Breaking News

বাস্তবমুখী গল্পঃ জনম দুঃখী পিতামাতা

নতুন বাইক হারিয়ে মাথায় হাত দিয়ে করিম চাচার দোকানে বসে আছি।ভয়ে বাসায় যেতে পারছি না।কারন এইত গত মাসে ফোনটা হারিয়েছি আর আজ বাইক।ফোন হারানোর পর সেদিন রাতে খেতে বসতেই বাবা বলল,এত বেখেয়ালি কেন তুই?নিজের ফোন টাও ঠিক মত রাখতে পারিস না!!কেমন ছেলে তুই, বৃদ্ধ বাবার ঘারে বসে খাচ্ছিস আর টাকা উড়াচ্ছিল?অনেক ত বয়স হইছে এবার,,,

পুরা কথাটা না শুনেই ভাতের প্লেট ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে নিজের রুমে এসে কানে হ্যাড ফোন গুঁজে শুয়ে পড়লাম।চলুন এই ফাকে আমার পরিচয়টা দেই,,,,,,

আমি ফয়সাল, ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করে চাকরিবাকরি না করে,বাবার টাকায় মাস্তিকরে জীবন কাটাই।পরিবারে বাবা,মা ছারাও দুটো বোন আছে।বড় আপির বিয়ে হয়ে গেছে ছোট বোন ইন্টারে পরে।এরপর,,,,,

ঘণ্টা খানিক পরে মাথায় কার হাতের শুয়া অনুভব করলাম।বুজতে আর বাকি নেই হাতটি কার তবুও ঘাপ্টি মেরে ঘুমের ভান করে শুয়ে রইলাম।একটু পরেই ভারি কন্ঠে কেউ বলে উঠল,ছেলেটাকে খাওয়ার সময় কথাগুলো বলা ঠিক হয় নাই।ক্ষুদা পেটে ওর হয়ত ঠিক মত ঘুম হবে না।পাশে দারানো মানুষটাকে উদ্দেশ্য করে বলল,আমি রুম থেকে চলে যাই,তুমি ভাত,আর ডিম ভেজে খাইয়ে দেও।কথা গুলো বলে কপালে একটা পশম একে দুজন মানুষ একসাথে বেরিয়ে গেল।একটু পর থালা হাতে কেউ রুমে প্রবেশ করে মাথায় হাত বুলিয়ে বলল,বাবা উঠ।দেখ মা তোর পছন্দের ইলিশ মাছ করা করে ভেজে এনেছি,কয়েকটা ডাক দিতেই ক্ষীপ্ত মেজাজে বলে উঠলাম,আমার ঘর থেকে যাও, আমার ক্ষিদে নাই।কিন্ত আমার এই রিয়াক্টে সেই মানুষটার চেহারায় কোন প্রভাব ফেলল না,বরং একটা হাসি দিয়ে বলল,বাবার উপর কেউ রাগ করে?

খেয়ে নে বাবা,রাতে না খেলে ঘুম আসবে না।কিন্ত আমি আমার সিদ্ধান্ত অটুট ঘারের সব কটা রক তেরা করে বলতে লাগলাম তুমি কি এখান থেকে যাবে নাকি?আমি বাড়ি থেকে বের হয়ে যাব?চলে যাওয়ার কথা শুননেই,একটু আগের সেই হাসি মায়া ভরা মুখটা মলিন হয়ে গেল।বলল বাবা ফোন এর জন্য মন খারাপ করিস না,আমার কাছে কিছু টাকা আছে তোকে দিব কালকেই ফোন কিনে আনিস।তোর বাবা কিছুই জানবে না।তবুও আমার রাগ তার কথায় কমছে না।এত করে রাগ দেখিয়ে কথা বলার পর মানুষ টা গেল না,পরে বিরক্ত হয়ে খেয়ে নিলাম।কিছুটা অনুতপ্ত হলাম,না মায়ের সাথে এমন করাটা ঠিক হয় নাই এসব ভাবতে ভাবতে কখন যে ঘুমিয়ে পরছি মনে নাই।রাতের অন্ধকার কেটে দিনের আলো ফুটতেই রাতের অনুতপ্ততা একেবারে কেটে গেল। ঘুম ভাংল সকাল ৯ টায়,বাবা তখন অফিসে মা রান্না করে। ফ্রেস হয়ে খাবার টেবিলে বসে নাস্ত দিতে বললাম।কিন্ত মা একটু ওয়েট করতে বলল,কিন্ত সালার ৫ মিনিট ধরে বসে আছি কিন্ত নাস্তার কোন খবর নাই।রাগে ডাইনিং টেবিল এর উপর থাকা কাচের গ্লাস আচার মেরে উঠতে যাব।তখনি মা পিছন থেকে হাতটা খপ করে ধরে বলল,না খেয়ে যাস না বাবা!!তোর মোবাইলের টাকা টা গুছাতে গিয়ে দেরি হইছে।সাথে সাথে শাড়ির আচল থেকে ৫০০ থেকে শুরু করে ৫ টাকার কয়েন সহ কিছু টাকা হাতে ধরিয়ে দিল।অসস্তি কর মুখ করে তাকিয়ে বললাম,এখানে কত টাকা?মা একটু ভীতু ভীতু ভাব নিয়ে বলল,১০০০০ টাকা বাবা।আমি একটু ভেবে মায়ের দিকে ইমোশনাল ভাব নিয়ে বললাম,মা আর এক হাজার টাকা হলে ভাল হত।

