শিরক-যে পাপ আল্লাহ ক্ষমা করবেন না

إِنَّ اللَّهَ لَا يَغْفِرُ أَنْ يُشْرَكَ بِهِ وَيَغْفِرُ مَا دُونَ ذَلِكَ لِمَنْ يَشَاءُ وَمَنْ يُشْرِكْ بِاللَّهِ فَقَدِ افْتَرَى إِثْمًا عَظِيمًا

“নিশ্চয় আল্লাহ শিরকের পাপ ক্ষমা করবেন না, তাছাড়া তিনি যাকে ইচ্ছা তাকে ক্ষমা করেন আর যে আল্লাহর সাথে শরীক করে সে মহাপাপ করেছে।” (সুরা নিসা-৪৮ শেষাংশ)

(২২২) عَنْ أَبِي سَعِيدٍ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ اللهُ عَزَّ وَجَلَّ يَا آدَمُ فَيَقُولُ لَبَّيْكَ وَسَعْدَيْكَ وَالْخَيْرُ فِي يَدَيْكَ، قَالَ: يَقُولُ: أَخْرِجْ بَعْثَ النَّارِ مِنْ ذُرِّيَّتِكَ قَالَ: وَمَا بَعْثُ النَّارِ قَالَ: مِنْ كُلِّ أَلْفٍ تِسْعَمِائَةٍ وَتِسْعَةً وَتِسْعِينَ

“আবু সাঈদ খুদরী (রাঃ) বলেন রাসুলুল্লাহ (সঃ) বলেছেন- আল্লাহ তায়ালা ডেকে বলবেন- হে আদম! তিনি বলবেন আমি আপনার খিদমতে হাযির। যাবতীয় কল্যান আপনার হাতে। রাসুলুল্লাহ (সঃ) বলেন, আল্লাহ তায়ালা বলবেন- তোমার সন্তানদের মধ্য হতে জাহান্নামীদের বের কর। আদম (আঃ) বলবেন কি পরিমান বের করব? তিনি বলবেন- প্রতি হাজারে নয়শত নিরাব্বই জনকে বের কর।” (সহীহ বুখারী-৬৫৩০ সহীহ মুসলীম-২২২)

৩৫৪০ - حَدَّثَنَا أَنَسُ بْنُ مَالِكٍ، قَالَ: سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ: " قَالَ اللَّهُ تَبَارَكَ وَتَعَالَى: يَا ابْنَ آدَمَ إِنَّكَ مَا دَعَوْتَنِي وَرَجَوْتَنِي غَفَرْتُ لَكَ عَلَى مَا كَانَ فِيكَ وَلَا أُبَالِي، يَا ابْنَ آدَمَ لَوْ بَلَغَتْ ذُنُوبُكَ عَنَانَ السَّمَاءِ ثُمَّ اسْتَغْفَرْتَنِي غَفَرْتُ لَكَ، وَلَا أُبَالِي، يَا ابْنَ آدَمَ إِنَّكَ لَوْ أَتَيْتَنِي بِقُرَابِ الأَرْضِ خَطَايَا ثُمَّ لَقِيتَنِي لَا تُشْرِكُ بِي شَيْئًا لَأَتَيْتُكَ بِقُرَابِهَا مَغْفِرَةً

“আনাস ইবনে মালিক (রাঃ) বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ (সঃ) কে বলতে শুনেছি যে, আল্লাহ তায়ালা বলেন, হে আদম সন্তান! তুমি যতদিন আমাকে ডাকতে থাকবে এবং আমার কাছে আশা করতে আমি তোমাকে ক্ষমা করে দিব, তুমি কত বড় পাপী আমি পরওয়া করিনা। হে আদম সন্তান! তোমার পাপরাশি যদি আকাশের মেঘমালায় পৌছে যায় এরপরও তুমি যদি আমার কাছে ক্ষমা চাও আমি তোমাকে ক্ষমা করে দিব, আমি পরওয়া করিনা। হে আদম সন্তান! তুমি যদি যমিন পরিমান পাপরাশি নিয়ে আমার কাছে উপস্থিত হও, আর আমার সাথে কিছু শরীক না করে থাক, তবে আমি সে পরিমান ক্ষমা ও মাগফিরাত তোমার সাথে সাক্ষাত করব।” (জামে তিরমিজি-৩৫৪০)

إِنَّهُ مَنْ يُشْرِكْ بِاللَّهِ فَقَدْ حَرَّمَ اللَّهُ عَلَيْهِ الْجَنَّةَ وَمَأْوَاهُ النَّارُ وَمَا لِلظَّالِمِينَ مِنْ أَنْصَارٍ (৭২)

