Breaking News

প্রেম পিপাসা



এই পাশ থেকে আয়াত ফোন রিসিভ করতেই নিশি রাগ,
কান্না মৃস্রিত কন্ঠে চেঁচিয়ে বলতে লাগল….
“”__ কোন সাহসে আপনি আমাকে ব্লক করলেন।
একটা মেয়ে আপনাকে বারবার মেসেজ দেই বলে আপনি তাকে ব্লক করে দিলেন।
আপনি বুঝেন না একটা মেয়ে কেন আপনার পিছে পড়ে আছে।
কেন আপনি কথা বলতে চান না সত্ত্বেও বেহায়ার মত আপনাকে মেসেজ দেই ।
আপনার সাথে কথা বলতে চাই।কিভাবে পারলেন আপনি আমাকে ব্লক করে দিতে ।
আমার অপরাধ টা কি বলতে পারেন।
আমি কি খুব বেশি বিরক্ত করেছি আপনাকে।
আপনি জানেন আপনি ব্লক করেছেন সেটা দেখে আমার মনের অবস্থা কেমন হয়েছে। কতটা কান্না করেছি আমি ( এই কথা বলে নিশি ফুঁপিয়ে কাঁদতে লাগল,
নিশির একটা অভ্যাস অল্প একটু কান্না করলেই নাকে সমস্যা হয়ে যায়।
নাক টানার জন্য তখন কথাই বলতে পারেনা)
এদিকে নিশি কে কান্না করতে দেখে আয়াত মনে মনে মুচকি হেসে বলল
“”__ জ্বি কে আপনি আর আমার সাথে এমন করে কেন কথা বলছেন। 
আপনার নিশ্চয়ই কোথাও ভুল হয়েছে ?

ভুল হাঁ ভুল হয়েছে সেই 10 বছর ধরে এই মনের বলিনি আপনাকে আমি লালন পালন করেছি।
হা ভুল করেছি নিজের চাইতেও আপনাকে বেশি ভালোবেসে ফেলেছি ।
হা ভুল করেছি আপনাকে নিয়ে কল্পনার রাজ্যে হারিয়ে গিয়ে সুখের ঘর সাজিয়েছি।
জানেন রাইহান ভাই আপনি আমাকে ব্লক করে দিয়েছেন কষ্ট পাইছি খুব কষ্ট হচ্ছে।
তবে খুব খুশি হয়েছি কেন হয়েছি জানেন কারন আপনার মনে এখনও অন্য কোন
মেয়ে জায়গা নিতে পারে নাই। যদি নিতে পারত আমার এত সুন্দর সুন্দর মেসেজ দেখে 
কবেই আপনি আমার সাথে কথা বলার জন্য পাগল হয়ে যেতেন । 
আমার প্রেমে পড়ে যেতেন।যেহেতু আমার সাথে কথা বলেন নাই তার মানে আপনি 
কোন মেয়ের সাথে কথা বলেন না। খুব খুশি হয়েছি আমি আপনার এরকম আচরণে।
কিন্তু সব মেয়েদেরকে বলক করলে ও আপনি আমাকে ব্লক করে দিয়েছেন ।
এটা আমি মানতে পারতেছিনা খুব কষ্ট হচ্ছে।প্লিজ রায়হান ভাই আমার ব্লক টা খুলে দেন না, 
আপনার সাথে কথা না বললে আমার নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে যায়,মনে হয় 
যেন আমি এখনি মারা যাবো ( নিশির চোখ থেকে টপটপ করে পানি পড়তে লাগল।
নিশি কান্নার জন্য কথা বলতে পারছেনা,প্রথমে নিশি ভেবেছিল রায়হানের সাথে
 রাগ দেখিয়ে ফোন রেখে দিবে ।রায়হান কি মনে করে নিজেকে ।
কিন্তু রায়হান ফোন রিসিভ করার পর নিশি কেন যেন রায়হানের সাথে চুল পরিমান রাগ 
দেখাতে পারলো না। কেননা এই মানুষটাকে ছাড়া ও বাঁচবে না)
আয়াত ভাব নিয়ে বলল

ও তার মানে এটা আপনি ,আপনি আমার নাম্বার পেলেন কোথায় ।
কে দিয়েছে আপনাকে আমার নাম্বার?
নিশি চোখের পানি মুছে বললো
“”__ জাহান্নামের চৌরাস্তা থেকে পেয়েছি আমি আপনার নাম্বার। 
আপনার কোন সমস্যা। নাকি এখন আমি ফোন দেওয়াতে এই নাম্বারটাও পাল্টে ফেলবেন?
“”__ না তানা দেখুন আমি ম্যাসেঞ্জারে আপনার সাথে কথা বলতে পারবোনা। 
কারন আমার মোবাইলে পার্সোনাল বলতে কিছু নাই।
আমার মোবাইল যখন তখন আমার ছোট বোন দরে। 
আপনার সাথে মেসেঞ্জারে কথা বললে ও দেখলে সমস্যা ।
পরে আব্বু আম্মুর কাছে বললে আমাকে আস্ত রাখবে না। 
তাই আপনাকে না বলে ব্লক করার জন্য সরি!
আয়াতের মুখ থেকে ওর বোন আছে এই কথাটা শুনে। 
নিশি খুশিতে আত্মহারা হয়ে গেছে তারমানে। 
তোর ফুফুর মেয়ে ও আছে। নিশ্চয়ই দেখতে খুব সুন্দর হবে। 
নিশিকে চুপ থাকতে দেখে আয়াত ঐ পাশ থেকে বলল..
“”__ আচ্ছা আমি ঠিক বুঝলাম না আপনাকে ব্লক করে দেওয়াতে আপনি খুশি হয়েছেন। 
আবার কষ্ট ও পেয়েছেন ঠিক বুঝলাম না কারণটা কি?

