Breaking News

গল্পঃ শুদ্ধ । পর্ব- ০৩


হুম সে দিনের ভালোবাসা তাকে এনে দিয়েছে এই পতিতালয়ে।
মিনু আবার বলতে লাগলো নতুন প্রেমে পরে অনেক সাহসী হয়ে উঠেছিলাম।
ভালোবাসার মানুষের সাথে বেশী করে সময় কাটাতে লাগলাম। যেখানে সেখানে ঘুরে বেড়াতে লাগলাম।
কোন কিছুকে যেন তুয়াক্কা করি না।
ফল হিসেবে কিছু দিনের মধ্যে বাবা ব্যাপারটা জেনে যায় আর আমার পড়ালেখা বন্ধ করে দেয়।
পড়ালেখা বন্ধ হবার চেয়ে প্রিয় মানুষটাকে না দেখার কষ্ট পাচ্ছিলাম। মালাকে বেশী আমার কাছে আসতে দিতো না। মাঝে মাঝে আসতো এক দিন মালাকে অনেক বলে নাহিদের সাথে যোগাযোগ করি।
শুনেছি আমাকে দেখতে না পেরে নাকি নাহিদ পাগলের মতো হয়ে গেছে।
মালা অনেক সাহায্য করেছে।
মালা নাহিদের থেকে সব খবর এনে দিতো আর পৌঁছে দিত। এক দিন মালা এসে খবর বলেছিল নাহিদ আমাদের বাড়ির সামনে রাত ১০টা অপেক্ষা করবে আমি চাইলে ওর সাথে পালাতে পারি।
মালাকে জিজ্ঞাস করেছিলাম পালাবো নাকি ও শুধু বলেছিল চাচা চাচীর মনে কষ্ট দিয়ে পালানোটা ঠিক হবে না।
চাচা চাচীকে বুঝায় বলে দেখ কি হয়।
আমি তো জানতাম আমার বাবা কেমন সে কোন দিন ও আমাদের এই সম্পর্ক মেনে নিবে না।
তাই সে দিন কে শুনে কার কথা আমার নাহিদ আমাকে নিয়ে পালাবে আমাকে নিয়ে সংসার করবে এই টাই আমার জন্য অনেক। তাই
সে দিন বাবা মা ভাইয়ের সব আদর ভুলে, যে মেয়ে সন্ধ্যার পর বাহিরে যেতে ভয় পায় সে রাতের অন্ধকারে নাহিদের হাত ধরে গ্রাম ছেড়েছিল।
যদি ও নাহিদ বলেছিল ঢাকায় যেয়ে আমাকে বিয়ে করবে কিন্তু ঢাকায় আসার পর সে তা করেনি।
কারন হিসেবে দেখিয়েছে বিয়ে করতে হলে মেয়েদের ১৮ বছর লাগবে আর আমার বিয়ের বয়স হয়নি,
সাথে টাকা, বিভিন্ন কাগজ লাগবে এখন সে এই গুলা কোথায় পাবে!
নাহিদ বলেছিল সে এর আগে ঢাকায় আসেনি।
ঢাকায় এসে সে তার এক বন্ধুকে ফোন করে।
তার বাসায় উঠে।
ঢাকায় আসার পর থেকে বাবা মার জন্য অনেক খারাপ লাগছিল আবার ভয় ও লাগছিল।
সব কিছু কেমন জেনো লাগছিল।
এক সময় বাড়ি ফেরার জেদ ধরলাম।
নাহিদ তখন আমার পাশে এসে বসে আর আমাকে বুঝাতে লাগে। আমার কপালে চুমু খেয়ে আমার লক্ষী বউ কান্না করে না।
আমি তোমাকে পাগলের মতো ভালোবাসি, আমি তোমাকে ছাড়া বাঁঁচবো না।
আর আমরা যদি এখন ফিরে যাই তাহলে তোমার বাবা আমাকে মেরে ফেলবে আর তোমাকে অন্য জায়গায় বিয়ে দিয়ে দিবে। আমাকে মেরে ফেললে সমস্যা নাই কিন্তু তুমি কি আমাকে ছাড়া থাকতে পারবে? কান্না করে নাহিদের বুকে মাথা রেখে বলেছিলাম পারবো না কিন্তু বাবা মার আর ছোট ভাইয়ে কথা মনে পরতেছে। সে আমাকে বুঝাতে লাগলো। বুঝানো বাহানায় এক সময় স্বামীর অধিকার চাইতে লাগে।
