বোকা ছেলে । লেখা-আরিয়ান রহমান

আজ কলেজে সিহাবের প্রথম ক্লাস।কলেজ যাওয়ার সময় ওর মাকে বলল:
সিহাবের মাঃ_ভালোভাবে থাকিস,কেউ কিছু বললে চুপচাপ থাকবি।
সিহাবঃ_আচ্ছা মা।
বলে বেড়িয়ে পড়লো কলেজে।সিহাব অনার্স ২য় বর্ষে পড়ে।এই এলাকায় নতুন এসেছে।সিহাব এখানে ওর মার সাথে থাকে।আর ওর বাবা অন্য শহরে থাকে।কলেজে ঢুকার পর ক্লাসের দিকে যাচ্ছে।কিন্তু সবাই সিহাবের দিকে চেয়ে থেকে এটা ওটা বলছে।বলবেই না কেন যেভাবে কলেজে এসেছে।হলুদ রংয়ের একটা পাঞ্জাবি,সাদা পায়জামা চোখে কালো একটা চশমা।দেখে একদম বোকা টাইপের লাগছে।
সিহাব একটা ছেলেকে বলল:
সিহাবঃ_আচ্ছা ভাইয়া অনার্স সেকেন্ড ইয়ারের ক্লাস টা কোনদিকে।
ছেলেটা ওর দিকে চেয়ে থাকলো আর মনে মনে ভাবছে এর সাথে একটু মজা করা যাক।তারপর বলল:
ছেলেঃ_সেকেন্ড ইয়ারের ক্লাস ওই উপন তলায় ডান কোণেরটা।
সিহাবঃ_ধন্যবাদ ভাইয়া।
কিন্তু গিয়ে দেখলো ক্লাসে স্যার।স্যারকে বলল:
সিহাবঃ_স্যার আসবো?
স্যারঃ_তোমাকে দেখে তো নতুন বলেই মনে হচ্ছে।কোন ইয়ারে পড়ো।
সিহাবঃ_জ্বি স্যার সেকেন্ড ইয়ারে।
স্যারঃ_কিন্তু এটা তো থার্ড ইয়ারের ক্লাস।
সিহাবঃ_একটা ভাইয়া যে বলল এটা নাকি সেকেন্ড ইয়ারের রুম।
স্যারঃ_ও বুঝতে পেরেছি।ও তোমার সাথে মজা করেছে।
এরপর স্যারের সাহায্য নিয়ে ওর ক্লাসে এসে বসলো।ওর পাশে বসে থাকা ওর ক্লাসমেট সামির বলল:
সামিরঃ_ভাই আপনি তো মনে হয় আজ নতুন তাই না?
সিহাবঃ_হ্যাঁ ভাইয়া।
সামিরঃ_যাই হোক ভাইয়া একটু সাবধানে থাকবেন?
সিহাবঃ_কেন?
সামিরঃ_আমাদের ক্লাসে সিনথিয়া নামের একটা মেয়ে আছে,র্যাগিং এর লিডার।ওর থেকে সাবধানে থাকবেন।ওই যে আসছে ও।
এটা বলে সামির উঠে গেলো।এমন সময় ক্লাসে শার্ট প্যান্ট পড়া মেয়ে ঢুকলো।ওর পিছে দুই একটা ছেলে আর কয়েজন মেয়েও আসলো।মেয়ের চেহারা মাশাল্লাহ।সিহাব ওর দিকে তাকিয়ে আছে।সিহাবের তাকিয়ে থাকা দেখে সিনথিয়ার বান্ধবি ফারিয়া বলল:
ফারিয়াঃ_সিনথিয়া ওই ছেলেটা তোর দিকে কেমন করে তাকিয়ে আছে দেখছিস?
সিনথিয়াঃ_হুম।কেমন বোকা টাইপের দেখছিস।চল ওকে গিয়ে ধরি।
ফারিয়াঃ_হুম চল।
সিনথিয়া সিহাবের সামনে এসে ওকে বলল:
সিনথিয়াঃ_ওই এভাবে তাকিয়ে আছিস কেন আমার দিকে?
সিহাবঃ_কই তাকিয়ে আছি।
সিনথিয়াঃ_মিথ্যা বলবি না একদম আমার সামনে।আচ্ছা তোর নাম কি?
সিহাবঃ_
আমার নাম সিহাব।আপনার নাম কি?