নিশি মনে মনে বলল আমি এই জন্যই খুশি হয়েছি ।
আমি চাই না আপনি আমি ছাড়া আরো কারো সাথে কথা বলেন রায়হান ভাই ।
আপনি শুধুই আমার‌।যেখানে আপনি আমাকে ব্লক করে দিয়েছেন ।
সেখানে আমি নিশ্চিত যে আপনি আর কোন মেয়ের সাথে কথা বলেন না। 
নিশি কথা কাটিয়ে বলল

“”__ সেটা আপনার না বুঝলেও চলবে।খুব খারাপ আপনি ।আপনি বললেই পারতেন যে 
মেসেঞ্জারে কথা বললে আপনার সমস্যা। কিন্তু এই কথাটা না বলে আমাকে ব্লক করে 
দিলেন কেন ।জানেন আমি কতটা কষ্ট পাইছি?
“”__ সত্যিই আমি সরি প্লিজ রাগ করবেন না? কিন্তু আপনার সাথে তো আমার 
এমন কোন সম্পর্ক নাই। আপনি কষ্ট পাবেন কেন?
“”__ সম্পর্ক নায় সম্পর্ক হতে কতক্ষণ ( বিড় বিড় করে বললো কথাটা নিশি)
“___ কিছু বললেন আপনি!
“”__ না না কিছু না , আচ্ছা আমি আর কখনো মেসেঞ্জারে মেসেজ দিব না ।
এবার তো অন্তত আমাকে ব্লক থেকে খুলে দেন। 
আপনার কল্পনা পড়লে আমার রাতে ঘুম আসে না। প্লিজ বল্ক লিষ থেকে বের করুন আমাকে।
এখন আয়াত কি বলবে বুঝতে পারতেছেনা। 
কারণ বলক লিষ্ট থেকে বের করলে, দেশে যদি রায়হানের সাথে মেসেজে কথা বলে
তাহলে তো আর ধরা পড়ে যাবে। কি বলবে বুঝতে পারতেছেনা 
আয়াতকে চুপ থাকতে দেখে নিশি আবার বলল..
“”__ কি হলো কিছুতো বলুন?
“”__ না মানে ইয়ে মানে!

“”_” আপনি এরকম করে তোতলাচ্ছেন কেন ।দেখে মনে হচ্ছে আপনি মিথ্যা বলতেছেন 
আমার সাথে! না আমি মিথ্যা বলতে যাবো কেন। আসলে আপনার কোকিলের মত কন্ঠ শোনার পর । 
মেসেঞ্জারে আপনার সাথে আর কথা বলতে আমার ইচ্ছে করছে না। তার উপরে আপনাকে
 বলে ক্লাস থেকে বের করলে আপনি ভুল করে হলেও আমাকে মেসেজ দিয়ে ফেলবেন ।
আর সেটা যদি আমার বোনের চোখে পড়ে। আর আব্বুর কাছে বিচার দেয় 
যে আমি প্রেম করি তাহলে আমাকে আস্ত রাখবে না।

 ওরা তো বুঝবে না যে আমি প্রেম করি না ।কিন্তু ওদেরকে বোঝানো যাবে না সত্যি টা?
নিশি কেমন যেন লজ্জা পেল আয়াতের মুখ থেকে ওর কন্ঠ কোকিলের মত সুন্দর শুনে।তার মানে রায়হান ভাইয়ের আমার কন্ঠ পছন্দ হয়েছে ইশ। আয়াতের কথা শুনে নিশি সাথে সাথেই বলল..
“”__ কেন আপনি কি আপনার আব্বুকে ভয় পান নাকি। আপনি প্রেম করেন শুনলে আপনাকে মারবে। এত বড় ছেলে হয়ে আব্বুকে ভয় পান আপনি হা হা হা হা হা ( নিশি হাসলো)
আয়াত মনে মনে মুচকি হাসলো খেলা তো জমে গেছে।আয়াত সাথে সাথেই বললো..
“”__ আপনার হাসিটা কিন্তু খুব সুন্দর ।আমার মনে হচ্ছে কি জানেন বলক করে ভালই করেছি ।
তা না হলে আপনার মধুর কন্ঠটা শুনতে পারতাম না।

তবে একটা কথা কি জানেন আপনার হাসিটা না খুব পরিচিত পরিচিত মনে হচ্ছে।
আপনাকে আমার কেমন যেন আপন আপন মনে হচ্ছে।
তাই আপনাকে না বলে থাকতে পারছি না। আমার বন্ধুবান্ধব সবাই প্রেম করে ।
কিন্তু আমার কখনো প্রেম করা হয়ে ওঠেনি।
ছোটবেলা থেকে দেখেছি মামার বাড়ির সাথে আমাদের সম্পর্ক তেমন একটা ভাল না।
আমার এখনো মনে আছে আমার মামার একটা মেয়ে ছিল নাম মনে হয় নিশি ।
ছোটবেলায় এক দেখাতেই ওকে আমার ভাল লেগে গিয়েছিল।
ওর হাসিটা খুব সুন্দর।হঠাৎ করে কেন যেন আমার মনে হচ্ছে ওর হাসির সাথে আপনার হাসিটা মিলে গেছে। তাইতো আপনার সাথে কথা বলছি তানা হলে বলতাম না। জানেন খুব মিষ্টি ছিল দেখতে ও ।
এখনো মাঝে মাঝে কল্পনা করে অকে আমি দেখতে পাই ।হয়তো এখন অনেক বড় হয়েছে।
দেখতে অনেক সুন্দর হয়েছে ।হয়তো কারো সাথে বিয়ে হয়ে গেছে। নয়তো অন্য কাউকে ভালোবাসে।
কিন্তু আমার মনের মাঝে অখনো শুধু ওই আছে।

