Breaking News

গল্পঃ ভাবির অহংকারী বোন । পর্ব - ১০



আমিঃ পাগল হয়ে গেলে নাকি সবাই?

আম্মুঃ তুই তাহলে ফাঁদে পা দিলি..
আমিঃ কিসের...?
আম্মুঃ তোকে খাওয়ানোর জন্য...
আমিঃ মানে বুঝলাম না...
ভাবিঃ আমি বলছি..তুমি নাকি খাবার খাও না তাহলে এতগুলো কিভাবে খেলে..?
আম্মুঃ আমার তো বিশ্বাস হচ্ছে না যে এতগুলো খাবার খেলো...
ভাবিঃ দেখতে হবে না বুদ্ধিটা কার ছিল।
আমিঃ আমার মাথায় কিছুই ঢুকছেনা, কেউ কি একটু খোলসা করে বলবে এখানে কি হয়েছে...?
আম্মুঃ তোকে খাওয়ানোর জন্য তোর ভাবি এসব করেছে।
আমিঃ কী করেছে..

ভাবিঃ এটাও আমি বলছি, আমি আম্মর থেকে সব শুনেছি, তুমি ঠিকমতো খাওয়া-দাওয়া করো না আর এটাও জেনেছি যে তোমার জিদটা একটু বেশি। আমি এটাই কাজে লাগিয়েছি।
আমিঃ মানে...
ভাবিঃ কোন মানে না, আমি আম্মুকে বলেছিলাম যেন তোমাকে রাগিয়ে দেয় আর সেটাই হলো তুমি রাগ করে জেদের বশে কতগুলো খাবার খেয়ে নিলে।
আমিঃ তার মানে তোমরা তখন এই বিষয় নিয়ে কথা বলছিলে আর আমি আশাতেই সবাই চুপ হয়ে গেল...
আম্মুঃ হ্যাঁ,,,
আমিঃ এটাই শেষ আর খাওয়াতে পারবে না।
ভাবিঃ দেখা যাবে..

আমি আর ওখানে এক মুহূর্ত থাকলাম না। আমার সাথে এতো বড় বাটপারি..?
আমি যখনই সিড়ির কাছে আসছি, তখনই পিছন থেকে কারোর ডাক পড়ল তাকিয়ে দেখি সাগর আর রাহাত হাজির...
আমিঃ তোরা নাকি আসবিনা তাহলে আসলি কেন?
সাগরঃ এই যে আছে না একটা জোর করে নিয়ে আসলো।
আম্মুঃ এসে ভালোই করেছো, আমি তোমাদেরকে আসতে বলতে চেয়েছিলাম,, আচ্ছা ভিতরে যাও
আমরা তিনজন ভেতরে চলে এলাম
রাহাতঃ সাদিয়ারা এখনো আসেনি?
আমিঃ না...
রাহাতঃ সত্যি ওই মেয়েগুলো আসবে তো?
আমিঃ জানিনা..
সাগরঃ কোন মেয়েগুলো?
রাহাতঃ সাদিয়ার সাথে আরও কিছু মেয়ে আসার কথা ছিল।
সাগরঃ ও এইবার বুঝতে পারলাম, তুই এখানে আসার জন্য এত লাফাচ্ছিচ কেন,, তাহলে এই ব্যাপার?
রাহাতঃ হ্যাঁ তোকে যদি বলে দিতাম তাহলে তুই আসতি না।
সাগরঃ আচ্ছা তুই কি কখনো ভালো হবি না?
সব সময় মেয়েদের পেছনে ঘোরা ছাড়া আর কোন কাজ পাস না,,,

