Breaking News

সেলিব্রেটি লাভার । পর্ব - ০২



রুমের ভিতরে ঢুকতেই ধাপ করে কেউ জড়িয়ে ধরে ঘুরতে লাগল আমায় নিতু!!ওর এমন কাজে আমি বেশ অবাক হলাম!!হর্ঠাৎ মেয়েটার কি হলো!!

নিতুঃ আপু আজকে আমি খুব খুশি!!!
কেন কি হয়েছে জামাই পাই লি নাকি!!
নিতুঃ কি যে বল তুমি আপু!!(আমাকে ছেড়ে দিয়ে)
তাহলে এই ভাবে নাচাচ্ছিস কেন???
নিতুঃ আপু আজকে আমি আমার ক্রাশ ভালোবাসার সাথে দেখা করেছি!!
কে রুহান!!
নিতুঃ হুম আপু!!
ওহ খুব ভালো তা সেলফি নিশ্চয়ই তুলেছিস কই দেখি!!
নিতুঃ আপু আমার bad luck!! (মন খারাপ করে!!)
কেন কি হয়েছে!!!

তারপর নিতুর সাথে হয়ে যাওয়া সব ঘটনা বলল!!ওর কথা শুনে প্রচুর হাসি পাচ্ছে আমার!!
কিন্তু এখন যদি হাসি আমি তবে ওর মনটা খারাপ হয়ে যাবে তাই হাসি চেপে রেখে!!শান্ত গলায় বললামঃ
কোনো ব্যাপার না আবার নেক্সট টাইম!!এই বলে চলে আসলাম রুমে!!
রুমে এসে দরজা বন্ধ করে উড়াধুরা হাসি!!মুহূর্তে মুখ থেকে বেরিয়ে আসল "পাগলী বোন আমার"!!
তাপর চলে গেলাম "ওয়াশরুমে"!!ওয়াশরুম থেকে খাবার খেয়ে ঘুমিয়ে পরলাম আমরা!!
মাঝরাতে দুটো মানুষের একসাথে তোলা ছবির দিকে তাকিয়ে শুধু দীর্ঘশ্বাস ফেলছে আয়ান!!
ছবিটা হলো তার মা-বাবা!!খুব ছোট বেলাই তার বাবা মারা যায়!!তার কয়েক বছর পরই মা!!
সেই থেকেই একাই জীবন কাটায় আয়ান!!মাঝে মাঝে বড্ড একা লাগে আয়ানের!!
যেমনটা আজকে লাগছে!!বাবা-মা ছাড়া জীবনে বেঁচে থাকা অনেকটাই কষ্টের!!

আরো পড়ুনঃ


সেই ছোট বেলা থেকেই একা বাঁচতে শিখে গেছে আয়ান!!
মাঝে মাঝে রুহানকে দেখলে অনেক কষ্ট লাগে আয়ানের!!
কিন্তু রুহানের বাবা মাও তাকে অসম্ভব ভালোবাসে!!সাথে রুহানও!!
সাধারণত আয়ানের হিরো হওয়ার পিছনের মুল কারণ ছিল তার বাবা!!
তার বাবাও একজন হিরো ছিল!!সেই সুযোগে সেও সেই লাইনে চলে যায়!!
তার চেহারা সুন্দর এবং এক্টিন এ পারদর্শী থাকায় খুব সহজেই অনেক নাম করে ফেলেছে আয়ান!!
এসব ভাবতে ভাবতে হর্ঠাৎ ফোনটা বেজে উঠল আয়ানের!!
চোখ থেকে দু-ফোটা পানি পরে গেল নিচে!!ফোনটা হাতে নিয়ে মুচকি হাসল আয়ান!!
কারন ফোনটা তার প্রান প্রিয় বেস্ট ফ্রেন্ড রুহানের!!
ফোট টা রিসিভ করতেই ওপাশ থেকে রুহান ঝাঁজালো কন্ঠে বলে উঠলঃ