তাইতো আমি আপনাকে ব্লক করে দিয়েছি শুধু আমার বোন দেখবে বলে না।
যদি কথা বলতে বলতে আপনার প্রেমে পড়ে যাই আমি সে জন্য 
( কথাটা বলেই আয়াত মুচকি হাসলো।আয়াতের বড়শিতে যে মাছ ধরা 
পরবে আয়াত ভালো করে জানে।কারন আয়াত এখন যে কথাগুলো বলেছে সব
 কিছু রায়হানের কাছ থেকে শুনে ছিল। যখন ভার্সিটিতে ওর বন্ধুরা সবাই প্রেম করে। 
রায়হান কেন করেনা।
রায়হানকে জিজ্ঞেস করাতে রায়হান সেদিন নিশির কথা বলেছিল।
আর এই মেয়েটাই যে নিশি আয়াত নিশির আইডি থেকে ঘুরে এসে বুঝতে পেরেছে।
কারণ নিশির এক বান্ধবী কমেন্টে কথা বলার সময় নিশিকে নিশি নামে সম্বোধন করেছিল।
যদিও আইডির নাম নিশি রাতের পাখি।
ওইদিকে নিশি অবাক হয়ে মুগ্ধ নয়নে আয়াতের কথা শুনতে লাগল।
খুশিতে ওর চোখে পানি টলমল করতে লাগলো। তারমানে রায়হান ভাই আমাকে এখনো মনে রেখেছে ‌।
এখনও আমাকে ভালোবাসে আমার মত করে।নিশি খুশিতে মুখ চেপে কান্না করে ফেলল।
কোনো রকমে নিজের কান্না আটকে বলল…
“”__ খুব ভালোবাসেন আপনি আপনার নিশিকে তাইনা!
“”__ হা খুব বেশি ভালোবাসি , আর আপনার সাথে কথা বলে আমি যতোটুকু বুঝতে পেরেছি আপনি আমার প্রতি দুর্বল ।কিন্তু আমি সরি আপনাকে আমার পক্ষে ভালোবাসা সম্ভব না।
আয়াতের কথা শুনে নিশি বলল
“”__যদি বলি আমি আপনার নিশি তখন কি করবেন?
আয়াত অবাক হয়ে বললো
“”__ মানে মজা করছেন আপনি আমার সাথে? আপনি বললেই আমি মেনে নিব ।আপনি আমার নিশি দেখেন আমার সাথে মজা করবেন না?
“”__ আয়াত এই আয়াত কার সাথে কথা বলতেছিস এতক্ষণ ধরে। এদিকে আয় সবাই খেতে বসেছে খেতে আয় ( রায়হান)
এদিকে রায়হানের ডাক শুনে আয়াত চমকে উঠল একটুর জন্য ধরা পড়ে যেত। আয়াত ইশারাই বোঝাল ও আসতেছে। কিন্তু ওই পাশ থেকে নিশি রায়হানের কন্ঠ শুনে ফেলে। নিশি সাথে সাথেই বললো..
“”__ আপনার বন্ধু আয়াত কি আপনার পাশেই আছে নাকি। ওনাকে কেউ মনে হয় ডাকছে।
আয়াত যেন হাঁফ ছেড়ে বাঁচল নিশি কথাটা পেচাই নি সেজন্য। আয়াত অবাক হবার ভঙ্গিতে বলল
“”__ তুমি কি করে বুঝলে আয়াত আমার বন্ধু!
“”__ সেটা তো বাচ্চা ছেলে মেয়েরা বুঝা যাবে যখন আপনার আইডি ঘুরে আসবে।এসব কথা পরে হবে এখন তাড়াতাড়ি আমার ব্লক খুলে দেন!

“”_ বললাম তো সম্ভব না আমি মেসেঞ্জারে কথা বলি। সেটা আমার বোনের চোখে 
পড়লে আমার খবর আছে!কেননা বল্ক খুলে দিলে আপনি অবশ্যই আমাকে ম্যাসেজ দিবেন ।
সেটা আমি জানি ভুল করে হলেও দিবেন।তারচেয়ে বরং আপনি কথা বলতে চাইলে 
ফোনে কথা বলবো।আর একবার যখন ব্লক করে দিয়েছি আমি সেই আইডিটা আবার 
আনব্লক করতে পারবোনা ।আমার আইডিতে একটু সমস্যা আছে প্রবলেম হবে। 
আপনি চাইলে নতুন করে আইডি খুলে আমার গল্প পড়তে পারেন ।
তবে মেসেজ দিয়ে পরিচয় দিবেন না যে আমার ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট একসেপ্ট করেন বুঝেছেন?
“”__ কেন পরিচয় দিলে কি হবে?
“”__ আপনি আসলেই একটা মাথা মোটা ।তাহলে তো আপনার মেসেজ মেসেঞ্জারে চলে আসবে। আবারও আমার বোনের চোখে পড়বে ।আমি এখন কেন আপনাকে ব্লক করলাম।আচ্ছা আপনার সাথে পরে কথা হবে আমি এখন আসছি?
“”__ কিন্তু… নিশিকে থামিয়ে দিয়ে আয়াত বলল
“”__ দেখেন আপনি না চাইলে থাক ফোনে ও কথা বলতে হবে না ।
আমি এখনই সিম চেঞ্জ করে ফেলব। কারণ আমি শুধু নিশিকেই ভালোবাসি অন্য 
কোন মেয়ের সাথে কথা বলার ইচ্ছে নাই?
“”__ এই না না থাক ব্লক করতে হবে না। আমি ফোনেই কথা বলবো ( ঘাড়তেড়া একটা।
খুব ইচ্ছে করছে এখনই আমার পরিচয়টা দিয়ে দিতে।কিন্তু আরো কিছুদিন আপনাকে 
নাকে দড়ি দিয়ে ঘোরাবো রায়হান ভাই। তারপরে আমার পরিচয় দিয়ে দিব না
 জানি আপনি সেদিন কতটা খুশি হবেন আমার পরিচয় পেয়ে ইশ)
এদিকে রায়হান আবারো আয়াতকে ডাকতে লাগলো। নিশি শুনে বললো..
“”__ আপনার বন্ধু আয়াতকি কারো সাথে কথা বলছে নাকি। সেই কখন থেকে তাকে কেউ ডাকছে খাওয়ার জন্য যাচ্ছে না?
আয়াত আমতা আমতা করে বলল