রাহাতঃ আমি কি তোদের মত নিরামিষ নাকি...?
সাগরঃ তুই নিরামিষ কাদের বললি?
রাহাতঃ তোদের কেই বললাম.. তা ছাড়া আর কাদের বলবো..
সাগরঃ এটা কিন্তু ঠিক বললি না, একদিন দেখবি তুই এই মেয়ের চাক্করে পরে শেষ হয়ে যাবি,, বুঝেছিস?
আমিঃ ও তো আজকেই ধরা খেয়ে গেছে। মেয়ে টেয়ে কিছুই আসছে না শুধু সাদিয়া। এগুলো তোদের আনার জন্য বলেছিলাম।
সাগরঃ ঠিক হয়েছে এইবার ঠ্যালা সামলা,,,
আমিঃ আমি জানতাম যে রাহাতকে যদি বলি আমাদের বাসায় ময়দা সুন্দরীরা আসছে, তাহলে রাহাত ডানা ছাড়া উড়তে উড়তে চলে আসবে। আর রাহাত আসলে তোকে নিয়ে আসবে...
রাহাতঃ ওই শালা তুই এত দূরে গেছিস,,, ধর শালারে..

আমি দৌড়ে ওয়াশরুমে গিয়ে দরজা আঁটকিঢে দিলাম।
রাহাত দরজা ধাক্কাচ্ছে বাইরে থেকে। একটু পর আর কোনো সাড়া পেলাম না আস্তে করে দরজা খুলে দেখি কেউ নেই।
বাইরে এসে দেখি ওরা নিচে আর সাদিয়ারা চলে এসেছে আমি আর নিচে গেলাম না রুমের মধ্যে বসে রইলাম।
সাগর আর রাহাত ভিতরে উঠে এলো....
রাহাতঃ এখন কি করবো..?
আমিঃ ভালো লাগছে না এখন ফাজলামু করিস না।
সাগরঃ ভাবি চলে এসেছে এখন সবকিছুই ভালো লাগবে।
আমিঃ ভাবি মানে...

সাগরঃ ভাবি মানে সাদিয়া আর সাদিয়া মানে ভাবি..
আমিঃ দেখ একদম বাল পাকনামি করবি না,,
সাগরঃ এখানে আবার ওসব আসলো কেন...?
আমিঃ যাই করিস আপাতত কোনো মেয়েকে নিয়ে আমার সাথে ফাজলামি করবি না।
রাহাতঃ সেটা সময় হলেই বুঝতে পারবি।
আমিঃ যেটা বললাম মাথায় রাখিস।
রাহাতঃ হ থাকবে। চল নিচে যাই,,
আমিঃ এখন না..

রাহাতঃ এখন না মানে..? সবাই নিচে আর আমরা এখানে বসে থাকবো..?
সাগরঃ বুঝেছি তো তুই যাবি হচ্ছে সাদিয়ার জন্য।
রাহাতঃ আরে না, সাদিয়া তো শাকিবের বউ আর আমাদের ভাবী। ভাবীর দিকে তাকিয়ে লাভ নেই....
আমিঃ দেখ.......
রাহাতঃ দেখাদেখি পরে, আগে নিচে চল...
আর কিছু বলতে না দিয়েই হাত ধরে টেনে বাইরে নিয়ে গেল।
নিচে যাওয়ার পর সাদিয়া আমার সাথে স্বাভাবিক ভাবেই কথা বলছে। এতে বেশ অবাক হলাম....
সাদিয়াঃ কেমন আছেন বেয়াই সাব...?
আমিঃ ভালো, আপনি কেমন আছেন?
সাদিয়াঃ দেখতেই তো পাচ্ছেন, তা কাল আমাদের বাসা থেকে কাউকে না বলে এভাবে চলে আসলেন কেন?
আমিঃ এমনি ভালো লাগছিলো না।
সাদিয়াঃ হয়েছে আর বলতে হবে না, আমি জানি..
আমিঃ জানলেই ভালো...

