রম্য গল্প-হুলুলুর বডি-স্প্রে
পান থেকে চুন খশলেই মা চিল্লানি দিয়ে বলবে,’তোর কপালে কাজের বেটি ছাড়া কিছুই জুটবে না।”
আমি তখন রাগে গজগজ করলেও আমাদের বাসায় কাজের মেয়েটা বেশ খুশি হয় কথাটা শুনে।
এইতো আজকেও সকালে ডিম আনতে গিয়ে একটু দেরি হওয়াতে মা উপরের ডায়লোগ টা দেওয়ার সময় আড়চোখে তাকিয়ে দেখলাম,কাজের মেয়েটা লাজুক লাজুক ভাব নিয়ে আমার হাত থেকে ডিম গুলো নিয়ে রান্না ঘরে চলে গেলো।
এইতো আজকেও সকালে ডিম আনতে গিয়ে একটু দেরি হওয়াতে মা উপরের ডায়লোগ টা দেওয়ার সময় আড়চোখে তাকিয়ে দেখলাম,কাজের মেয়েটা লাজুক লাজুক ভাব নিয়ে আমার হাত থেকে ডিম গুলো নিয়ে রান্না ঘরে চলে গেলো।
এর একটা বিহিত করা দরকার,আমাকে কি পেয়েছে তারা।কথায় কথায় শুধু খোঁচা মেরে বলবে কাজের মেয়ের সাথে বিয়ে দিয়ে দিবো।
কেন পাশের ফ্লাটের আক্কাস কাকুর মেয়েটাকে কি চোখে বাদে না তাদের।কি রূপের ঝলক তার।
দেখলেই রিয়াজ চাচার ‘পড়েনা চোখের পলক,কি তোমার রূপের ঝলক।’
গানটা নিজ থেকে বেরিয়ে আসে মুখ দিয়ে।
কেন পাশের ফ্লাটের আক্কাস কাকুর মেয়েটাকে কি চোখে বাদে না তাদের।কি রূপের ঝলক তার।
দেখলেই রিয়াজ চাচার ‘পড়েনা চোখের পলক,কি তোমার রূপের ঝলক।’
গানটা নিজ থেকে বেরিয়ে আসে মুখ দিয়ে।
দেখতে একদম বাংলা সিনেমার নায়িকা বুবলির মত দেখতে।
আমিই বা কম কিসে?
আমিই বা কম কিসে?
লম্বা আর ফিটনেস সবকিছুতেই মাসআল্লাহ্।
শুধু গায়ের রংটা একটু শ্যামলা,তাতেও কোনো সমস্যা নেই।
মেয়েরা নাকি শ্যামবর্ণের ছেলেদেরকে বেশি পছন্দ করে।
শুধু গায়ের রংটা একটু শ্যামলা,তাতেও কোনো সমস্যা নেই।
মেয়েরা নাকি শ্যামবর্ণের ছেলেদেরকে বেশি পছন্দ করে।
কথাগুলো ভাবতে ভাবতে দরজা খুলে বার হতে যাবো ঠিক তখনি এসে হাজির হলো আক্কাস কাকুর মেয়ে জুঁথি।
মেয়েটার শারিরিক গঠন আর হাইটের কথা বিবেচনা করেই হয়তো বাপ-মায়ে নামটা রেখেছিলো।
মেয়েটার শারিরিক গঠন আর হাইটের কথা বিবেচনা করেই হয়তো বাপ-মায়ে নামটা রেখেছিলো।
আমাকে দেখে চট করেই জিজ্ঞাসা করে বসলো,”ভাইয়া আন্টি আছে বাসায়?
