Breaking News

মুখোশের আড়ালে। পর্ব - ০৪



কেউ একজন চুরি নিয়ে কর্নিয়ার দিকে ধীর পায়ে এগুচ্ছে। পিছন থেকে কর্নিয়ার ঘাড়ে চুরি দিয়ে আঘাত করবে, তার আগে কর্নিয়া তার ব্যাগ থেকে গুলিটা বের করে চেয়ার থেকে উঠে সামনে থাকা লোকটির দিকে তাক করে ধরে রাখে।

(কর্নিয়া কপি শপে এসে দেখে ভিতরে কোন মানুষ নেই। শুধু সেখানকার স্টাফরা ছাড়া,কপি শপের ভিতরে খুব সুন্দর ভাবে ডেকোরেশন করা।কর্নিয়া একটা চেয়ারে বসে রাফিনের সাথে কলে কথা বলছিলো। তখনি কারো পায়ের আওয়াজ শুনে পিছনে না, তাকিয়ে কলে কথা বলার বান করে থাকে)
-- ছেলেটির হাত থেকে দ্রুত চুরিটা নিচে পড়ে যায়।
সে কর্নিয়ার দিকে তাকিয়ে বলে, বাহ তুমি খুবই সাহসী!

--সাহসের এখনই কিছুই দেখলি না।তোকে কে পাঠিয়েছে আমাকে মারার জন্য?বল নাহলে এই পিস্তলের সব গুলি তোর মাথায় করবো (কর্নিয়া)
--ছেলেটি কর্নিয়ার হাত ধরে গুলিটি নিচে নামিয়ে বলে আগে শান্ত হয়ে বসো।
এই বলে ছেলেটি টেবিলের সামনে চেয়ারে বসে কর্নিয়ার উদ্দেশ্য বলে আরে তুমি দাঁড়িয়ে আছ কেনো? তুমি ও বসো, আগে পরিচিত হয় তারপর সবটা বলবো।
কর্নিয়া চেয়ারে বসতেই ছেলেটি হাত বাড়িয়ে বলে, হাই আমি আরহাম খান।
কর্নিয়া আরহাম খান নাম শুনে মনে মনে বলে ( আমি তো এর সাথে মিটিং করতে এসেছি,দেখে তো মনে হচ্ছে ও অনেক বড় খেলোয়াড়, কিভাবে এন্ট্রিটা নিলো,কোন ব্যাপার না,এতদিন তুই সাপ দেখেছিস, সাপের সাত পা দেখিস নি।)
কর্নিয়া অনিচ্ছা সত্তে ও একটা মুচকি হাসি দিয়ে আরহাম খানের সাথে হ্যান্ডশীপ করে বলে, হ্যালো আমি কর্নিয়া।

-- সরি, তোমার সাথে মজা করছিলাম। তুমি কিছু মনে করো নি তো?( আরহাম)
-- কর্নিয়া একটা মুচকি হাসি দিয়ে বলে, মনে করার কিছু নেই, আর আমিও সরি! আমিও আপনার সাথে মজা করছিলাম। (কর্নিয়া)
-- যে জন্য এখানে আশা সেটা নিয়ে কথা শুরু হক(আরহাম)
--হুম! আপনি ওই প্রজেক্টটা নিয়ে এত জামেলা কেনো করছেন?এই প্রজেক্টা এখন আমাদের হাতে, তার পর আপনি দাবি করছেন আপনাকে ফিফটি% সেয়ার দেওয়ার জন্য (কর্নিয়া)
--দেখ,তোমরা যেখানে এই প্রজেক্টটা নিয়ে কাজ করবে সে জায়গাটা আমার, আমি আমার সেয়ার না ফেলে,,কি করবো সেটা আমি নিজে ও জানিনা। এতে তোমাদের অনেক বড় ক্ষতি হয়ে যাবে(আরহাম)
--- ওহহ হুমকি দিচ্ছেন?(কর্নিয়া)

-- তোমরা যেটা ভাবো,তোমাদের কাছে সময় দশদিন আছে, তোমরা কি করবে? আমাকে ফিফটি% সেয়ার দিবে নাকি? প্রজেক্টটা আমি নিজে কিনে নিবো?(আরহাম)
--কর্নিয়া উঠে বলে দশদিন এখনো অনেক সময় আছে। এতটা ওভার কনফিডেন্স ভালো না। আপনার সাথে একবার যখন দেখা হয়েছে তাহলে আবার দেখে হবে।
এই বলে কর্নিয়া উঠে চলে যেতে নিবে আরহাম কর্নিয়ার হাত ধরে হেঁচকা টান দিতেই দুইজনে টাল সামালাতে না পেরে নিচে পড়ে যায়।
কর্নিয়ার গায়ের উপর আরহাম ,কর্নিয়া আরহামকে হাত দিয়ে ঠেলে বলে কি হচ্ছে এসব?
--তখনি কাঁচ ভাঙার আওয়াজ কর্নিয়ার কানে ভেসে আসতেই।
-- এটা কিসের আওয়াজ এই বলে যখনি উঠতে যাবে তখনি একটা গুলির শব্দ কানে ভেসে আসে।
কর্নিয়া উঠে দেখে এখান থেকে কিছুটা দূরে একটা বিল্ডিং এর ছাঁদ থেকে কেউ একজন এই দিকে রাইফেল তাক করে ধরে আছে। কর্নিয়া ভালো করে দেখা জন্য জানালার সামনে আসবে তার আগে লোকটি সব জিনিস প্রত্র গুছিয়ে বাহির হয়ে যায়।

