Breaking News

পরিবর্তন | পর্ব-০২

বিকাল ৪টা বাজতেই মসজিদের মাইকে আল্লাহু আকবার বলে আযানের ধ্বনি ভেসে উঠলো।। দুপুরের খাবার খেয়ে যে তামিম একটু বিছানায় পরে গড়াগড়ি করছিল তখন হঠাৎ ওর চোখ লেগে যায় যা ও বুঝতেও পারে নি।। আযানের ধ্বনি শুনে সে তারাতাড়ি ঘুম থেকে উঠে পরলো।। ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখল বিকাল ৪টা বাজে।। তার মানে এখন আসরের আযান দিচ্ছে।। রাতে তেমন ঘুম হয়নি তাই হয়তো তখন চোখ লেগে গেছিল।।
তারপর বিছানা ছেড়ে উঠে ওয়াশরুমে চলে গেল।। ওয়াশরুমে গিয়ে প্রথমে চোখে পানি দিয়ে ঘুম ছাড়িয়ে নিল।। এরপর অজু করে ওয়াশরুম থেকে বেরিয়ে আসলো।। এরপর মাথায় টুপি দিয়ে নামায পড়তে মসজিদে চলে গেল।।
নামায পড়া শেষে মসজিদে বসে কিছুক্ষণ নিজে হাদিস পাঠ করে অন্যদের শোনাল।। তারপর কিছুক্ষণ বাহিরে গিয়ে হাটাহাটি করতে লাগলো।। রাস্তা দিয়ে হাটছে আর “আস্তাগফিরুল্লাহ” বলছে।। আল্লাহ আমি তোমার কাছে তওবা করছি এর বদলেই “আস্তাগফিরুল্লাহ” পরবেন সবাই যেকোনো সময় ফ্রি থাকেন আর নাই থাকেন।।
কিছুক্ষণ পর মাগরিবের আযানও হয়েগেল।। তাই সে একেবারে মাগরিবের নামায পরেই বাসায় ফিরল।। বাসায় এসে কিছুক্ষণ পড়াশোনা করতে লাগলো।। ৭টা বেজে উঠলে এশার আযান হয়েগেল।। পড়াশোনা ছেড়ে তামিম অজু করে নামাযের প্রস্তুতি নিয়ে আবার মসজিদে চলে গেল নামায পড়তে।। নামায পড়ে আবার বাসায় এসে পড়তে বসে পরলো।।
টেবিলে বসে রাতের খাবার খাচ্ছে তামিমের পরিবার।। এমন সময় রফিক চৌধুরী (তামিমের বাবা) বললেন…
তা তোমার পড়াশোনা কেমন চলছে.?
তামিমঃ ভালোই চলছে আব্বু।।
তামিমের বাবাঃ কিছুদিন হলো এই শহরে আসলাম, বন্ধুবান্ধব পেয়েছ ভার্সিটিতে.?
তামিমঃ হে আব্বু পেয়েছি।।
তামিমের বাবাঃ যাক তাহলে ভালো, আর কোনোকিছু লাগলে আব্বুকে বলিও।।
তামিমঃ আচ্ছা আব্বু।।
আসলে কাজের চাপে রফিক চৌধুরী উনার ছেলের সাথে কথা বলতে পারছিলেন না কিছুদিন ধরে, কারণ উনি অন্য শহরে ছিলেন।। আজ দুপুরেই বাসায় ফিরলেন।।
খাওয়া দাওয়া শেষ তামিম নিজের রুমে চলে আসলো।। রুমে এসে একটা ইসলামিক বই নিয়ে বিছানায় শুয়ে শুয়ে পড়তে লাগলো।।
এদিকে জান্নাতের আম্মু জান্নাতকে সেই কখন থেকে ডেকে যাচ্ছেন খাবার খাওয়ার জন্য।। কিন্তু জান্নাত নিচে আসছে না তার নাকি খুধা নেই।।
জান্নাতের বাবাঃ কি হলো জান্নাত কোথায়.?
