জান্নাত লাভের কিছু সহজ আমল
“আবু আইয়ুব খালেদ ইবনে যায়েদ আনসারী (রাঃ) বলেন এক ব্যাক্তি বলল হে আল্লাহর রাসুল! আপনি আমাকে এমন আমলের কথা বলে দিন- যা আমাকে জান্নাতে নিয়ে যাবে জাহান্নাম থেকে দুরে রাখবে। তিনি বললেন তুমি আল্লাহর ইবাদত করবে তার সাথে কাউকে অংশীদার করবেনা, সালাত কায়েম করবে, যাকাত প্রদান করবে আর আত্মীয়তার সম্পর্ক অটুট রাখবে। সে ব্যাক্তি চলে গেলে রাসুলুল্লাহ (সঃ) বললেন তাকে যে কাজের আদেশ দেয়া হয়েছে তা দৃঢ়তার সাথে পালন করলে সে জান্নাতে যাবে।” (সহীহ বুখারী-১৩৯৬ সহীহ মুসলীম-১৩)
“আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেন এক বেদুঈন এসে বলল হে আল্লাহর রাসুল! আপনি আমাকে এমন আমলের কথা বলে দিন- যা করলে আমি জান্নাতে যেতে পারবো তিনি বললেন তুমি আল্লাহর ইবাদত করবে তার সাথে কাউকে অংশীদার করবেনা, ফরজ সালাত কায়েম করবে, নির্ধারিত যাকাত প্রদান করবে এবং রমযানের রোজা পালন করবে। লোকটি বলল যার হাতে আমার প্রাণ তার কসম এর ওপর কিছু বাড়াবনা আর কিছু কমাবোনা, সে ব্যাক্তি চলে গেলে রাসুলুল্লাহ (সঃ) বললেন কেউ কোন জান্নাতী লোক দেখে খুশি হতে চাইলে একে দেখুক।” (সহীহ বুখারী-১৩৯৭ সহীহ মুসলীম-১৪)
মসজিদ আবাদের মাধ্যমে
“তারাই তো আল্লাহর মসজিদ আবাদ করবে যারা আল্লাহতে ও পরকালে বিশ্বাস করে এবং থাযথভাবে নামায পড়ে ও যাকাত আদায় করে আর আল্লাহ ব্যতীত কাউকে ভয় করেনা, আসা করা যায় তারা সুপথ প্রাপ্ত হবে।" (০৯ সুরা তওবা-১৮)
“আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত রাসুলুল্লাহ (সঃ) বলেছেন- নিশ্চয় আল্লাহ কিয়ামতের দিন আহবান করবেন- ‘আমার প্রতিবেশীরা কোথায়, আমার প্রতিবেশীরা কোথায়’ ? তা শুনে ফেরেস্তারা বলবে হে আমাদের রব আপনার প্রতিবেশী হওয়ার উপযুক্ত কারা? তিনি বলবেন- মসজিদের আবাদ করেছে যারা।” (সিলসিলা সহীহাহ-২৭২৮)
“উসমান ইবনে আফফান(রাঃ) বলেন নবী করিম (সঃ) কে বলতে শুনেছি যে আল্লাহকে সন্তষ্টির জন্য মসজিদ নির্মাণ করেন আল্লাহ তার জন্য জান্নাতে একটি ঘর তৈরী করেন”। (সহীহ বুখারী-৪৫০ সহীহ মুসলীম-৫৩৩)
ওজু ও আজানের দোয়ার মাধ্যমে
“উমার ইবনে খাত্তাব (রাঃ) বলেন রাসুলুল্লাহ (সঃ) বলেছেন- যে ব্যক্তি সুন্দরভাবে ওজু করার পর (এই দুআ) বলে-তার জন্য জান্নাতের আটটি দরজা খুলে দেওয়া হবে যেটা দিয়ে সে চাইবে সেটা দিয়ে প্রবেশ করবে।” (জামে তিরমিজি-৫৫ ইবনে মাজাহ-৪৭০ নাসায়ী-১৪৮)
“যাবির ইবনে আব্দুল্লাহ (রাঃ) বলেন রাসুলুল্লাহ (সঃ) বলেছেন- আজান শোনার পর (দরুদ পাঠ করে) যে পড়বে তার জন্য কিয়ামতের দিন আমার শাফায়াত ওয়াজিব হবে।” (সহীহ বুখারী-৬১৪)
আয়াতুল কুরশি ও সাইয়েদুল ইসতেগফার পাঠে জান্নাতঃ
“আবু উমামা (রাঃ) বলেন রাসুলুল্লাহ (সঃ) বলেছেন যে প্রত্যেক ফরজ স্বলাত আদায়ের পরে আয়াতুল কুরশী পড়বে মৃত্যু ব্যতীত জান্নাতে যেতে তার আর কোন বাধা থাকবেনা।” (মু‘যামুল কাবীর লিত্ ত্ববারানী-২৫৩৭ সহীহুল জামে-৬৪৬৪)
“শাদ্দাদ ইবনে আউস (রাঃ) বলেন রাসুলুল্লাহ (সঃ) বলেছেন- সায়্যিদুল ইস্তেগফার (এই দুআ) যে ব্যক্তি বিশ্বাসের সঙ্গে সকালে পড়ে সন্ধ্যার আগে মারা যাবে সে জান্নাতে যাবে আবার সন্ধ্যায় পড়ে সকালের আগে মারা যাবে সে জান্নাতে যাবে।” (সহীহ বুখারী-৬৩০৬)
তিনটি আমলে জান্নাত
“আবদুল্লাহ ইবনে সালাম বলেন রাসুলুল্লাহ (সঃ) বলেছেন- হে মানুষগণ তোমরা সালামের প্রসার ঘটাও, খাদ্য দান কর এবং মানুষ ঘুমিয়ে থাকা অবস্থায় সালাত আদায় কর তাহলে তোমরা সহীহ সালামতে জান্নাতে প্রবেশ করবে।” (জামে তিরমিজি-৭০১৫, ইবনে মাজাহ-১৩৩৪)
তিনটি বিষয় থেকে মুক্ত থাকলে
“সাওবান (রাঃ) হতে বর্ণিত রাসুলুল্লাহ (সঃ) বলেছেন যে ব্যাক্তি তিনটি বিষয়- অহংকার, গনিমতের মাল আত্মসাৎ ও ঋণ হতে মুক্ত অবস্থায় মারা গেল সে জান্নাতে প্রবেশ করবে।” (জামে তিরমিজি-১৫২৭, ইবনে মাজাহ-২৪১২)