“নিশ্চয় যে আল্লাহর সাথে শিরক করে তার জন্য জান্নাত হারাম করেছেন তার আবাস স্থল অগ্নি। আর জালিমদের জন্য কোন সাহায্যকারী থাকবেনা।” (সুরা মায়িদাহ-৭২) 

২৪১৬ - عَنْ ابْنِ مَسْعُودٍ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: لَا تَزُولُ قَدَمُ ابْنِ آدَمَ يَوْمَ القِيَامَةِ مِنْ عِنْدِ رَبِّهِ حَتَّى يُسْأَلَ عَنْ خَمْسٍ، عَنْ عُمُرِهِ فِيمَ أَفْنَاهُ، وَعَنْ شَبَابِهِ فِيمَ أَبْلَاهُ، وَمَالِهِ مِنْ أَيْنَ اكْتَسَبَهُ وَفِيمَ أَنْفَقَهُ، وَمَاذَا عَمِلَ فِيمَا عَلِمَ

“আব্দুল্লাহ ইবনু মাসউদ (রাঃ) হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন,‘ক্বিয়ামতের দিন পাঁচটি জিনিস সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ করার পূর্বে আদম সন্তানের পদদ্বয় তার রবের নিকট থেকে সরাতে পারবে না। জিজ্ঞেস করা হবে তার বয়স সম্পর্কে, সে কিভাবে তা অতিবাহিত করেছে? জিজ্ঞেস করা হবে তার যৌবনকাল সম্পর্কে, সে কিভাবে তা খরচ করেছে? জিজ্ঞেস করা হবে তারসম্পদ সম্পর্কে, কিভাবে তা উপার্জন করেছে এবং কোন খাতে ব্যয় করেছে? এবং জিজ্ঞেস করা হবে, তার অর্জিত ইলম অনুযায়ী আমল করেছে কি না?” (তিরমিযী -২৪১৬)

عَنْ جَابِرٍ قَالَ لَعَنَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ آكِلَ الرِّبَا وَمُؤْكِلَهُ وَكَاتِبَهُ وَشَاهِدَيْهِ وَقَالَ هُمْ سَوَاءٌ.

“জাবির (রাঃ) বলেন রাসুলুল্লাহ (সঃ) সূদ গ্রহণকারী, প্রদানকারী, লেখক ও স্বাক্ষীর প্রতি অভিশাপ করেছেন। রাসুলুল্লাহ (সঃ) বলেন, অভিশাপে তারা সবাই সমান।” (সহীহ মুসলীম-১৫৯৮)

২২৭৪ - عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ الرِّبَا سَبْعُونَ حُوبًا، أَيْسَرُهَا أَنْ يَنْكِحَ الرَّجُلُ أُمَّهُ

“আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেন রাসুলুল্লাহ (সঃ) বলেছেন সুদের পাপের সত্তরটি স্তর রয়েছে। তার মধ্যে সবচেয়ে ক্ষুদ্র স্তর হলো আপন মাকে বিবাহ (যেনা) করা।” (ইবনে মাজাহ-২২৭৪)

২১৯৫৭ - عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ حَنْظَلَةَ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ دِرْهَمٌ رِبًا يَأْكُلُهُ الرَّجُلُ وَهُوَ يَعْلَمُ أَشَدُّ مِنْ سِتَّةٍ وَثَلَاثِينَ زَنْيَةً

“আবদুল্লাহ ইবনে হানযালাহ (রাঃ) বলেন রাসুলুল্লাহ (সঃ) বলেছেন কোন ব্যাক্তি যেনে শুনে এক দিরহাম সুদ গ্রহণ করলে ছত্রিশবার যেনা করার চেয়ে কঠিন হবে। (মুসনাদে আহমদ-২১৯৫৭)

يَاأَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا اتَّقُوا اللَّهَ وَذَرُوا مَا بَقِيَ مِنَ الرِّبَا إِنْ كُنْتُمْ مُؤْمِنِينَ (২৭৮) فَإِنْ لَمْ تَفْعَلُوا فَأْذَنُوا بِحَرْبٍ مِنَ اللَّهِ وَرَسُولِهِ ৃৃৃ.(২৭৯)

“হে ঈমানদারগণ! তোমরা আল্লাহকে ভয় কর এবং সুদের যে বকেয়া আছে তা পরিত্যাগ কর, যদি তোমরা ঈমানদার হয়ে থাকো। অতঃপর যদি তোমরা পরিত্যাগ না কর, তবে আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের সাথে যুদ্ধের ঘোষণা জেনে রেখো।” (সুরা বাকারা-২৭৮-২৭৯ শেষাংশ)