“”__ হাঁ ঠিকি বলেছেন ও মেয়ে পাগল মেয়েদের সাথে কথা বললে ওর আর কিছু লাগেনা। আচ্ছা আমি আসছি এখন পরে কথা হবে ভালো থাকবেন ( এই কথা বলে আয়াত সাথে সাথে ফোন কেটে দিল)
নিশি হ্যালো হ্যালো বলতে যাবে তার আগেই লাইন কেটে গেছে।ফোন কেটে দিতেই নিশি বিছানায় দুদিকে দুই হাত ছরিয়ে দারাম করে শুয়ে পড়ল। ফেসবুক থেকে রায়হানের কালেক্ট করা ছবিটা গ্যালারিতে নিয়ে আসলো। এ নেই রায়খানের ছবিতে অজস্র চুমু দিতে লাগল নিশি। আর বলতে লাগলো…

“”__ এই ছেলে তুমি এখনো মনে রেখেছো আমাকে ।এতটা ভালোবাসো আমাকে ।
আমি মনে করছি আমি একাই শুধু তোমাকে ভালোবাসি।
 কিন্তু তুমিও যে আমাকে ভালোবাসো আমার জানা ছিল না।
কই কোনদিন তো বল নাই আমাকে যে তুমি আমাকে এখনো ভালবাসো। 
ইশ আমিও না একটা পাগল বলবে কি করে আমাকে আর কি কথা হয়েছে আমাদের আগে কখনো। 
এই শোনো না বিয়ের পরে কিন্তু আমি তোমাকে আপনি করে বলব। 
তোমাকে আপনি করে বলতে না আমার খুব ভালো লাগে। 
তবে মাঝেমাঝে তুই তুকারি করব রেগে গেলে । দেখো তুমি কিন্তু তখন চুপ করে দাঁড়িয়ে 
আমার থেকে কথা শুনবে না।চট করে কাছে এসে আমার ঠোঁটদুটো তোমার ঠোট দিয়ে 
বন্ধ করে দিবে ।দেখবে আমার সব রাগ আস্তে আস্তে তুমি চুষে নিয়েছো আমার 
আর রাগ বলতে কিছুই থাকবে না।আর লজ্জা পেয়ে ভুল করে তোমাকে তুমি করেও বলব।
আর আমার মুখ থেকে তুমি শব্দটা শুনে তুমি অবাক হয়ে আমার দিকে তাকাবে।
 সাথে সাথেই আমার কোমর জড়িয়ে ধরে টান দিয়ে তোমার বুকের সাথে 
মিশিয়ে নিয়ে, আমার কপালের পাশ থেকে চুলগুলো কানের পাশে গুঁজে দিয়ে ।
আমার কানের নিচে গরম নিঃশ্বাসে ভরিয়ে দিব, নাক ঘসতে ঘসতে আলতোভাবে 
কানের লতিতে একটা কামড় বসিয়ে দিয়ে বলবে ।তোমার মুখ থেকে হঠাৎ করে 
তুমি শব্দটা শুনতে না আমার খুব ভালো লাগে নিশি পাখি)

“”__ নিশি আপু এই নিশি আপু ।কি হয়েছে তোমার তুমি এমন করে পাগলের মত 
আচরণ করতেছে কেন ।একা একাই হাসতেছো কি হয়েছে 
তোমার ( তিথিরের ডাকসুনে নিশি বাস্তবে ফিরে আসে। সাথে সাথে বিছানা থেকে
 উঠে তিতিরের হাত ধরে কাপল ডান্স করতে লাগল আর বলতে লাগল…
প্রেমে পড়েছে মন প্রেমে পড়েছে !
অচেনা এক মানুষ আমায় পাগল করেছে!
প্রেমে পড়েছে মন প্রেমে পড়েছে!