ওই শালা সারাদিন কোথায় ছিলি কতবার ফোন দিয়ে ছি তোকে তুলিস কেন???
আয়ানঃ আর বলিস না আজকে একটা ঝামেলায় পড়ে গিয়েছিলাম তাই এদিকের কথা মনে ছিল না!!
আর ফোনটা হারিয়ে গেছে!!
রোহানঃ কেন কী হয়েছে!!
তারপর আয়ান সকালের ঘটে যাওয়া সব ঘটনা বলল রুহানকে সবশুনে রুহান হাসতে হাসতে শেষ!!
রুহানঃ যাই বল মামা, মেয়েটার মাথায় কিন্তু বুদ্ধি আছে,কিভাবে বের করল তোকে!!
তা মেয়েটার নাম কী???
আয়ানঃ দোস্ত মেয়েটার নাম জানা হয় নি??
রুহানঃ যা শালা মেয়েটার নামটাই জানলি না!!
আয়ানঃ তবে মেয়েটা একজন জার্নালিস্ট!!!
রুহানঃ ওও তবে তো আর কোনো ব্যাপারই নয় খুঁজে বের করা খুব একটা কঠিন হবে না!!
আচ্ছা যাই হোক এটা বল খেয়েছিস!!

আয়ানঃ হুম!!
রুহানঃ মিথ্যা বলছিস না তো!!
আয়ানঃ আরে না!!
রুহানঃ আমি কিন্তু সোহেলকে ফোন করে জিজ্ঞেস করব!!
আয়ানঃ আরে বাবা খেয়েছি!!তা তোর খবর কী???
রুহানঃ আমার খবর তো ভালো আছে!!আজকে একটা ঘটনা ঘটেছিল বুঝেছিস!!
আয়ানঃ কী???
তারপর রুহান আর নিতুর পরে যাওয়া নিয়ে সবকিছু বলল আয়ানকে!!
আয়ান হাসলো রুহানের কথাতে!!
এভাবে আরো কিছুক্ষন কথা বলে ঘুমিয়ে পরল আয়ান!!আর ওপাশে রুহান!!

আপনার লিখা পোষ্ট করতে চাইলে আমাদের গ্রুপে পোষ্ট করতে পারেনঃ

২ দিন পর..........
এই দুই দিনে প্রায় ভুলে গিয়ে ছিলাম!! আমি কোনো সেলিব্রেটিকে সাহায্য করেছিলাম!!

আজকে নিতুর ভার্সিটির নবীনবরন অনুষ্ঠান ছিল!!তাই আজকে শাড়ি পরেছে নিতু!!
পুরো অনুষ্ঠানটাই খুব সুন্দরভাবে কেটেছে তাদের!!
নিতু কলাপাতা রঙের একটা শাড়ি পড়েছে, চোখে গাড়ো কাজল, চুল গুলো খোলা,
হাতে কাচের চুরি, সব মিলিয়ে অসম্ভব সুন্দর লাগছে তাকে!!এ মুহূর্তে ব্যস্ত রাস্তায় হেঁটে চলেছে সে!!
হয়তো মনে ভিতর তীব্র ইচ্ছে আবার রুহানকে দেখার!!
এসব ভাবতে ভাবতেই হাঁটছে নিতু!!আকাশটা হর্ঠাৎই ঘনকালো অন্ধকারে ঢেকে গেছে!!
হয়তো বৃষ্টি হবে ভীষণ!!
কিন্তু নিতুর সেদিকে কোনো খেয়াল নেই সে তার আপন ইচ্ছায় হেঁটে চলেছে ব্যস্ত রাস্তায়!!
কিছুটা দূরে হাঁটতেই একটা বড় মাঠ দেখতে পেল নিতু!!!
হর্ঠাৎই আকাশ মেঘের গর্জন করে উঠে বৃষ্টি পরতে শুরু করল!!
নিতু শাড়ি কুঁচি ধরে দৌড়ে মাঠের ভিতর চলে গেল!!
হর্ঠাৎ বৃষ্টি শুরু হওয়ায় প্রায় সবাই চলে গেছে!!মাঠটা পুরোই খালি হয়ে গেছে!!
শুধু আছে ৫ থেকে ৭ টা ছোট ছোট বাচ্চা ছেলে-মেয়ে!!তারা বৃষ্টিতে ভিজে লাফালাফি করছে!!
নিতু একটা ছাউনির নিচে দাঁড়িয়ে ছিল!!
কিন্তু বাচ্চাদের লাফালাফি দেখে তাঁরও লোভ লাগল ভীষণ তাই সেও বাচ্চাদের সাথে মেতে উঠল
বৃষ্টিতে ভিজতে!!