কর্নিয়া কপি শপ থেকে বাহির হয়ে, ভালো করে চারপাশ দেখতে থাকে।
কর্নিয়ার পিছন পিছন আরহাম ও বেরিয়ে আসে।
-- সরি! তোমাকে ওই ভাবে টান দেওয়ার জন্য, আসলে তোমার সাথে কথা বলার সময় বাহিরে চোখ পড়তে একটা লোককে দূর থেকে এই দিকে রাইফেল তাক করে আছে দেখতে, আমি তোমার দিকে তাকিয়ে দেখি তোমার মাথার ডান পাশে একটা ছোট লাল আলো দেখতে পাই তখনি আমি বোঝে যায় এই লোকটি নিশানায় তুমি আছো।কে এইভাবে তোমাকে মারতে চাই? (আরহাম)
--কর্নিয়া আরহামের দিকে তাকিয়ে বলে,জানি না,কে সেই? এইভাবে লুকিয়ে আছে কেনো? ভিতুর ডিম একটা,সাহস থাকলে আমার সামনে এসে মারতো,কোন ব্যাপার না।(কর্নিয়া)

-- বাহহ তুমি তো দেখছি সে আগে মতো রয়ে গেলে,তাহলে তো খেলা জমবে( আরহাম)
--আপনি কি কিছু বলছেন?(কর্নিয়া)
-- না,না, কিছু না। তুমি সাবধানে থেকো। আবার তোমার উপর হামলা হতে পারে। (আরহাম)
--কর্নিয়া কিছু না বলে গাড়ি নিয়ে সোজা বেড়িয়ে য়ায়।
--আরহাম গাড়ির যাওয়ার দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসতে থাকে।
তখনি কানে হাতে দিয়ে ব্লুটুথ ওপরপাশের ব্যাক্তিকে বলে, আমাদের কাজ এখনো বাকি আছে।
-- আরে তুই এটা কি করলি? আমি এক্ষুনি তোর কাছে আসছি।( আরহামের বন্ধু ফাহাদ)
কর্নিয়া বাসায় আসতে আসতে সন্ধ্যা হয়ে যায়।
সে রাফিনকে তার সাথে ঘটে যাওয়া সব ঘটনা বলে।
কর্নিয়া ছাঁদের রেলিং ধরে দাঁড়িয়ে আছে। রাফিন এসে কর্নিয়ার পাশে দাঁড়িয়ে বলে, তোর কি মনে হয়? কে করতে পারে এসব?

-- জানিনা,কেউ তো আছে আমাকে মারতে চাই। (কর্নিয়া)
--কিন্তু কে হতে পারে? সে দিন ও আমাদের প্ল্যানটা নষ্ট করে দিয়েছে। (রাফিন)
-- কেউ তো আছে যে আমাদের সব কিছু খবর রাখে হয়তো আমাদের পরিচিত কেউ?(কর্নিয়া)
--হুম হতে ও পারে,আমাদের এমন একটা প্ল্যান করতে হবে। যে অজানা শত্রুটা সামনে চলে আসে। (রাফিন)
-- কর্নিয়া রাফিনকে জড়িয়ে ধরে বলে,আমি তোকে হারাতে পারবো না। বড্ড ভালোবাসি তোকে(কর্নিয়া)
--রাফিন ও কর্নিয়াকে জড়িয়ে ধরে বলে, আমিও তোকে খুব খুব ভালোবাসি।
( রাফিন আর কর্নিয়া বন্ধু হলে কি হবে, ওরা একে অপরের খুব ভালোবাসে, সাত বছর ওদের রিলেশন চলছে। এই ব্যাপারে এখনো কেউ জানে না।)
-- আমাকে এখন চলে যেতে হবে, যাচ্ছি সকালে দেখা হচ্ছে
--এই বলে রাফিন কর্নিয়ার বাসা থেকে বের হয়ে যায়।
কর্নিয়া আরো কিছুক্ষন ছাঁদে দাঁড়িয়ে থাকে, সে নিচে এসে খাবার খেয়ে লেপটপ নিয়ে কাজ করতে থাকে। অনেক রাত করে সে ঘুমিয়ে পড়ে।
অন্যদিকে

