Breaking News

তোর শহরে প্রেম । পর্ব - ০১

হেই মিস, অনাহিতা মাত্র ৬০দিনের জন্য আমার বউ হলে কি এমন ক্ষতি হবে!

অনাহিতা ঘুরে দাঁড়িয়ে বলে, সিনিয়র বলে যা ইচ্ছে তাই বলবেন! আর আমরা চুপচাপ শুনবো।
নীলাভ্র সামনে এসে কিছু বলবে তার আগেই তন্ময় বলে হাট যা সামনে সে তেরে ভাবি খাড়ি হ্যাঁ।
অনাহিতা কোন কথা না বলে সামনে পা বাড়াতেই তন্ময় অনাহিতার হাত ধরে বলে,
মাত্র সাতদিন সময় দিচ্ছি হয়তো তন্ময় হাসানের বউ হবে, নয়তো তন্ময় হাসানের দাসী।
চয়েজ তোমার।

আরো পড়ুনঃ
অনু হাত ছাড়ানো চেষ্টা করতে করতে কড়া গলায় বললো, আপনার মতো নর্দমার কিটের দাসী হওয়া তো দূরের কথা চেহারা দেখতেও ঘৃণা লাগে। বলেই একদলা থুথু ফেললো তন্ময়ের পায়ের কাছে।
তন্ময় হাত ঘুরিয়ে অনুকে নিজের কাছাকাছি নিয়ে এসে বলে,
আই লাইক ইউর এটিটিউড। বলেই ভরা ভার্সিটির মাঠে অনুর ঠোঁট চুম খায়।

কয়েকজন আর চোখে তাকাচ্ছে, সরাসরি তাকানোর সাহস কারো নেই,
ডেভিল গ্রুপের লিডার তন্ময় হাসানকে চেনেনা ভার্সিটিতে এমন কেউ নেই।
দু'মিনিট পর অনুকে ছেড়ে দিয়ে বলে,
আগমী সাতদিনের মধ্যে মিস অনাহিতা থেকে মিসেস তন্ময় হাসান হওয়ার জন্য তৈরী থাকো সুন্দরী।
লজ্জায় ঘৃনায় অনুর চোখ দিয়ে অশ্রু গড়িয়ে পরতে লাগলো,
তন্ময় পকেট থেকে রুমাল বের করে চোখের পানি মুছে দিয়ে বলে মাত্র ৬০দিন সহ্য করলেই হবে সুইট হার্ট।
ডোন্ট ক্রাই।যাও লক্ষী বাচ্চার মতো ক্লাসে যাও।
রেজাল্ট ভালো আসতে হবে আফটার অল তন্ময় হাসানের হবু বউ বলে কথা।
অনু চলে আসলো, একটু দূরেই মাহি দাঁড়িয়ে ছিলো মাহিকে ধরেই কেঁদে কেঁদে বলে,
জানিনা একটা ভুলের জন্য কত সাফার করসে হবে।
গ্রাম থেকে আসার সময় মা বলেছিলো, সম্মান নিযে যাচ্ছ সম্মানের সাথেই ফিরে আসবে,
মনে রেখো নিজের চরিত্র কালী লেপন করো না।
আর দেখ এই এতোগুল মানুষের সামনে আমাকে কিস করলো আমি কোন প্রতিবাদ করতে পারলাম না। আমি বাসায় চলে যাবো মাহি, এই শহর আর শহরের মানুষ আমাদের জন্য না।

