মন্ত্রী যখন এক্স বউ । পর্ব - ০১
সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠে ফ্রেশ হয়ে কলেজের উদ্দেশ্যে বেরিয়ে পরলাম।
রাস্তায় রিকশার জন্য অপেক্ষা করছি কিন্তু একটা খালি রিকশা ও পাচ্ছি না।
এদিকে আজ ঘুম থেকে উঠতে অনেকটা দেরি হয়ে গেছে। সকালে কিছু খাওয়া দাওয়া করা হইনি।
এমনিতেই আমি সকালে তেমন কিছু খাইনা।
.
একটা রিকশা আসতে দেখলাম।আমি হাত নেরে দারাতে বললাম।
-কোথায় যাবেন মামা??{রিকশা ওয়ালা}
-ঢাকা ইউনিভার্সিটির সামনে যাবে??{আমি}
-যাবো তবে ভাড়া ৩০ টাকা দিতে হবে।{রিকশাওয়ালা}
-ঠিক আছে চলো।{আমি}
*আপনাদের তো আমার পরিচয় দেওয়া হয়নি আমি। আমি নিলয়।
ঢাকাতে থাকি।আমার পরিবা....র। এটা গল্পের সাথে থাকুন যেনে যাবেন।
*কথা বলতে বলতে ভার্সিটির সামনে চলে এসেছি।
যেই আমি গেট দিয়ে ঢুকতে যাবো, ঠাসসস ঠাসসস।
*আরে আপনারা কি ভাবছেন আমার গালে চড়টা পরেছে।আরে না,
আমি কি পাগল নাকি বিনা দোষে মেয়েদের হাতে মার খাবো।
কলেজের মাঠে একটা ছেলে একটা মেয়েকে প্রোপোজ করতে গিয়েছিলো,
আর মেয়েটা ছেলেটাকে....।থাক আর বলবো না। আপনারা বুজেই গেছেন।
সেখান থেকে সোজা নিজের ক্লাসরুমে চলে এলাম।স্যার এখন আসেনি বেচেঁ গেলাম।
সময় মত পৌছাতে পেরেছি।
*আমি ক্লাসের পেছনের সারির একটা ব্রেঞ্চে গিয়ে বসে পরলাম।
এই কলেজে এসেছি প্রায় ১ বছর হয়ে গেলো,তবে সবার মতো আমার তেমন কোন বন্ধু নেই।
বন্ধু বলতে আছে মাত্র ২ জন।তারা ও আজ আসেনি তাই একা একাই বসে আছি।
আর আমার মত ক্ষেত ছেলের সাথে কেই বা বন্ধুত্ত করতে চাইবে।
এখানে সবাই ধনি বাবা মার আদুরে সন্তান।
.
স্যার ক্লাসে প্রবেশ করলো। আমাকে দেখেই বললো
নিলয় গতকাল তুমি আসো নি কেন???{স্যার}
দারিয়ে জবাব দিলাম, কাল একটু অসুস্থ ছিলাম তাই আসতে পারিনি।{আমি}
এখন শরীর কেমন{স্যার}
জি ভালো{আমি}
ঠিক আছে বসো{স্যার}
*কলেজের বন্ধু না থাকলে ও স্যারদের সাথে আমার সম্পর্কটা খুব ভালো।ভালো ছাত্র হয়তো তাই।
স্যার পরানো শুরু করলো তখনই দরজার সামনে কেউ বলে উঠলো," আসতে পারি স্যার"।
কথাটা শুনেই দরজার দিকে তাকালাম।
আমি দরজার দিকে তাকিয়ে অবাক হলাম!!!