আমি আর কথা বাড়ালাম না পুরা শরীরে যেন শরীর কম্পন হচ্ছে। এমনিতেই মেয়েদের সামনে দাঁড়িয়ে কথা বলতে পারিনা আর ভালবাসার মানুষের সামনে দাঁড়িয়ে তো আরো না। হ্যাঁ আমি সাদিয়া কে পছন্দ করে ফেলেছি। এক কথায় ওকে ভালোবেসে ফেলেছি..
এরপর থেকে সাদিয়া আমার সাথে ভালোভাবে কথা বলে। হাসি-ঠাট্টা মজা মাস্তি সবকিছুই স্বাভাবিকভাবে করতে লাগল। বিয়াই বিয়াইনের যেমন সম্পর্ক হওয়া উচিত ঠিক এরকমটাই চলছে।
সাদিয়ার সাথে এভাবে কথা বলতে বলতে অনেকটাই ফ্রি হয়ে গিয়েছি। এখন সাদিয়ার সাথে কথা বলতে গেলে আর কাপাকাপি করে না। কিন্তু অন্য কোন মেয়ের সামনে গেলেই দাঁড়িয়ে যায়..
আমার গায়ের লোম..

আমি ধীরে ধীরে সাদিয়ার প্রতি আরও দুর্বল হতে শুরু করেছি।
আরো গভীরভাবে ভালবাসতে শুরু করেছি..
কথা বলতে বলতে সাদিয়া এখন এতটাই ফ্রি ভাবে কথা বলে যে মাঝে মাঝে মনে হয় সাদিয়াও আমাকে ভালোবাসে। কিন্তু বলতে পারেনা আমার মতই।
আমি যে ওকে পছন্দ করি বা ভালবাসি সেটা রাহাত সাগর ওরা দুজনই জানে।
হঠাৎ একদিন কলেজে থাকা অবস্থায় একটা ছেলে এসে সাদিয়াকে প্রপোজ করে সবার সামনে।
ছেলেটার নাম সিজান, আমাদের ক্লাসমেট। প্রপোজ করায় সাদিয়ার তেমন কোন প্রতিক্রিয়া দেখায়নি।
দেখে এমন মনে হল যেন সাদিয়া প্রপোজালটা গ্রহণ করে নিয়েছে। ছেলেটা একদমই ভালো না অনেক মেয়ের জীবন নষ্ট করেছে।
দেখেই মেসেজটা চরম আকারে বিগড়ে গেল আমি,
সাগর আর রাহাত তখনই সাদিয়ার কাছে এসে দাঁড়ালাম..

সাগরঃ কি হচ্ছে এখানে..?
সাদিয়াঃ কোথায় কি হচ্ছে...?
আমিঃ সিজান একটু এদিকে আসবি..?
সিজানঃ কেনো..?
আমিঃ একটু কথা আছে এখানে বলা যাবে না..
আমি সিজানকে সাথে নিয়ে একটু সাইডে চলে আসলাম।
আমিঃ তুই সাদিয়াকে প্রোপোজ করলি কেন..?
সিজানঃ ভালো লাগে তাই করেছি, তাতে কি হয়েছে..?
আমিঃ শোন যা করেছিস, করেছিস সাদিয়ার পিছন ছেড়ে দিবি।
সিজনঃ আমাকে কি তোর গোলাম পেয়েছিস, যে তোর কথা শুনে চলতে হবে..?
আমিঃ শোন তোর সাথে আমার আগেও কোন ঝামেলা ছিলনা আর এখনো বাধাস না। একটা কথা বলে রাখি আমি সাদিয়া কে পছন্দ করি।
সিজানঃ সাদিয়া জানে..?

আমিঃ না..
সিজানঃ সাদিয়া তোকে পছন্দ করে..?
আমিশ জানিনা..
সিজানঃ তাহলে আর কি.. তুই তোর রাস্তায় চল আমি আমার রাস্তায়। সাদিয়া যাকে ভালবাসবে অন্যজন তাকে ছেড়ে দিবে।
আমিঃ তুই সাদিয়ার থেকে দূরে দূরে থাকবি।
সিজানঃ তুই কে রে তোর কথা মতো চলবো..?
আমিঃ আমার কথা মত চলতে হবে না তুই যার কথা মত চলতে পারিস তাকেই বলব।
সিজানঃ কাকে বলবি..? কার ভয় দেখাস আমাকে...?
আমিঃ দাঁড়া...