তিথির অবাক হয়ে নিশির দিকে তাকিয়ে রইলো ।আর মনে মনে বলল মাথার তার 
মনে হয় কয়একটা আজকে সত্যি ছিড়ে গেছে?
এদিকে আয়াত কথা শেষ করে খাবার টেবিলে আসতেই , রায়হান বললো..
“”__ কিরে এতক্ষণ ধরে যে তোরে ডাকছি তুই শুনতে পাসনি ,কার সাথে কথা বলছিস এতক্ষন?
“”__ আরে না কেও না । একি সবাই খেতে বসেছে তুই বসলি না যে?
“”__ তুই বুঝতে পারিস নি তোর জন্য অপেক্ষা করছিলাম ।
এখন কথা না বলে তাড়াতাড়ি খেতে বস?
খাবার টেবিলে বসেই আয়াত সবার দিকে চোখ বোলালো।
রোদের সাথে চোখাচোখি হতেই রোদ চোখ নামিয়ে নিলো।
আয়াতের চাহনি কেন যেন রোদের কাছে ভালো লাগে না।
রোদ আবারো চোখ তুলে উপরে তাকাতেই দেখলো ।
আয়াত এখনো ওর দিকে তাকিয়ে আছে।রোদ এদিক সেদিক না তাকিয়ে খাবারে মন দিল।
খাওয়া দাওয়ার পর্ব শেষ হতেই।রায়হান, আয়াত ,
আর সাথীর স্বামী সবুজ একসাথে বসে আড্ডা দিচ্ছে।
সাথী ওর রুমেই ছিল।
রোদ,শ্যামলতা দুজনে সাথীর রুমে আসে।
সাথী তখন আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে চুল ঠিক করছিল।
তখনি রোদ এসে সাথী কে পিছন থেকে জড়িয়ে ধরে। বলতে লাগল…
শ্যামলতা দেখ তো আমাদের সাথী কে কেমন যেন খুব সুন্দর সুন্দর লাগছে না।
বিয়ের আগে তো এতটা সুন্দর লাগেনি?
পাশ থেকে শ্যামলতা বললো
“”__ আরে বুঝিস না কেন এটা হচ্ছে দুলাভাইয়ের স্পর্শের জাদু। 
দেখ না দুলাভাইয়ের নাম শুনতেই কেমনে লজ্জায় লাল হয়ে গেছে। 
তা সাথী বাসর রাতে কি হয়েছিল রে বল না আমাদেরকে?
রোদ বললো
“”__ কিরে তুই যখন চুল ঠিক করিস দুলাভাইকি, এরকম করে তাকে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরে। 
শুধু কি জড়িয়ে ধরে নাকি হাত গুলো অন্য জায়গাতেও নিয়ে যাই ( কথাটা বলে রোদার শ্যামলতা হাসলো। এদিকে সাথী লজ্জায় লাল হয়ে যেতে লাগল।তা দেখে রোদ বললো)
“”__ শ্যামলতা দেখ আমাদের সাথী তো আজকাল লজ্জা ও পায় দেখছি? 
বলনা বাসর ঘরে কি হয়েছিল?
এতক্ষণ চুপ থাকলেও সাথী এবার মুখ খুললো
“”__ রোদ এবার কিন্তু বেশি বেশি হয়ে যাচ্ছে। মনে রাখিস আমি কিন্তু তোর বড় বোন। 
গুনে গুনে আমি তোর থেকে তিন দিনের বড়?
“”__ আরে রাখ তোর বড় বোন ।বলনা কি হয়েছিল বাসর রাতে। 
আমি আর শ্যামলতা সারাদিন ধরে এটার অপেক্ষায় ছিলাম। 
তুই কখন আসবি আর তোর থেকে জানতে পারবো কি কি হয়েছিল বাসর রাতে?

রোদের কথা শুনে সাথী বিরক্তি নিয়ে শ্যামলতার দিকে তাকিয়ে বলল
“”__ শ্যামলতা তুই তো কিছু বল ওকে, এসব পাগলের মত কথা বলতেছে ও ?
শ্যামলতা এগিয়ে এসে সাথীর গাল টেনে দিয়ে বলল
“”__ শুধু রুদ একা বলসে না আমিও সাথে আছি। ইস বলনা রাতে কি কি হয়েছিল তোদের মাঝে। রাতে কি তোকে দুলাভাই ঘুমাতে দিয়েছিল নাকি সারা রাতি… কথাটা বলে আবারো দুজন হাসলো?
এদিকে সাথী লজ্জায় কিছু বলতে পারতেছে না। তা দেখে শ্যামলতা বললো
“”__ আচ্ছা যা ডিটেলে কিছু বলতে হবেনা ।প্রাইভেসি বলতে একটা জিনিস আছে সেটা আমি জানি। অন্তত এটা তো বল রাতে তোদের মাঝে কত রাউন্ড হয়েছিল?
কথাটা শুনে সাথী যেন আরো লজ্জা পেল।দৌড়ে রুম থেকে বের হয়ে যেতে নিলে রোদ শ্যামলতা দুজনে মিলে সাথীকে জড়িয়ে ধরে ফেলে। রোদ সাথীর গাল টেনে ধরে বললো
“”__ বলনা আমরা শুনতে এক্সাইটেড হয়ে আছি আর তুই কিনা আমাদেরকে নাকে দড়ি দিয়ে ঘোরাচ্ছিস।

রোদের কথা শুনে সাথী বলল
“”__ মনে হচ্ছে তোরা মায়ের কাছ থেকে নানির বাড়ির গল্প শুনতে চাচ্ছি। মা ঠাস ঠাস করে বলে দিবে।দেখব তো তোদের যখন বিয়ে হয় তখন তোদের বাসর রাতে কি হয় জানতে চাইলে কতটা বলিস?
পাশ থেকে শ্যামলতা বললো
“”__ তুই চাইলে তাকে আমি হেল্প করতে পারি ।প্রয়োজনে আমার বাসর রাতে তুই আমার খাটের নিচে লুকিয়ে থাকবি। আমি মুখে কিছু বলবো না তুই নিজেই দেখে নিস তখন টিকে হয় আমাদের মাঝে?
“”__ ছিঃ শ্যামলতা কি বলছিস এসব?
“”__ ছিঃ বলিস আর জায় বলিস এখন বলনা?
সাথী বুঝতে পড়েছে ও যতক্ষণ পর্যন্ত কিছুনা বলবে ওরা ওকে ছাড়বে না।
সাথী মাথা নিচু করে আস্তে আস্তে আসামিকে হ্যান্ডস আপ করলে যেমন করে হাত উপরে তুলে।
সাথী ওর একটা হাত ওপরে তুলল।