*একি এটা তো সেই মেয়েটা যে মাঠে ছেলেটাকে থাপ্পড় মারলো। এতাহোলে আমাদের সাথে পড়ে। একে তো আগে কখন দেখিনি। মেয়েটা দেখতে মাশআল্লাহ। একদম দুধে আলতা গায়ের রঙ।চেহারা টাও খুব সুন্দর। তবে ওর ড্রেসআপ দেখেই বুঝে ফেলেছি এ কেমন মেয়ে।
*মেয়েটা একটা টাইট জিন্স আর একটা শার্ট পরেছে।যাকে এখন বলে স্টাইল।
-কে তুমি আগে তো এই ক্লাসে তোমাকে দেখিনি। নাম কি তোমার?? {স্যার}
-স্যার আমি মিম সরকার।{মিম}
-ও তুমিই তাহলে রাইহান সরকারের একমাত মেয়ে, ভেতরে এসো মা।{স্যার}
*ও তাহলে মেয়েটার নাম মিম আর মেয়েটা রায়হান সরকারের মেয়ে।এজন্য এতো দেমাগ।
রায়হান সরকার এই শহরের টপ বিজনেস ম্যানদের মধ্যে একজন।
সবাই শোন, এ হচ্ছে মিম সরকার, রায়হান সরকারের মেয়ে। আমি চাই তোমরা সবাই ওর সাথে বন্ধুত্ত পুর্ন আচরন করো।{স্যার}
*স্যারের কথা শুনে আমি আমার পড়ায় মোনযোগ দিলাম। আমি আমার মতো বসে পরছিলাম। আর মিম সামনে কোন সিট ফাকা না থাকাই পেছনে আমার কাছে এসে বসলো।
তার চেহারায় বিরক্তির ছাপ ফুটেছে তা বোঝা জাচ্ছে। তাই আমি কিছুটা সরে বসলাম তার থেকে।
স্যার আবার পড়ানো শুরু করলো।একে একে সব গুলো ক্লাস শেষ করে টিউশনি করাতে গেলাম।আমি পপড়াশোনার পাশাপাশি ৪-৫টা টিউশনি করায় এতে আমার মাসটা ভালো ভাবেই কেটে যায়।
টিউশনি শেষ করে ফিরতে বিকেল ৫ টা বেজে গেলো। আমি একটা ফ্ল্যাটে ভাড়া থাকি। বাড়িওয়ালা চাচা অনেক ভালো মানুষ বলেই আমাকে আশ্রয় দিয়েছে।
ফ্ল্যাটে এসে আগে জামা- কাপড় ছেরে ফ্রেশ হয়ে নিলাম।কিচেনে গেলাম দেখলাম কিছু রান্না করা হয়নি। রান্না করতে ও ভালো লাগছে না তাই ভাবলাম বাইরে থেকে খাবার নিয়ে আসি।
দুই প্যাকেট বিরিয়ানি নিয়ে আসলাম।এখন একটা খাবো আর একটা রাতের জন্য।
খাওয়া দাওয়া শেষ করে ছাদে গেলাম। কিছুক্ষন পর নেমে আসলাম। সন্ধ্যার দিকে পড়তে বসলাম। রাত ৮ টা পর্যন্ত পড়ে খাওয়া দাওয়া করে বিছানায় গা টা এলিয়ে দিলাম।
কিছুক্ষন ফেসবুকে ঘুরে ফোনটা চার্জে লাগিয়ে ঘুমিয়ে পরলাম।
*সকালে আজানের ডাকে ঘুম ভাঙলো। ফ্রেশ হয়ে ওযু করে নামায পরতে মসজিদে গেলাম।
নামায শেষ করে বাড়ির দিকে যেতে লাগলাম। সকালের এই ঠান্ডা হাওয়াটা মনকে একদম শান্ত করে দেই। আমি প্রতিদিন সকালে নামায পরতে মসজিদে আসি। বাড়ি ফিরে হাল্কা কিছু রান্না করলাম।
খাওয়া দাওয়া শেষ করে কলেজের জন্য বেরিয়ে পরলাম।
*আজ হাতে সময় থাকাই হাটতে হাটতে রউনা দিলাম। আমার ফ্ল্যাট থেকে কলেজ হেটে আসতে ১৫ মিনিট সময় লাগে। আর শুধু শুধু টাকা খরচ করার কি দরকার।
নিজে যখন ইনকাম করবা তখন বুঝবা টাকা কি জিনিস।এখন বাবার টাকাই ফুর্তি করো তাই বোঝো না।{ কেউ খারাপ ভাবে নেবেন না}