আমি আমার পকেট থেকে মোবাইলটা বের করে ভাইয়াকে ফোন দিলাম। আর সাদিয়াকে বিরক্ত করার ঘটনা খুলে বললাম। ভাইয়া বলল 'দাড়া আমি ব্যাপারটা দেখছি আর তোরা যেখানে আছিস ওখানেই থাক। ছেলেটাকে যেতে দিসনা...'
একটু পরে দেখি কয়েকজন বড় ভাই আমাদের দিকে আসছে। আমাদের কাছে এসে কোন কথা না বলে সিজানের কলার ধরে টেনে নিয়ে গেল...
ক্যালাইবে হয়তো...

ওইদিকে সাদিয়া সাগর আর রাহাতের কথা-<©
সাগরঃ ওই ছেলেটা তোকে প্রপোজ করলো আর তুই কিছুই বললি না..? দেখে তো মনে হলো গ্রহণ করেনিলি।
সাদিয়াঃ কোথায় গ্রহণ করে নিলাম?
রাহাতঃ আমরা তো তাই দেখলাম তুই ছেলেটাকে কিছুই বললি না।
সাদিয়াঃ আরে এটা তো কমন ব্যাপার। এরকম অনেক আছে আমার পিছনে, এসব ক্ষণিকের লাভার,,,
সাগরঃ কিন্তু একজন তোকে সত্যি ভালোবাসে।
সাদিয়াঃ কে সে?
সাগরঃ তোর কাছেরি একজন।
সাদিয়াঃ আর এ কে, বলবিতো..
রাহাতঃ শাকিব, শাকিব তোকে ভালবাসে ও তোকে বলতে ভয় পায় যদি
তুই ওর সাথে কথা বলা বন্ধ করে দিস। সেই জন্য।

সাদিয়াঃ আমার তো বিশ্বাসই হচ্ছে না।
সাগরঃ সত্যিই তোকে ভালবাসে। কিন্তু বলতে পারেনা। হতে পারে একটু দেখতে কালো, কিন্তু ভালবাসাটা চেহারা দিয়ে হয়নারে ভালবাসতে সুন্দর মনের দরকার হয়, যেটা ওর আছে।
সাদিয়াঃ ওকে আমার সামনে এসে বলতে বলিস, তারপর ভেবে দেখবো।
সাগরঃ ও তোর সামনে এসব কথা বলতে ভয় পায়, শুধু তুই ওর সাথে ফ্রি হয়ে কথা বলেছিস বলে একটু কথা বলতে পারে তোর সাথে। আচ্ছা আমরা ওকে তোকেই বলতে বলবো, কিন্তু তুই ওকে কষ্ট দিস না প্লিজ।
সাদিয়াঃ আমার সামনে এসে বলতে বলিস....
তারপর সাগর আর রাহাত ওখান থেকে চলে আসে আমার কাছে,,,,,
সাগরঃ তুইকি সাদিয়াকে সত্যিই ভালবাসিস?
আমিঃ তোরা জানিস না..?
সাগরঃ যেটা বলছি সেটার উত্তর দে...
আমিঃ হ্যাঁ...
সাগরঃ সাদিয়া কে আপন করে চাসতো...?
আমিঃ হ্যাঁ... কিন্তু...
সাগরঃ কোন কিন্তু না, তুই গিয়ে সাদিয়াকে ভালোবাসার কথাটা জানা...
আমিঃ আমি পারবোনা..

সাগরঃ পারবি না মানে..? সাদিয়ার পিছনে অনেক ছেলে পড়ে আছে যেদিন তোর সামনে দিয়ে অন্য কেউ সাদিয়ার হাতে হাত রেখে ঘুরে বেড়াবে তখন বুঝবে কেমন লাগে।
আমিঃ কিন্তু সাদিয়া যদি আমাকে ফিরিয়ে দেয়..?
সাগরঃ আমরা সাদিয়াকে তোর ব্যাপারে সবকিছু বলেছি।
আমিঃ কিহ.? কাজটা কিন্তু ঠিক করিস নি...
সাগরঃ চুপ হারামী, আর কত অপেক্ষা করবি তুই..?
আমিঃ জানিনা...
সাগরঃ সবকিছুই বলেছি, সব শুনে সাদিয়া বলেছি তোকে ওর সামনে গিয়ে ভালোবাসার কথাটা বলতে।
আমিঃ কিন্তু....

