অবন্তীর সংসার || পর্ব: ০৬

অবন্তী একটু বিব্রত বোধ করলেও বলে ওঠে
- হ্যাঁ ফুপু। ও একটা খন্ডকালীন চাকরিতে জয়েন করেছে শীঘ্রই ভালো কোনো চাকরি পেলে ওটা ছেড়ে দিবে... 
কথা শেষ হতেই অবন্তীর বাবা খাওয়া শেষ করে রুমে চলে যায় আর অবন্তীও উঠে যেতে নিলেই অবন্তীর ফুপু বলেন-
-শোন অবন্তী!!  বিয়ের তো দু'বছর পাড় হয়ে গেলো এখন তো নাতী নাতনীদের মুখটা আমরা দেখতেই পারি, তাই না?
এই প্রশ্নের উত্তর কি হওয়া উচিত? লজ্জা পাওয়া উচিত নাকি সত্যটা সরাসরি বলে দেওয়ায় উচিত। ভাবতে ভাবতেই অবন্তী এক পর্যায়ে বলে ওঠে
-ফুপি,বুঝেনই তো একের পর এক ঝামেলা থেকেই থাকে। ওভাবে ভাবা হয়নি।
-হুম এবার ভাব একটু!!
.
অবন্তী মাথা নাড়িয়ে নিজের রুমে এসে বিছানায় গাঁ এলিয়ে দিয়ে চিন্তা করতে লাগলো-
" সত্যিই তো? আবির তো চাইলেই অবন্তীর একাকিত্বের সঙ্গী এনে দিতে পারে!! কেন দেই না তবে?খুব অভিমান হচ্ছে আবিরের ওপর। এগুলো ভাবতে ভাবতেই ফোনটা বেজে ওঠে।ওপাশ থেকে-
- আমার মহারানী কি ঘুমাচ্ছে?
-না তো!! এই খেয়েছো তুমি?  মা খেয়েছে?
- হুমম। সব কাজ শেষ।তুমি খেয়েছো?
- হুমম।
-........
-.........
-এই অবন্তী!! চুপচাপ কেনো?
-তোমাকে খুব মিস করছি!!
-সত্যি!!! আসবো আমি?
-এই না না!!! সেটা কখন বললাম!! 
-হাহা... আচ্ছা।
-এই শুনো,কাল তো সকাল সকাল যেতে হবে এখনই ঘুমিয়ে পড়ো।
-হুমম। ঠিক আছে, তাহলে ঘুম পারিয়ে দাও।
-আমি? কিভাবে?
-তা আমি কি জানি?
-আচ্ছা ঠিক আছে। প্লিজ জান অনেক রাত হয়েছে ঘুমিয়ে পরো। লাভ ইউ ওকে?
-নাহ হয়নি!! 
-আর কেমনে?
-জানি না তো...
-আবির!! খাওয়ার পর থেকেই মাথাটা ঘোরাচ্ছে। একটু ঘুমালে মনে হয় ভালো লাগবে!! ঘুমাবো জান?
- কিহহ?? এতক্ষণ কেনো বলোনি? ওষুধ খাইছো?
-ঘুমালে ঠিক হয়ে যাবে। তুমিও ঘুমাও প্লিজ।
-আচ্ছা ঘুমাচ্ছি , তুমি সকালে উঠে আগে জানাবে তুমি সুস্থ হয়েছো কি না?? ঠিক আছে?
-আচ্ছা। আল্লাহ হাফেজ।
-হুম।
.
.
ফোনটা রেখেই অবন্তী হাসতে হাসতে শেষ।কারন তার কিছুই হয়নি।এভাবে আবির সারারাতই কথা বলতে চাইতো কিন্তু কত সহজেই আবিরকে ঘোল খাইয়ে দেওয়া গেলো। ভাবতে ভাবতেই অবন্তী ঘুমের দেশে পাড়ি জমালে.
.
.
এদিকে আবিরের চোখে বিন্দুমাত্র ঘুম নেই।অবন্তীর কথা গুলো যে মজার ছলে ছিলো তা সে আচঁই করতে পারেনি।সে ভাবতে লাগলো " কই অবন্তী আমার কাছে থাকতে তো এরকম কিছু বলেনি" " তাহলে কি হলো হঠাৎ ওর?" 
বারবার ওর শুধু আজেবাজে চিন্তা কেন আসছে? সে যে বড্ড বেশি ভালোবাসে অবন্তীকে.. অবন্তীকে ছাড়া তার একমুহূর্তও চলে না।আবির বসে বসে রাতের প্রহর গুনতে লাগলো,কখন রাতটা শেষ হবে আর সে তার অবন্তী কে একটা নজর দেখবে। কিন্তু কিছুতেই রাতটা যেতে চাচ্ছে না। অস্থিরতাও যেনো বেড়েই চলেছে। এদিকে খুব ইচ্ছে করছে একটা বার ফোন দিতে কিন্তু যদি অবন্তীর ঘুম ভেঙে যায়? উফফ!!  আর ভাবতে পারছে না আবির!!
.
.
ভোর ৫ টা,
হঠাৎ কলিং বেল বাজতে শুনে একটু বিরক্ত হলেন মনোয়ারা বেগম। এত সকালে কে হতে পারে? দরজা খুলতেই.....

চলবে...
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url