Breaking News

মিথ্যা অপবাদ । পর্ব -২৫

ক্যাম্পাসে বসে সবাই আড্ডা দিচ্ছিলাম। পেছন থেকে কে যেন ডাক দিলো।
— এটা আসিফ না?(মেয়ে কন্ঠ)সামনে এসে,,
— হায় আসিফ,,কেমন আছো।(মেয়েটি)
এদিক দিয়ে ত রিমির চোখে আগুন।সাথেই বসা ছিল রিমি।
— আরে রোকসানা তুমি?কেমন আছো?(আমি ত রোকসানা কে দেখে অবাক সে এখানে কেন?)
— হুম ভালো,,,তুমি এখানে?(রোকসানা)
— আমি ত এখানেই ভর্তি হইছি,,,তুমি?(আমি)
— আমিও সেইম?আচ্ছা আমরা ত একই ডিপার্টমেন্ট এ থাকার কথা।কিন্তু তোমাকে দেখি নাই কেন?(রোকসানা)
— দেখবে কি করে ভার্সিটিতে আসলে ত দেখবা?(আমি)
রোকসানার সাথে কথা বলতে গিয়ে রিমির কথা মনেই নাই।।আসলে দুরে কোথাও এলাকার লোকজন।বা বন্ধুবান্ধব পেলে আনন্দটা থাকেই অন্যরকম।
— কেন কি হইছে আসো না কেন?(রোকসানা)
— বিয়ে নিয়ে খুব টেনশনে ছিলাম।তাই।? (আমি)
— ওহ আচ্ছা তোমার বিয়ে নাকি(বলেই রোকসানা হাসতে শুরু করলো)
— সরি মজা ছিল,,,,(রোকসানা)
— আসলেই বিয়েটা আমারই ছিল।পাশে বসে থাকা মেয়েটা আমার বউ?(মনে মনে বললাম)
— কি হলো কিছু বলো?(রোকসানা)
— এখানে কোথায় উঠেছো?(আমি)
— আপুর বাসায়।(রোকসানা)
— ওহ তোমার আপুকে ঢাকাতেই বিয়ে দিছিলা?(আমি)
— আরে না,,,দুলাভাই ঢাকাতে চাকরি করে তাই।এখানে আসা।(রোকসানা)
— বাসাতে কে কে থাকো?(আমি)
— আমি,আপু,আপুর ছেলে আর দুলাভাই?(রোকসানা)
— ওহ আচ্ছা দুলাভাই থেকে দুরে দুরে থাইক।দিন কাল ভালো না।(আমি)
— আরে কি বলো।দুলাভাই ত আমাকে নিজের ভাইয়ের মত করে ভালোবাসে.(রোকসানা)
— আচ্ছা ঠিক আছে,,,পরে কথা হবে তাহলে বায়।(আমি রোকসানার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে চলে আসছিলাম,,,)
— আসিফ সুনো,(পিছন থেকে ডাক)
— তোমার নাম্বার টা দিবা প্লিজ?(রোকসানা)
— হুম দিচ্ছি।।
রোকসানাকে নাম্বার দিয়ে রিমির সামনে হাজির,,,,
— কে ছিল মেয়েটা?(রিমি ত রেগে আছে দেখছি)
— আরে সে ত,,,আমার স্কুল ফ্রেন্ড,একই সাথে পড়তাম?(আমি মুখে হাসি নিয়ে)
— ওই তুই আমাকে বুজাচ্ছিস কোনটা ফ্রেন্ড আর কোন টা অন্য কিছু?(রিমি ত তুই তুকারি শুরু করে দিছে)
— রিমি এভাবে সবার সামনে সিনক্রিয়েট কর না প্লিজ।সত্যি বলছি আমরা শুধুই ফ্রেন্ড ছিলাম। প্রায় ২.৫ বছর পর দেখা তাই একটু কথা বললাম।(আমি)
— মেয়েটা যদি তোর ফ্রেন্ড ই হতো আমাদের সাথে পরিচয় করিয়ে দিতি। কিন্তু তুই এমন টা করিস নি কারন মেয়েটা যেনে যাবে তোর বউ আছে?(রিমি)
সুনেছি যত সন্দেহ তত ভালোবাসা।আর বিয়ের করার মজা তিলে তিলে পাচ্ছি।
— রিমি তুমি এইসব কি বলো?আমাকে কোনো দেখছো কোনো মেয়ের সাথে কথা বলতে।আচ্ছা তোমার যখন বিশ্বাস হচ্ছে না।এখনি মেয়েটার সাথে তোমার পরিচয় করিয়ে দিচ্ছি।(আমি)