শান্তহ অনু তুই ভুলে যাচ্ছিস তোর বাবা তোকে কি বলেছিলো!
মনে আছে খুব ভালো করে মনে আছে, বাবা বলেছিলো, একবার যদি ফিরে আসো তাহলে আমার পছন্দ করা ছেলেকে বিয়ে করতে হবে। এসব পড়া লেখার ভূত মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলো।
-আমি তোকে সেটাই বলছি,
এক কাজ কর আজ ক্লাস শেষে ওই তন্ময় ভাইয়ার কাছে ক্ষমা চেয়ে নে।
দেখ আমরা পড়া লেখা করতে এসেছি এসব ঝামেলায় না জড়ানোই ভালো।
এখানে আমার দোষটা কি বলতো, সেদিন ওই মেয়েটা আমার ড্রেসে হাত দিয়েছিলো।
নিজের সম্মান বাঁচানোটা কি দোষের?
দেখ তুইতো ভরা মাঠে থাপ্পড় দিয়েছিস তন্ময় ভাইয়াকে।তন্ময় ভাইয়ার তো কোন দোষও ছিলো না।
আমি থাপ্পড়টা ওই জেনি না মেনি ওই বেয়াদব মেয়েটাকে দিতে চেয়েছি। সে কেনো সামনে আসলো?
সব বিপদ তোর দিকেই কেনো আসে?
জানিনা এখন কি হবে?এভাবে চলতে থাকলে হয়তো বাবার কথা মেনে নিতে হবে। আর যাই হোক সারাজীবন তো আর একটা বখাটের সাথে কাটিয়ে দেয়া যাবেনা।
তুই সত্যি আঙ্কেলের কথা মেনে নিবি?
এছাড়া কোন উপায় আছে?
মাহি বললো আছে, এদিকে আয় তোকে বলছি।
তারপর মাহি অনুর কানে মুখে কিছু বললো।
দেখা যাক তোর প্ল্যান কাজ করে কিনা!

কাজ করবেই।
ক্লস রুমে ঢুকতেই সবাই অদ্ভুত ভাবে অনুর দিকে তাকিয়ে আছে।
মাহি অনুর কানের কাছে মুখ নিয়ে বলে ইগনোর কর এসব নিয়ে মাথা ঘামাস না।
অনু আর মাহি ক্লাসে বসল।
তন্ময়, নীলাভ্র, ইয়ামিন, আবির,জেনী,সারা, বর্ষা বসে, আড্ডা দিচ্ছে। এমন সময় আবির বলল, এবার কিন্তু বারাবাড়ি হয়ে যাচ্ছে তন্ময়। মেয়েটাকে ছেড়ে দে,
বিয়ে কোন ছেলে খেলা না। মন চাইলো,বিয়ে করলি আবার মন চাইলো ছুড়ে ফেলে দিলি!
তুই কি বলতে চাইছিস ওই মেয়েকে আমি ছেড়ে দেবো!
ইম্পসিবল আমি ওই মেয়েকে দেখিয়ে ছাড়বো তন্ময় হাসান কি!
বর্ষা বলল, সেটা দেখানোর জন্য কত কি করা যায় বিয়ে কেনো করতে হবে?
অন্য শাস্তি ও ভুলে যাবে। আর এই সব গ্রামের মেয়েরা বিয়ে নিয়ে কত স্বপ্ন দেখে!
একবার তার সেই স্বপ্ন ভেঙ্গে দিলে সারাজীবন মনে রাখবে।
নীলাভ্র বলল,আঙ্কেল আন্টিকে কি বলবি!
তাদরকে কেন বলতে যাবো শুধু দেখতে থাক ওই গ্যাইয়া ভূতের সাথে আমি কি কি করি!
ইয়ামিন বলল, ওকে বুঝিয়ে লাভ নেই তার চেয়ে চল। সবাই এটু চিল করে আসি।
সবাই রাজি হলেও সারা বললো তোরা যা আমি ক্লাস করবো।

সবাই হেসে ফেললো, জেনী বললো, জ্বি খাল্লাম্মা আমরা জানি আপনি যে ক্লাস করবেন। সারা জেনিকে বললো, তোর কোন কালের খালম্মা আমি! আমি ক্লাস না করলে নোটগুলো কোথা থেকে সংগ্রহ করতি শুনি। তন্ময় বললো ওকে দাদিম্মা আপনি ক্লাস করুন। বলেই সবাই বেরিয়ে গেলো।
সারা ক্লাসের দিকে পা বাড়ালো।
ক্লাস শেষ করে বেড় হয়ে অনু তন্ময় কে খুঁজতে লাগলো। কেথাও তন্ময় কে দেখতে পেলো না।
তবে সেদিন যেই মেয়েটা থাকে সাহায্য করেছিলো তাকে দেখতে পেয়ে ছুটে গেলো।
সারা অনুকে ছুটে আসতে দেখে দাঁড়িয়ে যায়।
সারার সামনে এসে অনু জোড়ে জোড়ে নিশ্বাস নিয়ে বলে, আপু আপনার বন্ধু কোথায়?
সারা কপাল কুঁচকে বলে, যেচে জমের খোঁজ কেনো করছো?
ওনার সাথে কিছু কথা ছিলো।
কি এমন কথা শুনি!
পুরো ভার্সিটির সবার সামনে তার কাছে ক্ষমা চাইতে রাজি।
এখন রাজি হচ্ছ সেদিন কেনো রাজি হওনি।
বুঝতে পারিনি এখন নিজের ভুল বুঝতে পেরেছি।
মনে হয় না তোমার কথায় কোন কিছু পাল্টাবে।
তবুও চেষ্টা করে দেখতে পারো। বলেই সারা স্থান ত্যাগ করলো।
মাহি বললো, এদের এ্যাটিটিউড দেখলে মনে হয় ভার্সিটি তাদের বাবার সম্পদ।
ওই অসভ্য ছেলেকে তো খুঁজে পেলাম না। এখন কি হবে।
এতো ভাবছিস কেনো এখনো ছয়দিন বাকী আছে আগামীকাল বলে দিবি।