আমি একটু রাগ রাগ ভাব দেখিয়ে বললাম,”আমি কি সবার ঠ্যাং ধরে বসে আছি নাকি,যে সবাই সবকিছু আমাকে জিগাবে।
আমি একটু রাগ রাগ ভাব দেখিয়ে বললাম,”আমি কি সবার ঠ্যাং ধরে বসে আছি নাকি,যে সবাই সবকিছু আমাকে জিগাবে।
জুঁথিকে আর কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে হড়হড়িয়ে সিড়ি বেয়ে নিচে নেমে আসলাম।
‘জুঁথিকে ওভাবে বলাটা মোটেও ঠিক হয় নি।কার উপরের রাগ,কার উপরে ঝাড়লাম।বাসায় গিয়েই জুঁথিকে সরি বলে দিতে হবে।
অনুশোচনাতে ভুগছি আর মোবাইল টিপতে টিপতে রাস্তার এক পাশ দিয়ে হাঁটছি।
হঠাৎ করে মনে হলো,আমাকে চার পাশ থেকে দুর্গন্ধযুক্ত ময়লা পানি ঘিরে ধরেছে।
বেচারা মোবাইল টাও একহাত পানির নিচে।
ভয়ে আতকে উঠে পানি থেকে চোখ সরিয়ে তো আমার চোখ গুলো ছানাবড়া হওয়ার মত অবস্থা।
বেচারা মোবাইল টাও একহাত পানির নিচে।
ভয়ে আতকে উঠে পানি থেকে চোখ সরিয়ে তো আমার চোখ গুলো ছানাবড়া হওয়ার মত অবস্থা।
“হায় আল্লাহ্ আমি এখানে কি করে আসলাম?
চারপাশটা ঘুটঘুটে অন্ধ্যকার,মাথার উপর থেকে ফিকে আশা আলোতে বুঝতে বাকি রয়লো না আর।আমি পা ফসকে নর্দমার ভিতরে পড়েছি।
এদিকে উপস্থিত জনতার ভিড় জমে গিয়েছে ইতিমধ্যে।একদল সেল্ফি আসক্তে ভুগতে থাকা আজব প্রানীরা এসে নর্দমার মুখে দাড়িয়ে আমাকে ফোকাস করে সেল্ফি তুলছে বিভিন্ন ফ্রন্টে খপাখপ।
এই গলা অবধি পঁচা পানিতে ডুবে থাকা অবস্থাতে যদি একটা ছবিও ফেসবুকে ভাইরাল হয়,তাইলে তো আমি শেষ।
ইজ্জতের ফেলুদা করে ছেড়ে দিবে এরা আমার।
এই গলা অবধি পঁচা পানিতে ডুবে থাকা অবস্থাতে যদি একটা ছবিও ফেসবুকে ভাইরাল হয়,তাইলে তো আমি শেষ।
ইজ্জতের ফেলুদা করে ছেড়ে দিবে এরা আমার।
কিন্তু তখন থেকে একটাই প্রশ্নই মাথার ভিতরে ঘুরপাক খাচ্ছে,আমি নর্দমাতে পড়লাম কি করে?
একটা সময় দেখলাম আক্কাস কাকাও এসে দাড়িয়ে চিৎকার করে বলছে..
-বাবা আশিক,তুমি এতো জায়গা রেখে এইখানে পড়লা কিভাবে?
এমন একটা বিরক্তিকর পরিস্থিতে যদি উপরে দাঁড়িয়ে থাকা সবকইটারে টেনে নামাতে পারতাম তাইলেও কিছুটা রাগ কমতো।
একটা মানুষ দুর্গন্ধযুক্ত পঁচা পানিতে গলা অবধি ডুবে আছে।তাকে কোথায় টেনে তুলবে।তা না করে, ওরা আসছে একের পর এক প্রশ্ন করতে।
যেন ভিনগ্রহ থেকে ছাড়পত্র পেয়ে চলে আসা কোনো এলিয়েন আমি।
যেন ভিনগ্রহ থেকে ছাড়পত্র পেয়ে চলে আসা কোনো এলিয়েন আমি।
এতক্ষনে ইজ্জতের যে ছিটেফোঁটাটা অবশিষ্ট ছিলো জুঁথিকে নর্দমার মুখে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে সে টুকুও হারিয়ে ফেললাম।
ইচ্ছে করছে,এই পঁচা পানিতে ডুব দিয়ে মইরা যাই।
ইচ্ছে করছে,এই পঁচা পানিতে ডুব দিয়ে মইরা যাই।
এবার আর নিজেকে ধরে রাখতে পারলাম না,চিৎকার করে বলে উঠলাম,”আমাকে কি কেউ তুলবেন।নাকি এই পঁচা পানিতে ডুব দিয়ে অন্যগ্রহে পাড়ি জমাবো।
উপরে থাকা একজন তাড়াতাড়ি করে একটা রশি নামিয়ে দিলে তা ধরে উঠে আসলাম।
গায়ের গন্ধ্যে নিজেরই কেমন বমি চলে আসছে,অন্যদের কথা তো বাদই দিলাম।
পুরো শরির জুড়ে আবর্জনা মেশানো পঁচা পানি,কতজনের কত কিছু মেশানো এই পানিতে।
ভাবতেই গা গুলিয়ে উঠছে আমার।
গায়ের গন্ধ্যে নিজেরই কেমন বমি চলে আসছে,অন্যদের কথা তো বাদই দিলাম।
পুরো শরির জুড়ে আবর্জনা মেশানো পঁচা পানি,কতজনের কত কিছু মেশানো এই পানিতে।
ভাবতেই গা গুলিয়ে উঠছে আমার।
আর একমুহূর্ত দেরি না করে দৌড় দিলাম বাসার দিকে।
গেইট দারোয়ান পর্যন্ত নাক ধরে দাঁড়ালো আমাকে দেখে।
ইচ্ছে করছে কানের নিচে দুটো বসিয়ে দিতে।
কিন্তু তার আগে নিজেকে এর থেকে পরিত্রান পেতে হবে।
তাড়াতাড়ি সিড়ি বেয়ে উপরে উঠে গিয়ে ঘরের কলিং বেল চাপতেই
কাজের বুয়া এসে নাক চেপে ধরে বললো..