জান্নাতের মাঃ ওর রুমেই আছে, সেই কখন থেকে খাবারের জন্য ডেকে যাচ্ছি কিন্তু তোমার মেয়ে আসছেই না।। ওর নাকি খুধা নেই তাই খাবে না।।
জান্নাতের বাবাঃ খুধা নেই মানে.! দুপুরেও তো তেমন কিছু খায়নি, একটু জোরাজোরি করে খাইয়ে ছিলাম।। আচ্ছা দাড়াও আমি ওকে নিয়ে আসছি।।
তারপর আমজাদ চৌধুরী সোজা জান্নাতের রুমে চলে আসলেন।।
জান্নাতের বাবাঃ কি হয়েছে আমার মামনিটার.? আম্মু যে তোমায় ডাকছে নিচে আসতেছনা কেন.? (দরজার কাছে দাড়িয়ে)
জান্নাতঃ আমার খুধা নেই আমি খাব না।।
জান্নাতের বাবাঃ কেন খাবে না আমার মামনিটা.? মন খারাপ.?
জান্নাতঃ নাহ
জান্নাতের বাবাঃ তাহলে.?
জান্নাতঃ বললাম তো আমি খাব না যাউ তো তুমি এইখান থেকে (একটু রেগে)।।
জান্নাতের বাবাঃ তাহলে আজ আমাদেরও খাওয়া হবে না।।
জান্নাতঃ কেন.?
জান্নাতের বাবাঃ আমার মামনিটাকে ফেলে কি আমি কোনোদিন খাবার খেয়েছি.? তুমি যদি না খাও তাহলে আমিও খাব না।। আর আমি না খেলে তোমার আম্মুও খাবে না।।
জান্নাতঃ আসলেই তো আব্বু তো আমায় ছাড়া কোনোদিনও খাবার খায়নি।। আমি যদি খাবার না খাই তাহলে আব্বুও খাবে না, আব্বু না খেলে আম্মুও খাবে না।। নাহ আমি বরং একটু খেয়ে নেই তাহলে আর কাউকে আমার জন্য না খেয়ে থাকতে হবে না (মনে মনে)।। আচ্ছা চল আমি খাব (আসলে আজ ওর কেন যেন খেতে ভালো লাগছে না তাই এমন করছে)।।
জান্নাতের বাবাঃ এইতো আমার লক্ষি মামনিটা, চল এবার অনেক খুধা লেগেছে।।
তারপর আমজাদ চৌধুরী জান্নাতকে সাথে নিয়ে খাবার টেবিলে চলে আসলেন।।
রাত ১০টা বেজে গেছে, এখন ঘুমানোর প্রস্তুতি নিতে হবে নাহলে ফজরের সময় উঠতে পারব না।। বিছানা থেকে উঠে বইটা টেবিলে রেখে ওয়াশরুমে অজু করতে চলে গেল তামিম।। এইসময় কেন অজু করছে সে এটাই ভাবছেন তো.? অপেক্ষা করুন জানতে পারবেন।।
অজু করা শেষে ওয়াশরুম থেকে বেরিয়ে আসলো তামিম।। তারপর জায়নামাজটা নিয়ে কেবলার দিকে বিছিয়ে জায়নামাজে উঠে জায়নামাজের দোয়া পরলো।। আর নফল নামাযের নিয়ত করে নামাযে দাড়িয়ে পরলো (ছোট থেকেই তামিম নামায পড়ে আসতেছে।। তখন সে এতকিছু বুঝত না বা জানতও না, শুধু নামাযই পড়তো।। কয়েকমাস আগে তাদের মসজিদ থেকে একটা তাবলিকের জামাত বেরিয়েছিল, তাদের সাথে তামিমও তাবলিকে গিয়েছিল।। আর ওইখানে গিয়েই সে আরও অনেক কিছু শিখেছে যা এখনও পর্যন্ত আমল করে যাচ্ছে।। আপনারা অনেকেই হয়তো ভাবছেন তাবলিক কি, সেটা হয়তো সবাই চিনবেন না।। তবে তাবলিক নিয়ে অন্য একদিন আলোচনা করা হবে তখন সবাই বুঝতে পারবেন তাবলিকটা কি)।।