হুম। এবার চল বাজার করতে হবে তো।
দেখ এখন নিজেরা বাজার করি আবার রান্না করি।
আর বাসায় থাকতে কত বায়না করছি এটা খাবো না ওটা খাবো না।
সেসব এখন অতীত, একটা রিকশায় ডেকে উঠে পরলো দু'জনে। রিকশায় বসে অনু বললো পুরো মাসের টাকাটা হিসেব করতে হবে!
হ্যাঁ হিসেব তো করতেই হবে।
শোন ঘর ভাড়া পাঁচ হাজার, বাজার খরচ, পাঁচ হাজার, যাতায়াত খরচ,
তিন হাজার মোট হলো তেরো হাজার। আর বাকি দু' হাজার টাকা আমাদের অতিরিক্ত খরচ।
ব্যাগ থেকে টাকা বের করে হাতে নিয়ে গুনছে এমন সময় ছিনতাইকারী অনুর হাত থেকে টাকাগুলো ছিনিয়ে নিয়ে দৌঁড়ে পালিয়ে গেলো।

মাহি, অনু কতখন চোর চোর করে পিছু নিলো। কিন্তু চোরের নাগাল পেলো না। অনু বললো বাসা থেকে আর কোন টাকা দেবে না। পুরো মাস আমরা কি ভাবে চলবো!
মাহি বললো আমাকেও দেবে না। বাসায় তো বাজার নেই তাহলে এখন টাকা কোথায় পাবো।
- চিন্তা করিস না কোন একটা ব্যবস্থা ঠিক হয়ে যাবে।
কিছু দূর হেঁটে যেতেই একটা রেস্টুরেন্টে সামনে লিখা দেখলো, পার্টটাইম জব।
অনু বললো, পেয়েগেছি চল এই রেস্টুরেন্টে জব নিয়ে নেই। ক্লাস শেষ করে এখানে দু'ঘন্টা কাজ করবো।এই মাসটা এভাবে চলে যাবে।

জনপ্রিয় পোষ্ট সমূহঃ
রেস্টুরেন্টে ম্যানেজার মন্টু মিয়া বলেন, কাজ করতে পারবে তো।
জ্বি স্যার বুঝিয়ে দিলেই পারবো। তবে প্রতিদিনের টাকা আমাদের প্রতিদিন দিতে হবে।
টাকা নিয়ে সমস্যা নেই দুজনকে আটশ টাকা দেবো। কাজ শেষ করে যাওয়ার সময় নিয়ে যাবে।
ম্যানেজার একজন স্টাফ কে ডাকলো,
এই মেয়ে দু'টো নতুন জয়েন হয়েছে এদেরকে ড্রেস দাও আর কাজ বুঝিয়ে দাও।
লাল পাড়ের কালো সুতি শাড়ি পরেছে, ওরা দু'জনে। বোঝাই যাচ্ছে বেশ নামি-দামি রেস্টুরেন্ট। অনু আর মাহির কাজ হলো খাবেরর অর্ডার নেয়া, খাবার সার্ভ করা।
ভালোই কাজ করছিলো দু'জনে এরমধ্যেই তুফান চলে আসলো।

চলবে...

No comments

info.kroyhouse24@gmail.com