গেইট দারোয়ান পর্যন্ত নাক ধরে দাঁড়ালো আমাকে দেখে।
ইচ্ছে করছে কানের নিচে দুটো বসিয়ে দিতে।
কিন্তু তার আগে নিজেকে এর থেকে পরিত্রান পেতে হবে।
তাড়াতাড়ি সিড়ি বেয়ে উপরে উঠে গিয়ে ঘরের কলিং বেল চাপতেই
কাজের বুয়া এসে নাক চেপে ধরে বললো..
-ভাইজান এইডা কি স্প্রে মাখছেন আপনে?গন্ধতে বমি চইলা আইতাছে।
ইচ্ছে করছে গলাটা চেপে ধরে নর্দমাতে ফেলে দিয়ে আসি।
নিজেকে ঠান্ডা রেখে বললাম।
নিজেকে ঠান্ডা রেখে বললাম।
-আরে এইডা বিদেশি স্প্রে,আমার এক বন্ধু হুলুলু থেকে আনছিলো।
তাই একটু গায়ে মেখেছি।
তাই একটু গায়ে মেখেছি।
জরিনা আর কিছু কইবার আগেই আমি দৌড়ে গিয়ে নিজের রুমে ঢুকে পড়লাম।
তাড়াতাড়ি বাথরুমে গিয়ে সাবান,শ্যাম্পু যা কিছু ছিলো সবটা গায়ের উপর ঘষামাজা করে গায়ের গন্ধ দুর করতে দীর্ঘ দুই ঘন্টা লাগলো।
এবার কিছুটা স্বস্থি মিললো।
তাড়াতাড়ি বাথরুমে গিয়ে সাবান,শ্যাম্পু যা কিছু ছিলো সবটা গায়ের উপর ঘষামাজা করে গায়ের গন্ধ দুর করতে দীর্ঘ দুই ঘন্টা লাগলো।
এবার কিছুটা স্বস্থি মিললো।
নতুন জামা-কাপড় পরে বাইরে যেতেই দেখলাম,জুঁথি আর মা সোফাতে বসে একে উপরের গায়ে হেসে গড়াগড়ি খাওয়ার মত অবস্থা।
আমি কোনোকিছু না যানার ভান করে বললাম,”কি হয়ছে মা,এতো হাসার কি কারণ শুনি?
মা হাসিটা চেপে ধরে বললো,”বাবা তুমি যে হুলুলু থেকে নতুন বডি স্প্রেটা আনিয়েছো সেইটার গল্পই শুনছিলাম জুঁথির কাছ থেকে।
কথাটা বলেই একে অপরের গায়ে হেসে পড়লো আবার।
আমি রাগে গজগজ করতে করতে বার হয়ে যাবো,ঠিক তখনি জরিনা এসে মৃদু কণ্ঠে বললো…
-ভাইজান যে যাই বলুক,আপনের নতুন স্প্রেরের ঘিরানটা তয় এহন খুব সুন্দর লাগতাছে।
বুঝতাছি না,জরিনা কি আমারে খোঁচা মেরে কথাটা বললো,নাকি সত্যি সত্যি।
সে যাই হোক,অন্তত একজনে তো আমার গায়ের গন্ধ্যের প্রশংসা করেছে।
এইটাই অনেক।
সে যাই হোক,অন্তত একজনে তো আমার গায়ের গন্ধ্যের প্রশংসা করেছে।
এইটাই অনেক।