নামায শেষ করে জায়নামাজটা আলমারিতে রেখে বিছানায় উঠে বসলো তামিম।। তারপর ৩বার দুরুদ পড়ে জান্নাতের মূল্য আদায় করলো (দুরুদঃ সাল্লেল্লাহু আলা সাইয়েদিনা ওমাওলানা মুহাম্মদ, ওয়ালা আলিহি ওয়া সাহবিহি ওয়া সাল্লাম।। লেখাগুলোয় একটু ভুল থাকতে পারে বাট আশা করি আপনারা বুঝতে পেরেছেন আমি কোন দুরুদের কথা বলছি।। ছেলে-মেয়ে উভয়েই এই দুরুদ ৩বার পাঠ করে ঘুমাবেন তাহলে জান্নাতের মূল্য আদায় করা হয়ে যাবে)।।
তারপর আয়াতুল কুরসি পড়ে বুকে ৩বার ফু দিল যাতে ঘুমের মধ্যে শয়তান ধারে কাছে না আসে আর খারাপ কোনো সপ্ন না দেখায়।। তারপর কুরআন শরীফের ১০ আয়াত (যেকোনো ১০ আয়াত যেমন সূরা ফাতিহা(৭) আর সূরা কাউসার(৩) পাঠ করে ডান দিকে কাথ হয়ে শুয়ে পরলো (প্রথমে ডান দিকে শোবেন তারপরে বাম দিকে শুতে পারবেন, তবে চিৎ হয়ে ঘুমাবেন না, চিৎ হয়ে শয়তান ঘুমায়)।।
খাওয়া শেষ করে জান্নাত রুমে এসে তামিমের কথা ভাবতে লাগলো।।
কি সুন্দর তার চেহারা, কি মিষ্টি কণ্ঠ তার।।
গাল ভর্তি ছোট ছোট দাড়ি থাকায় ছেলেটাকে অনেক সুন্দর লাগে।।
অন্য ১০টা ছেলের মতো চুলগুলো কাটিং করা নেই।। একদম আগে পিছনে সমান।।
কিন্তু আমি ওকে নিয়ে এতো ভাবছি কেন.?
দুরর একদম ভালো না ছেলেটা, আমি নিজ থেকে কথা বলেছি বলে ভাব নেয়।।
ভাব নিবে নাই বা কেন পড়াশোনায় ভালো ছেলেটা।।
আর ভালো স্টুডেন্টরা ভাব নিবেই।। কিন্তু এতো ভাব আমি আগে কখনো দেখি নি।।
ব্যাটা তোমার ভাব আমি বের করবো দাড়াও।।
অনেক রাত হয়েছে এবার ঘুমিয়ে পরি, সকালে আবার ভার্সিটিতে যেতে হবে।।
মধ্যরাতে এলার্মের রিংটোন শুনে ঘুম ভেঙে গেল তামিমের।।
ঘুম ঘুম চোখে এলার্ম বন্ধ করে মোবাইলের দিকে তাকিয়ে দেখে ৪টা বাজে।।
আজ এই টাইমে উঠতে পেরে তামিমের মনে আনন্দ বন্যা বইতে লাগলো।।
তাবলিকে গিয়ে মধ্যরাতে উঠে সবাই মিলে তাহাজ্জুদের নামায পড়তো।।
সেই থেকে তামিমও তাহাজ্জুদ নামায পড়া শুরু করে।।
কয়েকমাস লাগাতার তাহাজ্জুদ নামায পড়েছিল, কিন্তু শীত আসার কারণে অনেকদিন ধরে তাহাজ্জুদের নামায পড়া হচ্ছে না।। তবে সে প্রতিদিনই মোবাইলে ৪টার সময় এলার্ম দিয়ে রাখে, যাতে তাহাজ্জুদ নামায পড়তে পারে।।
অবশেষে আজকে সে তাহাজ্জুদ নামাযের ওয়াক্তে উঠেই পরলো।।
এতক্ষণ ধরে বসে থাকায় চোখের ঘমটাও চলে গেছে তার।।
খুশি মনে বিছানা থেকে উঠে অজু করতে ওয়াশরুমে চলে যায় তামিম।।
তাহাজ্জুদ নামায সুন্নত হলেও এই নামাযের অনেক উপকারীতা আছে।।
মধ্যরাতে বান্দা যদি আরামের ঘুম ছেড়ে উঠে তাহাজ্জুদ নামায আদায় করে আর ২হাত উঠিয়ে আল্লাহর কাছে কাশ দিলে দোয়া করে তাহলে সেই দোয়া বিফলে যায়না।।
কারণ শেষরাত্রে আল্লাহ তায়ালা ১ম আসমানে নেমে আসেন আর আমাদের উদ্দেশ্যে বলেন,