আরহাম বাসায় এসে তার বাবার(আইমান খানকে) জড়িয়ে ধরে বলে আই লাভ ইউ ডেড
-- আই লাভ ইউ মাই সান(আইমান)
বাহ আমাকে কেউ ভালোবাসে না। এটা শুনে আরহাম তার বাবাকে ছেড়ে পিছনে তাকিয়ে দেখে তার বোন আফিয়া মুখ গোমড়া করে দাঁড়িয়ে আছে।
-- আরহাম গিয়ে আফিয়ার গাল টেনে বলে খুব হিংসুটে হয়ে গেছিস তুই!
--আফিয়া হাত সড়িয়ে দিয়ে বলে এখানে আসার পর কেউ আমার কোন খোঁজ খবর নেই না।
--আচ্ছা সরি! আফিয়া তোর জন্য একটা সুখবর আছে(আরহাম)
-- আফিয়া খুশি হয়ে বলে কি সুখবর?
-- তোকে এখানের সব থেকে খারাপ কলেজে এডমিশন করে দিয়েছি (আরহাম)
-- কিইই? এটা সু-খবর,আজ তোকে আমি এই বলে আফিয়া পাশে ফুলদানি হাতে নিয়ে আরহামের দিকে দৌড়াতে থাকে

আইমান এসব দেখে হাসতে থাকে
-- আরে তুই এটা কি করছিস? ফুলদানিটা রাখ,আরে আমি তো তোর জন্য এখানের সব থেকে ভালো কলেজে এডমিশন করিয়েছি (আরহাম)
এটা শুনে আফিয়া থেমে যায় ফুলদানিটা রেখে বলে সত্যি বলছিস তো?
--আরহাম আফিয়াকে জড়িয়ে ধরে বলে একদম সত্যি বলছি।
এখন গিয়ে আমার জন্য একগ্লাস পানি নিয়ে আই খুব পিপাসা পেয়েছে।
-- এই আমাকে কি তোর কাজের লোক মনে হয়?
--আরহাম মুখ পসকে বলে ফেলে হ্যাঁ
-- কি বললি?

-- না- না- কিছু না। থাম আমি নিজে নিয়ে নিচ্ছি তখনি আফিয়া বলে দাঁড়া আমি দিচ্ছি। এই বলে আফিয়া পানি এনে আরহামকে দেয়।
আরহাম পানি খেয়ে রুমে গিয়ে আলমারি খোলে একটা ছবি বের করে সে ছবির দিকে তাকিয়ে থাকে, তার চোখ বেয়ে জল গড়িয়ে সে ছবির উপর পড়ে।
( আরহাম খান,সে দেশের নাম্বার ওয়ান বিজনেস ম্যান।তারা দুই ভাই, এক বোন। তার বয়স ২৬ বছর,তার মা নেই শুধু বাবা আছে।)
আরহাম ছবি থেকে জল মুছে বলে আমাকে ক্ষমা করে দিস,আমাকে ক্ষমা করে দিস। এই বলে ছবিটা বুকে জড়িয়ে ধরে।

ছবিটি আলমারিতে রেখে ফ্রেস হয়ে খাবার খেয়ে কিছুক্ষন লেপটপে কাজ করতে থাকে।
ঘুমিয়ে পড়তে সে একটা দু-সপ্ন দেখে জেগে যায়, (একটা মেয়ে চিৎকার করে বলে আমাকে বাঁচা, আমাকে বাঁচা,বাঁচা... আ.)এই আর্তনাদ শুনে আরহাম চোখ মেলে সুয়া থেকে বসে পড়ে। পাশে টেবিল থেকে এক গ্লাস পানি খেয়ে।
একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে চোখ বন্ধ করে পুরাতন কিছু স্মৃতি তার চোখে ভেসে উঠতে তার চোখ দিয়ে পানি দুই গাল বেয়ে পড়তে থাকে।
চোখ বন্ধ অবস্থায় বিড়বিড় করে বলে, আমি কিছু করতে পারি নি। আমাকে ক্ষমা করে দিস। এখন আমি করবো, যেটা আগে করতে পারি নি। এই বলে চোখ খোলে চোখের জল মুছে আবার সুয়ে পড়ে ঘুমানোর জন্য

কিছুক্ষণের মধ্যে ঘুমিয়ে পড়ে।
সকাল হতেই
কর্নিয়ার আম্মু কর্নিয়ার রুমের দরজা ধাক্কাতে ধাক্কাতে বলে কর্নিয়া উঠ দেখ টিভিতে কি দেখাচ্ছে।
কর্নিয়া এটা শুনে দ্রুত উঠে বলে কি হয়েছে আম্মু?
-- আরে নিচে এসে টিভিতে দেখ।
কর্নিয়া চোখ কচলাতে কচলাতে সিড়ি বেয়ে নিচে নেমে টিভিতে দেখে,,

চলবে.....

No comments

info.kroyhouse24@gmail.com