দুটো আঙ্গুল নিচে নামিয়ে ,
তিনটে আঙ্গুল ওপরে দাঁড় করে রাখল! তা দেখে রোদ ঠাস করে বিছানায় বসে বললো?
“”__ কি বলিস এক রাতে তিনবার এত ফাস্ট তোরা,
( রোদ এমনভাবে তিনবার বলেছে যেন তিন বছর ধরে সাথী একটানা ওর স্বামীর আদর নিয়েছে)
তখন শ্যামলতা সাথীর দিকে তাকিয়ে বলল
“__ তা আজ রাতে কই রাউন্ড করার ইচ্ছে আছে রে?
সাথী এবার রেগে গিয়ে বলল
“”__ আজ রাতে কই রাউন্ড আদর নেওয়ার ইচ্ছে আছে সেটা তো আমার জানা নাই।
তবে এখন যে তোদের দুজনকে আমি খুন করবো সেটা জানে আছে
( এই কথা বলে সাথী ইচ্ছেমতো ওরা দু’জনকে মারতে লাগলো।
এরকমভাবে আরো কিছুক্ষন গল্প করে।
শ্যামলতা রোদ সাথীর রুম থেকে বের হয়ে আসে?
ওরা আসতেই রায়হান আয়াত সবুজ কে ছোটি দিয়ে সাথীর রুমে পাঠিয়ে দিলো।
আয়াত নাকি রায়হানের সাথে থাকবে ওর রুমে।
এদিকে শ্যামলতা সুযোগ খুঁজছিল কখন রায়হানের সাথে একটু কথা বলবে।
কিন্তু আয়াতের জন্য পারছে না। তাই বিরক্ত হয়ে শ্যামলতা রোদের সাথে বির বির করে বললো..
“”__ এই আপদ টা কোথা থেকে আসলো। ইচ্ছে করছে কেটে টুকরো টুকরো করে রোদে শুকিয়ে শুঁটকি দিয়ে ।কাউয়া কে খাইয়ে দিতে যত্ত সব।

শ্যামলতার কথা শুনে রোদ বলল
“”__ আমার তো ইচ্ছে করতেছে ওই শালার চোখ দুটো খুলে ফুটবল খেলতে ।কেমন করে যেন তাকায় বিরক্ত লাগে আমার।
শ্যামলতা আর রোদ কে ফুসোর ফুসোর করতে দেখে রায়হান বললো
“”__ রোদ না ঘুমিয়ে তুই এখানে কি করছিস, যা ঘুমাতে যা?
রোদ তোতলাতে তোতলাতে বললো
“___ না মানে ভাইয়া ইয়ে মানে?
“”__ কি সব মানে মানে করছিস কি হয়েছে?
“”__ না মানে শ্যামলতা তোমার সাথে কথা বলতে চাই?
রোদের মুখ থেকে এমন কথা শুনে শ্যামলতা যেন 1000 ভোল্টের শক খেল।
শ্যামলতা সাথে সাথেই চোখ বড় বড় করে রোদের দিকে তাকাল ।
ওর এমন করে তাকানোর অর্থ হলো।
তোর মত বন্ধু যদি কারো থাকে পাশে তাহলে শত্রুর কি দরকার ।
তোরে আমি কখন বলছি যে আমি তোর ভাইয়ের সাথে এখন কথা বলতে চাই।
রোদ অসহায় দৃষ্টিতে রোধের দিকে তাকালো।
রোদ না দেখার ভান করে দৌড়ে ঘরে চলে গেল শ্যামলতা কে রেখে।
শ্যামলতা পরেছে মহা বিপদে। না জায়গা থেকে নড়তে পারতেছে ,
না কিছু বলতে পারতেছে।

শ্যামলতা কে দেখে আয়াত রারোদ অসহায় দৃষ্টিতে রোধের দিকে তাকালো।
রোদ না দেখার ভান করে দৌড়ে ঘরে চলে গেল শ্যামলতা কে রেখে।শ্যামলতা পরেছে মহা বিপদে।
না জায়গা থেকে নড়তে পারতেছে ,না কিছু বলতে পারতেছে।
শ্যামলতা কে দেখে আয়াত রায়হানের দিকে তাকিয়ে মনে মনে বললো
“”__ এটার সাথে যা ইচ্ছে তাই কর আমার কোন সমস্যা নেই।
আমি অলরেডি তোর কলিজায় হাত দিয়ে রেখেছি। শুধু কলিজা টা টান দিয়ে ছিড়ে বের করার বাকি।
তোর নিশিকে এতটাই পাগল করব আমার প্রেমে যে,
ওর নগ্ন ছবিতে আমার মোবাইলের গ্যালারি ভরে যাবে।
আর যখন আমার মোবাইলের গ্যালারিতে জায়গা নিবে না।
তাহলে তো দুই-একটা ছড়িয়ে-ছিটিয়ে ইন্টারনেটে যাবে তাই না। আমার কি দোস।
আয়াত কে রায়হানের দিকে এমন করে তাকিয়ে থাকতে দেখে রায়হান বলল
“”__ কিরে এমন করে তাকিয়ে কি দেখছিস। তুই যা ভাবতেছিস তার কিছুই না।
তুই তো জানিস আমার কথা?