আমি ছোট হলে ও বিয়ে ছাড়া স্বামীর অধিকার দিতে চাই নাই ফল হিসেবে নিজের ভালোবাসার মানুষ দ্বারা টানা ৩ দিন ধর্ষণ হতে হয়!
না সে একা আমাকে ধর্ষণ করেনি সাথে তার ২ বন্ধু ছিল।
আমার সকল আর্তনাদ সব জেনো এই রুমে বন্ধ ছিল।
সবার পায়ে ধরে বলেছিলাম আমাকে ছেড়ে দিতে।
ওদের যতো টাকা লাগবে আমি এনে দিবো আমার বাবার কাছ থেকে।
কেউ কথা শুনেনি এমন কি নাহিদ ও না।
নাহিদকে বলেছিলাম তুমি না হয় আমাকে ভালোবাসো তুমি না হয় এই সব করো কিন্তু তোমার বন্ধুরা কেন? উত্তরে সে বলেছিল আমার মতো মেয়েকে নাকি একা উপভোগ করতে নাই।
সবার মিলে করতে হয়।
তাহলে এতো দিন যা বলেছ মিনু প্রশ্ন করেছিল?
উত্তরে বলেছিল সব নাটক ছিল এই ভাবে উপভোগ করার জন্য।
কান্নাকাটি, পায়ে ধরা, ভয় দেখানো, কসম দেয়া, ভালোবাসার দোহায় দেয়া কোন কিছুই আমাকে বাঁচাতে পারেনি এই সব রাক্ষসদের হাত থেকে।
৩ দিন পর আমাকে মুক্ত করা হয় ভেবেছিলাম হয়তো মুক্ত হলাম কিন্তু না আমাকে ওরা মুক্তা করে এই পতিতালয়ে বিক্রি করে যায় ১ লক্ষ টাকার বিনিময়ে।
এখনে এসেছি প্রায় ১ মাস হলো আর এখনে এসে দেখলাম জীবন কতো ভয়ানক। যতো দিন আমাকে কেনার টাকা পরিশোধ হবে না ওতো দিন রুম থেকে বের হতে দিবে না।প্রথম দিকে ব্যাপার গুলা কিছুতেই মেনে নিতে চাইনি।
কাছে কোন কাস্টমার আসলে চিমটি কামড়ে পালাতাম।
এর পর বড় খালা খাবার বন্ধ করে দেয়।
ভেবেছিলাম না খেয়ে মরে যাবো তাও এই সব মেনে নিবো না। এখনে এসে শুধু এক বেলা খেয়েছিলাম।
কিন্তু ২দিন আর আগে ৩ দিন টানা কিছু না খেয়ে পানি ও না, বুঝে ছিলাম পেটের খুদা বড় খুদা।
পেট ভরার জন্য মানুষ সব কাজ করতে পারে।
আর মৃত্যু এতো সহজ না। চাইলেই মানুষ মরতে পারে না। তাই সব কিছু মেনে নিয়েছি।
এখন আর খাবারের জন্য কষ্ট করতে হয় না।
জামিল সে দিন কোন পতিতার কথা শুনে কেঁদে ছিল, তার এই প্রথম মনে হয়েছিল এখানে থাকা প্রতিটা পতিতার একটা গল্প আছে।
যা সবারি অজানা।
জামিল মিনুকে বলেছিল তাকে এখন থেকে বের করতে চায়।
মিনু বলেছিল সে এখন অপবিত্র এবং অশুদ্ধ।
সে তার এই অশুদ্ধ শরীর নিয়ে কোথাও যেতে চায় না।
জামিল এর পর ভালো হয়ে গেছে।
এর পর যতো বার পতিতালয়ে গেছে শুধু তার বোন মিনুর জন্য।
অন্য কোন দেহ ভোগের উদ্দেশ্য নয়!!

No comments

info.kroyhouse24@gmail.com