আমি রোকসানাকে খুজতে লাগলাম।নাম্বার ত নিছে কিন্তু আমাকে দেয় নাই।তাই খুজতেই হবে।অনেক খুজেও রোকসানাকে পেলাম না।রিমি ত এবার বলবে আমি মিথ্যা বলছি বাচার জন্য।উপায় না পেয়ে আবার রিমির সামনে,,,
— কি ব্যাপার মেয়েটা কই?(রিমি)
— অনেক খুজলাম পাই নি,,কাল দেখা হলে সিওর পরিচয় করিয়ে দিব।তখন জিজ্ঞাস করে নিও আমাদের সম্পর্ক টা কি ছিল।(আমি)
— আচ্ছা ঠিক আছে।।।
যাক বাবা কোনো মতে মানিয়ে নিলাম।। ক্লাস করে বাসায় এসে ফ্রেশ হয়ে খাবার খেয়ে অফিসে গেলাম।
কয়েকদিন ছুটিতে ছিলাম,,,কিন্তু কারন টা কি কেউই জানে না।।।অনেকে অনেক প্রশ্ন করেছে,,আমি সত্য টা গোপন রেখে যাকে যেভাবে পারি বুজিয়ে দিলাম।
বন্ধুবান্ধব অনেকে প্রশ্ন করে,
১/ইন্টার পাশ করে ৩০০০০ টাকা বেতনের চাকরি কিভাবে সম্ভব? উত্তরে যদি কম্পানিটা শশুড়ের হয় ত আরো বেশি হলে সমস্যা কি?
২/৩০০০০ টাকায় কি দুজন মানুষ চলা যায় না?আমাকে ১৫০০০ টাকার বেতনে চাকরি দেও আমি আমার গফ কে বিয়ে করে সংসার করি।
উত্তরে,,,চলার হলে ১৫০০০ হাজার টাকায় ই চলা যায়।
যদি দুজন লেখাপড়া করে?৩০০০০ হাজার টাকায় মনে হয় কিছু হবে না।আর রিমি কেমন বাড়ির মেয়ে ত সবাই জানেন। যেখানে শশুরের টাকায় লেখাপড়া খাওয়া দাওয়া সব কিছু করা যায়।তখন কষ্ট করে কম দামী ফ্লাটে থাকার কি দরকার? আর সংসারের চাপ ত আছেই তাই না।।
অফিস শেষ করে,,বাসায় আসার পর দেখি রিমির মন খারাপ।হয়ত সকালের ব্যপার টা নিয়েই মন খারাপ করে আছে।
— কি ব্যপার রিমি মন খারাপ কেন?(আমি ফ্রেশ হয়ে এসে)
— আসিফ সত্যি ত মেয়েটার সাথে তোমার কিছু নেই?(রিমি)
— আরে বোকা মেয়ে,,সত্যিই নেই?তুমি যদি চাও মেয়েটার সাথে আর কখনো কথাও বলব না।(আমি)
— না,,স্কুলের ফ্রেন্ড যখন টুকটাক কথা ত বলতেই পারো,,,আর আমার সাথে পরিচয় করিয়ে দিলেই হবে?(রিমি)
— এই ত বুজতে পারছো,,, (আমি)
— হুম,,,।
রিমির সাথে অনেকক্ষন গল্প করে।খাবার খেয়ে ঘুমতে গেলাম।
অন্যদিন ত মাঝরাতে বুকে এসে মাথা রাখে।
কিন্তু আজ ত ঘুমানোর আগেই বুকে মাথা।রিমি হয়তো ভয় পাচ্ছে আমাকে রোকসানা কেড়ে
নিয়ে যাবে।রিমি আমাকে খুব শক্ত করে জড়িয়ে আছে।যেন কেউ নিয়ে না যেতে পারে।
রিমির বাচ্ছামি আমার খুব ভালোলাগে।মেয়েরা একটু বাচ্চা বাচ্চা টাইপের হবে এটাই সুন্দর মানায়।
কিন্তু কিছু কিছু মেয়ে আছে ওরা ত ২০ তে বুড়ি হয়ে যায়।
মা চাচিদের সাথে বসে সেই ৮০ বছরের লেভেলের গল্প করে।
ঘুম থেকে উঠে রিমিকে সেই আগের অবস্থাই দেখছি।আমার বুকটা দখল করে আছে।,
,,দেখতে ও দারুন লাগছে মনে হচ্ছে বাচ্চা মেয়েটা সুয়ে আছে।
এত মায়াবী লাগছিল।আজ আমার কোনো তাড়া নেই।
তাই রিমির মুখে আসা চুল সরিয়ে দেখতে লাগলাম।।
.
