Breaking News

গল্প :তুই কি আমার বউ হবি। Writer:- Rabiul islam Rabi

—-ও মাগো এই ভোর বেলা বৃষ্টি এলো  কোথা থেকে???
—বৃষ্টি না আমি পানি ঢালছি।
—ঐ পেত্নী তুই পানি দিলি ক্যান????
—আমার কলেজে দেরি হয়ে যাচ্ছে, আর তোর অফিসে।
—এই ভোর বেলা আমার মতন মাসুম ছেলের
ঘুমের বারটা বাজিয়ে আবার মিথ্যা বলিস পেত্নী।
—এই নে দ্যাখ কয়টা বাজে, আজ যদি আমার
কলেজে দেরি হয় না দেখাবনে। আর পেত্নী বলার সাধটা তোলা রইল।
—ও মা, ৯টা বাজে। তুই যা আমি আসছি, নাশতা রেডি কর।
তারাতারি বাথরুমে ঢুকলাম, আজ খবর আছে নতুন
বস আসছে আজ। আর আজ যদি দেরি হয় খবর আছে।
আসুন পরিচয় দিয়ে নিই, আমি রবি, আর ঐ
পেত্নী নিঝুম, এক মাত্র আদরের বোন, আর বাবা,
মা নিয়ে চার জনের ছোট্ট একটা পরিবার।
—ও মা, তারাতারি নাশতা দাও।
—আদ দামড়া ছেলে বেলা করে ঘুমিয়ে এখন আসছে।
—কথা বল না তো। কী রে পেত্নী তুই রেডি তো।
—আমি তোর মতন লেট লতিফ নাকি, আমি রেডি।
—দেখিস তোরে একটা লেট লতিফ মার্কা ছেলে দেখেই বিয়ে দিব।
রেডি হয়ে বের হলাম দুই ভাই বোন।
আমার অফিস যাবার পথেই ওর কলেজ পরে,তাই একসাথেই নিয়ে যেতে হয়।
গল্প করতে করতে ওর কলেজ পৌছে গেছি,
—এই পেত্নী নাম তোর কলেজ চলে আসছি। যা ক্লাসে যা।
—টাকা দে, আইসক্রিম আর ফুসকা খাব।
—টাকা নেয় যা ভাগ।
—না দিলে আমি ক্লাসে যাব না, তারপর বাড়ি গেলেই বুঝবি।
—থাক আর বোঝাতে হবে না এই নে, এখন যা।
—অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া, সাবধানে যাস।
—তোকে বলতে হবে না ভাগ এখন।
অফিসে পৌছাতে আধা ঘন্টা লেট আজ, অন্য
দিন লেট করি না। আজ নতুন বস আসছে আর আজকেই
লেট হতে হল, কপাল আমার????
কোনরকম এসে নিজের ডেস্কে বসলাম, পিওন
চাচার আগমন। নতুন ম্যাডাম আপনাকে ডেকেছে তাঁর কেবিনে।
—এইরে কাম সারছে, তুমি যাও আমি যাচ্ছি ।
তাঁর মানে নতুন বস কোন মেয়ে হবে।
বসের কেবিনের দিকে হাটা দিলাম।
—আসতে পারি????
—হ্যা আসুন। (ফাইলে মুখ লুকিয়েই?
—আমি রবি, আমাকে ডেকেছিলেন ম্যাম????
—জি, বসুন। (বলেই ফাইল থেকে মুখ তুলল)
আমি তো জিবনের প্রথম ক্রাশটা খেয়েই
নিলাম পানি ছাড়াই।
এই মেয়ে না পরী। যদিও কখনই পরি দেখিনি,
টানা টানা চোখ, বাঁশির মত নাক, গভীর দুটি
চোখ, রেশমী কালো চুল, কমলার কোমার মতন
ঠোট। আর কী চাই???
—এইযে কোথাই হারালেন???
—ননননা এখানেই আছি।(সপ্নের দেশে চলে গেছিলাম)
—তা আজ অফিসে লেট ক্যান??? আগে তো কখনই
লেট নেই দেখলাম। আফিস কামায় দেয়ার
রেকর্ড ও নেই। তবে….
—আসলে আজ ঘুমের জন্যই লেট।
—আপনি জানতেন আজ নতুন বস আসছে???
—হ্যা।
—এইটা কী জানেন??? (একটা ফাইল দেখিয়ে)
—না…
—আপনার সকল ডিটেল্স আছে এখানে তাই
দেখছিলাম। কোন খারাপ রিপোর্ট নেই বলে