“”__ তুই ও না রায়হান তোর নিশিকি এই মেয়ের থেকেও বেশি সুন্দর ।
আমার তো মনে হয় না ।আচ্ছা তোর জন্য যদি তোর পছন্দ না হয় আমার জন্য পটিয়ে দে।
আমার কিন্তু আপত্তি নাই কি ফিগার দেখেছিস পা থেকে মাথা পর্যন্ত।
“”__ আয়াত কোন মেয়ের সম্বন্ধে এরকম কমেন্ট করা কিন্তু ঠিক না?
দূর শালা আমি তো মজা করলাম।
আর তোরা এত গায়ে লাগে কেন তরতো আর পছন্দ এই না এই মেয়েটাকে।
আচ্ছা বুঝেছি তোদের প্রাইভেসি দরকার ।
তাই তো ওকে আমি আসছি তোরা গল্প কর( এই কথা বলে আয়াত সেখান থেকে চলে গেল।
মোবাইল চাপতে চাপতে আয়াত বাড়ি থেকে বের হয়ে রাস্তায় নেমে পড়ল ।
হাঁটতে-হাঁটতে সামনে যেতে লাগলো। আয়াত চলে যেতেই শ্যামলতা সাহস খুজে পেল।
চট করে এক দৌড়ে রায়হানের কাছে চলে আসলো।
রোদকে এখন শ্যামলতার ধন্যবাদ দিতে ইচ্ছে করতেছে।
কিন্তু কি দিয়ে শুরু করবে শ্যামলতা ঠিক বুঝতে পারছে না।
কেন না আগামীকাল ওকে চলে যেতে হবে ।
আর চাইলেও থাকা যাবেনা তাহলে ওর মা রেগে যাবে।
কিন্তু এই পরিবারের মানুষগুলোকে ছেড়ে যেতে শ্যামলতালার একদম ইচ্ছে করছে না।
শ্যামলতা কে চুপ করে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে রায়হান বলল?
“”__ কিছু বলবেন, না হলে শুতে যান রাত অনেক হয়ে গেছে?
শ্যামলতা একটা দীর্ঘসাস ছেরে বললো

“”__ মানুষ খুবই আজব প্রাণী তাই না।যে আমাদেরকে ভালবাসে পাগলের মতো আমরা তাকে তার ভালোবাসার মূল্য দেই না। তাকে অবহেলা করি,আবার আমরা যাকে ভালোবাসি সেই মানুষটা আমাদের ভালোবাসার মূল্য দেই না, আমাদেরকে অবহেলা করে। এটা কেমন নিয়ম বলেনতো?
শ্যামলতার কন্ঠের মাঝে কষ্ট অভিমান লুকিয়ে আছে রায়হান শুনেই বুঝতে পারলো।যদিও রায়হান বুঝতে পেরেছে শ্যামলতা কেন এ কথাটা বলেছে। কিন্তু রায়হান বাস্তবতা বিশ্বাস করে কল্পনাকে না।
রায়হান ভালো করে জানে কোনোভাবেই এটা সম্ভব না।
কেননা রায়হান যদি ও শ্যামলতা কে পছন্দ করে বসে ।
ওর বাবা-মা কখনো রায়হানের হাতে শ্যামলতাকে তোলে দিবেনা।
কেন বা দিবে একটা বেকার ছেলের কাছে ওনাদের এক মাএ মেয়ের বিয়ে ।
যেখানে শ্যামলতা দেড় কোটি কোটি টাকা।
রায়হান কে চুপচাপ দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে শ্যামলতা একটা দীর্ঘসাস ছেরে বললো?
“”_একটু ছাদে যাবেন আমার সাথে,

বাড়ির উঠোনে দাঁড়িয়ে কথা বলতে আমার কাছে কেমন যেন লাগতেছে?
এই কথা বলে শ্যামলতা ছাদের দিকে পা বাড়ালো।
শ্যামলতার বিশ্বাস রায়হান নিশ্চয়ই আসবে।
তেমনটাই হল রায়হান কিছু বললোনা ।
শ্যামলতার পিছে পিছে ছাদে চলে গেল।
ছাদে যেতেই রায়হান কিছু বলতে যাবে তার আগেই শ্যামলতা বললো..
“”__ একটা গান শুনেছিলেন আপনি, গানের লাইনগুলো এমন ছিল।
হাজার ভালবাসলেও কাউকে আপন করে পাওয়া যায় না।
শত বছর একসাথে থাকলেও কেউ কেউ আপন হয় না।
আপনাকে আমি কত করে বলেছিলাম।
আমাকে তুমি করে বলবেন ।
আপনি করে বলবেন না ।
দেখেন আপনি ঠিকি আবার আমাকে আপনি করে বলতেছেন।
এই কয়দিনে কি আমি আপনার মনে আমার জন্য একটু হলেও জায়গা তৈরি করতে পারিনি রায়হান! কখনো কোন মেয়েকে নিজে থেকে বলতে শুনেছেন সে একটা ছেলেকে ভালবাসে।
সব সময় ছেলেরাই ভালোবাসি আগে বলে প্রপোজ করে ফুল দিয়ে,সব মেয়েরাই তার ভালোবাসার মানুষের কাছ থেকে এরকমটা আশা করে।
সে জায়গায় আমি মেয়ে হয়ে লজ্জা শরম ভুলে গিয়ে।
বলেছিলাম আপনাকে খুব বেশি ভালোবাসি আমি আপনাকে।
আপনার জন্য সব করতে পারব আমি সব ।