হে আমার বান্দা তোমাদের মধ্যে কার কি চাই আমি আল্লাহর কাছে বল, আমি তোমাদের সেই জিনিসটা দিব।।
কার অসুবিধা আছে আমায় বল আমি সেই অসুবিধাকে দূর করে দিব।।
কিন্তু আফসোস, আমরা যুবকরা এইসময়ে ঘুমের মধ্যে থাকি,
আবার কেউ কারও সাথে কথা বলায় চেটিং করায় মগ্ন থাকে।।
অথচ তার কানে ফজরের আযানের ধ্বনি ভেসে উঠে বালিশ দিয়ে কান চাপা দিয়ে শুয়ে পরে।।
আল্লাহ তুমি এমন যুবকদের তোমার পথে টেনে নাও আমিন।।
অজু করা শেষে আলমারি থেকে জায়নামাজটা বের করে কেবলার দিকে বিছিয়ে তাহাজ্জুদের নিয়ত করে নামাযে দাড়িয়ে পরলো তামিম (তাহাজ্জুদের নামায ৪,৮,১২ রাকাত করে পড়বেন সবাই)।। নামায শেষ করে আল্লাহর দরবারে ২ হাত উঠিয়ে দোয়া করতে লাগলো তামিম।। দোয়া শেষে জায়নামাজে বসে বসে জিগির করতে লাগলো সে।। দেখতে দেখতে মসজিদে ফজরের আযান দেওয়া শুরু হয়েগেল।।
তারপর তামিম জায়নামাজটা আলমারিতে রেখে তার মা-বাবার রুমে গিয়ে তাদেরকে নামাযের জন্য ডাক দিতে লাগলো।। তামিমের মাও নামায পড়েন বাবা মাঝেমধ্যে।।
তামিমের মা রুম থেকে বেরিয়ে এলে তামিম মাকে বলে বাসা থেকে বেরিয়ে মসজিদে চলে এলো।।
নামায শেষ হলে তামিম “লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ” ১০০ বার পড়লো (হাদিসে বলা হয়েছে যে ব্যক্তি যত বেশি “লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ” পড়িবে সেই ব্যক্তি ওইদিন সবার চেয়ে উত্তম।।
যদি একজন ১০০ বার পড়ে আর আরেকজন ১০১ বার তাহলে ওই ১০১ বার পড়া লোকটা ওইদিনের উত্তর ব্যক্তি)।।
মসজিদ থেকে বেরিয়ে রাস্তায় হাটাহাটি করার মধ্যে দিয়ে সকালের ঠান্ডা আবহাওয়াটা উপভোগ করতে লাগলো তামিম।। ৩০ মিনিটের মতো হাটাহাটি করে সে বাসায় চলে আসলো।।
বাসায় এসে রুমে গিয়ে কিছুক্ষণ ঘুমিয়ে নিল।।
ভার্সিটি শুরু হবে ৯টায় আর এখন ৬ঃ৩০ বাজে, তাই একটু ঘুমিয়ে নিচ্ছে সে।।
সকাল ৮ঃ৩০ বাজতেই জান্নাতের আম্মু এসে জান্নাতকে ডাকতে লাগলেন ভার্সিটি যাওয়ার জন্য, কিন্তু জান্নাত এখনো ঘুমিয়েই আছে।।
জান্নাতের মাঃ এই তারাতাড়ি উঠ ভার্সিটি যাবি না.? ৯ঃ৩০ তো বেজে গেছে উঠ (জান্নাতকে উঠানোর জন্য মিথ্যা বললেন)।।
জান্নাতঃ কিহহ ৯ঃ৩০ বেজে গেছে আর তুমি আমায় এখন ডাকছ.! (ঘুম থেকে লাফ মেরে উঠে)
জান্নাতের মাঃ ঘড়িতে তাকিয়ে দেখ কয়টা বাজে।।
জান্নাতঃ ঘড়িতে তাকিয়ে দেখল ৮ঃ৩০ বাজে।। এটা কি হলো তুমি না বললে ৯ঃ৩০ টা বাজে, তাহলে ঘড়িতে ৮ঃ৩০ টা কেন.?
জান্নাতের মাঃ আজকে যে তোর ক্লাসে এক্সাম আছে মনে নেই.?
জান্নাতঃ ওহ শিট আমার তো মনেই ছিল না, কিন্তু তুমি কি করে জানলে যে আজকে আমার ক্লাসে এক্সাম হবে.?