সিনথিয়াঃ_তোর তো সাহস কম নয় তুই আমাকে পাল্টা প্রশ্ন করিস,আর বসে আছিস কেন দাড়িয়ে কথা বল(রাগী স্বরে বলল)
সিহাবঃ_আপনাকে প্রশ্ন করলে কি হবে?
তখন সিনথিয়ার পাশে থাকা রাফি বলল:
রাফিঃ_কেলিয়ে ঠান্ডা করে দিবো।
সিহাবঃ_কেলানো আবার কি ভাই?
সিনথিয়াঃ_তুই তো দেখছি সেই টাইপের হাগল।
সিহাবঃ_আপনি মনে হয় নোয়াখাইল্লা তাই না?
সিনথিয়াঃ_ওই নোয়াখাইল্লা হতে যাবো কেন?
সিহাবঃ_ওই যে ছাগল না বলে হাগল বললেন তো তাই বললাম। শুনেছি নোয়াখাইল্লারা নাকি ছাগলকে হাগল বলে হি হি।
সিনথিয়াঃ_ওই এমন পাগলের মতো হাসছিস কেন?আর একটা কথা শুন এখন কলেজে আমার কথা শুনবি ঠিক আছে?
সিহাবঃ_আচ্ছা শুনবো।আপনি না দেখতে অনেক সুন্দরি(লজ্জা মাখা কন্ঠে বলল)
সিনথিয়াঃ_হ্যাঁ জানি আমি দেখতে সুন্দর।(অহংকার নিয়ে বলল)
সিহাবঃ-আচ্ছা আপনি ছেলে না মেয়ে?
সিনথিয়াঃ_চোখ দিয়ে দেখছিস না আমি কি?(
রেগে গিয়ে বলল)
সিহাবেঃ_আপনাকে দেখে আমার ছেলে বলেই মনে হচ্ছে।
বলা মাত্র কষে লাগালো একটা থাপ্পড়।তারপর বলল:
সিনথিয়াঃ_আমি দেখতে ছেলের মতো তাই না?আর তুই কি শালা আবাল, ক্ষ্যাত দুর হ আমার সামনে থেকে।
ফারিয়াঃ_কত বড় সাহস দেখেছিস তোকে কি বলে।একটা মারলি কেন আরো মার হারামজাদাকে।
রাফিঃ_আপু একবার হুকুম দাও দেখো ওরে মেরে তক্তা বানিয়ে দিবো।
সিনথিয়াঃ_না এসবের দরকার হবে না।(বলে মুচকি হাসলো সিহাবের দিকে তাকিয়ে)
সিহাবের চোখে পানি।ক্লাস করার সময় ফারিয়া সিনথিয়াকে বলল:
ফারিয়াঃ_তুই ওকে ছেড়ে দিলি কেন?
সিনথিয়াঃ_ছাড়লাম কই।আরো কত কিছুই না করি দেখে যা।(বলে হাসাহাসি করছে)
ছুটির পর সিহাব বাড়ির দিকে যাচ্ছে এমন সময় সামির ওকে ডাকলো:
সামিরঃ_ভাই যখন ওরা আপনার সাথে এমন করছিলো তখন আমার খুব খারাপ লেগেছে।
সিহাবঃ_উচিত কথা বলেছি তো তাই গায়ে লেগেছে।
সামিরঃ_জানেন ভাই প্রথমদিন আমাকে এমন করেছিলো তারপর থেকে দুরে থাকি ওর থেকে।
সিহাবঃ_ও।
সামিরঃ_আচ্ছা ভাই আমরা কি ফ্রেন্ড হতে পারি।
সিহাবঃ_ওকে ভাই।
সামিরঃ_আজ তাহলে আসি কাল কলেজে দেখা হবে।
সিহাব বাড়িতে মন খারাপ করে ঢুকলো।ওর মন খারাপ দেখে ওর মা বলল:
সিহাবের মাঃ_কি রে বাবা তোর কি মন খারাপ?
সিহাবঃ_না মা।
সিহাবেরঃ_তোকে তো ঠিক লাগছে না কিছু হয়েছে কি?
সিহাবঃ_না মা কিছু হয়নি।
সিহাব রাতে শুয়ে থেকে ভাবছে,যে মেয়েটা দেখতে এতো সুন্দর তার ব্যবহার এমন কি করে হতে পারে?
পরেরদিন কলেজে গেলো।ঠিক তখন,,,,,,,,
(চলবে)
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url