কতক্ষন দেখেছি বলতে পারবো না।তবে মনে হয় বিয়ের পর কয়েকটা হালাল ক্রাশ খেয়ে নিয়েছি।
রিমি যখন নড়তে শুরু করলো,,এই বুজি উঠে যাবে।
আমি ঘুমের ভান করে সুয়ে আছি।রিমি ঘুম থেকে উঠে,,,ফ্রেশ হয়ে এসে ডাকতে লাগলো।
— এই উঠো,,এতক্ষন কেউ ঘুমায় নাকি?(রিমি)
আমি চোখ বন্ধ করে ভান করেই আছে।
রিমির ভেজা চুল গুলো মনে হচ্ছে আমার মুখে পড়ছে।,,,
— এই উঠবা নাকি পানি ঢেলে দিব?(রিমি)
— এত ডাকাডাকি কিসের,,,কি সুন্দর সপ্ন দেখছিলাম।(মিথ্যা বললাম)
— তুমি আবার কিসের সপ্ন দেখো?(রিমি)
— আমার মেয়ের সাথে খেলা করছি?খেলা শেষ হয়নি তুমি ডেকে দিলে।(আমি)
— সত্যি তুমিও আমাদের মেয়েটাকে দেখছো?(রিমি উত্তেজিত হয়ে)
— হুম,,দেখলাম তুমি আমার মেয়েকে একটুও আদর কর না।।(আমি রাগানোর জন্য)
–কি বললা আমি আদর করি না।মায়ের মত বাবারা বাচ্চাদের আদর করে না।(রিমি)
— হুম তবে মেয়েদের বাবারাই আদর করে বেশি।।(এই লজিক বেশিরভাগ ই কার্যকর)
— তা ঠিক,আমাকে আমার আব্বুই বেশি আদর করে/(রিমি)
.
রিমির মেয়ে পাওয়ার খুব ইচ্ছা।।।কিন্তু এখন আমি চাইলেও সেই ইচ্ছা পুরন করতে পারছি না।।
নিজে কিছু না করে এইসব ডিশিসন নেওয়া ভুল।,,
তাছাড়া এমনে তেই অল্প বয়সে বিয়ে করছি।
বাসায় সব কিছু ঠিক হলে,,বাসায় যদি বউ বাচ্চা এক সাথে নিয়ে যাই।
আবার নানা প্রশ্নের মুখামুখি হবো।আর রিমির লেখা পড়ার সমস্যা ত হবেই।
ফ্রেশ হয়ে,,ভার্সিটিতে গিয়েই রোকসানাকে খুজে বের
করলাম।আর রিমির সাথে পরিচয় করিয়ে দিলাম।রিমি অনেক খুশি,,,
রোকসানা ত অবাক হয়ে গেছে।তবে কথা দিয়েছে :কাউকে কিছু বলবে না।,,,
এভাবেই চলছিল,,,দিনকাল,,,মুটামুটি ভালোই চলছে।
.
মিথিলার যখন বিয়ে হয়ে গেছে বাসায় যাওয়ার একটা ব্যবস্থা করতে হবে।
ভিডিওটা খুজতে হবে,,,আম্মুকে ফোন দিয়ে আমার নাম্বারটা রেজিস্টার করতে বললাম।
ভাবি ত আগের নাম্বার জানেই।ভাবিকে নিতে বলেছি।
এবার বুজি আমার বাসায় যাওয়া হবে।মিথিলার ত বিয়ে হয়ে গেছে,,
আব্বুর রাগটা হয়ত তেমন কাজ করবে না।।
আর আমি পুরো ভিডিও টা না দেখিয়ে শেষের দিকটা ইডিট করে দেখিয়ে
দিলেই ত বুজতে পারবে আমি কিছু করি নাই। আর মিথিলা আর দুলাভাইয়ের প্রেমলীলা নাই দেখালাম।
আম্মু ফোন দিয়েছে,,,
.
— হ্যালো আম্মু কেমন আছো?(আমি)
— ভালো,,,তুই কেমন আছস?(আম্মু)
— ভালো সিম টা রেজিস্টার করছো?(আমি)
— হুম,,তুই এসে নিয়ে যা,(আম্মু)
,,,(কেউ জানে না সিমটা কিসের জন্য উঠাইছি,,,, অন্য কাজের জন্য বলছি)
— আচ্ছা,,আমি এসে ফোন দিব,?
— আচ্ছা,,রাখি তাহলে,,(আম্মু)
চলবে…

No comments

info.kroyhouse24@gmail.com