কালো মেয়ের বিয়ে | শেষ পর্ব

পাগলিটা আমার থেকে নিজেকে ছাড়িয়ে নিলো আর রান্না ঘরে চলে গেলো…..আমি ও বিছানা থেকে উঠে ফ্রেস হয়ে নিলাম…ফ্রেস হয়ে মোবাইল নিয়ে টিপাটিপি করতেছি…. একটু পর পাগলিটা আবার রুমে আসলো…
অনিকা: এই চলো নাস্তা করবে চলো…..বাবা মা বসে আছে তোমার জন্য …
আমি :হুম চলো….
.
নাস্তা করতেছি এমন সময় বাবা মা বললো …আকাশ তোরা বিকালে ঢাকাতে ফিরে যা আমি আর তোর বাবা কিছু দিন গ্রামের বাড়িতে থাকবো……
আমি:আচ্ছা ঠিক আছে মা…..
যেহেতু বাবা মায়ের আদেশ আর ঐ দিকে ব্যাবসা …তাই আর কি করার যেতেই হবে…..এমন সময় অনিকা বলে উঠলো…..
অনিকা:মা আমি তোমাদের কাছে থেকে যাই…
মা:না রে মা ঢাকাতে তো ও একা থাকতে পারবে না …
অনিকা:আচ্ছা মা ঠিক আছে …..
.
নাস্তা করে রুমে আসলাম কিছুক্ষন পর অনিকা আসলো…..
আমি:অনিকা ….বিকালের মধ্যে তো আমাদের কে ফিরে যেতে হবে আমরা গ্রামটা একটু ঘুরে দেখবো….
অনিকা:আচ্ছা ঠিক আছে আমি এক্ষুনি রেড়ি হয়ে আসতেছি…..
একটু পর অনিকা রেড়ি হয়ে আসলো…..
অনিকা:হুম চলুন আমি রেড়ি…..
যাক বাবা কালো মেয়ে বিয়ে করে বাঁচলাম কোন সুন্দরী হলে ময়দা মেখে দিন পার করে দিতো….যাই হোক অবশেষে দুজনে মিলে গ্রামটা ঘুরে দেখতেছি….. আমি আমার পাগলিটার হাত ধরে হাঁটতেছি……বাতাসে ওর চুল গুলো উড়িয়ে আমার মুখে আসতেছে……
আমি:চলো জান গাছটির নিচে একটু বসি…..
অনিকা: হুম চলো……
গাছের নিচে বসে দুজনে গল্প করতেছি…… হঠাৎ আমি বললাম…
আমি:জানো জান আমি সব সময় মনের মতো কাউকে খুঁজেতাম ……কিন্তু সবাই তোমার মতো না …..অনেক মেয়ে আছে সুন্দরী কিন্তু তাদের মনটা অত্যন্ত নোংরা….. আমি তোমার মাঝে আমার স্বপ্নকুমারী কে খুঁজে পেয়েছি খুব ভালোবাসি তোমাকে….
অনিকা:আমি বুঝতে পারি… আমি জানি আপনি আমাকে খুব ভালোবাসেন…..
অনেকক্ষন ঘুরাঘুরি পর বাসায় আসলাম…..দুপুরে খেয়ে দুজনে রেড়ি হলাম ঢাকা যাবার জন্য …… হঠাৎ অনিকা বলে উঠলো…..
অনিকা:আমি তো শহরে নতুন যাচ্ছি আমার খুব ভয় করতেছে‌‌‌‌ ….জানিনা কেমন পরিবেশ…
আমি:হি হি হি হি তুমি কি বাচ্চা নাকি ভয়ের কি আছে পাগলি আমি তো আছি…….
বিকালে বাবা মায়ের থেকে বিদায় নিয়ে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম…..অনিকা কে নিয়ে বাসে উঠলাম ….. একটু পর গাড়ি ছাড়লো….
আর পাগলিটা আমার কাঁধে মাথা রেখে ঘুমোতে পরলো……প্রায় তিন ঘন্টা পর আমরা এসে পৌছালাম…….বাস থামলো পাগলিটা নিয়ে বাসায় আসলাম……..
আমি:অনু তুমি ফ্রেস হয়ে রেস্ট নাও একটু আমি বাহিরে থেকে খাবার জন্য কিছু নিয়ে আসি…… অনিকা:এইই না না please আমি কিছু খাবো না তবুও আমাকে একা রেখে যাবেন না আমার খুব ভয় করতেছে‌‌‌‌…….

আমি আচ্ছা ঠিক আছে পাগলি যাবো না……বাসার দারোয়ানকে দিয়ে খাবার আনালাম……রাত প্রায় দশটা আমি আমার পাগলিটাকে খাইয়ে দিচ্ছি আর ও বাচ্চা মেয়ের মতো আমার দিকে হা করে তাকিয়ে আছে……ও বলতেই ভুলে গেছি….