কলেজে সঠিক সময় পৌছে গেলাম। সসরাসরি ক্লাস রুমে চলে এলাম। দেখি আমার বন্ধু রাকিব পেছনের ব্রেঞ্চে বসে আছে। রাকিব আর তাঞ্জিম আমার একমাত্র বন্ধু এই ভার্সিটিতে। আমি রাকিবের কাছে গিয়ে বসতে বসতে বললাম
-কাল আসলি না কেন??{আমি}
-কাল বাসায় একটু কাজ ছিলো তাই আসতে পারিনি।{রাকিব}
-তাঞ্জিমের কি অবস্থা দুইদিন ওর কোন খোজ খবর পাচ্ছি না।তুই কিছু জানিস ওর ব্যাপারে।
-না রে আমাকে ও তো কিছু বলেনি।ফোন ও ধরছে না।
*আমরা কথা বলতে বলতে স্যার ক্লাসে চলে এলো। আমরা মনযোগ দিয়ে ক্লাস করতে লাগলাম।সব ক্লাস শেষ করে রাকিব বাসাই চলে গেলো আর আমি টুইশনি করাতে গেলাম।
টুইশনি করানো শেষে বাড়ি ফিরে আসলাম। ফ্রেশ হয়ে সকালের রান্না করা সব কিছু গরম করে খাওয়া দাওয়া পর্ব শেষ করলাম।
অন্যদিকে,
চৌধুরি ম্যানসনে সবাই ছোটাছুটি করছে, কেউ তাকে ধরতেই পারছে না। যে দৌড়া দৌড়ী পারছে সে হচ্ছে, চৌধুরি গ্রুপ অফ কোম্পানির একমাত্র উত্তরাধিকারি "রাইসা"। সে নাকি এখন খাবে না তাই সবার থেকে পালিয়ে বেরাচ্ছে। পেছন থেকে কেউ হঠাৎ তাকে ধরে ফেলে। সে আর কেউ না রাইসার মা,নিলা"
*নিলা একজন মন্ত্রী এছারা তার আরেকটা পরিচয় হলো সে চৌধুরি গ্রুপ অফ কোম্পানির একমাত্র ছেলের বউ।
-আম্মু এটা চিতিং। তুমি আমাতে ভয় পায়ে দিতো।
-আমার মামুনিটা ভয় পেয়েছে।মাম্মা সরি বলছে। মাম্মা আর এমন করবে না।এখন লক্ষি মেয়ের মত খেয়ে নাও।
- না আমি এখন থাবো না।
-মামুনি না খেলে কিন্তু দাদু রাগ করবে।
*দাদুর কথা শুনে রাইসা কিছুটা ভয় পায়।তাই তার সব কথা শোনে।
খাওয়া দাওয়া করে ঘুমাতে গেলো রাইসা। পাশে তার মা তার মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছে।
-আম্মু বাবা কবে আসবে আমার কাতে।আমি যখন দাদুকে জিজ্ঞেস করি বলে সে কাজে গেছে, কাজ শেষ হলে ফিরে আসবে।{রাইসা}
*তার বাবার কথা শুনে নিলার মুখটা ফ্যাকাশে হয়ে গেলো।
-কি হল আম্মু কিছু বললে না।
-হ্যা,মামুনি তোমার বাবার কাজ শেষ হলেই ফিরে আসবে। {নিলা}
-কবে শেষ হবে কাজ??{রাইসা}
-খুব তারাতাড়িই শেষ হবে। এখন আর কোন কথা না। ঘুমিয়ে পড়।{নিলা}
*রাইসা কে ঘুম পাড়িয়ে বেল্কনিতে গিয়ে দেরিয়ে পরলো নিলা।তার চোখ থেকে অনাবরত পানি ঝরে পরছে।
-আমার একটা ছোট্ট ভুলের জন্য আজ আমার মেয়েটার এই অবস্থা। কেন আমি তাকে অবিশ্বাস করতে গিয়েছিলাম।
-আমার পাপের শাস্তি আমার মেয়ে কেন ভোগ করবে। কত জাগায় খুজেছি কোথাউ পাইনি তোমাকে। কিন্তু আমি হাল ছারবো না। আমি তোমাকে খুজে বের করবই। যেভাবেই হোক।{চোখের পানি মুছতে মুছতে }
এদিকে,
আমি রাতে কিছু পড়াশোনা করে খাওয়া দাওয়া করে ঘুমিয়ে পরলাম। সকালে তারাতাড়ি ঘুম থেকে উঠে নামায পরে এসে রান্না করে খাওয়া দাওয়া করে কলেজ চলে আসলাম।
কলেজ গেট দিয়ে ঢুকতে গিয়ে আমি যা দেখলাম......
চলবে...