মা কি যেন ভেবে,বলল দাড়া আমি আনছি,মনে মনে ভাবলাম নতুন ফোন কিনলে বন্ধুদের পার্টি দিতে হবে,১০০০০ টাকায় ফোন কিনব আর ১০০০ টাকায় পার্টি।হঠাত মায়ের আগোমন ৫০০ টাকার দুইটা নোট হাতে দিয়ে বলল এবার নাস্তা খেতে আয় বাবা।আমি বললাম ঠিক আছে তাড়াতাড়ি দেও,মায়ের মুখে এক পৃথিবী হাসি ফুটে উঠল।মনে হল খাবার টা আমি না,মা খাবে!!এসব ভাবার সময় কই!!আমাকে তাড়াতাড়ি খেয়ে ফোন কিনতে যেতে হবে।যাথারিতি বাসা থেকে বের হয়ে,রতনকে ফোন দিলাম।করিম চাচার দোকানে মায়ের অস্তিত্ব কর খুচরো টাকা গুলো দিয়ে নোট বানিয়ে নিলাম।হঠাত আমার চোখ কপালে উঠে যাওয়ার উপক্রম,সালা রতন দেখি পালচার বাইক নিয়ে ব্রেক আমার সামনে ব্রেক কসল।বড় বড় মারবেলের মত চোখ নিয়ে জিজ্ঞাস করলাম, মামা,গাড়িটা কার!সালা বিতলা মার্কা হাসি দিয়ে বলল,কেন আমাকে পছন্দ হয় না?তাই বুজি?হুম বাবা কিনে দিছে।আমার মাথাও পুরা নষ্ট রতন বাইক কিনছে,সালা আমারো বাইক চাই।ফোনের ডিসিশন চেঞ্জ, সারা দিন রতনের বাইকে করে ঘুরলাম,রাতে বাসায় গিয়ে মায়ের হাতে ১০০০০ টাকা দিয়ে দিলাম।মা অবাক নয়নে তাকিয়ে বলল কিরে ফোন কিনিসনি?

না!!কেন রে!এই টাকায় হয়নি বুজি?আচ্ছা চিন্তা করিস না আমি দেখি কি করতে পারি।আমি মাথাটা নিচা করে বললাম,না আমার ফোন লাগবে না!আমার কথা শুনে মা কি বুজল কে জানে!আমার দিকে হাসি মুখে বলে উঠল, দূর পাগল তুই ফোন কিন!আমি মাকে বললাম,আমার ফোন চাইনা কারন আমার বাইক চাই!আমার মুখে কথাটা শুনে মায়ের মুখটা ফেকাসে হয়ে গেল।মা বলল,বাইক!হুম,,বাইক।জান মা রতন আজকে বাইক কিনছে, কি সুন্দর!মা প্লিস আমাকে ও একটা বাইক কিনে দেও,তুমি না আমাকে খুব ভালবাস!!মা চিন্তা মগ্ন মুখে বিষণ্ণ সুরে বলে উঠল আচ্ছে তোর বাবার সাথে কথা বলে দেখি!আমি মাকে চুমু খেয়ে বললাম আমার লক্ষি মা।মনে মনে সেই খশি হলাম,মা যেহেতু দায়িত্ব নিছে তার মানে কাজ হবে।কিন্ত রাতে ভাত খেতে বসলাম,আমি বাবা, মা,কিন্ত আজ মায়ের মুখটা কেমন যেন একটু চিন্তুত!তাতে আমার কি?নতুন বাইকের চিন্তায় আমি সব ভুলে থাকতে চাই।খাওয়া শেষ করে তাড়াতাড়ি উঠে পরলাম,মাকে বাবার সাথে এই বিষয়ে কথা বলার সুযোগ দিতে হবে।একটু পরে মা বাবার কাছে আবেদন মাখা কন্ঠে বলছে,,ও গো শুনছ ছেলটা ত অনেক বড় হইছে।ওর কোন ইচ্ছাই ত আমরা ঠিক ভাবে পুরুন করতে পারলাম না।ছেলেটা আজ আমার আচল ধরে একটা বাইক চাইছে।আমি না ওকে কথা দিছি আমরা কিনে দিব।বাবা কথাটা শুনে বলল,কি!!বাবা আরো বলতে যাবে কিন্ত মা না বলতে দিয়েই, আবারো কান্না জড়িত কন্ঠে বলতে লাগল,তুমি কি আমাকে কথাটা রাখার সুযোগ করে দিবা না?আমি না তোমার কাছে আর কখন(কথা গুলা না অনর্গল কাদতে কাদতে বলছিল মা)এবার বাবা মাকে কথাটা শেষ করতে না দিয়ে বলল,আমি দেখছি!কি করা যায়।পাশের রুম থেকে আমি কথাটা শুনে লুঙ্গী ডান্স দিতে শুর করলাম।মা কাঁদছে বাবার মুখে দুশ্চিন্তার চাপ তাতে আমার কি? বাইক টা ত আমি পাচ্ছি।দুই দিন পরেই সকালে ঘুমাচ্ছি, মা ডাক দিতেই,মেজাজ খারাপ করে উচ্চস্বরে বলে উঠলাম, সাজ সকালে চেঁচামিচি কেন করছ?মায়ের হাসি মাখা মুখখানা হঠাত মেঘে ডেকে গেল কিন্ত কি যেন ভেবে আবারো বলল,

