এটাই কিন্তু লাস্ট,,,, আমার সম্পর্কে আর একটাও মিথ্যা কথা বলবেন না,,,,
সৌরভ: ওকে,,,,,,এখন তো চলো,,,,,
কেয়া: হুম,,,,,
.
সৌরভ কেয়া কে নিয়ে,,, রাহাদের রুমে যায়,,,,,
রাহাত: সৌরভ তুই বাহিরে যা,,,,,
সৌরভ: কেন,,,,,,
রাহাত: এমনি,,, আমি বললাম তাই,,,,,
সৌরভ: ওকে,,,,,, কথা বল তোরা,,,,,
সৌরভ বাইরে চলে গেল,,,,,
রাহাত: চাকরিটা নাকি আপনার খুব দরকার,,,,
কেয়া: হুম,,,,,
রাহাত: ফাইল টা দেন,,,,,
কেয়া ফাইল টা বাড়িয়ে দিলো,,,,
রাহাত ফাইল টা খুলে দেখতে লাগলো,,,,,
রাহাত: অনেক ভালো ছাত্রী তো আপনি,,,,,
অনেক নাম্বার পেয়েছেন,,, কিন্তু এত ঝগড়াটে কেন,,,,,(কথাটা ধীরে বললো)
কেয়া: কি,,,,, কি বললেন,,,,
রাহাত: কিছু না,,,, কাল থেকে জয়েন করুন,,,,
কেয়া: কিইইইই,,,,,
রাহাত: বললাম কাল থেকে জয়েন করুন,,, আপনার চাকরি হয়ে গেছে,,,,,,
কেয়া: ওহহহ,,,, আচ্ছা আমি আসি তাইলে,,,,
রাহাত: হুম আসুন,,,,,
.
কেয়া রাহাতের রুম থেকে বেরিয়ে চলে আসলো,,,,,
সৌরভ বাইরে দাঁড়িয়ে আছে,,,,,,
কেয়া কে দেখেই এগিয়ে গেল,,,,,
সৌরভ: কি,,,, চাকরিটা হয়েছে,,,,
কেয়া: হুম,,, হইছে,,,, কাল থেকে আসতে বলছে,,,,
সৌরভ: সত্যি,,,,,,
কেয়া: হুম,,,, আজ আমি আসি,,,, কাজ আছে কিছু,,,,,
সৌরভ: থ্যাংকস,,,, আমার কথায় সাড়া দেওয়ার জন্য,,,,,,
সৌরভের কথায় কেয়া মুচকি হেসে বেরিয়ে গেলো,,,,,
সৌরভ ও ওখানে কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকে,,,,,চলে গেল,,,,,,
অফিস শেষ করে,,,, সৌরভ আর রাহাত বাড়ির দিকে রওনা দিলো,,,,,,
রাহাত: কাল রাতে কখন আসছিস রে,,,,
সৌরভ: কেন তোর মনে নেই,,,,
রাহাত: মনে থাকলে কি আর তোকে জিজ্ঞেস করতাম,,,,,
সৌরভ: থাকবে কিভাবে,, এত নেশা কেউ করে,,,, কি একটা খারাপ অবস্থা হয়েছিল,,,,
রাহাত: কেন কি হয়েছিল,,, আমার কিন্তু কিছুই মনে নেই,,,,
কালকে রাতের ঘটনা সবকিছু খুলে বলে রাহাত কে,,,,,
রাহাত: কি বলিস,,,,, আমার তো বিশ্বাসই হচ্ছে না,,,,
সৌরভ: তা কেন হবে,,,, এর চেয়ে তো খারাপ অবস্থা করিস প্রত্যেকদিন,,,,
তোকে নিয়ে আর কোথাও বের ই হবো না,,,,,, আন্টির মুখের দিকে একটু তাকাস,,,,,
রাহাত: মার আবার কি হলো,,,,,,,,
সৌরভ: এখনো মজা করতেছিস,,,,
প্রতিদিন আন্টি এভাবে তোর জন্য অপেক্ষা করে,,, রাত জেগে,,,, ভালো লাগে তোর,,,,
রাহাত: আচ্ছা বাদ দে এসব,,,, আজকে কোথায় যাবি,,,,
সৌরভ: তোর সাথে আর কোথাও যাবো না,,,,,,
রাহাত: কেন যাবিনা,,, আর এরকম করবো না চল,,,, কম করে নেশা করব,,,,,
সৌরভ: সন্ধ্যায় দেখা যাবে,,,,,
সৌরভ: হুম,,,,,
.
সন্ধ্যার দিকে রাহাত গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে পড়ে,,,, সৌরভের বাড়ির দিকে,,,,, ওকে নিয়ে আসতে,,,,
কানে হেডফোন লাগিয়ে গান শুনতে শুনতে ডাইভিং করছিল রাহাত,,,,,
হঠাৎ ফোনটা বেজে ওঠে,,,,,,,
রাহাত তাকিয়ে দেখল আননন নাম্বার,,,,,,
বিষয়টা রাহাতের কাছেও অবাক ই লাগলো,,,,,
কারণ আননন নাম্বার থেকে ওর কাছে বেশি ফোন আসে না,,,,,,,
ফোনটা রিসিভ করতেই,,,, চমকে যায় ও,,,,,
.
চলবে,,,,
No comments
info.kroyhouse24@gmail.com