বেঁচে গেলেন আজ। আর এত বছর একই
পৌষ্টে কাজ
করছেন, কয়েক বার প্রমোশন দেয়া হয়েছে
ফিরিয়ে দিয়েছেন ক্যান????
—আসলে প্রমোসন নিলে এত দিনে
আমাকে এই
রুমেই বসতে হত, আর আমি একা কাজ করতে পছন্দ
করি না। তাই ফিরিয়ে দিয়েছি। সবার সাথে
কাজ করে অনেক মজা যা বস হয়ে এই একলা রুমের
মাঝে নেই। (অফিস প্রমোশন দেয় আর আমি তা
নেই না, শুনলে অবাক হওয়া ছাড়া কারো কিছুই করার নেই)
—হুম বুঝলাম, এর পর যেন লেট না হয়, আর আমি
আপনার অনেক ছোট তাই ম্যাডাম বলার দরকার
নেই, সবার মত নাম ধরেই ডাকতে পারেন।
বয়সেও আপনার ছোটই হব।
আমি মারুকফা ইয়াসমিন মিম। মিম বলে
ডাকলেই হবে।
এখন আসুন, গিয়ে নিজের কাজ করুন।
বুঝলাম মেয়েটা খুব মিশুখ মনের মানুষ।
নিজের ডেস্কে এসে বসলাম, আর ভাবতে
লাগলাম, এখন কেও না বললেও আগেই আসব, লেট
করা চলবে না মায়াবতী আমি যে তোমার
মায়াই পরেছি, সেটা যদি তুমি জানতে……
ডেস্কে বসে মনোযোগ দিয়ে কাজ করতে লাগলাম,
বিকেলে অফিস শেষ করে বাড়ি ফিরলাম।
কোন আড্ডা দিলাম না, কাল থেকে দেরি
করা চলবে না অফিসে।
কলিং বেল বাঁজাতেই বোন দরজা খুলেই অবাক
নয়নে চেয়ে রইল।
হঠাৎ কাছে এসে কপালে হাত দিয়ে দেখতে লাগল।
—কিরে জ্বর তো নেয়, শরিল খারাপের কোন
লক্ষন তো দেখছি না। সূর্য আজ কোন দিকে
ডুবছে?? (বাইরে উকি দিয়ে)
ও মা দেখে যাও তোমার ছেলের কী যেন হয়েছে।
—ঐ পেত্নী সরবি দরজা থেকে, তখন থেকে কী সব বাজে বকছিস।
—যে রাত ৯ টার আগে বাড়ি আসেনা সে আজ
সন্ধার আগেই বাড়ি ফিরছে, এইটা একটা
বিশ্বের অষ্টম অশ্চর্য নয়????
—-চুপ একদম চুপ…..
রুমে এসে ফ্রেশ হলাম,
—মা খাবার দাও তো।
—আই দিচ্ছি ।
—এক তরকারি দিয়ে খাওয়া যায়??? আরো
রান্না করতে পার না????
—কতবার বললাম একটা বিয়ে করা, কত মেয়ে
দেখাইলাম, নবাবের পছন্দই হয় না। আর আসছে
নানান পদের রান্না নিয়ে….
—বাদ দাও তো মা, তোমাদের আর মেয়ে দেখতে হবে না।
—আমি যে কত কষ্ট করি তা তুই যদি বুঝতি তবে।
—আর কষ্ট করতে হবে না, খুব তারাতারিই
তোমার কষ্ট কমিয়ে দিব। (মনে মনে)
—কিরে ভাইয়া মনে মনে কি বকছিস???
—চুপ পেত্নী বেশি পাকনা হয়ছিস????
মনোবিজ্ঞানী হলি কবে, যে মনের কথাও
বুঝে ফেলছিস?????
—এখন তো আমিই পাকনা হলাম।
রাতে আর বাইরে গেলাম না, সকাল সকাল
ঘুমিয়ে পড়লাম।
পরের দিন সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠে রেডি
হলাম, অফিসের জন্য, কাওকে ডাকতে হয়নি আজ।
কখন যে ওই মায়াবীনিকে দেখতে পাব সেই
আশায় সারা রাত ভাল ঘুমও হয়নি।
—নিঝুম এই নিঝুম…..
—-
—এই নিঝুম….
—-
—কিরে পেত্নী কই গেলি????
—ঐ তুই আমারে পেত্নী বললি আবারো???
—ক্যান ভাল করে নিঝুম বলে যখন ডাকলাম
তখনতো একবারো উওর নিলি না। যেই না