বৃষ্টির ভিতর গাড়ি চালিয়ে তার গন্তব্য থেকে ফিরছে রুহান!!আজকের রেকর্ডিং টাও খুব সুন্দর হয়েছে তার তাই ভিষণ খুশি সে!!হর্ঠাৎ তার চোখ আটকে যায় সামনে থাকা শাড়ি পড়া একটা মেয়ের দিকে!!হর্ঠাৎই গাড়িতে ব্রেক দিয়ে থেমে যায় রুহান!!মেয়েটা কে খুব চেনা চেনা লাগছে তার!!হুম মনে পড়েছে এই মেয়েটাই তো সেই মেয়েটা!!কিন্তু আজকে মেয়েটাকে ঠিক বাচ্চা বাচ্চা লাগছে না রুহানের কাছে!!কিছুক্ষনের জন্য হলেও চোখ আটকে যায় রুহানের!!গাড়ির কাঁচের জানালা খুলে নিতুর দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসল রুহান!!হর্ঠাৎই বুকের বাম পাশে অদ্ভুত অনুভূতি আসল তার!!যার কারনটা জানা নেই তার কাছে!!বাচ্চাদের মাঝখানে দাঁড়িয়ে কাঁদা দিয়ে খেলায় মেতে উঠেছে নিতু!!ঠোঁটে আছে তার অদ্ভুত এক হাসি!!যা একটা ছেলের দৃষ্টি আকৃষ্ট করার জন্য "যথেষ্ট"!!দূর থেকে দেখছে রুহান!!

নজর কারা সেই হাসি!!এমন সমশ ফোনের
শব্দে ধ্যান ভাঙল তার!!ফোনটা তুলেঃ
হ্যালো!!
ওপাশ থেকে কেউ বলে উঠল ভাই কখন আসবেন আপনি!!
রোহান হয়তো ভুলে গিয়েছিল আজকে তার আরেকটা রেকর্ডিং ছিল!!তাই চটজলদি করে বলে ফেলল সেঃ
আসছি আমি!!
আরেক পলক নিতুর দিকে তাকিয়ে কাঁচের জানালার উঠিয়ে যেতে লাগল রুহান তার গন্তব্যে!!

এদিকে নিতু বাচ্চাদের সাথে লাফালাফিতে এতটাই ব্যস্ত ছিল যে কেউ তাকে দেখেছে তা হয়তো সে বুঝতেই পারে নি!!যদি বুঝত কে সে তাহলে এখানেই লুঙ্গি ড্যান্স দিত নিতু!!

শাড়ির ১২ টা বাজিয়ে, কাঁদা দিয়ে পুরো পা, শাড়ি সব মেখে এসেছে নিতু বাড়িতে!!এদিকে আম্মাজানে তা দেখে রাগে গজগজ করছে!!কিন্তু নিতুর ভাগ্য এতটাই ভালো যে আজকে বাসায় আব্বু আছে!!তাই আম্মু যে এখন কিছু বলবে না তা সে ভালোভাবেই বুঝতে পেরেছে!!তাই সে ডোন্ট কেয়ার ভাব নিয়ে চলে গেল রুমে!!

ঘড়িতে ১ঃ০০টার কাটায় ছুঁই ছুই!!রাত কম হয় নি বটে!!
আজকে অফিসে বেশি কাজ থাকায় দেরি হয়েছে আমার!!
তাই না পাচ্ছি কোনো গাড়ি বা রিকশা‌!!তাই ভয়ে ভয়ে হেঁটে চলেছি!!
আমার বেশি ভয় করছে রাস্তাটা পুরো ফাঁকা!!
এই মুহূর্তে আমার একটা জিনিসই মাথায় আসছে সেটা হলো এখন যদি কেউ আমায় মেরে ফেলে দেয়
তবপ আমারই খবরে আামাকেই দেখানো হবে!!হাসি পেলেও ভয়ে ভয়ে হাঁটছি আমি!!
কিছুটা দূর যেতে যেটার ভয় পাচ্ছিলাম আমি!!সেটাই হয়তো হতে চলেছে!!
সামনে কিছু মাতাল ছেলেদের দেখতে পেলাম আমি!!
এই মুহূর্তে আমার কাছে দৌঁড়ানো ছাড়া আর কোনো উপায় নেই!!
কারন ছেলেগুলো আমার দিকেই আসছে!!
আমি একজন জার্নালিস্ট হলেও এই মুহুর্তে সাধারণ অসহায় মেয়ে বলে মনে হচ্ছে আমার!!
তাই এক পা এক পা পিছাতে লাগলাম আমি!!আর তারাও আমার দিকে!!
এক পর্যায়ে উল্টো দিকে দৌড়াতে লাগলাম আমি!!আর ছেলেগুলো আমার পিছন পিছন!!
এদিকে সারাদিন বৃষ্টি হওয়ায় রাস্তা প্রায় পিছলা হয়ে আছে!!
যাতে দৌড়াতেও ভীষণ ভয় হচ্ছে!!খালি মনে হচ্ছে এই বুঝি পড়ে যাবো আমি!!
অনেকক্ষণ দৌড়াতে দৌড়াতে হাঁপিয়ে গেছি আমি জোরে জোরে শ্বাস ফেললাম!!
আর এমনই ভাগ্য আমার এমন সময় ফোনটাও বন্ধ হয়ে আছে!!
কিছু যে করব তাও পারছি না!!এরই ভিতর প্রচন্ড বেগে বৃষ্টি শুধু হলো!!
হায় রে ভাগ্য!!ভেবে আরো জোরে দৌড়াতে লাগলাম আমি!!!