আমার আব্বুর রাজপ্রাসাদ ছেড়ে আপনার সাথে এই ছোট্ট ঘরে থাকতে পারবো।
আমার কোন আপত্তি নেই রায়হান শুধু আপনি আমার পাশে থাকলেই চলবে।
আপনার ভালোবাসা বিহীন আমার কিছু চাইনা।
আমি আপনাকে বললাম না শতবর্ষ পাশে থাকলেও কেউ কেউ আপন হয় না।
আপনি বিহিন যদি অন্য কেউ আমার জীবনে সারা জীবন আমার পাশে থাকে।
কখনও সে আমার আপন হতে পারবে না রায়হান কক্ষনো না।
আচ্ছা আমার ত্রুটি কোথায় একটু বলবেন।

আমি কি দেখতে সুন্দর না খুব বাজে আপনার সাথে মানাবে না আমাকে।
কেন আপনি আমাকে পছন্দ করেন না। আপনার চোখে আমি আমাকে খুঁজে পাই না রায়হান।
আপনার চোখে শুধু আমার থেকে পালিয়ে বেড়ানো খুঁজে পায়। আগামীকাল চলে যেতে হবে এখান থেকে।যদি আপনার মুখ থেকে শুনে যেতে পারতাম আপনি আমাকে ভালোবাসেন ।
জানেন এই পৃথিবীতে মনে হয় আমার চাইতে আর কখনো কোন মানুষ বেশি সুখী হতে পারতো না।
যদি রাস্তায় অ্যাক্সিডেন্টে মরেও যাই আমি বাসায় পৌঁছানোর আগে।

তখনো আমি হাসিমুখে মরতে পারবো রায়হান এটা ভেবে যে আপনি আমাকে ভালবাসেন।
এমন করে পাথরের মূর্তির মত কেন দাঁড়িয়ে আছেন রায়হান। কিছু তো বলোন আমাকে।
আমি আর পারছি না সইতে আমার থেকে আপনার দূরে থাকাটা।
প্লিছ কিছু তো বলোন কেন আপনি আমাকে পছন্দ করেন না।
আপনার মনের মত হতে হলে আমাকে কি করতে হবে আমি তাই করবো।
তার পরেও আমি আপনাকে হারাতে চাইনা রায়হান ।
প্লিজ কিছু তো বলো ( এই কথা বলে মুখ চেপে ধরে ফুঁপিয়ে কেঁদে উঠল শ্যামলতা)
রায়হান কি বলবে বুঝতে পারতেছেনা,
অল্প সময়ে এই মেয়েটা রায়হানকে ভালোবেসে ফেলবে এতটা রায়হান কখনো কল্পনাও করে নাই।
কবি ঠিকই বলেছে ভালবাসতে হাজার বছর লাগে না ‌।
এক পলকেই যথেষ্ট।

রায়হান কিছু বলতে যাবে ঠিক তখনই শ্যামলতা।
দৌড়ে এসে রায়হানকে জাপ্তে জরিয়ে ধরে।
ওর চোখের পানিতে রায়হানের বুক ভাসিয়ে দিতে লাগলো।
রায়হান অবাক হয়ে গেল শ্যামলতার কান্ড দেখে।
আস্তে আস্তে শ্যামলতা রায়হান-এর বুক থেকে মুখ তুলে রায়হানের দিকে তাকিয়ে বলল…
_ প্লিজ অন্তত আপনার মুখ থেকে এই শব্দটা উচ্চারণ করবেন না যে ।
আপনি আমাকে পছন্দ করেন না তাহলে কিন্তু আমি সত্যি মরে যাব। চলে যাব আমি আগামীকাল।
আর কখনো দেখা হবে কিনা জানিনা। তবে আমি আপনার আশায় থাকবো!
আপনার মনের উপর জোর করে আমাকে ভালবাসতে হবে না।
যেদিন মন থেকে ভালোবাসতে পারবেন সেদিন ঐ কিছু বলবেন মুখ ফুটে আমাকে।
আমি আপনার মনের মত হবার চেষ্টা করব রাইহান

(এই কথা বলে শ্যামলতা রায়হানকে ছেরে চলেজেতে নিলে ।
কিছুটা সামনে গিয়ে আবারও দৌড়ে রায়হানের কাছে আসে।
রায়হান কিছু বুঝে ওঠার আগেই শ্যামলতা ।
রায়হানের পায়ের উপর পা রেখে উঁচু হয়ে ।
রায়হানের মাথার চুলগুলো মোট করে ধরে।
রায়হানের ঠোঁটে নিজের ঠোঁট দুটো ডুবিয়ে দিল।
এবার যেন রায়হান অবাক এর চূড়ান্ত সীমায় পৌঁছে গেল।
শ্যামলতা যেমন ঝড়ের গতিতে এসেছে।
ঠিক তেমনি আবার রায়হানের ঠোঁট ছেড়ে দিয়ে ঝরের ঘতিতে দৌড়ে নিচে নেমে যায়।
রায়হান শ্যামলতার জাওয়ার দিকে তাকিয়ে রইলো।
আর মনে মনে বললো,
তুমি খুব ভালো মেয়ে শ্যামলতা আমার থেকেও তোমার জীবনে ভালো কেউ আসবে।
তুমি শুধু শুধু মরীচিকার পিছনে দৌড়াচ্ছে। যেটা কখনো সম্ভব না।
আর আমি একজন বুঝের মানুষ হয়ে।
তোমার জীবনটা নষ্ট করার মত ভুল আমি কখনোই করবো না।
রায়হান যখন এসব কথা ভাবতে ছিল ঠিক তখনই….

চলবে___

No comments

info.kroyhouse24@gmail.com