পেত্নী বলে ডাকলাম সাথে সাথে
রিএ্যাকসন করলি। তাহলে আমি কী করব????
—হয়ছে, হয়ছে, সাত সকালে ষাঁড়ের মতন
চিল্লাচ্ছিস ক্যান??????
—কলেজ যাবিনা রেডি হয়ছিস????
বলতে দেরি নিঝুমের দৌড়ে চলে যেতে
দেরি নেই। আমি তো ওর দৌড় দেখে অবাক।
বেশ কিছু খন পরে পাগলীদের মতন মাথা
চুলকাতে চুলকাতে ফিরে এলো। এসেই
—বাইরে তো দেখলাম সূর্য ঠিক ঠিক পূর্ব
দিকেই উঠেছে। তাহলে ভাইয়া তোর কী
সত্যি সত্যি শরিল খারাপ করছে নাকী।
কাল
সন্ধার আগেই বাড়ি ফিরলি, রাতেও
বাইরে
গেলি না, আজ আবার নিজে থেকেই ঘুম
থেকে
উঠে রেডি হয়ে আমাকে ডাকছিস, আমার
মাথায় কিছু ঢুকছে না।
—ঐ পেত্নী তোকে অত বুঝতে হবে না, যা
রেডি হয়ে নাশতা করতে আয়।
বলেই নিজে নাশতা করতে গেলাম।
আমাকে নাশতার টেবিলে দেখে মা
বাবা
দুজনেই সেই অবাক।
—কিরে আজ সূর্য কোন দিকে উঠল???? (মা)
—-না মা সূর্য ঠিক দিকেই উঠছে, তোমার
ছেলের কিছু হয়ছে কী না দেখ। (নিঝুম)
বাবা আর কিছুই বললেন না।
নাশতা করে পেত্নীটাকে নিয়ে রওনা
হলাম।
নিঝুমকে ওর কলেজে নামিয়ে দিয়ে
অফিসে
চলে এলাম। আসার সময় কিছু ফুল নিয়ে
এলাম।
অফিসে ঢুকেই মিমের টেবিলের উপর
রেখে
দিলাম।
জানিনা ও সিঙ্গেল না মিঙ্গেল, সুন্দরী
মেয়েরা যদিও সিঙ্গেল থাকেনা তবুও মন
বলছে আৎে, আর যদি থেকেই থাকে সিঙ্গেল
তবে অন্য কেও মিঙ্গেল করার আগেই আমাকে
ভালবাসার কথা বলে দিতে হবে।
নিজের ডেস্কে বসে কাজ করছি।
কিছু সময় পরেই মিমও এলো অফিসে, ওকে
দেখেই মুচকি একটা হাসি দিলাম।
ও খেয়াল না করেই চলে গেলো।
ডেস্কে বসে কাজ করছি, কিন্তু কাজে মন নেই।
প্রতিদিন সবার আগে আফিসে আসা, ফুল এনে ওর
কেবিনে রেখে আসা। ওর সাথে কথা বলার
চেষ্টা করা এইতো চলছে আমার দিন।
এভাবেই চলছে আমার দিন কাল, যেন একটা
রুটিন হয়ে গেছে আমার। বাড়িতে মা বোনের
আচরন আমাকে নিয়ে যে তাঁরা কৌতুহলে
ভুগছে তা বলে না দিলেও চলে। অন্য দিকে
অফিসে মিমের ঝাড়ি, ওকে নিয়ে ভাবতে
গিয়েই সব ফাইলেই কিছু না কিছু ছোট খাট ভুল
আমি করছিই, আর সকালে ওর টেবিলে কিছু ফুল
রাখাটা যেন সবচেয়ে বড় কাজ হয়ে গেছে
আমার, কোন ভাবেই মিস করা চলবে না।
এমডি স্যার দেশের বাইরে ছিল, দেশে এসেই
অফিসে আসলেন।
—এমডি স্যার তোমাকে ডাকছে বাবা।
(পিওন চাচা)
—তুমি যাও আমি আসছি।
—আসতে পারি স্যার????
—রবি, ভেতরে এসো।
—ক্যামুন আছেন স্যার?????
—বসো, আমি ভাল আছি, তোমার কী খবর????
—এইতো আছি।
—তা নতুন বস কে ক্যামুন লাগছে।
—সেইরাম লাগছে স্যার। (সাথে সাথে
জিহ্বাতে কামড় দিলাম, যা মুখ ফসকে
কি বলে দিলাম)
—সেইরাম মানে???? কী রবি সাহেব, মনে
লাড্ডু ফুটছে নাকী?????

……………waiting for next part……

No comments

info.kroyhouse24@gmail.com