বাবা বাইরে আয় আগে,তারপর দেখ!বাইরে আসতেই খুশিতে মাকে জরিয়ে ধরলাম,বাইরে আমার বাইক দারিয়ে আছে।মায়ের দুই গালে দুটা চুমা দিয়ে বললাম,আমাকে আগে ডাকনি কেন?বাইক পেয়ে এতটাই খুশি হইছি যে,একটু আগের ব্যবহার কথাটা ভুলে গেছি।এখন নতুন বাইক নিয়ে দিনগুলো ভালই কাটছিল।কিন্ত আজ সেই বাইকটা হারিয়ে ফেলছি।আর তাই মাথায় হাত দিয়ে বসে আছি।ভয়ে বাড়িতে যেতে পারছি না।রাত ১টা বাজে কোলাহল মুক্ত রাস্তা পাশের ডাস্টবিনের কুকুর গুলো আমাকে দেখে কিছুটা বিরক্তিকর মুখ নিয়ে তাকিয়ে আছে।ভয় ভয় লাগছে,জনমানবহিন চারদিক,কিছুটা দূরে দুইটা মানুষ আসছে মনে হচ্ছে।এত রাতে দুইটা মানুষ দেখে ভয় কিছুটা ভয় পাচ্ছি না।কাছে আসতেই বুজতে বাকি রইল না,মানুষ দুইটা আর কেউ না,আমার জন্মদাতা বাবা,মা।বাবাকে দেখেই বাইক এর কথা মনে পরল আর ভয়ে মাথা নিচু করে দারিয়ে আছি।হাত, পা কাপছে।মানুষ দুইটা কাছে আসতেই কান্না জড়িত কন্ঠে একজন বলে উঠল,কিরে বাবা!মা কি কিছু ভুল করছি যে,এত রাতে রাস্তায় দাঁড়িয়ে আছিস?আমি মাথা নিচু করে বললাম মা বাইকটা চুরি হয়ে গেছে!মা একটু বিস্মিত সুরে বলল কি??বাবা মায়ের কাদে হাত দিয়ে থামিয়ে দিয়ে বলল,বাইক হারিয়ে গেছে তাই বলে বাড়ি যাবি না!!কথা গুলো বলার সময় মনে হল,আমার এত রাগি বাবাটা ও কাঁদছে।মাথা তুলে তাকেতেই বাবা টান দিয়ে বুকে জরিয়ে ধরল।আমার কাদের অংশটা কিভাবে যেন ভিজতে শুর করল।।

না বৃষ্টি ফোটায় না,কারন বৃস্টি ফোটা এত ভাড়ি হতে পারে না।আমার কাধটা মনে হয় ভেংগে যাবে।জানতাম,বাবার কাধে সন্তানের লাশ নাকি অনেক ভারি হয়।কিন্ত আজ জানলামসন্তানের কাদে বাবার চোখের জল এত ভারি।ঘুমন্ত রাস্তায় আজ তিন জন অর্ঘুমা মানুষ হাটছি,,,,মা,বাবা,আর আমি