অন্যান্য গল্পের লিংকঃ


গাড়িতে করে বাড়ি ফিরছে আয়ান!!আজকে একটা পার্টিতে গিয়েছিল সে!!
তাই ফিরতে অনেক রাত হয়েছে!!
তবে তাকে যে কেউ ফোন করে জিজ্ঞেস করবে "বাবা এত রাত হয়েছে বাসায় ফিরবি কখন"??
তা বলার মতন কেউ নেই এই মুহুর্তে!!
তা ভেবে মনটা খারাপ হয়ে গেল তার!!কষ্ট হয় ভীষণ তার!!
এমন সময় হর্ঠাৎ কোথা থেকে একটা মেয়ে এসে পরল তার গাড়ির সামনে সাথে সাথে ব্রেক দিল আয়ান!!তারপর মুখে মাস্ক পড়ে চটজলদি করে বাহিরে বের হতে লাগল সে!!!

হর্ঠাৎ গাড়ির সামনে পরায় আঁতকে উঠলাম আমি!!
ভয়ে চোখ বন্ধ করে ফেলেছি আমি!!
পিছনে ছেলেগুলো হয়তো দৌড়ে চলে এসেছে আমার কাছে!!
বৃষ্টিতে ভিজে পুরো খারাপ অবস্থা আমার!!
গাড়ি থেকে বের হলো কেউ!!আমি তাকে না দেখেই দৌড়ে তার কাছে গিয়ে বললামঃ
প্লিজ, ছেলেগুলোর হাত থেকে বাঁচান আমায়!!
মুহূর্তেই সব ঘন-কালো অন্ধকার হয়ে গেল হয়তো জ্ঞান হারাবো
আমি বৃষ্টির ভিতর দৌড়ানোর ফলে নিশ্চয়ই এমনটা হয়েছে!!
শরীরের শক্তি ক্রমসো কমে আসল আমার!!
সাথে সাথে আমি ছেলেটার বুকের উপর পড়ে গেলাম সাথে সাথে সেও আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে ধরল আমায় তারপর আর কিছু মনে নেই!!!

এদিকে মাতাল ছেলেগুলোঃ ভালো চাইলে ওকে আমাদের কাছে ছেড়ে দিয়ে চলে যা!!
আয়ানঃ ওহ তাই নাকি আমাকে চিনিস!!এই বলে মুখ থেকে মাস্ক সরালো আয়ান!!সাথে সাথে সামনের ছেলেগুলো আঁতকে উঠল!!মুখ থেকে বেরিয়ে আসল তাদেরঃ
-নায়ক মিস্টার আয়ান!!সরি ভাই ভুল হয়ে গেছে!!এই বলে দিলো এক দৌড়!!
আয়ান তার ফোনটা বের করে তার লোকেদের ফোন দিয়ে ছেলেগুলোর কথা বলল!!বাকিটা তার গার্ডরায় বুঝে নিবে!!তারপর মীমকে কোলে তুলে নিয়ে গাড়িতে বসিয়ে দিল আয়ান!!তারপর সে ড্রাইভার সিটে বসে গাড়ি চালাতে শুরু করল!!
-গাড়ি চলতে শুরু করল তার আপন গতিতে..

চলবে...

No comments

info.kroyhouse24@gmail.com