জান্নাতের মাঃ নিলা (জান্নাতের বান্ধবী) তোর মোবাইলে কল দিয়েছিল।।
কিন্তু তুই তো ঘুমে ছিলি তাই আমি কল ধরলাম।।
পরে নিলাই আমায় বললো যে আজ তোদের ক্লাসে এক্সাম হবে।।
জান্নাতঃ তুমি গিয়ে নাস্তা রেডি রাখ আমি ২ মিনিটের মধ্যে নিচে আসছি (বলেই বিছানা থেকে উঠে দৌড়ে ওয়াশরুমে চলে গেল ফ্রেশ হতে)।।
জান্নাতের মাঃ নাস্তা টেবিলেই রাখা আছে তারাতাড়ি আয় বলেই নিচে চলে গেলেন।।
কিছুক্ষণ পর জান্নাত ওয়াশরুম থেকে বেরিয়ে তারাতাড়ি করে রেডি হয়ে নিল।।
তারপর নিচে এসে হালকা নাস্তা করে গাড়ি নিয়ে ভার্সিটি উদ্দেশ্যে বাসা থেকে বেরিয়ে পরলো (তার বাবার নিজের একটা গাড়ি আছে যেটা দিয়ে জান্নাত প্রতিদিন ভার্সিটিতে যাওয়া আসা করে)।।
এদিকে তামিমও নাস্তা করে ব্যাগ নিয়ে বাসা থেকে বেরিয়ে আসলো।।
রাস্তা দিয়ে হাটছে হঠাৎ তার চোখ পরলো অপর রাস্তায়।।
সে দেখল একটা বৃদ্ধলোক অপর পাশ থেকে এইপাশে আসার চেষ্টা করছে কিন্তু গাড়ির জন্য ভয়ে আসতে পারছে না।। তামিম তারাতাড়ি গিয়ে বৃদ্ধলোকটার কাছে এসে দাড়ালো আর তাকে ধরে ধরে রাস্তা পার করতে সাহায্য করলো।।
জান্নাত গাড়ি চালিয়ে এই পথেই আসছিল, হঠাৎ তামিমিকে দেখে সে গাড়ি থামিয়ে ফেলে।।
সে দেখল তামিম একটা বৃদ্ধলোককে রাস্তা পারাপারে সাহায্য করছে।।
দৃশ্যটা দেখে জান্নাতের কেন যেন খুব ভালো লাগলো।।
মোবাইলের স্ক্রিনে তাকিয়ে দেখল ভার্সিটি শুরু হতে আর মাত্র ১০ মিনিট বাকি।।
গাড়ি নিয়ে সে ৫ মিনিটেই চলে যাবে কিন্তু তামিম তো হেটে হেটে যাচ্ছে।।
ওকে আমার সাথে যেতে বলি তাহলে ভার্সিটি শুরু হওয়ার আগেই দুজন চলে যাব।।
সে গাড়ি নিয়ে এসে তামিমের সামনে দাড়ালো।।
জান্নাতঃ এই যে মিস্টার গাড়িতে উঠেন, ভার্সিটি শুরু হতে বেশি সময় নেই হেটে হেটে গেলে দেড়ি হয়ে যাবে।।
তামিমঃ গাড়ির ভিতরে তাকানোর আগেই কথাগুলো শুনে সে বুঝে ফেললো যে এটা জান্নাত।।
নাহ আপনি যান আমি হেটে হেটে যেতে পারব।।
জান্নাতঃ আপনাকে কিডন্যাপ করে ফেলবো নাকি যে এতো ভয় পাচ্ছেন, আসেন গাড়িতে উঠেন।।
তামিমঃ ভয় পাব কেন, আমি বলছি তো আমি হেটে হেটে যেতে পারব।।
জান্নাতঃ আমিও তো ভার্সিটিতেই যাচ্ছি তাহলে আমার সাথে গেলে আপনার সমস্যা কি.?
(একটু রেগে)
আমিঃ বুঝতে পারছে এই মেয়ে তাকে এতো সহজে ছাড়বে না।।
হাত ঘড়িতে থাকিতে দেখে আর মাত্র ১০ মিনিট সময় আছে ভার্সিটি শুরু হতে।।
হেটে হেটে ভার্সিটি গেলে ১৫ মিনিট তো লাগবেই।।
তখনই পাশ দিয়ে একটা রিক্সা যাচ্ছিল,
রিক্সা দেখেই তামিম রিক্সাওয়ালাকে ডাক দিয়ে দাড়াতে বলে আর রিক্সায় উঠে ভার্সিটিতে নিয়ে যাওয়ার জন্য বলে।।
রিক্সাওয়ালাও তাকে নিয়ে সেখান থেকে চলে আসলো।।
তামিমের এমন আচরণে জান্নাত তো রেগেমেগে আগুন।।
তামিমকে মনে মনে গালিগালাজ করতে করতে সেও গাড়ি স্টার্ট দিয়ে ভার্সিটি চলে এলো।।
চলবে…

No comments

info.kroyhouse24@gmail.com