শুধু তুই । পর্ব - ০৫



সবকিছু ঝাপসা ঠেকেছে মাথাটা কেমন ঝিমঝিম করছে চোখের কোর অংশ কাজ করে আমাকে বুঝিয়ে দিচ্ছে আমি রয়েছি কোনো আলোকময় স্থানে। মস্তিষ্কের সেরিবেলাম কাজ করায় পাচ্ছি খুব সুপরিচিত মিষ্টি গন্ধ।বুঝতে পারলাম রয়েছি নিজেরই ঘরে । হঠাৎ শ্রবণেন্দ্রিয় কাজ করল তীব্রভাবে বুঝতে পারলাম কেউ ডাকছে আমার নাম ধরে ।

মিতু।
এই মধুর কন্ঠ আর কারো নয় ডাকছেন আমার মা নিজেই।
ওনার কন্ঠস্বর শুনে বুঝতে পারলাম তীব্র উত্তেজনা কাজ করছে ওনার মনে সঙ্গে প্রবল দুশ্চিন্তা সাথ দিয়েছে। উনি যেন আরো কি সব বলছেন কিন্তু কিছুই মাথায় ঢুকছে না আমার কারণ একটা ভাবনাই কাজ করছে মনে সে আছে না চলে গেছে ?শুধু নিজের অসুস্থতার জন্যেই কি আমি তবে আবার হারিয়ে ফেললাম তাকে ? অস্পষ্ট স্বরে প্রশ্ন ছুড়ে দিলাম মায়ের দিকে তবে প্রশ্ন করে উঠতে না পেরে তার নাম বিবৃত করলাম আপন মনে,,

রিয়াত ।
মায়ের ভাবাবেগ যেন খানিকটা রংবদল করল ক্ষণিকে ।
এতক্ষন যে চেহারায় দুশ্চিন্তারা নিজের বংশ বিস্তার করেছে কিয়ৎক্ষণে তা রূপান্তরিত হয়েছে ক্রোধে।
এবার আমার কানে বেজে উঠল একাধিক নর-নারীর কন্ঠস্বর। হয়ত হৃদি এবং রিমেল এসেছে ।
ওরা এক ছুটে প্রবেশ করল আমার ঘরে ।দুজনেই সমন্বিত স্বরে দুশ্চিন্তাগ্রস্থ কণ্ঠে প্রশ্ন করল,
তুই ঠিক আছিস দোস্ত ?
উত্তর কি হতে পারে আমার?আমি কি আদৌ ঠিক আছি ?সে কেন বার বার এমন করে ?
কেন বার বার আসে আর লুকোচুরি খেলায় মেতে উঠে আমার সাথে ।
আমি কি তাকে বিরক্ত করেছি কখনো ভালোবাসি বলে ।
শুয়ে না থেকে এখন একটু শক্তি সঞ্চয় করে আধ শোয়া হলাম আমি
হৃদি এসে পিঠ বরাবর একটা বালিশ দিয়ে দিল ।এখনো মাথাটা কেমন ঝিমঝিম করছে।
আমি একবার তাকিয়ে দেখলাম মায়ের দিকে কেমন যেন অচেনা ঠেকছে ওনার অবয়ব ।
মায়ের মুখ দেখে আন্দাজ করতে পারছি না উনি আসলে ভাবছেন কি মনে ।

তুই আবার কি করে সেন্সলেস হয়ে গেলি ?কি হতো বলতো যদি আন্টি ঠিক সময় আমাকে আর রিমেলকে ফোন করে না জানাত?( হৃদি)
তোরা আমাকে এখানে এনেছিস। আচ্ছা ওখানে কি আর কেউ ছিল না ?(আমি)
তুই কার কথা বলছিস ? (হৃদি)
আমি কার কথা বলছি হৃদি হয়ত আন্দাজ করতে পেরেছে সাথে রিমেল ও মা যে বুঝেছে বুঝতে পেরেছি তখন যখন তিনি তেড়ে এসেছেন আমার দিকে।
বিশ্বাস করো মা!আমি সত্যি বলছি রিয়াত এসেছিল।এমনকি আমি ওকে,,,,,,
কি তুই ওকে?চুপ করে আছিস কেন বল ? সেই আগের মতই আবার শুরু করেছিস ।কেন আমরা কি তোর কেউ যে নই একটা ছেলের জন্য এভাবে,,,

হ্যাঁ আজ প্রথম নয় আরো অনেক কয়েক বার এমন হয়েছে আমার সাথে সে এসেছে ভেবে আরো কয়েকবার পড়ে রয়েছিলাম কোনো রাস্তার মোড়ে।মা আর কিছু না বলে বেরিয়ে গেলেন ঘর থেকে।
আচ্ছা তবে কি সত্যি বার বার আমার হ্যালোসিনেশন হচ্ছে?তবে কি আমি দিনকে দিন তার ভাবনাতে বিভর হয়ে ধ্বংসের দিকে ধাবিত হচ্ছি !সে কেন আজও বুঝছে না আমার মন শুধু বলে “শুধু তুই”।সে আমার কাছে শুধু একটা ছেলে নয় সে যে আমার কাছে কতখানি কি তা শুধু আমিই জানি!
পুরো রুম এখন নিস্তব্ধতার মায়াজালে আবদ্ধ।কেউ কোনো সাড়া শব্দ করছে না।যেন হারিয়ে ফেলেছে প্রত্যেকে নিজেদের শব্দের ঝুড়ি।মা আর আসেননি আমার ঘরে । আচ্ছা আমি কি সত্যি স্বার্থপর হয়ে যাচ্ছি!
যখন বিভিন্ন চিন্তায় নিমগ্ন আমি তখনই হুট করেই বেজে উঠল যান্ত্রিক যন্ত্রটি.

চলবে...
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url