বাসায় পৌছে খাটে শুয়ে আছি কোন মতেই ঘুম আসছে না।হঠাত পাশের রুম থেকে মায়ের কন্ঠ ভেসে এল,কি গো তুমি আজ একটু ও রাগ করলা না!!,বাবা বলল,কিভাবে রাগ করব,তুমি ছেলেটার মুখের দিকে দেখ নাই,ছেলেটা আমার ভয়ে কাঁপছিল।কিন্ত তারপরো ছোট মেয়ের বিয়ের জন্য রাখা টাকা দিয়ে ছেলেকে বাইক কিনে দিলা,সেই বাইক হারিয়ে ফেলল তারপরো তুমি নিশ্চুপ!!এবার বাবা বলল,যে মা নিজের ঔষধ কিনার টাকা দিয়ে ছেলেকে মোবাইল কিনে দিতে একবার ভাবে না।সেই মায়ের মুখে কি এসব কথা মানায় না?আমি ত মেয়ের বিয়ের টাকা দিছি।আর তুমি ত নিজের ভিতরে রোগ পুষে সন্তানকে মোবাইল কিনে দিতে চাইছিলে।রাতে তুমি যে,না ঘুমিয়ে হাতের অসহ্য ব্যথায় খাটের এপাশ ওপাশ কর,আমি কি আমি জানি না ভাবছ!!বাবা কথা গুলো বলেই কেঁদে দিল মনে হয় সাথে সাথে আরো একজন মানুষ এর গুগানি কান্নার শব্দও আসছে।পাশের রুম থেকে কথাগুলো শুনে বালিশ অনেক আগেই ভিজিয়ে ফেলছি।বুকের হার গুলা ভেংগে যাচ্ছে।আজ চিৎকার করে কাঁদতে ইচ্ছা করছে।নিশ্বাস বন্ধ হয়ে আসছে আমার।আমি আর শুনতে পারছিলাম না।কানে হেডফোন গুঁজে দিলাম,না আজ গান শুনার জন্য না,আমি আর এই কান্নার আওয়াজ শুনতে পারছি না।

এই কান্না!!আমার ভিতরটা যে দুমড়ে মুচড়ে দিচ্ছে। সারারাত কেঁদেছিলাম আমি,জানি পা্শের রুমে মা, বাবা ও কাঁদছে। খুব সকালে উঠে পরলাম,অনেক দিনপর ফজরের নামাজ পরলাম সাথে দুই রাকাত নফল নামাজ।আল্লাহর কাছে শুকরিয়া আদায় করলাম।এমন পিতামাতার সন্তান হওয়ার জন্য।সকালে নাস্তা করেই বেরিয়ে পরলাম চাকরির খোঁজে।১৫ দিনের মধ্যে আল্লাহর রহমাতে চাকরিও পেয়ে গেলাম।বাবা শুনে অনেক খুশি,আর বোকা মা টা ত কেঁদেই দিছে।এক মাস যেতেই বেতন পেলাম আজ বাবার জন্য পাঞ্জাবি,মায়ের জন্য শাড়ি আর ছোট বোনের জন্য ক্যাটবেরি চকলেট কিনলাম।বাড়িতে গিয়ে মায়ের হাতে টাকা গুলো দিতে চাইতেই মা বলল তোর বাবার হাতে দে!বাবারো একি কথা,আগে তোর মায়ের হাতে দে,,পরে দুজন একসাথে টাকাটা হাতে নিয়ে হাউমাউ করে কেদে দিল।

দুইজন দুইজনের দিকে তাকিতে এক সাথে বলে উঠল বলছিলাম না,টাকাটা তুমি নেও।এই টাকার ভার আমি সামলাতে পারব না।আমি ত পুরা অবাক দুইজন কাদছে আবার ঝগড়াও করছে।কি বোকা বাবা,মা।এই সামান্য টাকা ভার নাকি সহ্য করতে পারছে না।এর চাইতে কত বেশি টাকা বাবার থেকে নিয়ে দুই হাতে উরাইছি।লক্ষকরে দেখি পাশে দাঁড়িয়ে ছোট বোনটাও কাঁদছে।আমি বাদে সবাই কাঁদছে,হঠাত দেখি আমার গলার অংশ ভিজা।তারমানে নিজের অজান্তেই কখন কাঁদতে শুর করছি জানিনা।পরিবারের চার জন মানুষ এক সাথে কাঁদছি।শুধু বড় আপিটা বাদে,শুশুড় বাড়িতে আছে বলে ছাড় পাবে তা ত হয় না!!ফোন দিলাম আমাদের সাথে কান্নার সামিল করতে।এখন কান্নায় পুর্নতা পেয়েছে।পরিবারের পাচটা মানুষ একসাথে কাঁদছি,,,,
তবে এই কান্নাটা বোধয় আরো অনেক আগেই কাঁদা উচিত ছিল,,,,,,

সবশেষে একটা কথাই বলব,আমার গল্প পড়ে যদি একজন ছেলেও তাদের মায়ের প্রতি ভালোবাসা ছিটেফোঁটা বৃদ্ধি পায় তাহলে আজকে আমার গল্প লেখা সার্থক হবে…
[আমার আরো হাসির ও রোমান্টিক গল্প গুলো আমার টাইমলাইন থেকে পড়ে নিতে পারেন]

No comments

info.kroyhouse24@gmail.com