(১০১৫) عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: أَيُّهَا النَّاسُ، إِنَّ اللهَ طَيِّبٌ لَا يَقْبَلُ إِلَّا طَيِّبًا، ثُمَّ ذَكَرَ الرَّجُلَ يُطِيلُ السَّفَرَ أَشْعَثَ أَغْبَرَ، يَمُدُّ يَدَيْهِ إِلَى السَّمَاءِ، يَا رَبِّ، يَا رَبِّ، وَمَطْعَمُهُ حَرَامٌ، وَمَشْرَبُهُ حَرَامٌ، وَمَلْبَسُهُ حَرَامٌ، وَغُذِيَ بِالْحَرَامِ، فَأَنَّى يُسْتَجَابُ لِذَلِكَ؟

“আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেন রাসুলুল্লাহ (সঃ) বলেছেন হে মানুষেরা আল্লাহ পবিত্র, তিনি পবিত্র ছাড়া গ্রহণ করেন না। অতপর বললেন এক ব্যক্তি দীর্ঘ সফরে বের হয় তার চুলগুলো এলোমেলো হয়ে আছে ও কাপড় ধুলোবালি ময়লা হয়ে আছে, সে দুহাত আকাশের দিকে তুলে বলে হে রব! হে রব! অথচ তার খাদ্য হারাম পানীয় হারাম পোষাক হারাম সে হারাম ভাবে লালিত পালিত হয়েছে এ অবস্থায় কিভাবে তার দোয়া কবুল হতে পারে।” (সহীহ মুসলীম-১০১৫)

৪৭৫৩ - قَالَ هَنَّادٌ قَالَ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَيَأْتِيهِ مَلَكَانِ فَيُجْلِسَانِهِ فَيَقُولَانِ لَهُ مَنْ رَبُّكَ؟ فَيَقُولُ: رَبِّيَ اللَّهُ، فَيَقُولَانِ لَهُ مَا دِينُكَ؟ فَيَقُولُ دِينِيَ الْإِسْلَامُ، فَيَقُولَانِ لَهُ مَا هَذَا الرَّجُلُ الَّذِي بُعِثَ فِيكُمْ؟ قَالَ: فَيَقُولُ هُوَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَيَقُولَانِ: وَمَا يُدْرِيكَ؟ فَيَقُولُ: قَرَأْتُ كِتَابَ اللَّهِ فَآمَنْتُ بِهِ وَصَدَّقْتُ

“হান্নাদ (রহঃ) বলেন রাসুলুল্লাহ (সঃ) বলেছেন- অতঃপর তার নিকট দুজন ফিরিশতা এসে তাকে বসিয়ে উভয়ে প্রশ্ন করে তোমার রব কে? তখন সে বলে- আমার রব আল্লাহ। তারা উভয়ে তাকে প্রশ্ন করে তোমার দীন কি? সে বলে আমার দীন হলো ইসলাম। তারা তাকে প্রশ্ন করে এ লোকটি তোমাদের নিকট প্রেরিত হয়েছিল তিনি কে? তিনি বলেন, সে বলে- তিনি আল্লাহর রাসুল। তারপর তারা উভয়ে আবার বলে তুমি কি করে জানলে? সে বলে- আমি আল্লাহর কিতাব পড়েছি, তার প্রতি ঈমান এনেছি এবং সত্য বলে স্বীকার করেছি।” (সুনানে আবি দাউদ-৪৭৫৩ সনদ সহীহ)

وَمَا كَانَ صَلَاتُهُمْ عِنْدَ الْبَيْتِ إِلَّا مُكَاءً وَتَصْدِيَةً فَذُوقُوا الْعَذَابَ بِمَا كُنْتُمْ تَكْفُرُونَ (৩৫)

“আর কাবার নিকট তাদের সালাত বলতে শিস দেয়া আর তালি বাজানো ছাড়া অন্য কিছুই ছিলনা ফলে তারা নিজেদের কুফরির আযাবের স্বাদ গ্রহণ করুক।” (৮ সুরা আনফাল-৩৫)

وَلَئِنْ سَأَلْتَهُمْ مَنْ خَلَقَ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضَ لَيَقُولُنَّ اللَّهُ قُلِ الْحَمْدُ لِلَّهِ بَلْ أَكْثَرُهُمْ لَا يَعْلَمُونَ (২৫)

“তুমি যদি তাদেরকে জিজ্ঞেস কর আকাশমন্ডলী ও পৃথিবী কে সৃষ্টি করেছে? তারা নিশ্চয়ই বলবে আল্লাহ। বল, সকল প্রশংসা আল্লাহর, কিন্তু তাদের অধিকাংশই এই বিষয়ে অজ্ঞ।”(লোকমান-২৫)

وَمَا يُؤْمِنُ أَكْثَرُهُمْ بِاللَّهِ إِلَّا وَهُمْ مُشْرِكُونَ (১০৬)

“অধিকাংশ মানুষ আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করে তারপরেও তারা মুসরিক।” (১২ ইউসুফ ১০৬)

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url