সাগরঃ চুপ কর, আর কোন কথা বলবি না। তুই সাদিয়াকে তোর মনের কথা জানাতে চাইলে জানিয়ে দিবি আর নাহলে ওর পেছনে ঘুরা ছেড়ে দিবি। এভাবে কুতকুত করলে হবে না। যা করবি ঝনাৎ ফচাত।
আমিঃ কিন্তু আমার তো ভয় করছে..
সাগরঃ তোর ভয়ের গুষ্টির পিন্ডি...
আমিঃ কিন্তু কিভাবে বলব..?
সাগরঃ সেটা আমরা ব্যবস্থা করব।
আমিঃ তাহলে ঠিক আছে, কিন্তু....
সাগরঃ আবার কিন্তু...? আরে তোর থেকে কত কালো ছেলেরাও সুন্দর মেয়েদের সাথে প্রেম করে আর তুই..
আমি আর কথা বাড়ালাম না। সাগর আজ রেগে গিয়েছে। কলেজ থেকে বাড়ি চলে আসি সেদিন কার মতো।
রাতে ঘুম হয়নি ঠিকমতো, সারাক্ষণ সাদিয়ার কথাই মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছিল,,, সাদিয়া কি বলবে..?

পরের দিন...
কলেজে এসেই সাগর সাদিয়ার সাথে গিয়ে কথা বলল। এর মাঝে আমি আর সাদিয়ার সাথে তেমন কথা বলিনি। ভয় হচ্ছিল।
সাগর আমার কাছে এসে বলল কলেজ শেষে কলেজের পেছনে সাদিয়ার সাথে দেখা করতে।
আমি আর কিছু না ভেবে রাজি হয়ে গেলাম। আজ যা হবার হবে..
ক্লাসে সাদিয়া আমার দিকে অনেকবার তাকিয়েছে।
একেএকে ক্লাসগুলো শেষ করে বন্ধুরা সবাই একসাথে বের হলাম। সাগর আর রাহাত আমাকে ধরে নিয়ে কলেজের পিছনে দিয়ে আসলো।
একটু পর সাদিয়া ও আসছে..
সাদিয়াকে দেখেই আমার দাড়িয়ে গেল,
ভয়ে শরীরের লোম।
কাপাকাপি শুরু করেছে, শরীরের রক্ত চলাচলের গতি বেড়ে যাচ্ছে।
অবশেষে সাদিয়া আমার সামনে এসে হাজির হলো..
সাদিয়াঃ বলো কি বলতে চাও..?

আমিঃ আ, আমি আসলে,,, জানিনা সাগর তোমার কাছে কি বলেছে, কিন্তু ও যাই বলুক একটা কথা সত্যি,, আমি তোমাকে পছন্দ করি প্রথম থেকেই।
কথাটা বলেই হাটুগেড়ে বসে হাত বাড়িয়ে দিলাম সাদিয়ার দিকে
সাদিয়াঃ হুম...
আমিঃ জানি তোমার পিছনে অনেক ভালো ভালো ছেলে লাইন দিয়ে আছে। আমি তোমাকে ভালোবেসে ফেলেছি প্রথম যেদিন ভাবির ছবির সাথে তোমার ছবি দেখেছি, সেদিনই তোমাকে ভালো লেগেছে...
এটুকু বলাতেই সাদিয়া এক ঝটকায় আমার হাতটা দূরে সরিয়ে দেয়...
আমিঃ কি হলো..?
সাদিয়াঃ কি হলো এখনো বুঝতে পারছিস না..? ওয়েট কর এখনই বুঝতে পারবি..
ঠাসসসসস্
একটা লাগিয়ে দিলো। আমি খুব বেশি একটা অবাক হলাম না, কারণ রাতে আমি দুইটার জন্যই প্রস্তুতি নিয়েছি....