বাসে ঠান্ডা লেগে পাগলিটার জ্বর এসেছে……খাওয়া শেষে ঔষধ খাইয়ে …. পাগলিটাকে ঘুম পাড়িয়ে দিলাম…..
অনিকা সত্যিই একদম নিস্পাপ শিশুর মতো …. পাগলিটা ঘুমাচ্ছে আর আমাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে রেখেছে…….ছাড়তেই চাইতেছে না মনে হয় আমি হারিয়ে যাবো…..জ্বরে পাগলিটার পুরো গা ঘেমে গেছে……টাওয়াল দিয়ে ওর গাম গুলো মুছে দিলাম…….অনিকা ঘুমের মধ্যে বলতেছে……
অনিকা :বাবু please আমাকে বুকে নাও……
সত্যিই পাগলিটা আমাকে খুব ভালোবাসে…. আমি আমার পাগলিটাকে শক্ত করে বুকে জড়িয়ে নিলাম……
সকাল বেলা ঘুম থেকে উঠে নাস্তা তৈরী করলাম……
পাগলিটা এখনো ঘুমাচ্ছে আমি ও ডাকিনি ….সারারাত জ্বরের কারনে ঘুমাতে পারে নি তাই একটু ঘুমাক….
আমি নাস্তা রেড়ি করে টেবিলে সাজিয়ে রাখলাম…..
রুমে আসলাম দেখি পাগলিটা ঘুমাচ্ছে …. আমি আলতো করে ওর কপালে একটা চুমু দিতেই পাগলিটা জেগে গেলো…………..
অনিকা:কি ব্যাপার জনাব চুরি করে চুমু খাওয়া হচ্ছে…….
আমি:না না কই চুমু খেলাম ……
অনিকা: জানি চোর একটা ……শয়তান……!
আমি:হায় হায় নিজের বউকে চুমু খেলে ও চোর………!
অনিকা:না বাবু সাধু.তুমি…..
আমি:আচ্ছা সোনা আমি চোর ….. তোমার শরীর কেমন আছে…..জ্বর কমেছে………
অনিকা:আমার আদরে বাবুটার জন্য জ্বর রাগ করে চলে গেছে……
আমি:যাক সোনা ভালোই হয়েছে আপদ বিদেয় হয়েছে……
অনিকা: ছিহ ছিহ সোনা এভাবে বলো না ওর জন্যই তো তোমার ভালোবাসাটা পেলাম……আর সারারাত তোমার বুকে থাকতে পারলাম……….
আমি:হি হি হি হি পাগলি একটা…….
অনিকা:হা হা হা তোমার জন্যই তো হয়েছি……
আমি: তারাতারি উঠো আর ফ্রেস হয়ে নাও……….
অনিকা:(একটা মুচকি হাসি দিয়ে) হুম এক্ষুনি যাচ্ছি গুলুগুলু…….
.
একটু পর পাগলিটা ফ্রেস হয়ে আসলো……
আমি:চলো জান খাবো চলো…….
অনিকা:খাবো মানে ……! আমি তো মাএ ঘুম থেকে উঠলাম এখনো কিছু করি নি………
আমি:আহা চলো তো পাগলি……..
আমি হাত ধরে অনিকাকে নিয়ে আসলাম……আর টেবিলে বসিয়ে খাবার বেড়ে দিলাম..
অনিকা:ওয়াও বিরিয়ানি… হোটেলে থেকে আনিয়েছো….
আমি:উহু আমি রান্না করেছি তোমার জন্য…….হা করো আমি তোমাকে খাইয়ে দিই…..
লক্ষ্য করলাম অনিকার চোখ দিয়ে অশ্রু ঝরতেছে…….
আমি:কি বলো কান্না করতেছো কেনো……..
অনিকা:জানো আকাশ আজ পর্যন্ত আমার বাবা মা ছাড়া আর কেউ আমাকে এতোটা ভালোবাসে নি …..
তুমি এমন কেনো……এতো ভালোবাসো কেনো আমায় এতো ভালোবাসা কি আমার কপালে সইবে গো……
আমি:একদম বাজে কথা বলবা না…. আমি তোমাকে খুব ভালোবাসি…..
এই বলে পাগলিটা কে জড়িয়ে ধরলাম……
অনিকা: সারাজীবন এভাবে আঘলে রাখবে তো আমায়…….কখনো ছেড়ে যাবে না তো….
আমি:না পাগলি কখনো ছেড়ে যাবো না ……
অনিকা: Love you Akash
আমি: Love you too sona
.
.
                                                          ………………..সমাপ্ত……………………