সাদিয়াঃ এবার বুঝতে পেরেছিস..?
আমিঃ..... ( মাথা নিচু করে আছি)......
সাদিয়াঃ কি ভেবেছিস, তোর সাথে ভালোভাবে কথা বলেছি বলে, ভালো ব্যবহার করেছি বলে তোকে আমি পছন্দ করি...? এমনকি তোর প্রস্তাবে রাজী হতে হবে..?
এতই যদি জানিস আমার পিছনে অনেক ভালো ছেলে লাইন দিয়ে পড়ে আছে, তাহলে তুই এটা ভাবলি কি করে যে ওই ভালো ছেলেদের পাত্তা দেয় না আর তোকে পাত্তা দেবে..? নিজের চেহারাটা আয়নায় দেখেছিস..? চিংগিসখান.. ফু দিলে উড়ে যাবে...

আমিঃ..( কোন কথা বলছি না মাথাটা নিচু করে আছি। চোখ দিয়ে পানি ঝরছে।)..
সাদিয়াঃ তুই আমার আপুর দেবর বলে তোর সাথে কথা বলি, না হলে তোর মত ছেলেদের দিয়ে আমি আমার জুতা পরিষ্কার করাই। আমি তোকে সবার সামনে থাপ্পড় টা দিতে পারতাম কিন্তু না তুই দুলাভাইয়ের ভাই বলে সবার সামনে কিছু বলিনি। দুলাভাইয়ের এই কলেজে এখনো অনেক সম্মান আছে, এখনো দুলাভাইয়ের কথায় এখানে প্রায় সবকিছুই হয়। শুধুমাত্র তার মান রক্ষা করার জন্য তোকে কলেজের পিছনে নিয়ে আসা। আমারতো শুনেই মাথা গরম হয়ে গিয়েছিল কাল। কত্ত বড় শাহস তোর..
যাই হোক, তোর সাথে অত কথা বলার সময় আমার কাছে নেই।
আমিঃ..( চুপচাপ কথাগুলো শুনছি)...
সাদিয়াঃ তোর সাথে এতদিন ভাল ব্যবহার করেছি না, এইবার থেকে দেখিস ব্যবহার কেমন হয়....
তারপর থেকেই সাদিয়া আমার সাথে খারাপ ব্যাবহার করে। এই কথাটা ভাবিকে বলে দেওয়ার হুমকি দেয়।

কল্পনা শেষ..
বাস্তবে আমার আর মিথিলার কথা সেই ছাদে বসে...
মিথিলা অঝোরে কেঁদে চলেছে...
আমিঃ বিশ্বাস কর আমি অনেক ভালোবেসেছিলাম সাদিয়াকে কিন্তু,,,,
( কথাটা পুরোপুরি ভুলতে পারলাম না. চোখ দিয়ে পানি গড়িয়ে পড়ল। মিথিলা কান্না করেই চলেছে)
আমিঃ এখনো ভুলতে পারিনি সাদিয়াকে। ওর জায়গায় এখনো কাউকে বসাতে পারিনি আর কখনও পারব কিনা জানিনা।
মিথিলাঃ কথাগুলো আমাকে আগে জানাতে পারতি..?
আমিঃ প্রথমে কাউকে জানাতে চাই ছিলাম না। আমার কষ্টেগুলো নিজেই বয়ে বেড়াতে চেয়েছিলাম। কিন্তু এখন তোকে না বলে পারলাম না...

বাহ্....
পিছন থেকে কথার আওয়াজ আশাতে তাকিয়ে দেখি মারুফ ভাই দাঁড়িয়ে আছে...
আমি আর মিথিলা দুজনই উঠে দাঁড়িয়ে গেলাম ভয় লাগছে খুব। এতো রাতে মারুফ ভাই এখানে..
আমিঃ ভাইয়া আপনি...? আমরা..
মারুফ ভাইঃ থাক আর বলতে হবে না.....

চলবে...

No comments

info.kroyhouse24@gmail.com